মাঘে বাঘ কাঁপে
মাঘে বাঘ কাঁপে
মোঃ বুলবুল হোসেন
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠতেই অফিস থেকে রিং আসলো রবির । রবির বস বলতেছে আজকে একটু সকাল করেই তোমাকে অফিসে আসতে হবে। অফিসের কাজে দূরে যেতে হবে ।রবি বসের কথা মত তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে নিল। এরপর রবি ভাবল বস কখনো আমাকে এভাবে বলে নাই ।তাই আমাকে আগে যেতে হবে ।এদিকে শীতের সকাল প্রচন্ড ঠান্ডা শীতের শেষের দিকে মাঘ মাস। তবুও গ্রাম-বাংলা একটি প্রবাদ আছে মাঘে বাঘ কাঁপে আসলে বাঘ কাঁপানোর মতই শীত পড়েছে। তবুও কষ্ট করে যেতে হবে। কারণ প্রাইভেটের চাকরি বসের কথা না শুনলে হয়তো চাকরিটাও থাকবে না। তাই সব দিক থেকে বিবেচনা করে রবি বসের কথা মতো অফিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো। রবির বাসা থেকে অফিস চার কিলোর মতো দূরত্ব। রবি বাসা থেকে অফিস করে , অটো ধরে তাকে অফিসে পৌঁছাতে হবে । এত সকালে কুয়াশার ভিতরে অটো পাওয়াটা মুশকিল অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরে একটা অটো পাওয়া গেল । তবুও সিট ফাঁকা নেই, একটা ব্যান আসতেছে কিছু বালুর আছে ভিতরে। ভ্যানওয়ালাকে বলল আমাকে একটু নিয়ে যাবেন । আমার অফিস যেহেতু একই দিকে আপনি ওদিকে যাইবেন। ভ্যানওয়ালাকে অনেক বোঝানোর পর ভ্যানআলা রাজি হয়ে যায় । অফিস পর্যন্ত নিয়ে আসতে।
অফিসে আসার পর বস রবিকে কিছু কাজ বুঝিয়ে দেয়। এমন কিছু ডকুমেন্ট সাথে দিয়ে দেয় । গ্রুপ ফ্যাক্টরি তাই বিশ কিলোমিটার দূরে এই গ্রুপের আরেকটা ফ্যাক্টরি আছে। সে জায়গায় যেতে হবে ডকুমেন্টস গুলো নিয়ে। বসের কথা মত সবকিছু বুঝিয়ে অপর অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। এখনো কুয়াশা ভালোভাবে চলে যায় নাই। মনে হয় কুয়াশা ভালোভাবে পড়তেছে রবি কোনরকম মাথাটা মালপাট দিয়ে ডেকে গাড়িতে উঠে বসলো । মাঝ রাস্তায় যাওয়ার পর যানজটের কারণে গাড়ি এক জায়গায় থেমে পড়ছে । একটু সামনেও যাচ্ছে না অনেকে বলাবলি করছে সামনে এক্সিডেন্ট হয়েছে। তাই গাড়ি সামনে যাইতেছে না। পুলিশ আসার পর গাড়িটা পরিষ্কার করবে । এদিকে অনেকে বলছে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেওয়া হয়েছে । এখানে মারাত্মকভাবে দূর্ঘটনা হয়েছে । রবি ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে মনে মনে ভাবলো আমি হেঁটে সামনে গিয়ে দেখি ।আসলেই ঘটনাটা কি হয়েছে যেমন বাবা তেমন কাজ । রবি গাড়ি থেকে নেমে হাটা শুরু করলো ঘটনা স্থলে যাওয়ার জন্য। প্রায় দশ পনেরো মিনিট হাঁটার পর ঘটনাস্থলে রবি পৌঁছে গেল। পৌছে গিয়ে যা দেখল তা দেখার জন্য রবি কখনো প্রস্তুত ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের টিম এসে গেছে। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল লোক বাহির করতেছে। আর কয়েকটি কাটা লাশ পড়ে আছে রাস্তার মাঝে । গাড়ি রক্তে ভিজে গেছে গাড়িটা দূরপাল্লা। ফায়ার সার্ভিস পানি দিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করার চেষ্টা করতেছে। রক্তে এমনভাবে ভেসে গিয়েছে যেন বৃষ্টি পড়ে নদীর স্রোতের মতো গেছে । দশটা লাশ রবি দেখে সে ঠিক থাকতে পারলো না। সে ভয়ে অস্থির হয়ে গেল। আর বললো হে আল্লাহ আপনি সবাইকে মাফ করে দেন । এমন বিপদ কাউকে দিয়েন না । সম্পূর্ণ ঘটনা জানার চেষ্টা করলো রবি , পাশে একটি মুদিখানার দোকান ছিল । মুদিখানার দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে হয়েছে ভাই, দোকানদার বলল ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল কুয়াশার কারণে রাস্তা সেভাবে বোঝা যাচ্ছিল না। আর এই জায়গাটা অনেক খারাপ রাতের বেলায় ভোরের দিকে রাস্তা একটার জায়গায় দুটো দেখা যায় । এখানে কি যেন আছে। যদিও বর্তমানে এসব কথায় কান দেয় না । হয়তো এই কারণেই দূর্ঘটনা হয়েছে তিনি বলল, দুটা ব্রিজ একত্র থাকায়, গাড়িটা যখন ব্রিজের কাছে এসে রেলিং এর সাথে ধাক্কা খেয়ে অর্ধেক পর্যন্ত ভেঙে গেছে। আর ড্রাইভার সহ প্রায় দশ জনের মত মারা গেছে। বিশ জনের মত আহত আছে। এদের মধ্যে অনেকেরে গাড়ি কেটে বাহির করা হয়েছে,এদের অবস্থাও খুবই আশঙ্কা জনক। আপনি তো দেখতেই পারছেন। লোকটির কথা শুনে রবি ভাবলো গ্রামের লোক এখনো কুশংসার পছন্দ করে।
হয়তো ড্রাইভার আনমনা হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল তা না হলে মোবাইলে কথা বলতে ছিল এমনও হতে পারে। যাইহোক ঘটনা যেহেতু আমি পরোক্ষভাবে দেখিনি তাই লোকটির কথায় বিশ্বাস করতে হবে।
এদিকে রবির ফোনে একটি রিং বেজে উঠলো। রবি মোবাইল বের করে দেখে বস ফোন দিছে। বস বলল তুমি কোথায় রবি। রবি বলল সামনে একটা দূর্ঘটনা হয়েছে ব্রিজের কাছে। ওই জায়গায় আছি তুমি ওই দিক থেকে সামনে হেঁটে চলে যাও। ওপার থেকে গাড়ি পেয়ে যাবে ,আর তুমি যেহেতু এসব কাটা ছেঁড়া দেখতে পারবে না, তোমার ভয় করে। তাই তুমি ওখানে থেকে চলে যাও ।যেহেতু আমাদের ডকুমেন্ট গুলো সঠিক সময়ে পৌঁছানো দরকার । আর এদের উদ্ধার করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের দল আর পুলিশ ও এসে গেছে আমি সব শুনেছি। রবি বসের কথা মত রাস্তায় চলতে থাকে। তার গন্তব্যের দিকে, আর ভাবতে থাকে কত পরিবার অসহায় হয়ে গেলো।
মোঃ বুলবুল হোসেন
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠতেই অফিস থেকে রিং আসলো রবির । রবির বস বলতেছে আজকে একটু সকাল করেই তোমাকে অফিসে আসতে হবে। অফিসের কাজে দূরে যেতে হবে ।রবি বসের কথা মত তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে নিল। এরপর রবি ভাবল বস কখনো আমাকে এভাবে বলে নাই ।তাই আমাকে আগে যেতে হবে ।এদিকে শীতের সকাল প্রচন্ড ঠান্ডা শীতের শেষের দিকে মাঘ মাস। তবুও গ্রাম-বাংলা একটি প্রবাদ আছে মাঘে বাঘ কাঁপে আসলে বাঘ কাঁপানোর মতই শীত পড়েছে। তবুও কষ্ট করে যেতে হবে। কারণ প্রাইভেটের চাকরি বসের কথা না শুনলে হয়তো চাকরিটাও থাকবে না। তাই সব দিক থেকে বিবেচনা করে রবি বসের কথা মতো অফিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো। রবির বাসা থেকে অফিস চার কিলোর মতো দূরত্ব। রবি বাসা থেকে অফিস করে , অটো ধরে তাকে অফিসে পৌঁছাতে হবে । এত সকালে কুয়াশার ভিতরে অটো পাওয়াটা মুশকিল অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরে একটা অটো পাওয়া গেল । তবুও সিট ফাঁকা নেই, একটা ব্যান আসতেছে কিছু বালুর আছে ভিতরে। ভ্যানওয়ালাকে বলল আমাকে একটু নিয়ে যাবেন । আমার অফিস যেহেতু একই দিকে আপনি ওদিকে যাইবেন। ভ্যানওয়ালাকে অনেক বোঝানোর পর ভ্যানআলা রাজি হয়ে যায় । অফিস পর্যন্ত নিয়ে আসতে।
অফিসে আসার পর বস রবিকে কিছু কাজ বুঝিয়ে দেয়। এমন কিছু ডকুমেন্ট সাথে দিয়ে দেয় । গ্রুপ ফ্যাক্টরি তাই বিশ কিলোমিটার দূরে এই গ্রুপের আরেকটা ফ্যাক্টরি আছে। সে জায়গায় যেতে হবে ডকুমেন্টস গুলো নিয়ে। বসের কথা মত সবকিছু বুঝিয়ে অপর অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। এখনো কুয়াশা ভালোভাবে চলে যায় নাই। মনে হয় কুয়াশা ভালোভাবে পড়তেছে রবি কোনরকম মাথাটা মালপাট দিয়ে ডেকে গাড়িতে উঠে বসলো । মাঝ রাস্তায় যাওয়ার পর যানজটের কারণে গাড়ি এক জায়গায় থেমে পড়ছে । একটু সামনেও যাচ্ছে না অনেকে বলাবলি করছে সামনে এক্সিডেন্ট হয়েছে। তাই গাড়ি সামনে যাইতেছে না। পুলিশ আসার পর গাড়িটা পরিষ্কার করবে । এদিকে অনেকে বলছে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেওয়া হয়েছে । এখানে মারাত্মকভাবে দূর্ঘটনা হয়েছে । রবি ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে মনে মনে ভাবলো আমি হেঁটে সামনে গিয়ে দেখি ।আসলেই ঘটনাটা কি হয়েছে যেমন বাবা তেমন কাজ । রবি গাড়ি থেকে নেমে হাটা শুরু করলো ঘটনা স্থলে যাওয়ার জন্য। প্রায় দশ পনেরো মিনিট হাঁটার পর ঘটনাস্থলে রবি পৌঁছে গেল। পৌছে গিয়ে যা দেখল তা দেখার জন্য রবি কখনো প্রস্তুত ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের টিম এসে গেছে। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল লোক বাহির করতেছে। আর কয়েকটি কাটা লাশ পড়ে আছে রাস্তার মাঝে । গাড়ি রক্তে ভিজে গেছে গাড়িটা দূরপাল্লা। ফায়ার সার্ভিস পানি দিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করার চেষ্টা করতেছে। রক্তে এমনভাবে ভেসে গিয়েছে যেন বৃষ্টি পড়ে নদীর স্রোতের মতো গেছে । দশটা লাশ রবি দেখে সে ঠিক থাকতে পারলো না। সে ভয়ে অস্থির হয়ে গেল। আর বললো হে আল্লাহ আপনি সবাইকে মাফ করে দেন । এমন বিপদ কাউকে দিয়েন না । সম্পূর্ণ ঘটনা জানার চেষ্টা করলো রবি , পাশে একটি মুদিখানার দোকান ছিল । মুদিখানার দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে হয়েছে ভাই, দোকানদার বলল ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল কুয়াশার কারণে রাস্তা সেভাবে বোঝা যাচ্ছিল না। আর এই জায়গাটা অনেক খারাপ রাতের বেলায় ভোরের দিকে রাস্তা একটার জায়গায় দুটো দেখা যায় । এখানে কি যেন আছে। যদিও বর্তমানে এসব কথায় কান দেয় না । হয়তো এই কারণেই দূর্ঘটনা হয়েছে তিনি বলল, দুটা ব্রিজ একত্র থাকায়, গাড়িটা যখন ব্রিজের কাছে এসে রেলিং এর সাথে ধাক্কা খেয়ে অর্ধেক পর্যন্ত ভেঙে গেছে। আর ড্রাইভার সহ প্রায় দশ জনের মত মারা গেছে। বিশ জনের মত আহত আছে। এদের মধ্যে অনেকেরে গাড়ি কেটে বাহির করা হয়েছে,এদের অবস্থাও খুবই আশঙ্কা জনক। আপনি তো দেখতেই পারছেন। লোকটির কথা শুনে রবি ভাবলো গ্রামের লোক এখনো কুশংসার পছন্দ করে।
হয়তো ড্রাইভার আনমনা হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল তা না হলে মোবাইলে কথা বলতে ছিল এমনও হতে পারে। যাইহোক ঘটনা যেহেতু আমি পরোক্ষভাবে দেখিনি তাই লোকটির কথায় বিশ্বাস করতে হবে।
এদিকে রবির ফোনে একটি রিং বেজে উঠলো। রবি মোবাইল বের করে দেখে বস ফোন দিছে। বস বলল তুমি কোথায় রবি। রবি বলল সামনে একটা দূর্ঘটনা হয়েছে ব্রিজের কাছে। ওই জায়গায় আছি তুমি ওই দিক থেকে সামনে হেঁটে চলে যাও। ওপার থেকে গাড়ি পেয়ে যাবে ,আর তুমি যেহেতু এসব কাটা ছেঁড়া দেখতে পারবে না, তোমার ভয় করে। তাই তুমি ওখানে থেকে চলে যাও ।যেহেতু আমাদের ডকুমেন্ট গুলো সঠিক সময়ে পৌঁছানো দরকার । আর এদের উদ্ধার করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের দল আর পুলিশ ও এসে গেছে আমি সব শুনেছি। রবি বসের কথা মত রাস্তায় চলতে থাকে। তার গন্তব্যের দিকে, আর ভাবতে থাকে কত পরিবার অসহায় হয়ে গেলো।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ২১/০৪/২০২৪অসাধারণ একটি নিবেদন।
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ১০/০২/২০২৪শুভ কামনা রইল।
-
আলমগীর সরকার লিটন ০৪/০২/২০২৪অনেক শুভ কামনা রইল
-
মাহবুব নেওয়াজ মুন্না ০৩/০২/২০২৪ভালোবাসা রইল
-
ফয়জুল মহী ০২/০২/২০২৪চমৎকার কথামালায় নান্দনিক উপস্থাপন শুভকামনা নিরন্তর