www.tarunyo.com

নারী ও তার কর্মস্থল এবং কিছু কুরুচিপূর্ণ অস্বাভাবিক মানুষ

আপনার বোন, স্ত্রী অথবা যেই হোক... সে কি তার চাকরিরত প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ? হয়তো নিরাপদ।
কিন্তু মানুষরুপি কিছু শয়তান আছেন যারা বস হবার সুযোগ নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেকেই অনেক কিছু হারিয়ে অবশেষে আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি।

[এমনই একটি কাল্পনিক (বাস্তবও হতে পারে) সুইসাইড নোট অথবা বলতে পারেন প্যাকেজ নাটকের থিম নিচে লেখার চেষ্টা করলাম মাত্র]

'আমি রিশা। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট অফিসে চাকরি করি। দেখতে তেমন সুন্দর না হলেও বস প্রায়ই আমার প্রশংশা করেন। জীবনের প্রথম চাকরি হবার কারনে আমি ভেবেছিলাম, বাবা/চাচার বয়সী বস হয়তো নিজের মেয়ে ভেবেই এভাবে বলেন। তিনি প্রায়ই অফিস শেষ হবার পর অতিরিক্ত একটা ফাইল হাতে ধরিয়ে বলে একটু ফাইলটা দেখে দাও। আমিও প্রথম প্রথম খারাপ কিছু না ভেবেই সরল মনে কাজগুলি করতাম। মাঝে মাঝে কাজ শেষ হতে কিছুটা রাত হলে বস বলতো একা একা যেতে সমস্যা হবে, চলো তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। আমি রাজি হতাম না। একদিন সে প্রায় জোর করেই আমার রিক্সায় উঠে গেলো। আমার কিছুটা অস্বস্তি লাগলেও কিছু বলতে পারিনি। একদিন অফিসের কাজ আছে বলে আমাকে নিয়ে বের হলেন তিনি। আমার সবে মাত্র তিন মাস চাকরির বয়স। এখনো সব কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। বসের সাথে যাবার সময় তিনি হঠাৎ করে আমার হাটুতে সামান্য স্পর্শ করেছিলেন। আমি ভেবেছিলাম হয়তো অসাবধানতার কারণে এমন হয়েছিলো। বস বিভিন্ন সময়ে আমাকে তার কাচ ঘেরা ঘরে আমাকে ডাকতেন। মাঝে মাঝে বলতেন, আজ আমাকে নাকি সুন্দর লাগছে, চেহারায় ফ্রেশনেস আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। গাড় লাল লিপস্টিক কখনোই আমার পছন্দ ছিলো না। তবুও সেটা দেবার জন্য বাধ্য করতেন বস।
একদিন বস আমাকে অফিসের কাজে অন্য একটা ডিস্ট্রিক্টে তার সাথে যেতে বললেন। সাথে অফিসের আরো একজন সফর সংগী ছিলো বলে ব্যাপারটা আমি স্বাভাবিকই নিয়েছিলাম। বাসায় মায়ের আপত্তি থাকার পরেও আমি সেই ট্যুর এটেন্ড করি। আর আমি সেই দিনই বসের রিক্সা করে এগিয়ে দেওয়া, সুন্দর সুন্দর প্রশংসার কারণ বুঝতে পারি।
পুরুষের দু'হাতের জোরের কাছে, শক্তির কাছে সেদিন আমি পরাজিত হই। নিরুপায় হয়েই আমাকে অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। রাগে, ঘৃণায় আমি চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি ঠিকই।
সেই অসুরের শক্তিতে পরাজিত হবার পর আজ দুই মাস অতিক্রম করেছি। আজই জানতে পারলাম আমি পিতৃ পরিচয়হীন (যদিও আমি সেই পিশাচের নাম জানি) কোন এক সন্তানের মা হতে চলেছি।
আজ থেকে এই সমাজকে আমি ঘৃণা করি। পৃথিবীর যত কিছুকে আমি সহজ-সরল করে দেখেছি তা যে আমার সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো তা আজ বুঝতে পেরেছি। কিন্তু আর সময় নেই, জীবনটাকে আর শোধরাবার সময়ও নেই। যদিও আমি পারি, এই ভুলটাকে গোপন রেখে আবার নতুন করে শুরু করতে। তবু আমি তা করবো না। আমি চাইনা, আমি অন্য একজনকে ঠকাই। আমি চাই, আমার সরলতার শাস্তি হোক। তাই, নিজের ফাঁসি আজ নিজেই কার্যকর করছি।
ইতি....
রিশা
-আজনাদ (অনুগদ্য- ০১)
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৫৪২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৯/০৬/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast