দীর্ঘশ্বাসের মহাকাব্য
প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত আফিস করি; যদিও চাকরিটা পার্টটাইম। এগারো ঘণ্টার জায়গায় তিন ঘণ্টা সময় দিলেও কোনো সমস্যা নেই। তবু সময় কাটানোর জন্য আমার অফুরন্ত সময়টুকু সেখানে দিই। এরপর রাতে ফিরে জয়ন্তীকে পড়াই। ওকে এক ঘন্টা পড়ানোর কথা থাকলেও প্রায়ই কতক্ষণ পড়াচ্ছি তা ভুলে যাই। ওর মা খুশি হন মেয়ের পড়ার উন্নতিতে, আমিও খুশি হই। আমার তো সময়ের কোনো অভাব নেই, বরং সময় কাটানোই আমার সমস্যা। এরপর আসে রাত। আগের মতো আর অমাবস্যা-জোছনার হিসাব রাখি না। রুমে ফিরেই রুমমেটদের সাথে একটু হাসি-ঠাট্টা আর আলাপচারিতা সেরে সারাদিন অপেক্ষমাণ থাকা বিছানায় নির্বোধ আমাকে ছুড়ে দিই। কিন্তু ঘুম আসে না। একে একে রুমের সবার দীর্ঘ নিশ্বাসের শব্দ শোনা যায়, আনিসের এফএম রেডিও ওর ঘুমের মধ্যেই শোনা যায় না এমন শব্দে বাজতে থাকে। ভেতরের ছোট্ট রুম থেকে শুধু কোনো কোনো দিন ফরিদ ভাইয়ের মুঠোফোনের এ প্রান্ত মাতাল প্রেমে সরব থাকে। আর আমি রাতের আঙিনায় ঘুমের আরাধনার রত থাকি। এসবই তোমার কারণে। না, তোমাকে দোষ দেব না। এসবই আমার দোষ, আমার পাগলামি। সামনে অসম্ভবের দেয়াল দেখেও আমি আমার প্রেমের সবকটি নীলপদ্ম তোমার মনের আঙিনায় রেখে দিয়েছি। তুমি সযতন অবহেলায় সকরুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেছ, কিন্তু কখনো আনমনা হও নি। তোমার ইচ্ছাতেই আমার ভালোবাসা আজ দীর্ঘশ্বাসের মহাকাব্য। বিশ্বাস করো এখন আর কিছুই ভালো লাগে না, শুধু মরে যেতে ইচ্ছা করে। কোনো এক চন্দ্ররাতে নীলজোছনায় চন্দ্রদিঘির কালো জলে ডুবে, তোমায় শেষবারের মতো ভালোবাসি বলে আজকাল হাসতে হাসতে মরে যেতে বড় ইচ্ছা হয়...
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইকবাল হাসান ০৮/০৫/২০১৫
-
এস ইসলাম ০৬/০৫/২০১৫জীবন এরকম-ই একথা মেনে নিন। দুখের বোঝা কিছুটা হালকা হবে।
সামনে অসম্ভবের দেয়াল দেখেও আমি আমার প্রেমের সবকটি পদ্ম তোমার মনের আঙ্গিনায় রেখেছি। তুমি সযতন অবহেলায় সকরুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেছ, কিন্তু কখনো আনমনা হওনি......।