ভদ্র চোর
সাব্বিরকে শোভন ফোন দিয়ে বলল যে- তোদের ওখানে কাল বেড়াতে যাবো। অনেকদিন তোদের সাথে দেখা হয় না। সাব্বির না করলো না। বলল- ঠিক আছে চলে আয়। শুক্রবার সকাল বেলা শোভন তার এক বন্ধুকে নিয়ে বেড়াতে আসলো। অনেকদিন পর সাব্বির ওদেরকে পেয়ে খুব খুঁশি হল। শোভন সাব্বির থেকে দুই বৎসরের ছোট। কিন্তু দেখতে তা মনে হয় না। ওদের পরিবারের সাথে সাব্বিরদের পরিবারের একটা ভাল সম্পর্ক আছে। সে সূত্র ধরে সাব্বির ও শোভনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। যাইহোক, যেদিন তারা বেড়াতে আসলো, সেদিন সাব্বির ওদেরকে অনেক জায়গায় মোটরসাইকেলে করে ঘুড়িয়েছে। এমনকি জুম্মার নামাজ পর্যন্ত পড়েনি। ঘুড়া শেষে সাব্বিরদের বাসায় এসে শোভন ও তার বন্ধু মিলে টিভি দেখছিল। এরমধ্যে সাব্বিরের চার-পাঁচজন কাজিন বাসায় আসলো। সবাই মিলে মজা করছিল। সাব্বিরের এক কাজিন বলল, চল আমরা ক্যারাম খেলি। সবাই রাজি হয়ে গেল। কিন্তু শোভন ও তার বন্ধুর খেলার প্রতি কোন আগ্রহ নেই। ওরা টিভি দেখবে। সাব্বির ওর কাজিনদের সাথে কথা বলতে চলে গেল। সাব্বিরের বড় ভাই খেলতে যায়নি। সে ওদের সাথে কথা বলতেছিল। কে কি করে এই নিয়ে কথা হচ্ছে। কিছুক্ষণ কথা বলে উনিও খেলা দেখতে চলে গেলেন। অনেকক্ষণ পরে সাব্বিরের বড় ভাই নিচে নামল। তার মাকে বলল- সবাইকে খাবার দিতে। কিন্তু এরমধ্যে শোভন ও তার বন্ধুর খাওয়া শেষ হয়ে গেছে। সাব্বির ওদেরকে সেবা যত্ম করেছে। সাব্বিরের বড় ভাই এ ঘটনায় আশ্চর্য হয়ে গেল। কেননা তারা এখনও কেউ খায়নি, কিন্তু ওরা ওদেরকে ফেলে কিভাবে খেল! সাব্বিরের বড় ভাই ওদের এই কথাই জিজ্ঞেস করলো। সাব্বির বলল- ভাইয়া ওরা আরেক জায়গায় যাবে। তাই তারা আগেই খেয়েছে। শোভনরা চলে গেল। যাওয়ার আগে সাব্বিরের মায়ের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা চেয়ে নিয়ে গেল। বিকাশ করে পরে টাকা পাঠিয়ে দেবে। সন্ধ্যার পর সাব্বিরের কাজিনরাও চলে গেল। সাব্বিরের বড় ভাই মোবা্ইল খুঁজে পাচ্ছেনা। মোবাইল চার্জে দেয়া ছিল। সাড়া ঘরে খুঁজেছে কিন্তু কোথাও মোবাইল নেই। অনেক শখ করে মোবাইলটি সে কিনেছিল। কিন্তু মোবাইলটি না পেয়ে সে খুব হতাশ হল। সাব্বিরের বড় ভাই তার ভাগিনাকে বলল- মামা তুমি মোবাইল দেখেছো। সাজিদ যে উত্তর দিল তা শুনে সবাই হতবম্ব হয়ে গেল। মোবাইল ফোন চার্জ থেকে খুলে শোভন ও তার বন্ধু গেইম খেলেছে। মোবাইলে সিম ছিল না। অন্য মোবাইলের সিম এ মোবাইলে লাগিয়ে দেখেছে মোবাইল ঠিক আছে কিনা। সাজিদ বলেছিল মামার সেট চার্জ দিয়ে রাখেন, না হলে মামা রাগ করবে। তারা বলেছিল গেইম খেলা শেষ হলে মোবাইল চার্জে দিয়ে দেব। সাব্বিরের বড় বুঝতে পারলো ওর মোবাইল তারাই নিয়েছে। কিন্তু সাব্বির বিশ্বাস করতে পারছেনা, কিভাবে তারা এই কাজটা করতে পারলো। সে আবার পুরো ঘর দেখতে লাগল। যদি মোবাইল পেয়ে যায়। কিন্তু মোবাইলতো আর পাওয়া যাবেনা। কারণ তারা বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েছে। সাব্বির এখনও ভাবে কিভাবে তারা এ কাজটা করলো। সে সিদ্ধান্ত নিল, এখন থেকে আর কাউকে বিশ্বাস করবে না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৮/১০/২০১৪ভদ্র চোর নামটা মেনে নিতে পারছি না। বিশ্বাষঘাতক বলা যেতে পারে।
-
পার্থ সাহা ১৭/১০/২০১৪vlo
-
শিমুল শুভ্র ১৭/১০/২০১৪বেশ ভালো লাগলো ।