সমস্যা কি আমাদের ডি এন এ তে
কলেজ জীবনে অমিয় চক্রবর্তীর "বাংলাদেশ" কবিতাটি পড়েছিলাম। খুব সম্ভবত প্রথম প্যারার একটি লাইন ছিল "বানী শোনে প্রত্যাহিক- বহু মিশ্র প্রাণের সংসারে" ।
কবি অস্বীকার করেননি এদেশের সূচনার ইতিহাস কে। তাই আমি ছোকরা ও সাহস পেয়ে গেলাম।
এদেশে ডাচ, পর্তুগীজ, ইংরেজ, পাকিস্তানি...... শাসন করে গেছে। সে কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। এদেশের বিভিন্ন বর্ণের মানুষ সে পরিচয় বহন করে। ইতিহাসবেত্তাদের মতে, সমগ্র ভারতবর্ষে যত বর্ণের মানুষ পাওয়া যায় ( সাদা, কালো, শ্যামলা, বাদামী, বেটে, লম্বা, গড় উচ্চতা ইত্যাদি) তা অন্য কোন দেশে পাওয়া যায় না। সুতরাং কবি, বিজ্ঞানী, ইতিহাস সবার মতকে একত্র করলে যে সত্যটা পাওয়া যায়- তা লজ্জাজনক হলেও অস্বীকার করার উপায় নেই যে আমাদের এই জাতীতে বহু মিশ্র ডি এন এ জড়িয়ে আছে।
এই ডি এন এ এর ভূমিকা একজন মানুষের মস্তিষ্ক গঠনে এতটাই মুখ্য যে, এটি মানুষের স্বাভাবিক মনুষ্যত্ববোধকেও পরিবর্তন করে ফেলে।
একটা সাধারন উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা পরিষ্কার করিঃ পশ্চিমা বিশ্বের দেশ গুলোতে (বিশেষ করে আমেরিকা) একজন মা তার সন্তান কে মাতৃদুগ্ধ পান করান না- তাদের শরীর কাঠামো নষ্ট হয়ে যাবে বলে, এবং খুব ছোট বেলা থেকেই বাচ্চা গুলোকে চাইল্ড হোমে ভর্তি করিয়ে দেন (বেবি কেয়ার সেন্টার)- বাচ্চাদের পেছনে এতো টাইম দেয়ার কিছু নেই এই মনভাবে। কেননা তাদের ডি এন এ তে মানবিকতা বোধ এর পরিমান নিতান্তই কম। এমনটি আমাদের দেশে অকল্পনীয়।
এবার আসি আমার প্রলাপে। আমাদের মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস কারো কম জানা নেই। এই মুক্তি যুদ্ধের এক কালো অধ্যায় আমাদের নিজস্ব বেঈমানি। কেউ রাজাকার ছিল না- এটা বলা আর মুক্তি যুদ্ধ অস্বীকার করা একই কথা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য- আমাদের এই জাতীতে এখনো মীরজাফর, পাকিস্তানি হায়েনাদের রক্ত রয়ে গেছে। নয়তো একজন ফেসবুকে কাদের মোল্লার ফাঁসিতে স্বস্তি প্রকাশ করলে আরেকজন " কাদের মোল্লা কি তোর মারে.........?" এর মত পশু সুলভ মন্তব্য করে কী করে ? দেশ জুড়ে জ্বালাও পোড়াও, মানুষ মারো, পেটাও। বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলা হলে গ্যালারীতে বসা পাশের তরুণীটি পাকিস্তান! পাকিস্তান! বলে চিল্লায় কী করে ? তাও ডিসেম্বর মাসে ?
তবে মেনে নিলাম, সমস্যা আমাদের ডি এন এ তে। জয়তু "বহু মিশ্র প্রাণের সংসার।"
(এই লেখা নিতান্তই আমার অবেলার প্রলাপ। কারো ব্যক্তিগত অনুভূতিতে আঘাত করে থাকলে সেটা কাকতাল মাত্র।)
কবি অস্বীকার করেননি এদেশের সূচনার ইতিহাস কে। তাই আমি ছোকরা ও সাহস পেয়ে গেলাম।
এদেশে ডাচ, পর্তুগীজ, ইংরেজ, পাকিস্তানি...... শাসন করে গেছে। সে কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। এদেশের বিভিন্ন বর্ণের মানুষ সে পরিচয় বহন করে। ইতিহাসবেত্তাদের মতে, সমগ্র ভারতবর্ষে যত বর্ণের মানুষ পাওয়া যায় ( সাদা, কালো, শ্যামলা, বাদামী, বেটে, লম্বা, গড় উচ্চতা ইত্যাদি) তা অন্য কোন দেশে পাওয়া যায় না। সুতরাং কবি, বিজ্ঞানী, ইতিহাস সবার মতকে একত্র করলে যে সত্যটা পাওয়া যায়- তা লজ্জাজনক হলেও অস্বীকার করার উপায় নেই যে আমাদের এই জাতীতে বহু মিশ্র ডি এন এ জড়িয়ে আছে।
এই ডি এন এ এর ভূমিকা একজন মানুষের মস্তিষ্ক গঠনে এতটাই মুখ্য যে, এটি মানুষের স্বাভাবিক মনুষ্যত্ববোধকেও পরিবর্তন করে ফেলে।
একটা সাধারন উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা পরিষ্কার করিঃ পশ্চিমা বিশ্বের দেশ গুলোতে (বিশেষ করে আমেরিকা) একজন মা তার সন্তান কে মাতৃদুগ্ধ পান করান না- তাদের শরীর কাঠামো নষ্ট হয়ে যাবে বলে, এবং খুব ছোট বেলা থেকেই বাচ্চা গুলোকে চাইল্ড হোমে ভর্তি করিয়ে দেন (বেবি কেয়ার সেন্টার)- বাচ্চাদের পেছনে এতো টাইম দেয়ার কিছু নেই এই মনভাবে। কেননা তাদের ডি এন এ তে মানবিকতা বোধ এর পরিমান নিতান্তই কম। এমনটি আমাদের দেশে অকল্পনীয়।
এবার আসি আমার প্রলাপে। আমাদের মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস কারো কম জানা নেই। এই মুক্তি যুদ্ধের এক কালো অধ্যায় আমাদের নিজস্ব বেঈমানি। কেউ রাজাকার ছিল না- এটা বলা আর মুক্তি যুদ্ধ অস্বীকার করা একই কথা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য- আমাদের এই জাতীতে এখনো মীরজাফর, পাকিস্তানি হায়েনাদের রক্ত রয়ে গেছে। নয়তো একজন ফেসবুকে কাদের মোল্লার ফাঁসিতে স্বস্তি প্রকাশ করলে আরেকজন " কাদের মোল্লা কি তোর মারে.........?" এর মত পশু সুলভ মন্তব্য করে কী করে ? দেশ জুড়ে জ্বালাও পোড়াও, মানুষ মারো, পেটাও। বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলা হলে গ্যালারীতে বসা পাশের তরুণীটি পাকিস্তান! পাকিস্তান! বলে চিল্লায় কী করে ? তাও ডিসেম্বর মাসে ?
তবে মেনে নিলাম, সমস্যা আমাদের ডি এন এ তে। জয়তু "বহু মিশ্র প্রাণের সংসার।"
(এই লেখা নিতান্তই আমার অবেলার প্রলাপ। কারো ব্যক্তিগত অনুভূতিতে আঘাত করে থাকলে সেটা কাকতাল মাত্র।)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
বিপ্লবী ৩০/০৪/২০১৪ভাল লাগল।তবে আরও ভাল লাগত যদি স্বাধিনতার পর থেকেই যে রাষ্ট্রটি আমাদের উপর অত্যাচার করছে,সিমান্তে আমাদের নাগরিকদের হত্যা করছে আর পাকিস্তান তো আমাদের পূর্বপিরুষদের উপর অত্যাচার করেছিল এবং পরাজিত হয়েছে আর ভারত রাষ্ট্রটি আমাদের বিপুল পরিমান ভূমি দখল করে রেখেছে,বাংলাদেশকে মরুভূমি বানানোর পরিকল্পনায় ব্যাস্ত। এ জনগোষ্ঠির মানুষকে অত্যার যেমন ঘৃন্য তাদের ভূমি দখল করে রাখা আরও বড় ঘৃণ্য কাজ।এদের ব্যাপারটাও যদি থাকতো তাহলে প্রবন্ধটি পূর্ণাঙ্গ হতো বলে মনে করি।
-
אולי כולנו טועים ১৪/১২/২০১৩অসাধারণ
-
ইসমাত ইয়াসমিন ১৪/১২/২০১৩আসলেই সমস্যা ডি এন এ তে। ভাল লাগল পড়ে। শুভকামনা রইল।
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ১৩/১২/২০১৩মন ছুয়ে গেছে
-
Înšigniã Āvî ১৩/১২/২০১৩এটা নির্মম বাস্তব.... তবে বাস্তব হচ্ছে সবাই কে নিয়ে ভাল মন্দ মিশিয়ে আমাদের সমাজ, এক আঙুল আরেক আঙ্গুলের হয় না কখনো....... তবু ভালোর সংখ্যা বেশি, স্বার্থানেষী মানুষ কম থাকলে সে দেশের উন্নতি হয় ।
-
আসিফ ১৩/১২/২০১৩অনেক ভালো লাগলো । এভাবেই হুমায়ন আহমেদের মতো লেখক তৈরী হয় । আরও চাই ।
-
রোদের ছায়া ১৩/১২/২০১৩আপনার এই লেখাটিতে সত্যিকার কিছু নির্মম বাস্তবতা উঠে এসেছে । এখনো এই দেশে পাকিস্তান ও কাদের মোল্লার মতো লোকের জন্য দুঃখ করার লোক আছে। এটা খুব দুঃখজনক ।
-
প্রবাসী পাঠক ১২/১২/২০১৩কাদের মোল্লা , গোলাম আজমদের মত কিছু লোক ১৯৭১ এ ছিল যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করেছিল , মা বোনদের পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিল। ২০১৩ তেও কিছু লোক আছে যারা ঐ সব অমানুষদের পক্ষ হয়ে কলম হাতে নিয়েছে। সব যুগেই এই ধরনের লোক থাকবে, তাদের মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
-
পল্লব ১২/১২/২০১৩শুধু ভিন্ন ডি এন এ না, সাথে বিভিন্ন জাতি তাদের বিভিন্ন মতবাদ ঢুকিয়ে গেছে আমাদের মধ্যে। ডি এন এ-র থেকে বড় সমস্যা এগুলো। নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য সব সময়ই তারা আমাদের ভিতরের সংকীর্ণতা আর বিভেদকেই আরও উস্কে দিয়ে গেছে। আর আমরাও সেই তখন থেকেই অন্যের উস্কানীতে নিজেদের মধ্যে মারপিট করতে করতে এটাকে আমাদের নিজস্ব নেচারে পরিণত করেছি।
আর ওয়েস্টার্ন সমাজকে আমরা যেভাবে চিত্রায়িতি করি, তার পুরোটা সম্ভবতঃ সঠিক না। এখানে তুমি খুব কম মা-ই পাবে যে তার নিজের সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান না করিয়ে শুধুমাত্র ফরমুলার উপর রাখছে। ডাক্তারদের রেগুলার চেকআপ এবং পরামর্শের কারণে বাচ্চা জন্মের অনেক আগের থেকেই মায়েরা ভালমতো জানে যে বাচ্চার জন্য সবচেয়ে উপকারী কোনটা। আর যে দেশেরই হোক না কেন, কোন মা-ই চায় না তার সন্তানের খারাপ হোক। বাচ্চাদের ব্যপারে উন্নত দেশগুলোর সরকার এবং জনগণ আবার বেশি মাত্রায় সচেতন। এছাড়া ডে কেয়ারে বাচ্চা রাখাটা বাচ্চার প্রতি কম আবেগের জন্য হয়ে থাকে না, বরং নারী-পুরুষ সবাই যে যার মতো কোন না কোন পেশায় সাবলম্বী বলেই এটা হয়ে থাকে (যা কিনা কিছুদিন পর আমাদের দেশেও হতে বাধ্য।) তারপরও মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য একেবারে শিশু বাচ্চার মা কিন্তু বাচ্চা রেখে কাজে যাচ্ছে না। আর যখন যাচ্ছে, তখন ঠিক কিভাবে কোথায় বাচ্চা রেখে গেলে তার শারিরীক-মানসিক সব দিক সুষ্ঠুভাবে বিকশিত হবে তার চূলচেড়া বিশ্লেষণ করেই বাচ্চা সেখানে রাখছে। আবার এটাও ঠিক যে এতোকিছুর পরও আমাদের দেশের বাবা-মায়ের মতো আবেগী না তারা অবশ্যই। তারা নিজেরাও একটা বয়সের পর বাবা-মায়ের বাধঁন থেকে আলাদা হয়ে নিজের মতো জীবন বেছে নিয়েছে, এবং নিজের বাচ্চার ক্ষেত্রেও ঠিক এটাই আশা করে।
আসলে সব দেশের সব কালচারেই ভাল মন্দ দুইই আছে। আমাদের দেশের তথাকথিক আধুনিক সমাজের এক অংশ আধুনিকতার নামে পশ্চিমা সমাজের যে দিকটা রপ্ত করার চেষ্টায় সদা নিমজ্জিত, খোদ পশ্চিমা সমাজেই সেটাকে খারাপ চোখে দেখা হয়।