www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাজনীতির প্রেক্ষাপটে শালিনতা

রাজনীতির প্রেক্ষাপটে শালিনতা ঃ-বিশ্বনাথ\বন্দ্যোপাধ্যায় ।
বর্তমানে বিদেশ ছেড়ে দেশে ও আমাদের রাজ্যে নারীর প্রতি অশালিনতা প্রদর্শন এবং অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষন একটা প্রায়
স্বাভাবিক দৈনন্দিন ঘটনা হয়ে উঠেছে আর তাই নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ তুঙ্গে ।কারো কারো মত এখন যেন এটা একটা
আশ্চর্যজনক নূতন ঘটনা ।যদিও আজকের অসংখ্য বৈদ্যূতিন মাধ্যম ও রাজনীতির সহায়তায় এটিী গোপনীয়তার গন্ডী
ভেদ করে প্রকাশ্যে এসে আলোড়ন তুলছে, পূর্বে এগুলির অভাবে ও সামাজিক গোপনীয়তার জন্য তেমন প্রকাশ্যেআসেনি ,
কিন্তু ঘটনা থেমে থাকেনি ।তখন প্রকাশের ক্ষেত্রে নানারূপ বাধা থাকায় এবং মানুষ এই লজ্জাজনক ঘটনা প্রকাশে সঙ্কোচ বোধ
করায় এসব ঘটনা নথিভূক্ত হোত না এবং ঐ অঞ্চলেই তার একটা সমাধানসূত্রে তার ফয়সালা হয়ে গেলে তা মানুষ বিস্মৃত হোত
বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলি শাসকদলের বিরুদ্ধে এই ঘটনাগুলিকে প্রশাসনিক ব্যর্থনা হিসাবে তুলে ধ’রে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে,
(সহায়ক মাধ্যমগুলির সহায়তায়) বাচিক আন্দোলনে ও পথঘাটে আন্দোলনে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারে মত্ত হয় ,নিজেদের সন্তানাদির চরিত্রগঠনে তাঁদের সামাজিকদায়িত্বের কথা ভূলে যান । এতে কিছু রাজনৈতিক লাভহলেওযে সামাজিক বহু ক্ষতি সাধিত হয়ওতার জন্য যে তাঁরাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের অপরাধীতে পর্য্যবশিত করেন তা বুঝেৈও রাজনৈতিক লাভের পত্যশায় বিরত হন না । এইসব তথাকথিত নেতাদের দ্বারা প্রত্যক্ষ ওপরোক্ষভাবে অনুপ্রাণিত হ’য়ে এইসব দুষ্কর্মে লিপ্ত হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় যতনা দলকে লাভবানকরতে তার চেয়ে বেশী এই অছিলায় নিজেদের কুৎসিতলালসা চরিতার্থ করত উদোগী হয় অনেকঅতি ঊৎসাহী সমর্থক আবার নিজ দলৃর এক্ষেত্রেপ্রশানিকব্রর্থনার কথা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে স্বেচ্ছাায়এধরণেরকাজে লিপ্ত হয়ে পচারে আসতেচান ।।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে প্রকৃতিগত কারণে জীবজগতে পরস্পর বিপরীত লিঙ্গে একটা আকর্ষণ আছে আর তা
সভ্যতাবিকাশের সাথে সাথে কিছু সামাজিক নীতির মধ্যে আবদ্ধ করে এই আকর্ষণকে নিয়ন্ত্রিত করা হহেছে ।তাই শাস্ত্রে
নারীকে মাতৃস্থানিয়া করে এই যৌনক্ষুধাকে দমিত করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে ,তবু এতে সম্পূর্ণ কাজ হয়নি ,তাই দেবলোকেও
উর্বষী ,মেনকা ,রম্ভাদের আনতে হয়েছে ।আবার ত্রিলোকের সর্বত্র সবসময় বিজেতা শক্তি পরাজিতপক্ষের নারীদের ভোগ্যাহিসাবে
ব্যবহার করে এসেছে, তাই মহিষাসুর থেকে হিরণ্যকশিপু,দুর্যোধন ,তৈমুর লঙ ,এমন কি নীলকর সাহেব রা ,জমিদাররা ,একাজ
করে এসেছে ।বর্তমানেও ক্ষমতাবান রাজনীতিকরাও এই সুযোগ গ্রহণ করে চলেছেন ।কোন কোন নেতাতো তাঁর স্তাবক ও
সমর্থকদের এধরণের অপরাধকে উদাসীনভাবে এরিয়ে গিয়ে পক্ষান্তরে সমর্থনই করে চলেন । তাঁদের কয়েকজনের কাছে
সমর্থনের কারণ জানতে চাইলে বলেন ওদের ওতো শারীরিক ক্ষুধা আছে কিন্তু তারা কেউ বেকার ,কারো রোজগার বিয়ে
করে সংসারপালনের উপযুক্ত নয় ;আবার বাসবদত্তা ,রাজলক্ষী ,প্রমুখ গণিকাদে (সমাজের স্বার্থেই যাদের অধিষ্ঠান )কাছে
যাবার মত অর্থও তাদের নাই অথচ যৌনক্ষুধা বর্তমান , তাদের কাছে “বীরভোগ্যা নারী ”নীতিই সম্বল ।একে নিয়ন্ত্রণ করার
ক্ষমতা সব প্রশাসনেরই সাধ্যাতীত ;একমাত্র সংশ্লিষ্ট পরিবার ও পরিবারই পারে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ,শিক্ষার প্রসার তাতে কিছু
সহায়তা করতে পারে মাত্র ।তবে এই অতি প্রাচীন অপরাধ পদ্ধতি প্রতিহত করা সময়সাপেক্ষ এবং বিচার পদ্ধতির সংস্কারনির্ভর ।
প্রসঙ্গত এই অপরাধ বিস্তার পশ্চাতে রাজনীতি তার জন্মকাল থেকেই কাজ করে আসছে ,তার বহু প্রমাণ শিল্পে ও সাহিত্যে উপস্থিত ।
আনুমানিক খৃষ্টপূর্ব ৭৫০অব্দে রোম মৃষ্টির সময় সেখানকার প্রাচীন অধিবাসী স্যাবাইনাদের মেয়েদের লুণ্ঠন সামগ্রী হিসাবে ভোগ করতে
আদেশ দেন সম্রাট রোমুলাস ,এই উপভোগের কুদৃশ্য বহু বৎসর(১৭০০ প্রায় )ভাস্কর বোলেগোনা ছেনির কৌশলে তুলে ধরে আলোড়ন
সৃষ্টি করেন ।তারপর থেকে দেশে বিদেশে নানা ভাস্কর্যে ,চিত্রে ,আলোকচিত্রে ও বর্তমানে চলচ্চিত্রে এরূপ বহুদৃশ্য (কুদৃশ্য )মানুষকে
প্রভাবিত করে চলেছে । ধ্রুপদী সাহিত্য থেকে সুরু করে বর্তমান বাংলা সাহিত্যের বহু গল্প –উপন্যাসে ধর্ষণ কাণ্ডের বহু বর্ণনা দেখা যায় । উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ধরা যায় রবীন্দ্রনাথের “যোগাযোগ “উপন্যাসের মধুসূদন –কুমু কান্ডে ,বিভূতিভূষণের(বন্দ্যোপাধ্যায় )”অথৈ জল “ এর পান্না ও শশাঙ্কর কাজে ,মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “চতুষ্কোণ ‘এ ,”অহিংসা “উপন্যাসে আশ্রমগুরু সদানন্দের মাধবীলতাকে উপভোগ
কাহিনীমধ্যে ,রমেশ চন্দ্র সেনের গণিকালয় বিষয়ক প্রথম মৌলিক উপন্যাস “কাজল “ ,সমরেশ বসুর “বিবর “<” প্রজাপতি “উপন্যাসে ,
আর মহেশ্বেতা দেবীর “আঁধারমানিক ‘ও “শ্রী শ্রীগণেশ মহিমা “উপন্যাসে এবং প্রফুল্লরায়ের “আকাশের নীচে মানুষ ‘উপন্যাসে ভূমিদাসী
মেয়েদের উপভোগের অধিকার(জমিদার শ্রেণীর )আমাদের আলোড়িত ও ভাবিত করে। তবে দেশে শিক্ষার হার কম থাকায় এবং
গল্প উপন্যাস প্রভৃতি গ্রন্থপাঠের অভ্যাস বেশী লোকের না থাকায় এসব গ্রন্থের কাহিনীর কুপ্রভাব তেমন ব্যাপক নয় ,সংবাদপত্রগুলির
রাজৈতিক কারণে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের সংবাদ অতি উৎসাহে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করার কারণে এইকান্ডে নিয়োজিত দুষ্কৃতীদের
মনে একটা আস্ফালন গড়ে উঠতে সাহায্য করায় সামাজিক পরিবেশ অত্যন্ত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, সেকারণ সংবাদ প্রকাশকদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন আর পরিবারের কর্তাদর তাঁদের ছেলেমেয়েদর গতিবিধির উপর নজর রাখা একান্ত দরকার ।
এই পরিস্থিতিকে জটিল এবং আরও ভয়াবহ করে তুলছে বৈদ্যূতিন মাধ্যমগুলি । কারণ তাদের প্রদরশিত ধারাবাহিকগুলি
যেমন “খেলা ‘,”রাজপথ “,”বহণিশিখা” ,”কে তুমি নন্দিনী “,”কেয়া পাতার নৌকা “,”রাশি “,”সাত পাকে বাঁধা “প্রভৃতিতে ধর্ষণকান্ডের
প্রাকমুহূর্ত্ত যেভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে তাতে সাধারণে ,এমনকী নাবালকরাও প্রভাবিত হচ্ছে ,কৌতুকবশে এরূপ জঘন্য ঘৃণ্যকাজ করছে ।
এগুলি প্রতিহত করা আশু প্রয়োজন ।আর বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করে বিচারের দ্রুত নিষ্পত্তি ও কঠিন সাজার প্রয়োজন আর রাজনৈতিক
ফায়দা লুটতে যারাপ্রশাসনকে বেকায়দায় ফেলতে এগুলি ঘটতে ও প্রচার করতে উৎসাহ দিচ্ছেন তাদের বোঝা উচিত এই পরিবেশ থেকে
তাদের পরিবারেরও পরাত্রাণ নাই কারণ সামাজিক পরিবেশ দূষিত হলে তা সমাজের সকলেরই বিপদ ঘটায় ,ক্ষতি করে ।সুতরাং সমাজের একাংশ হয়ে তাঁদের এটিকে রাজনতিক অ্স্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা যুক্তিযুক্ত নয়,কারণ তার প্রভাব নিজেদের ছেলেদের মধ্যেও সহজে সঞ্চারিত হবে ৷
--------------------------------------------------------------------------------------------
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৩৮২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/১০/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast