ভালোবাসা দিবস
ভালোবাসা দিবস
মোঃ বুলবুল হোসেন
তারিখঃ ১৪-০২-২০২২ ইং
কামালের ঘুম থেকে উঠেতেই মনে পড়ে গেল, আজ কে তো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সে মনে মনে ভাবলো আজ তার বউকে কিছু বলবে না। কারণ প্রতিদিন উঠিয়ে তার বউয়ের সাথে একটা না, একটা নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকতো। সে ভাবলো অন্তত আজকের দিনটা বউকে একটু ভালোবাসা দেবো। বউকে কিছু না বলেই বাজারের দিকে হাটা শুরু করে দিলো। হাঁটতেছে আর মনে মনে ভাবতেছে বউকে কি দেওয়া যায় । এমন কি দিলে বউ তার প্রতি খুশি থাকবে। ভাবতে ভাবতে রাস্তার পাশে দিয়ে যাচ্ছে। কামাল নিজেকে প্রশ্ন করে? কেন তার বউকে সাথে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। দোষ কি শুধু তার ছিলো,আমারো তো ছিলো। এক হাতে কখনো তালি বাজে না । তাই সে নিজেকে অপরাধী ভাবতে শুরু করে। আমার হয়তো এসব করা ঠিক হয় নাই বউয়ের সাথে। হঠাৎ করে কামালের কানে কান্নার শব্দ ভেসে আসে। কামাল সামনে তাকিয়ে দেখে এক বৃদ্ধ লোক কান্নাকাটি করতেছে । আশেপাশে কেউ নেই কামাল ভাবতেছে, এই লোকটার কান্নার কারণ কি? সে মনে মনে ভাবল লোকটির কাছে গিয়ে প্রশ্ন করবে । কেন কান্নাকাটি করতেছে আবার ভাবলো যদি কিছু বলে। যাই বলুক না কেন, সে জিজ্ঞেস করবে আসল কারণ কি?
সামনে এসে যখন কামাল মুরুব্বী কে জিজ্ঞাসা করলো আপনি কান্নাকাটি করতেছেন কেন।
কি হয়েছে আপনার আমাকে কি বলবেন । হয়তো আপনার মনের বোঝাটা হালকা হয়ে যাবে। আমিও কিছু পরামর্শ দিতে পারি অথবা কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। লোকটি বলল বাবা ঠিকই বলেছ শিক্ষার কোনো বয়স নাই, শুনবে কেন কান্নাকাটি করতেছি তাহলে শোনো বলতেছি। আমার মেয়ে একটি ছেলেকে ভালোবাসতো, ছেলেটা পাশের গ্রামের পরিচয় দিতো। আমি খোঁজ নিয়ে দেখি নাই, সে আসলে ওই গ্রামের ছেলে কিনা। ছেলেটি আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। আমি মনে মনে ভাবতে ছিলাম যেহেতু দুজন দুজনকে পছন্দ করে । তাহলে একদিন তার বাবা-মার সাথে কথা বলে মেয়েটাকে বিয়ে দেবো। আমি আর বাধা দেইনি যেহেতু ছেলেটি সহজ-সরল নম্র ভদ্র আমার কাছে মনে হয়েছিলো। তাই আমি কিছু বলিনাই । তারপর গতবছর ভালোবাসার দিবসে আমাকে বলল কাকা আপনার মেয়েকে নিয়ে আমি একটু ঘুরতে যাবো। আমাদের স্কুলের মাঠে যাবো। আমি ভাবলাম স্কুলে যাবে, তাতে সমস্যা কি। যাও আবার বেলা থাকতেই চলে এসে। এরপর বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে।
কিন্তু আমার মেয়ে আর বাড়িতে ফিরে না, দেখতে দেখতে রাত্রি যখন নয়টা বাজে তখন দেখি আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছেড়া জামা গায়ে বাড়িতে চলে এসেছে। আমাকে দেখে মেয়ে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয় এবং বলে আমি যাকে ভালবাসি সে একটা চরিত্রহীন । সে মিথ্যা কথা বলে স্কুলের নাম করে একটা বাসায় নিয়ে যায়, বাসায় নিয়ে তিন-চারজন মিলে আমাকে গণধর্ষণ করে। আমি বাড়িতে বলে দিবো বলতেই সবাই মিলে আমাকে অনেক মারধোর করে। আমার কান্নাকাটি শুনে এলাকার লোকজন এসে আমাকে ছাড়িয়ে দেয়। এই বলে মেয়েটা কাঁদতে থাকে। আমারও চোখের জল চলে আসে। আসলে আমি একটি ভুল মানুষকে পছন্দ করেছিলাম। মানুষের বাহিরটা যতো সুন্দর ভিতরটা ততটা না। মানুষের আড়ালে একটা শয়তান লুকিয়ে ছিলো। এরপর ছেলেটির খোঁজ খবর নিয়ে দেখি আসলে ওই গ্রামের ছেলে না। ওই গ্রামের কেউ চিনে না তাকে । এই কারণে আমি আফসোস করতেছি । আবার ভালোবাসা দিবস । নাজানি কোন বাবা মার বুক খালি হয়ে যায়। কতো মেয়ের ইজ্জত নষ্ট হয়ে যায়। কাকার মুখের কথা শুনে আমারও চোখের জল চলে আসে। কামাল ভাবলো আসলেই ভালো মানুষ আজকের সমাজে খুঁজে পাওয়া দায় । চাচাকে সান্ত্বনা দিয়ে কামাল যখন আবার বাজারের দিকে রওনা দিলো।
কিছুদুর সামনে যাওয়ার পর কামাল তার বন্ধু জামালের সাথে দেখা হয় । জামাল বলল কি ব্যাপার দোস্ত এই সাতসকালে কই যাচ্ছিস। কামাল বলল দোস্ত আমি বাজারের দিকে যাচ্ছি। আজকে তো ভালোবাসা দিবস তোর ভাবির জন্য কিছু কেনাকাটা করবো। কামালের কথা শুনে জামাল একটা মুচকি হাসি দিলো। বললো তোর আবার বউয়ের জন্য দরদ আছে। তুইতো রোজই মেয়েটাকে মারিস বিনা কারণে কষ্ট দিস। মেয়েটা মুখ বুজে সব সহ্য করে থাকে ।তাদের মুখের দিকে চেয়ে। সত্যি কথা বলতে কি তোর যদি ছেলে না থাকতো কবেই চলে যেতো। তোকে ছেড়ে তাইতো যায়নি কষ্ট দেওয়ার পরও মেয়েটা তোর কাছে রয়ে গেছে। যাই হোক তবুও যদি তোর একটু মন গলে যায়, এ ভালোবাসার দিনে। মনে রাখিস মানুষের জীবনে প্রতিটা দিনই ভালোবাসার। তুই যখন তোর বউকে বিনা কারণে মারধোর ঝগড়া করিস। তুই একবার ভেবে দেখ, সব দোষ কি তার ছিলো। তাই অতীতের সব ভুলগুলো সংশোধন করে সামনের দিনগুলো কে ভালোবাসা টাকে খুঁজে নে। মনের শান্তি পাবি। আসলেই ভালোবাসা কখনো পড়ে থাকে না । এটা কে খুঁজে নিতে হয় । আপন করে নিতে হয়, তুই একজন মানুষকে যতোটুকু ভালোবাসা দিবি, সেও তার চাইতে দ্বিগুণ দেবার চেষ্টা করবে। তুই একবার মেয়েটাকে ভালোবেসে দেখ। অবশ্যই তার বিনিময়ে নিজের জীবন দিয়ে দিবে। যাইহোক দোস্ত তোকে আমি অনেক কথা শুনিয়ে ফেললাম। কিছু মনে করিস না, পরে হলেও তর ভুল বুঝতে পারছো । এই জন্য আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া । জামাল বলল দোস্ত আমার সামনে কাজ আছে। আমাকে যে যেতে হবে আমি আসি বন্ধু। ভালো থাকিস।
মোঃ বুলবুল হোসেন
তারিখঃ ১৪-০২-২০২২ ইং
কামালের ঘুম থেকে উঠেতেই মনে পড়ে গেল, আজ কে তো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সে মনে মনে ভাবলো আজ তার বউকে কিছু বলবে না। কারণ প্রতিদিন উঠিয়ে তার বউয়ের সাথে একটা না, একটা নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকতো। সে ভাবলো অন্তত আজকের দিনটা বউকে একটু ভালোবাসা দেবো। বউকে কিছু না বলেই বাজারের দিকে হাটা শুরু করে দিলো। হাঁটতেছে আর মনে মনে ভাবতেছে বউকে কি দেওয়া যায় । এমন কি দিলে বউ তার প্রতি খুশি থাকবে। ভাবতে ভাবতে রাস্তার পাশে দিয়ে যাচ্ছে। কামাল নিজেকে প্রশ্ন করে? কেন তার বউকে সাথে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। দোষ কি শুধু তার ছিলো,আমারো তো ছিলো। এক হাতে কখনো তালি বাজে না । তাই সে নিজেকে অপরাধী ভাবতে শুরু করে। আমার হয়তো এসব করা ঠিক হয় নাই বউয়ের সাথে। হঠাৎ করে কামালের কানে কান্নার শব্দ ভেসে আসে। কামাল সামনে তাকিয়ে দেখে এক বৃদ্ধ লোক কান্নাকাটি করতেছে । আশেপাশে কেউ নেই কামাল ভাবতেছে, এই লোকটার কান্নার কারণ কি? সে মনে মনে ভাবল লোকটির কাছে গিয়ে প্রশ্ন করবে । কেন কান্নাকাটি করতেছে আবার ভাবলো যদি কিছু বলে। যাই বলুক না কেন, সে জিজ্ঞেস করবে আসল কারণ কি?
সামনে এসে যখন কামাল মুরুব্বী কে জিজ্ঞাসা করলো আপনি কান্নাকাটি করতেছেন কেন।
কি হয়েছে আপনার আমাকে কি বলবেন । হয়তো আপনার মনের বোঝাটা হালকা হয়ে যাবে। আমিও কিছু পরামর্শ দিতে পারি অথবা কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। লোকটি বলল বাবা ঠিকই বলেছ শিক্ষার কোনো বয়স নাই, শুনবে কেন কান্নাকাটি করতেছি তাহলে শোনো বলতেছি। আমার মেয়ে একটি ছেলেকে ভালোবাসতো, ছেলেটা পাশের গ্রামের পরিচয় দিতো। আমি খোঁজ নিয়ে দেখি নাই, সে আসলে ওই গ্রামের ছেলে কিনা। ছেলেটি আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। আমি মনে মনে ভাবতে ছিলাম যেহেতু দুজন দুজনকে পছন্দ করে । তাহলে একদিন তার বাবা-মার সাথে কথা বলে মেয়েটাকে বিয়ে দেবো। আমি আর বাধা দেইনি যেহেতু ছেলেটি সহজ-সরল নম্র ভদ্র আমার কাছে মনে হয়েছিলো। তাই আমি কিছু বলিনাই । তারপর গতবছর ভালোবাসার দিবসে আমাকে বলল কাকা আপনার মেয়েকে নিয়ে আমি একটু ঘুরতে যাবো। আমাদের স্কুলের মাঠে যাবো। আমি ভাবলাম স্কুলে যাবে, তাতে সমস্যা কি। যাও আবার বেলা থাকতেই চলে এসে। এরপর বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে।
কিন্তু আমার মেয়ে আর বাড়িতে ফিরে না, দেখতে দেখতে রাত্রি যখন নয়টা বাজে তখন দেখি আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছেড়া জামা গায়ে বাড়িতে চলে এসেছে। আমাকে দেখে মেয়ে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয় এবং বলে আমি যাকে ভালবাসি সে একটা চরিত্রহীন । সে মিথ্যা কথা বলে স্কুলের নাম করে একটা বাসায় নিয়ে যায়, বাসায় নিয়ে তিন-চারজন মিলে আমাকে গণধর্ষণ করে। আমি বাড়িতে বলে দিবো বলতেই সবাই মিলে আমাকে অনেক মারধোর করে। আমার কান্নাকাটি শুনে এলাকার লোকজন এসে আমাকে ছাড়িয়ে দেয়। এই বলে মেয়েটা কাঁদতে থাকে। আমারও চোখের জল চলে আসে। আসলে আমি একটি ভুল মানুষকে পছন্দ করেছিলাম। মানুষের বাহিরটা যতো সুন্দর ভিতরটা ততটা না। মানুষের আড়ালে একটা শয়তান লুকিয়ে ছিলো। এরপর ছেলেটির খোঁজ খবর নিয়ে দেখি আসলে ওই গ্রামের ছেলে না। ওই গ্রামের কেউ চিনে না তাকে । এই কারণে আমি আফসোস করতেছি । আবার ভালোবাসা দিবস । নাজানি কোন বাবা মার বুক খালি হয়ে যায়। কতো মেয়ের ইজ্জত নষ্ট হয়ে যায়। কাকার মুখের কথা শুনে আমারও চোখের জল চলে আসে। কামাল ভাবলো আসলেই ভালো মানুষ আজকের সমাজে খুঁজে পাওয়া দায় । চাচাকে সান্ত্বনা দিয়ে কামাল যখন আবার বাজারের দিকে রওনা দিলো।
কিছুদুর সামনে যাওয়ার পর কামাল তার বন্ধু জামালের সাথে দেখা হয় । জামাল বলল কি ব্যাপার দোস্ত এই সাতসকালে কই যাচ্ছিস। কামাল বলল দোস্ত আমি বাজারের দিকে যাচ্ছি। আজকে তো ভালোবাসা দিবস তোর ভাবির জন্য কিছু কেনাকাটা করবো। কামালের কথা শুনে জামাল একটা মুচকি হাসি দিলো। বললো তোর আবার বউয়ের জন্য দরদ আছে। তুইতো রোজই মেয়েটাকে মারিস বিনা কারণে কষ্ট দিস। মেয়েটা মুখ বুজে সব সহ্য করে থাকে ।তাদের মুখের দিকে চেয়ে। সত্যি কথা বলতে কি তোর যদি ছেলে না থাকতো কবেই চলে যেতো। তোকে ছেড়ে তাইতো যায়নি কষ্ট দেওয়ার পরও মেয়েটা তোর কাছে রয়ে গেছে। যাই হোক তবুও যদি তোর একটু মন গলে যায়, এ ভালোবাসার দিনে। মনে রাখিস মানুষের জীবনে প্রতিটা দিনই ভালোবাসার। তুই যখন তোর বউকে বিনা কারণে মারধোর ঝগড়া করিস। তুই একবার ভেবে দেখ, সব দোষ কি তার ছিলো। তাই অতীতের সব ভুলগুলো সংশোধন করে সামনের দিনগুলো কে ভালোবাসা টাকে খুঁজে নে। মনের শান্তি পাবি। আসলেই ভালোবাসা কখনো পড়ে থাকে না । এটা কে খুঁজে নিতে হয় । আপন করে নিতে হয়, তুই একজন মানুষকে যতোটুকু ভালোবাসা দিবি, সেও তার চাইতে দ্বিগুণ দেবার চেষ্টা করবে। তুই একবার মেয়েটাকে ভালোবেসে দেখ। অবশ্যই তার বিনিময়ে নিজের জীবন দিয়ে দিবে। যাইহোক দোস্ত তোকে আমি অনেক কথা শুনিয়ে ফেললাম। কিছু মনে করিস না, পরে হলেও তর ভুল বুঝতে পারছো । এই জন্য আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া । জামাল বলল দোস্ত আমার সামনে কাজ আছে। আমাকে যে যেতে হবে আমি আসি বন্ধু। ভালো থাকিস।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২০/০৭/২০২৩অনুপম
-
মোঃ আমিনুল ইসলাম মিঠু ২৭/০২/২০২২অনন্য সুন্দর লেখা
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২৬/০২/২০২২কী ! অপূর্ব সৃজন !
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২০/০২/২০২২সুন্দর
-
ফয়জুল মহী ১৯/০২/২০২২অসাধারণ লেখনী ..
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ১৯/০২/২০২২ভালোবাসা প্রতিদিনের জন্য সবার তরে।
-
শুভজিৎ বিশ্বাস ১৯/০২/২০২২আসলে ভালোবাসার কোনো দিন হয় না। কিন্তু তবুও লেখাটা অসাধারণ.....