কবিতার ভাব সাগর
গুনাগুন বুঝিয়া মাপ পরিমান শব্দের গাথুনি দিয়া ছন্দ ও ভাবের মসৃণতায় তাহার মোহ সুবাস হৃদয় আকাশে ছড়াইয়া দেয়ার নামই কবিতা। বাকরুদ্ধ তিলোত্তমা নাচাইয়া নিল বটে তবে তাহা শব্দহীনে জব্দ করিয়া। তাহার তাল পাইয়া বেতালে মগ্ন হইয়া, নিজেকে ভাব সাগরে হারাইয়া ফেলিয়াছি। নয়ন ডাগরে কথামালার ফুলঝুরির ঢেউ, ধেয়ে আসিলে তাহাতে নিজেকে ভাসাইয়া কবিতার ভাব সাগরে নিজেকে সমর্পণ করিলেই কবিতার কাঠামো তৈরি হইয়া যায়। বিষকে সাধন করিয়া শরবত পেয়ালায় ভরিয়া, রক্ত ঠোঁটে পান করিয়া তাহার যন্ত্রণাকে গলায় মালা রুপে পরিয়াছি। যাহা ক্ষণে ক্ষণে শুকিয়া যায়, জ্বলিয়া যায়, আবার ক্ষণে ক্ষণে হৃদয় তরঙ্গে নিস্তরঙ্গে খেলিয়া মিলিয়া যায়। নির্জন নিশিতে সর্পের মোচড়ানো স্বভাব লইয়া তাহার অত্যাচারও বাড়িয়া যায়। তাহা শত রুপে প্রেমের আবদার করিলে সকল কবি বোধহয় পাগল হইয়া যাইবার উপক্রম হয় তিলোত্তমা? তাহা না হইলে গৃহে নির্জন বাস করিয়া কাহাকে খুশি করিবার সাধনা করে তিলোত্তমা? সে তুমি ঘাড়ে যতই চাপিয়া থাক তাহাতে কবির কোন আপত্তি নাই ক্ষণে ক্ষণে নাগিনী রুপে ফোঁস ফোঁস করিও না। ফণা তুলিলে কবিতার খাতাখানি পুড়িয়া যায় ওই বিষাক্ত নিশ্বাসে যতক্ষণ না, বাহিরে ছাড়িয়া অভিশাপ মুক্ত হই। লোকে কহিয়া বেড়ায় আমি শুকনো বাঁকল প্রেমহীন কবি, রসের কোন বালাই নাই। কবির হৃদয়ে যে কবিতাখানি চাঁদের ফালির মত আসন পাতিয়া, সুপ্ত জগত মাতাইয়া অপরুপ শোভায় আলো ছড়াইতেছে, সুবাসে মন ভরাইতেছে, সুরে মন প্রাণ নাচাইতেছে, অঝোর ধারায় ঝর্নায় মিষ্ট মধুর রস বহিতেছে, তাহারা তাহা দেখিবে কি রুপে? ছায়ার মায়া খেলা করে বলিয়াই কি তোমার তরে আমারে সঁপিয়া দিয়া যুদ্ধকে আলিঙ্গন করিয়াছি। অভিমান করিলে? জলের প্রবাহ নদীর কূল উপচাইয়া পড়িলে বালুর বাঁধ কোন কাজে আসিবে? কাউকে অন্দর মহলে প্রবেশ করিতে দেব না বলিয়া যদি বরফের দেয়াল তুলি আর তাহার উপরে সূর্য কিরণ পড়িলে কি অবস্থা হইবে? বাঁধ দিয়াছি অনেক, যাহা যুদ্ধের সমতুল্য কিন্তু কোনটাই উপকারে আসে নাই। অবশেষে এক রূপে বাধ্য হইয়া তোমার আঁধার রুপ ঠেলিয়া গহীনে পদার্পণ করিতেই কোকিলের ডাক, রাখালের বাঁশির সুর শুনিয়া, হরিণের নির্ভয় চাতক চোখের চাহনি দেখিয়া মোহছন্ন হইয়া আজি নির্ঘুম নিশি কাটাইতেছি। ঘোলাটে নয়নে ঘোর নেশার বুদবুদ হৃদয় গহীনে তাপহীন শক্তি দিয়া পোড়াইয়া যাইতেছে। মরুর বালক হইয়া বালুকণাকে দামি পাথর ভাবিয়া হৃদয়ের অন্দর মহল সবুজ পল্লবে সাজাইয়া তুলিয়াছি। যেথায় তোমার নুপুর পায়ের ঝুনঝুন আওয়াজের বিরামহীন নৃত্য দেখিবার অভিলাষ, অন্ত দিনের বিদায় লগ্ন ঘনিয়া আসিবার পূর্ব পর্যন্ত। প্রফুল্ল মনে বরণ করিয়া নাও, নিরাশ করিও না তিলোত্তমা!!!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ২৫/০২/২০১৮বেশ লিখেছেন।