মানুষ ও মানবিকতা
প্রিয়জন বেষ্টিত থেকেও মানুষ কখনো কি নিজেকে খুব একা বোধ করে? করে। প্রত্যেক মানুষই তাদের জীবনের একটা অধ্যায়ে এসে ওই একাকীত্ব প্রবল ভাবে অনুভব করে। বিশেষ করে আমাদের বাবা-মায়েরা। যাঁরা তাঁদের পিছনে এক বর্ণিল, কর্ম মূখর অতীত ফেলে এসেছেন।
সংসারে মানব শিশু বড়দের নিরাপদ বেষ্টনীতে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতে থাকে। তারা প্রবল ভাবে নির্ভরশীল হয়। সেই শিশু একদিন বড় হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। মধ্য বয়েসে এসে তাকে কেন্দ্র করে, তার বলয়ে অনেক গুলি মুখ প্রত্যাশায়, সুখে-শান্তিতে, নিরাপদে দিন যাপন করে।
এ হলো একটি অদ্ভুত চক্র। মহাবিশ্ব যে আশ্চর্য শৃঙ্খলে বাঁধা, এই মানব জীবন চক্রও তার ব্যতিক্রম নয়। নক্ষত্র আলোক রশ্মি ছড়াতে ছড়াতে এক সময় দপ্ করে নিভে যায়। কিন্তু ফুরিয়ে যাওয়ার মূহুর্তে নিজের জন্য কোথাও থেকে ওই বিশাল ত্যাজ পুনঃ প্রতিস্থাপন করতে পারেনা। মানুষের জীবনের দিকে তাকালেও তাই দেখতে পাওয়া যায়। যে বড়দের মাঝখানে আমরা নিরাপদ, তাদের নিজস্ব শখ, আহ্লাদ, প্রত্যাশা বলে কিছু নেই। যদি থাকেও, তা সংসারের কল্যাণেই নিহিত।
সংসারের চাকা বছরে ৩৬৫ দিন সচল রাখতে গিয়ে, যে মা-বাবার পিঠে অফিসের চেয়ারের দাগ গভীর খাঁজ কেটে বসে গেছে, যে মা রোজ হাত পুড়িয়ে রান্না ঘরের চুলো সচল রাখছেন, তাঁরা ঐ শ্রমটুকু দেন বলেই বাকীদের বিনোদন/ লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সারাদিন বাসন মেজে সাবানের ক্ষারে যে মায়ের নরম হাতে খড় পড়েছে, অথবা সকাল-সন্ধ্যে বাসে ঝুলে অফিস করে যে বাবার ঘাড়ে, কাঁধে যন্ত্রণা হয়ে গেছে তবু মুখ ফুটে কিছু বলেন না, বরং হাসি মুখে লিচু আর আমের ঝাঁকা সন্তানের হাতে তুলে দেন- সেই ঈশ্বর তুল্য বাবা-মায়ের পূজো মন্দিরের দেবতার আগে হওয়া উচিৎ। কীভাবে? ফুল, নৈবেদ্যের প্রয়োজন নেই। যাদের এটাচড্ বাথ, তারা বাবার ফ্রেশ হওয়ার জলটা বালতিতে ভরে রাখতে পারেন। খাওয়ার পরে একটু হাত লাগিয়ে অন্তত নিজেদের প্লেট গুলিও ধুয়ে ফেলতে পারেন। একটু পেইন রিলিফ অয়েইনমেন্ট বাবার পিঠে, পায়ে লাগিয়ে দিন। আমাদের এইটুকু যত্ন তাঁদেরকে কখনোই একাকী বোধ করতে দেবেনা।
©সুব্রত ব্রহ্ম
subrata/tulip.bd2016
১৫ই জুন, ২০১৬ইং
ময়মনসিংহ।
সংসারে মানব শিশু বড়দের নিরাপদ বেষ্টনীতে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতে থাকে। তারা প্রবল ভাবে নির্ভরশীল হয়। সেই শিশু একদিন বড় হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। মধ্য বয়েসে এসে তাকে কেন্দ্র করে, তার বলয়ে অনেক গুলি মুখ প্রত্যাশায়, সুখে-শান্তিতে, নিরাপদে দিন যাপন করে।
এ হলো একটি অদ্ভুত চক্র। মহাবিশ্ব যে আশ্চর্য শৃঙ্খলে বাঁধা, এই মানব জীবন চক্রও তার ব্যতিক্রম নয়। নক্ষত্র আলোক রশ্মি ছড়াতে ছড়াতে এক সময় দপ্ করে নিভে যায়। কিন্তু ফুরিয়ে যাওয়ার মূহুর্তে নিজের জন্য কোথাও থেকে ওই বিশাল ত্যাজ পুনঃ প্রতিস্থাপন করতে পারেনা। মানুষের জীবনের দিকে তাকালেও তাই দেখতে পাওয়া যায়। যে বড়দের মাঝখানে আমরা নিরাপদ, তাদের নিজস্ব শখ, আহ্লাদ, প্রত্যাশা বলে কিছু নেই। যদি থাকেও, তা সংসারের কল্যাণেই নিহিত।
সংসারের চাকা বছরে ৩৬৫ দিন সচল রাখতে গিয়ে, যে মা-বাবার পিঠে অফিসের চেয়ারের দাগ গভীর খাঁজ কেটে বসে গেছে, যে মা রোজ হাত পুড়িয়ে রান্না ঘরের চুলো সচল রাখছেন, তাঁরা ঐ শ্রমটুকু দেন বলেই বাকীদের বিনোদন/ লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সারাদিন বাসন মেজে সাবানের ক্ষারে যে মায়ের নরম হাতে খড় পড়েছে, অথবা সকাল-সন্ধ্যে বাসে ঝুলে অফিস করে যে বাবার ঘাড়ে, কাঁধে যন্ত্রণা হয়ে গেছে তবু মুখ ফুটে কিছু বলেন না, বরং হাসি মুখে লিচু আর আমের ঝাঁকা সন্তানের হাতে তুলে দেন- সেই ঈশ্বর তুল্য বাবা-মায়ের পূজো মন্দিরের দেবতার আগে হওয়া উচিৎ। কীভাবে? ফুল, নৈবেদ্যের প্রয়োজন নেই। যাদের এটাচড্ বাথ, তারা বাবার ফ্রেশ হওয়ার জলটা বালতিতে ভরে রাখতে পারেন। খাওয়ার পরে একটু হাত লাগিয়ে অন্তত নিজেদের প্লেট গুলিও ধুয়ে ফেলতে পারেন। একটু পেইন রিলিফ অয়েইনমেন্ট বাবার পিঠে, পায়ে লাগিয়ে দিন। আমাদের এইটুকু যত্ন তাঁদেরকে কখনোই একাকী বোধ করতে দেবেনা।
©সুব্রত ব্রহ্ম
subrata/tulip.bd2016
১৫ই জুন, ২০১৬ইং
ময়মনসিংহ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৯/০১/২০১৮সুন্দর ভাবনার প্রকাশ।