www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বিশ্বস্ত একটা হাত

বিশ্বস্ত একটা হাত
==========================@@@

আমার বাবা ছিলেন একজন শিক্ষক।
বেশ ছোট তখন -
কাঁধে করে স্কুলে নিয়ে যেতেন তিনি আমাকে,
কখনো কখনো হাত ধরে হেঁটে।
প্রশ্নে প্রশ্নে অতিষ্ট করে তুললেও
ক্ষণিক রাগ করতে দেখিনি তাকে কোনদিন।
এখনও মনে আছে-
পথ চলতে গিয়ে তর্জনীটা যখন ধরতাম
নিজেকে জগতের ভীষণ শ্রেষ্ঠ মানুষ বলে মনে হতো,
নবাবজাদা, সাহেবজাদা কেউ যেন সেই মানুষটার
কিঞ্চিতও তুল্য নয়।
তারপর -----

আমি সর্বগুনে সামর্থবান, বাবা যথেষ্ট বৃদ্ধ।
একদিন খেয়াল করে দেখি -
চলতে ফিরতে অসহায় বোধ করছেন তিনি।
বুঝে এ বয়সের ভার
একটা লাঠি কিনে তার হাতে দিয়ে বলেছিলাম -
’এটার সাহায্য নিও বাবা! দেখবে হোঁচট খাওয়ার
সম্ভবনা একেবারেই কমে গেছে!’
হাতে নিয়ে হেসেছিলেন তিনি।

আজ বাবা নেই।
মনের মাঝে একটা প্রশ্ন প্রতিনিয়ত ঘুরপাকা খায় -
কেন সেদিন লাঠিটা দিয়েই
নিজেকে মহা দায়িত্বশীল মনে করেছিলাম?
কেন তারপর কোনদিনও তাকে বলিনি -
‘লাঠিটা থাক না বাবা! আমিই তোমাকে হাত ধরে
বাজারে নিয়ে যাবো আজকে।’
সহজেই বুঝতে পারি -
সেদিন লাঠিটা পেয়ে তিনি খুশি হয়েছিলেন সত্য
তবে সে’ খুশির আড়ালে লুকিয়ে রেখেছিলেন
আস্থাধারী বাহক না পাওয়ার এক গুমড়ানো আর্তনাদ।

নিশ্চয় অনেকেরই বেঁচে আছেন বৃদ্ধ পিতা-মাতা।
অনুরোধ রইল, আমার মতো ভুল করে কেউ
অনুতাপের বোঝা বাড়াবেন না।
দ্বিধা সংকোচ ফেলে সময় থাকতে অন্ততঃ একবার
লাঠি হয়ে অথবা কাঁধে হাত রেখে দেখুন -
ছোটবেলায় তর্জনীটা ধরে শুধু অবাক হয়েছিলেন আপনি
আর আজ দুনিয়াটাই অবাক হয়ে চেয়ে রবে আপনার পানে
সাথে আছে বলে ‘বিশ্বস্ত একটা হাত!’
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৬৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০২/০৬/২০২৩

মন্তব্যসমূহ

  • বেশ ভালো লেখা
  • পরিতোষ ভৌমিক ২ ২৪/০৬/২০২৩
    নিজেকে জগতের ভীষন শ্রেষ্ঠ...............এই লাইন দুটো ঠিক বোধগম্য হলনা ।
  • চোখে জল এসে গেল
 
Quantcast