www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ছেলেবেলা ঃ ইচ্ছের সময় ও সমাজ ব্যাবস্থা এবং আজ

ছেলেবেলা ঃ ইচ্ছের সময় ও সমাজ ব্যাবস্থা এবং আজ
ইচ্ছা-
-আহসান হাবীব
মনারে মনা কোথায় যাস?
বিলের ধারে কাটব ঘাস।
ঘাস কি হবে?
বেচব কাল,
চিকন সুতোর কিনব জাল।
জাল কি হবে?
নদীর বাঁকে
মাছ ধরব ঝাঁকে ঝাঁকে।
মাছ কি হবে?
বেচব হাটে,
কিনব শাড়ি পাটে পাটে।
বোনকে দেব পাটের শাড়ি,
মাকে দেব রঙ্গিন হাঁড়ি।

সেই ছেলেবেলায় আহসান হাবীব এর মনমুগ্ধকর রচনা ‘ইচ্ছে’ কে না পড়েছে । কবি তার কবি মনের ভাব অসাধারণ কল্পনার তুলিতে চিত্রায়ন করেছেন । কবি কবিতায় মনার ইচ্ছে গুলকে নিজের মনের মাধুরী মিশিয়া সম্পূর্ণ করেছেন । বিলের ধার , ঘাস কাটা , জাল কেনা , শাড়ি , হাড়ি , নদীর বাঁক এবং হাট মোটামুটি চোখ বুজলেই একটা সম্পূর্ণ গ্রাম ও তার সমাজ কাঠামো ( ভিত্তি এবং উপরি কাঠামো ) , সমাজ ব্যাবস্থা তথা সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন এবং সমায় কালকে সুনিপুণ সূক্ষ্ম ভাবে লিখেছেন তার কবিতায় ।
কবিতাটি একবার ভালো করে লক্ষ্য করলেই দেখা যায় সেখানে বিলের ধারে ঘাস কাটা , হাটে বিক্রয় করা , নদীর বাকে মাছ ধরা , চিকন ছুতোর জাল ইত্যাদি । এ সেই সময়ের কথা যখনও ইঞ্জিনের খটখট আওয়াজ , যান্ত্রিকতা তথা যন্ত্রমনবের উদ্ভব হয় নি ।এটি বাংলার তথা পুরো ভারত উপমাদেশে সোনালি সময় যা তিন হাজারেরও বেশি সময় অবধি বিদ্ধমান ছিল।
বাজার ব্যবস্থা ছিল মুখোমুখি এবং হাট ছিল ব্যবসায়ের তথা বাজারের মাধ্যম । যাতায়াত ছিল নদী কিংবা গরুরগাড়ি ‘কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি বোঝাই করা কলশি হাড়ি’। কামার , কুমোর , ছুতার , জেলে , নাপিত , কৃষক , গাছি , রাখাল ইত্যাদি হস্ত শিল্প ছিল সেই সময়ের প্রধান পেশা ।
মানুষ ছিল সুখী ও পরোপকারী এবং শান্তি পরায়ণ , সমৃধও ছিল বটে । শেষ টাও কবির ভাষা দিয়ে “এক বার যেতে দেনা আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়, যেথায় কোকিল ডাকে কুহু ”।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৭৩৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৯/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ভীষণ ভীষণ ভালো লাগল। হৃদয়ের টানটা দারুন। এগিয়ে নিয়ে চলুন। লিখতে থাকুন। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
 
Quantcast