স্বপ্ন আর সত্যি হলো না
স্বপ্ন আর সত্যি হলো না
মোঃ বুলবুল হোসেন
তারিখঃ ১৯-০৪-২০২২ ইং
প্রতিদিনের মত আজও ঘুম থেকে উঠে দুলাল কে বাবার সাথে কাজে যেতে হবে । কোন রকম চলে দুলালের সংসার। একবেলা খেয়ে না খেয়ে। তাদের সংসারে বাবা মা ছোট বোন আর দুলাল। আজ দুলালের শরীরটা তেমন ভালো নাই । বাবাকে বললো বাবা আজকে মাঠে যেতে পারবো না । বাবা বলল ঠিক আছে আমি মাঠে যাই । কিন্তু দুলাল হঠাৎ খেয়াল করলো যে মা ,বাবার মাথায় পানি দিচ্ছে। পানি দেয়া শেষে বাবা মাঠের দিকে হেঁটে চলেছে। বাবা অসুস্থ শরীর নিয়ে মাঠে যাচ্ছে । তখন দুলাল চিন্তা করে একদিন যদি মাঠে না যায় ।আমাদের সংসার না খেয়ে থাকবে দুলাল বাবার পিছনে চলে গেল। আর বলল বাবা তুমি না হয় আজকে যেও না তুমি অসুস্থ বাবা-না ঠিক হয়ে যাবে। তুমি থাকো বাড়িতে। দুলালের বাবা রাজি হলো না। শেষে দুলাল বলে চলো দুজন মিলে যাই। দুলাল ও তার বাবা-মাঠে কাজ করছে। মেম্বার সাহেব জমির পাশে দাঁড়িয়ে আছে ।আর দুলাল তার বাবা মেম্বার সাহেবের জমিতে কাজ করতেছে । মেম্বার সাহেব বলল কি ব্যাপার দুলালের বাবা তুমি কি অসুস্থ । না আমি ঠিক আছি অসুস্থ না। মেম্বার বলল দুলালের বাবা এদিকে আসো তো। মেম্বারের কথামতো দুলালের বাবা মেম্বারের কাছে চলে যায়।কাছে যেতে মেম্বার ছাতার নিচে নিয়ে আসে । তুমি এখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নাও । আমি বাড়ি থেকে আসতেছি এই বলে মেম্বার বাড়ির দিকে রওনা দিল। কিছু খন পরে মেডিসিন নিয়ে আসে মেম্বার সাহেব। প্রথমে চিড়া-মুড়ি দুলালের বাবাকে খেতে বলল । দুলালের বাবার খাওয়া শেষে মেডিসিন খাওয়ানো হলো। তারপরে এক দেড় ঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে দুলালের বাবা আবার কাজ করতে শুরু করে । দিনশেষে মেম্বার সাহেব দুলালের বাবাকে কিছু টাকা দেয় ভালোভাবে চিকিৎসা করানোর জন্য।বলে ভালো কোনো ডাক্তার দেখাইও। এবার সব কাজ শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা দেয় । তখন দুলাল বলে বাবা আমাদের মেম্বার সাহেব অনেক ভাল তার মত মানুষ হয় না । তুমি জানো মেম্বারের বাবা ছিল আরো ভালো মানুষ । কারো কোন অভাব দেখলে দৌড়ে গিয়ে তার পাশে দাঁড়াতো ।কেউ না খেয়ে থাকে তার বাড়িতে আসতো তাকে যথাসাধ্য মতো খাবার দেওয়া হতে। সত্যি উনাদের বংশে যারা এসেছে তারা সবাই ভালো মানুষ।একসময় তারা গল্প করতে করতে বাড়িতে চলে যায়।
বাড়িতে গেলে দুলালের মা বলে ঘরে কোনো চাউল নেই বাজার নেই। মেয়েটা কান্নাকাটি করছে দুলালের বাবা বলল এই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো আমি যাব আর আসব । এই বলে বাজারের দিকে হাটা শুরু করে দিলো দুলালের বাবা।বাজারে গিয়ে কিছু চাউল ডাউল সবজি নিয়ে বাড়ির দিকে আবার হাটা শুরু করে দিলো। দুলালের বাবা রাস্তা দিয়ে হাটতেছে আর মনের খুশিতে যাচ্ছে। কারণ আজ তার ছেলে মেয়ে বউ নিজে দুবেলা ভালোভাবে খেতে পারবে। কতদিন হলো তারা দুবেলা ভালোভাবে খেতে পারে না। তাই মনের আনন্দে বাড়ির দিকে চলে যাচ্ছে। হঠাৎ মোড়ল সাহেব সামনে এসে বলে আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলে। টাকাগুলো কেন আমাকে দাওনা । দুলালের বাবা বলে আর কটা দিন সময় দেন মোড়ল সাহেব আপনার টাকা সম্পূর্ণ আমি শোধ করে দিবো। বলে আবার হাঁটা শুরু করে দিবে এমন সময় কলার ধরে দুলালের বাবার দুই গালে থাপ্পড় মারে। এখনি টাকা দিয়ে যাবি তা না হলে তকে বেঁধে রাখবো। যেমন কথা তেমন কাজ দুলালের বাপকে গাছের সাথে বেঁধে ফেলে। এরপর গ্রামের লোকজন এসে বলে সে তো না খেয়ে আছে। এভাবে থাকলে এমনি সে মারা যাবে তাকে ছেড়ে দাও। গ্রামের লোকেদের কথামতো দুলালের বাবাকে ছেড়ে দেয়। বলে এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা না দিলে খবর আছে । কোনরকম বাড়ির দিকে হাটা শুরু করে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে কারণ এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে। বাড়িতে গিয়ে কোনরকম চোখ মুছে বাজারটা দুলালের মার কাছে দিয়ে বলে নাও রান্না করো। দুলালের মা জিজ্ঞাসা করে তুমি এত রাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে। মোড়ল সাহেব বলছে টাকাটা দিতে। দুলালের মা খেয়াল করে শরীরের কাপড়ের ধুলো লেগে আছে। আর বুঝার বাকি রইলো না যে মোড়ল সাহেব তার স্বামীকে মারছে ।সবাই মিলে কান্নাকাটি শুরু করে আমাদের কি কেউ নেই আমরা কিভাবে বাঁচব। কোন রকম কিছু রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরে। যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করতে হবে তা না হলে মোড়ল সাহেবের কাছে মার খেতে হবে।
পরদিন সকালে আবার কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বাপ-ছেলে । দুলাল ভাবছিল যে এবার জ্যৈষ্ঠ মাসে কিছু নতুন জামা কিনবে বাবার জন্য নিজের জন্য। সমস্ত ঘটনা জানার পর দুলাল ভাবে হায়রে গরীবের জীবন। কখনও স্বপ্ন পূরণ হয়না। সব সময় সর্বনাশ এবার মনোযোগ দিয়ে কাজ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে।বাবা বলে কি ব্যাপার দুলাল কি চিন্তা করছো। সামনে বৈশাখ মাস আমাদের ধান উঠবে ধানগুলো বিক্রি করে তোমাদের কাপড় চোপড় কিনে দেবো । তোমরা চিন্তা করো না ।চলো আমরা কাজ করতে যাই। একে একে এক সপ্তাহ শেষ হয়ে যায়। কোনো টাকা সংগ্রহ করতে পারেনি ।মোড়ল সাহেব বাড়িতে এসে ভাঙচুর করতে থাকে ।অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। কেন টাকা দিচ্ছি না টাকা নেওয়ার সময় খেয়াল ছিল না পরের টাকা নিয়েছো ।আরো কত কি বলছে দুলালের মা কান্নাকাটি করছে পাড়ার লোকজন এসে শুধু চেয়ে দেখছে কেউ কিছু বলছে না। দুলালের একটি পোশা ছাগল ছিল। মোড়ল সাহেব ছাগলটিকে জোর করে টেনে নিয়ে চলে যায় । গ্রামের লোকজন কেউ কিছু বলছে না সবাই চেয়ে দেখছে। কেউ বলছে না যে এদের শেষ সম্বল টুকু যদি কেড়ে নেয় তাহলে এদের কি হবে কোথায় যাবে। এদের দেখার মত কেউ নেই ।তাই আল্লাহর কাছে বিচার দেয় হে আল্লাহ এই জালিমদের বিচার করো তুমি। দুলাল বাবাকে সান্ত্বনা দেয়। সামনে বৈশাখে আমাদের অভাব দূর হয়ে যাবে। বাবা চিন্তা করো না আল্লাহ যা করে সব সময় ভালোর জন্যই করেন। দুলালের মাকেও তাই বলে দুলালের মা-বাবা-বোন সবাইকে নিয়ে ঘরে চলে যায় । এমনকি অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে। এই গরিবের সুখ কোনদিন হবে না । দেখতে দেখতে প্রায় দুমাস পরে জ্যৈষ্ঠ মাস চলে আসে। চৈত্রের প্রকৃতি আরেক সর্বনাশ হয়ে গেছে । জমির ফসল গুলো রোদে শুকিয়ে গেছে। ধান গাছ গুলো মারা গেছে কিছু গাছ বেঁচে আছে। সবাই চোখের জল ফেলছে। হায় আফসোস কৃষক গুলো বাঁচবে কি করে। এবারও হয়ত না খেয়ে থাকতে হবে।
ভেবেছিলাম এবার বৈশাখে বোনকে কিছু কেনাকাটা করে দেব ।মাকে কাপড় বাবাকে জামা আমার নিজের জন্য জামা আশার গুড়ে বালি আশা আশায় রয়ে গেল ।স্বপ্ন সত্যি আর হলো না এই বলে আফসোস করতেছে। শুধু দুলাল নয় গ্রামের শতশত কৃষক একই ভাবে শিকার । তারা কোথায় যাবে কি করবে কি খাবে ।এই নিয়ে সবার মধ্যে হায় আফসোস হায় আফসোস। কয়দিন যাবৎ হাতে কোনো কাজ নেই তাই বাড়িতেই বসে থাকতে হয় । কোনদিন না খেয়ে কাটাতে হয় আবার এক দিন কাজ করলে যা পায় তাই দিয়ে পরিবারের খাওয়া-দাওয়া করা হয়। মেম্বার সাহেব পরদিন সকাল বেলায় দুলালদের বাড়িতে আসে বলে এবারকার জমির ফসল প্রায় তো অর্ধেক নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি জানি তোমাদের অবস্থা । দুলাল বলে মেম্বার সাব আপনার জমির ফসল ও তো নষ্ট হয়ে গেছে আপনার কি হবে মেম্বার সাহেব । বাবা আমার জন্য যা রেখে দিয়েছে। তার তিন বছর গেলেও শেষ হবেনা । আমি তোমাদের জন্য কিছু নিয়ে এসেছি এগুলো দিয়ে কিছুদিন চলো। দুলালের পরিবার মেম্বার সাহেবের জন্য দোয়া করতে থাকে। সত্যি আমাদের সমাজে ভালো কিছু মানুষ আছে বলে আজ এই সমাজ এত সুন্দর। এই ভালো মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক। বয়ে আনুক শান্তির বার্তা।
মোঃ বুলবুল হোসেন
তারিখঃ ১৯-০৪-২০২২ ইং
প্রতিদিনের মত আজও ঘুম থেকে উঠে দুলাল কে বাবার সাথে কাজে যেতে হবে । কোন রকম চলে দুলালের সংসার। একবেলা খেয়ে না খেয়ে। তাদের সংসারে বাবা মা ছোট বোন আর দুলাল। আজ দুলালের শরীরটা তেমন ভালো নাই । বাবাকে বললো বাবা আজকে মাঠে যেতে পারবো না । বাবা বলল ঠিক আছে আমি মাঠে যাই । কিন্তু দুলাল হঠাৎ খেয়াল করলো যে মা ,বাবার মাথায় পানি দিচ্ছে। পানি দেয়া শেষে বাবা মাঠের দিকে হেঁটে চলেছে। বাবা অসুস্থ শরীর নিয়ে মাঠে যাচ্ছে । তখন দুলাল চিন্তা করে একদিন যদি মাঠে না যায় ।আমাদের সংসার না খেয়ে থাকবে দুলাল বাবার পিছনে চলে গেল। আর বলল বাবা তুমি না হয় আজকে যেও না তুমি অসুস্থ বাবা-না ঠিক হয়ে যাবে। তুমি থাকো বাড়িতে। দুলালের বাবা রাজি হলো না। শেষে দুলাল বলে চলো দুজন মিলে যাই। দুলাল ও তার বাবা-মাঠে কাজ করছে। মেম্বার সাহেব জমির পাশে দাঁড়িয়ে আছে ।আর দুলাল তার বাবা মেম্বার সাহেবের জমিতে কাজ করতেছে । মেম্বার সাহেব বলল কি ব্যাপার দুলালের বাবা তুমি কি অসুস্থ । না আমি ঠিক আছি অসুস্থ না। মেম্বার বলল দুলালের বাবা এদিকে আসো তো। মেম্বারের কথামতো দুলালের বাবা মেম্বারের কাছে চলে যায়।কাছে যেতে মেম্বার ছাতার নিচে নিয়ে আসে । তুমি এখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নাও । আমি বাড়ি থেকে আসতেছি এই বলে মেম্বার বাড়ির দিকে রওনা দিল। কিছু খন পরে মেডিসিন নিয়ে আসে মেম্বার সাহেব। প্রথমে চিড়া-মুড়ি দুলালের বাবাকে খেতে বলল । দুলালের বাবার খাওয়া শেষে মেডিসিন খাওয়ানো হলো। তারপরে এক দেড় ঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে দুলালের বাবা আবার কাজ করতে শুরু করে । দিনশেষে মেম্বার সাহেব দুলালের বাবাকে কিছু টাকা দেয় ভালোভাবে চিকিৎসা করানোর জন্য।বলে ভালো কোনো ডাক্তার দেখাইও। এবার সব কাজ শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা দেয় । তখন দুলাল বলে বাবা আমাদের মেম্বার সাহেব অনেক ভাল তার মত মানুষ হয় না । তুমি জানো মেম্বারের বাবা ছিল আরো ভালো মানুষ । কারো কোন অভাব দেখলে দৌড়ে গিয়ে তার পাশে দাঁড়াতো ।কেউ না খেয়ে থাকে তার বাড়িতে আসতো তাকে যথাসাধ্য মতো খাবার দেওয়া হতে। সত্যি উনাদের বংশে যারা এসেছে তারা সবাই ভালো মানুষ।একসময় তারা গল্প করতে করতে বাড়িতে চলে যায়।
বাড়িতে গেলে দুলালের মা বলে ঘরে কোনো চাউল নেই বাজার নেই। মেয়েটা কান্নাকাটি করছে দুলালের বাবা বলল এই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো আমি যাব আর আসব । এই বলে বাজারের দিকে হাটা শুরু করে দিলো দুলালের বাবা।বাজারে গিয়ে কিছু চাউল ডাউল সবজি নিয়ে বাড়ির দিকে আবার হাটা শুরু করে দিলো। দুলালের বাবা রাস্তা দিয়ে হাটতেছে আর মনের খুশিতে যাচ্ছে। কারণ আজ তার ছেলে মেয়ে বউ নিজে দুবেলা ভালোভাবে খেতে পারবে। কতদিন হলো তারা দুবেলা ভালোভাবে খেতে পারে না। তাই মনের আনন্দে বাড়ির দিকে চলে যাচ্ছে। হঠাৎ মোড়ল সাহেব সামনে এসে বলে আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলে। টাকাগুলো কেন আমাকে দাওনা । দুলালের বাবা বলে আর কটা দিন সময় দেন মোড়ল সাহেব আপনার টাকা সম্পূর্ণ আমি শোধ করে দিবো। বলে আবার হাঁটা শুরু করে দিবে এমন সময় কলার ধরে দুলালের বাবার দুই গালে থাপ্পড় মারে। এখনি টাকা দিয়ে যাবি তা না হলে তকে বেঁধে রাখবো। যেমন কথা তেমন কাজ দুলালের বাপকে গাছের সাথে বেঁধে ফেলে। এরপর গ্রামের লোকজন এসে বলে সে তো না খেয়ে আছে। এভাবে থাকলে এমনি সে মারা যাবে তাকে ছেড়ে দাও। গ্রামের লোকেদের কথামতো দুলালের বাবাকে ছেড়ে দেয়। বলে এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা না দিলে খবর আছে । কোনরকম বাড়ির দিকে হাটা শুরু করে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে কারণ এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে। বাড়িতে গিয়ে কোনরকম চোখ মুছে বাজারটা দুলালের মার কাছে দিয়ে বলে নাও রান্না করো। দুলালের মা জিজ্ঞাসা করে তুমি এত রাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে। মোড়ল সাহেব বলছে টাকাটা দিতে। দুলালের মা খেয়াল করে শরীরের কাপড়ের ধুলো লেগে আছে। আর বুঝার বাকি রইলো না যে মোড়ল সাহেব তার স্বামীকে মারছে ।সবাই মিলে কান্নাকাটি শুরু করে আমাদের কি কেউ নেই আমরা কিভাবে বাঁচব। কোন রকম কিছু রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরে। যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করতে হবে তা না হলে মোড়ল সাহেবের কাছে মার খেতে হবে।
পরদিন সকালে আবার কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বাপ-ছেলে । দুলাল ভাবছিল যে এবার জ্যৈষ্ঠ মাসে কিছু নতুন জামা কিনবে বাবার জন্য নিজের জন্য। সমস্ত ঘটনা জানার পর দুলাল ভাবে হায়রে গরীবের জীবন। কখনও স্বপ্ন পূরণ হয়না। সব সময় সর্বনাশ এবার মনোযোগ দিয়ে কাজ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে।বাবা বলে কি ব্যাপার দুলাল কি চিন্তা করছো। সামনে বৈশাখ মাস আমাদের ধান উঠবে ধানগুলো বিক্রি করে তোমাদের কাপড় চোপড় কিনে দেবো । তোমরা চিন্তা করো না ।চলো আমরা কাজ করতে যাই। একে একে এক সপ্তাহ শেষ হয়ে যায়। কোনো টাকা সংগ্রহ করতে পারেনি ।মোড়ল সাহেব বাড়িতে এসে ভাঙচুর করতে থাকে ।অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। কেন টাকা দিচ্ছি না টাকা নেওয়ার সময় খেয়াল ছিল না পরের টাকা নিয়েছো ।আরো কত কি বলছে দুলালের মা কান্নাকাটি করছে পাড়ার লোকজন এসে শুধু চেয়ে দেখছে কেউ কিছু বলছে না। দুলালের একটি পোশা ছাগল ছিল। মোড়ল সাহেব ছাগলটিকে জোর করে টেনে নিয়ে চলে যায় । গ্রামের লোকজন কেউ কিছু বলছে না সবাই চেয়ে দেখছে। কেউ বলছে না যে এদের শেষ সম্বল টুকু যদি কেড়ে নেয় তাহলে এদের কি হবে কোথায় যাবে। এদের দেখার মত কেউ নেই ।তাই আল্লাহর কাছে বিচার দেয় হে আল্লাহ এই জালিমদের বিচার করো তুমি। দুলাল বাবাকে সান্ত্বনা দেয়। সামনে বৈশাখে আমাদের অভাব দূর হয়ে যাবে। বাবা চিন্তা করো না আল্লাহ যা করে সব সময় ভালোর জন্যই করেন। দুলালের মাকেও তাই বলে দুলালের মা-বাবা-বোন সবাইকে নিয়ে ঘরে চলে যায় । এমনকি অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে। এই গরিবের সুখ কোনদিন হবে না । দেখতে দেখতে প্রায় দুমাস পরে জ্যৈষ্ঠ মাস চলে আসে। চৈত্রের প্রকৃতি আরেক সর্বনাশ হয়ে গেছে । জমির ফসল গুলো রোদে শুকিয়ে গেছে। ধান গাছ গুলো মারা গেছে কিছু গাছ বেঁচে আছে। সবাই চোখের জল ফেলছে। হায় আফসোস কৃষক গুলো বাঁচবে কি করে। এবারও হয়ত না খেয়ে থাকতে হবে।
ভেবেছিলাম এবার বৈশাখে বোনকে কিছু কেনাকাটা করে দেব ।মাকে কাপড় বাবাকে জামা আমার নিজের জন্য জামা আশার গুড়ে বালি আশা আশায় রয়ে গেল ।স্বপ্ন সত্যি আর হলো না এই বলে আফসোস করতেছে। শুধু দুলাল নয় গ্রামের শতশত কৃষক একই ভাবে শিকার । তারা কোথায় যাবে কি করবে কি খাবে ।এই নিয়ে সবার মধ্যে হায় আফসোস হায় আফসোস। কয়দিন যাবৎ হাতে কোনো কাজ নেই তাই বাড়িতেই বসে থাকতে হয় । কোনদিন না খেয়ে কাটাতে হয় আবার এক দিন কাজ করলে যা পায় তাই দিয়ে পরিবারের খাওয়া-দাওয়া করা হয়। মেম্বার সাহেব পরদিন সকাল বেলায় দুলালদের বাড়িতে আসে বলে এবারকার জমির ফসল প্রায় তো অর্ধেক নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি জানি তোমাদের অবস্থা । দুলাল বলে মেম্বার সাব আপনার জমির ফসল ও তো নষ্ট হয়ে গেছে আপনার কি হবে মেম্বার সাহেব । বাবা আমার জন্য যা রেখে দিয়েছে। তার তিন বছর গেলেও শেষ হবেনা । আমি তোমাদের জন্য কিছু নিয়ে এসেছি এগুলো দিয়ে কিছুদিন চলো। দুলালের পরিবার মেম্বার সাহেবের জন্য দোয়া করতে থাকে। সত্যি আমাদের সমাজে ভালো কিছু মানুষ আছে বলে আজ এই সমাজ এত সুন্দর। এই ভালো মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক। বয়ে আনুক শান্তির বার্তা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Md. Rayhan Kazi ২৫/০৬/২০২২চমৎকার লেখনী
-
Md. Rayhan Kazi ২০/০৬/২০২২অনন্য সৃজন
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২২/০৪/২০২২বেশ!
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২১/০৪/২০২২বেশ!
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২১/০৪/২০২২অপূর্ব
-
ফয়জুল মহী ২১/০৪/২০২২ভীষণ ভালো লাগলো সুন্দর উপস্থাপন