আমি মা
মা:- হ্যালো হ্যালো কে?
সমুদ্র :- মা মা আমি তোমার বাবু মানে সমুদ্র ।
মা:- (কান্না কান্না) বাবু কত দিন পর ফোন করলি বলত ? আমার বুঝি মন কেমন করেনা। সবসময় মনে হ্য় এই বুঝি তোর ফোন এল । ফোন আর আসেনা ।
সমুদ্র :- হ্যা মা জানি জানি তোমাকে ছাড়া আমার মন ভালো নেই । কিছু ভালো লাগে না ।সেই জন্য একটা বিশেষ ব্যবস্থা করেছি । শুধু তোমার কথা ভেবে ।
মা:- (আনন্দ নিয়ে) বিশেষ ব্যবস্থা? সেটা আবার কি ? বল বল আমার যে আর তর সয়ছেনা । আমার বুকটা কেমন উথাল পাথাল করছে।তোরা সব ভালো আছিস ?বলনা...
সমুদ্র :- বলব বলব সব ব্যবস্থা প্রায় করে ফেলেছি।
মা:- ও বুঝেছি তোরা সবাই ফিরে আসছিস। আমেরিকা আর ভালো লাগছেনা তাইত। হ্যা বাবা ফিরে আয়। তোদের ঘর বাড়ি তোরা বুঝেনে । আমি একটু নিশ্চিন্ত হ্য় । হ্যাঁরে টুকুন আমার কথা বলে? বুকুনটাকে তো চোখেই দেখিনি । আমার না আনন্দে কাঁদতে ইচ্ছা করছে ।
সমুদ্র :- না মা আমরা কেও যাবনা ।
মা:- (অবাক) তোরা আসবিনা... দেখত আমি কি বোকা .. ভাবলাম তোরা আসবি ।
সমুদ্র :- আমি যাব....... তোমায় আমেরিকায় নিয়ে আসতে । ভিসা পাসপোর্ট সব প্রায় তৈরী । আর মাত্র কটা দিন অপেক্ষা কর । আর সব সময় ঘ্যান ঘ্যান করে কাঁদতে হবেনা ।তোমার অপেক্ষার দিন শেষ ।
মা:- কি শোনালি সমু..... আমি .......যাব....... আমেরিকা.....ভাবতেই পারছিনা ।
সমুদ্র :- হ্যাঁ মা তুমি আসবে আমেরিকা প্লেনে করে ।
মা:- প্লেনে করে.......হ্যাঁরে বাবু আমি পারব? এই দেশ ছেড়ে, ভিটে মাটি ছেড়ে চলে যেতে আমি পারব? না না আমার কষ্ট হবে । আমি পারবনা । যদিও এখানে আমার কেও নেই । ভালো লাগছে ভাবতে তোদের সাথে বাকি জীবন কাটাব? না যাবনা ....
সমুদ্র :- কি আবোল তাবোল বকছ । আমরা তোমার আপনজন তুমি আমাদের কাছে থাকবে ।বাকি জীবন খুশিতে কাটাবে । এখানকার জল পেটে পড়লে তুমিও ফটাফট ইংরাজী বলবে ।
মা:- তুই যে কি বলিস সমু...। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছেনা । তোর বাবা মারা যাবার পর ভীষণ একলা হয়ে গেছি...। এই বাড়ি এই জমি জায়গা কি হবে????
সমুদ্র :- কি আবার হবে? জমি বাড়ি সব বিক্রি করতে হবে । সময় খুব কম... আমি এখানে গাড়ি বাড়ি সব করে নিয়েছি । শুধু তোমার জন্য মন খারাপ করে । তোমাকে পেলে আমি সম্পূর্ণ হব... তুমি কিন্তু না কর না । তাড়াতারি সব করতে হবে...ফোন রাখছি ।
( জমি বাড়ি সব নিমেষে বিক্রি হ্য়, বাড়িটা কেনে দীর্ঘ দিনের ভাড়াটে অমূল্য রতন, মা ছেলে পোটলা পুঁটলি নিয়ে এখন এয়ারপোর্টে)
সমুদ্র :- দেখেছ মা এই হচ্ছে দমদম এয়ারপোর্ট । আর ঐ দেখো বিশাল বিশাল এরোপ্লেন । তুমি তো বল উড়োজাহাজ । ওর একটাতে করে আমরা উড়ে যাব হু............শ করে ।
মা:- সমু আমরা আর দেশে ফিরবনা কোনদিন...? কত স্মৃত্মি কত হাসি কত কান্না সব হারিয়ে যাবে?........(কেঁদে ফেলে)
সমুদ্র :- এই দেখো আবার কান্না শুরু করলে! তোমার কান্না দেখে পাঁচটা লোক কি ভাববে বলত? যে মনে করবে আমি তোমাকে জোর করে বিদেশ নিয়ে যাচ্ছি......
মা:- আমি আর কাঁদব না । সমু তোর্ বাবা বলত” ছেলের নাম রেখেছি সমুদ্র । ওর হৃদয়টাও হবে সমুদ্রের মত । এখন বুঝি নাম রাখাটা সার্থক হয়েছে (কেঁদে ফেলে ) ।
সমুদ্র :-কি হচ্ছে মা আবার......আঁচল দিয়ে চোখটা মোছ....সিকিউরিটি চেক হবে, তাড়াতাড়ি করতে হবে নইলে প্লেনটা মিস করব ।
মা:- যাই বাবা যাই, ছেলে আমার মস্ত ইন্জিনিয়ার, কে বলবে এই ছেলেকে খেয়ে না খেয়ে মানুষ করেছি, ভাবলেই বুকটা আনন্দে জুড়িয়ে যা............।
সমুদ্র : (বিরক্তি) উফ সিকিউরিটি চেকীং না হাতির মাথা । এটা দেখাও ওটা দেখাও, আচ্ছা মা এই খালি চেয়ারটাতে একটু বসে থাকো মাল পত্তর নিয়ে । দেখো যেন চুরি টুরী না হ্য় । আমি টিকিট কনফার্ম করে এখুনি আসছি...। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলবে আমার ছেলে এখুনি আসবে । ঠিক আছ ... মনে থাকবে ......। মা আসি ।
মা:- না বা আসি বলতে নেই, তুই কিন্তু তাড়াতাড়ি আসিস । আমি তো কিছুই জানিনা চিনি না , কি বলতে কি বলব কে জানে ।
সমুদ্র : হ্যাঁ মা যাই । আমি এই যাব আর এই আসব , একটু দাড়াও তোমার পা'টা দেখি?
মা:- আবার পা কেন! আমার পা ধরলি কেন?
সমুদ্র : না মা এমনি। তোমার পায়ের ছোয়া নিয়ে যাচ্ছি। তাহলে তাড়াতাড়ি টিকিট কনফর্ম হবে । তাহলে যাই মা । কিছু চিন্তা করনা ।
মা:- তুই আমার পা ধরলি , আয় তোকে একটু চুমু খাই। দেরী করিস না বাবা তাড়াতাড়ি আসিস.........( ছেলে ছুটে যায় ,একটু পারে ভিড়ে হারিয়ে যায় )
(টিক টিক করে ঘড়ি চলে পাঁচ মিনিট দশ মিনিট এক ঘন্টা দুই ঘন্টা মা বসে থাকে। এই বুঝি তার ছেলে আসে। ছেলে এসে বলবে.... মা ...চল দেরী হয়ে গেছে অনেক । মা চেয়ে থাকে ছেলের চলে যাওয়ার পথের দিকে। চোখ কখন ঝাপসা হ্য়, মা আঁচলে চোখ মোছে । এক প্রহরী এগিয়ে আসে) জিজ্ঞাসা করে-
প্রহরী : মা অনেকক্ষন থেকে লক্ষ্য করছি, আপনি কি কারোর জন্য অপেক্ষা করছেন?
মা : আমার ছেলে আমার ছেলে .........আচ্ছা বাবা আমেরিকার প্লেন কটায় ছাড়বে?
প্রহরী : সেতো কখন ছেড়ে গেছে। মা আপনার যাবার কথা ছিল?
মা : (ইতস্তত) না না মানে হা মান......ঐ মানে (হাসি কান্না মেশানো) আমি ছেলেকে সি অফ করতে এসেছিলাম বাব... এখন কি করব (স্বগতোক্তি) কি করি । একটু সাহায্য করবে বাবা একটা ট্যাক্সি ডেকে দেবে?
প্রহরী :ও নিশ্চয় নিশ্চয় ? কোথায় যাবেন বলুন ?
মা : (ভাবলেশ হীন)কোথায় যাব ?কো থা ই...... যাব। যাব হা হা হা ৮৮ প্রভাতী নগর /কলকাতা =৪৫
সমুদ্র :- মা মা আমি তোমার বাবু মানে সমুদ্র ।
মা:- (কান্না কান্না) বাবু কত দিন পর ফোন করলি বলত ? আমার বুঝি মন কেমন করেনা। সবসময় মনে হ্য় এই বুঝি তোর ফোন এল । ফোন আর আসেনা ।
সমুদ্র :- হ্যা মা জানি জানি তোমাকে ছাড়া আমার মন ভালো নেই । কিছু ভালো লাগে না ।সেই জন্য একটা বিশেষ ব্যবস্থা করেছি । শুধু তোমার কথা ভেবে ।
মা:- (আনন্দ নিয়ে) বিশেষ ব্যবস্থা? সেটা আবার কি ? বল বল আমার যে আর তর সয়ছেনা । আমার বুকটা কেমন উথাল পাথাল করছে।তোরা সব ভালো আছিস ?বলনা...
সমুদ্র :- বলব বলব সব ব্যবস্থা প্রায় করে ফেলেছি।
মা:- ও বুঝেছি তোরা সবাই ফিরে আসছিস। আমেরিকা আর ভালো লাগছেনা তাইত। হ্যা বাবা ফিরে আয়। তোদের ঘর বাড়ি তোরা বুঝেনে । আমি একটু নিশ্চিন্ত হ্য় । হ্যাঁরে টুকুন আমার কথা বলে? বুকুনটাকে তো চোখেই দেখিনি । আমার না আনন্দে কাঁদতে ইচ্ছা করছে ।
সমুদ্র :- না মা আমরা কেও যাবনা ।
মা:- (অবাক) তোরা আসবিনা... দেখত আমি কি বোকা .. ভাবলাম তোরা আসবি ।
সমুদ্র :- আমি যাব....... তোমায় আমেরিকায় নিয়ে আসতে । ভিসা পাসপোর্ট সব প্রায় তৈরী । আর মাত্র কটা দিন অপেক্ষা কর । আর সব সময় ঘ্যান ঘ্যান করে কাঁদতে হবেনা ।তোমার অপেক্ষার দিন শেষ ।
মা:- কি শোনালি সমু..... আমি .......যাব....... আমেরিকা.....ভাবতেই পারছিনা ।
সমুদ্র :- হ্যাঁ মা তুমি আসবে আমেরিকা প্লেনে করে ।
মা:- প্লেনে করে.......হ্যাঁরে বাবু আমি পারব? এই দেশ ছেড়ে, ভিটে মাটি ছেড়ে চলে যেতে আমি পারব? না না আমার কষ্ট হবে । আমি পারবনা । যদিও এখানে আমার কেও নেই । ভালো লাগছে ভাবতে তোদের সাথে বাকি জীবন কাটাব? না যাবনা ....
সমুদ্র :- কি আবোল তাবোল বকছ । আমরা তোমার আপনজন তুমি আমাদের কাছে থাকবে ।বাকি জীবন খুশিতে কাটাবে । এখানকার জল পেটে পড়লে তুমিও ফটাফট ইংরাজী বলবে ।
মা:- তুই যে কি বলিস সমু...। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছেনা । তোর বাবা মারা যাবার পর ভীষণ একলা হয়ে গেছি...। এই বাড়ি এই জমি জায়গা কি হবে????
সমুদ্র :- কি আবার হবে? জমি বাড়ি সব বিক্রি করতে হবে । সময় খুব কম... আমি এখানে গাড়ি বাড়ি সব করে নিয়েছি । শুধু তোমার জন্য মন খারাপ করে । তোমাকে পেলে আমি সম্পূর্ণ হব... তুমি কিন্তু না কর না । তাড়াতারি সব করতে হবে...ফোন রাখছি ।
( জমি বাড়ি সব নিমেষে বিক্রি হ্য়, বাড়িটা কেনে দীর্ঘ দিনের ভাড়াটে অমূল্য রতন, মা ছেলে পোটলা পুঁটলি নিয়ে এখন এয়ারপোর্টে)
সমুদ্র :- দেখেছ মা এই হচ্ছে দমদম এয়ারপোর্ট । আর ঐ দেখো বিশাল বিশাল এরোপ্লেন । তুমি তো বল উড়োজাহাজ । ওর একটাতে করে আমরা উড়ে যাব হু............শ করে ।
মা:- সমু আমরা আর দেশে ফিরবনা কোনদিন...? কত স্মৃত্মি কত হাসি কত কান্না সব হারিয়ে যাবে?........(কেঁদে ফেলে)
সমুদ্র :- এই দেখো আবার কান্না শুরু করলে! তোমার কান্না দেখে পাঁচটা লোক কি ভাববে বলত? যে মনে করবে আমি তোমাকে জোর করে বিদেশ নিয়ে যাচ্ছি......
মা:- আমি আর কাঁদব না । সমু তোর্ বাবা বলত” ছেলের নাম রেখেছি সমুদ্র । ওর হৃদয়টাও হবে সমুদ্রের মত । এখন বুঝি নাম রাখাটা সার্থক হয়েছে (কেঁদে ফেলে ) ।
সমুদ্র :-কি হচ্ছে মা আবার......আঁচল দিয়ে চোখটা মোছ....সিকিউরিটি চেক হবে, তাড়াতাড়ি করতে হবে নইলে প্লেনটা মিস করব ।
মা:- যাই বাবা যাই, ছেলে আমার মস্ত ইন্জিনিয়ার, কে বলবে এই ছেলেকে খেয়ে না খেয়ে মানুষ করেছি, ভাবলেই বুকটা আনন্দে জুড়িয়ে যা............।
সমুদ্র : (বিরক্তি) উফ সিকিউরিটি চেকীং না হাতির মাথা । এটা দেখাও ওটা দেখাও, আচ্ছা মা এই খালি চেয়ারটাতে একটু বসে থাকো মাল পত্তর নিয়ে । দেখো যেন চুরি টুরী না হ্য় । আমি টিকিট কনফার্ম করে এখুনি আসছি...। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলবে আমার ছেলে এখুনি আসবে । ঠিক আছ ... মনে থাকবে ......। মা আসি ।
মা:- না বা আসি বলতে নেই, তুই কিন্তু তাড়াতাড়ি আসিস । আমি তো কিছুই জানিনা চিনি না , কি বলতে কি বলব কে জানে ।
সমুদ্র : হ্যাঁ মা যাই । আমি এই যাব আর এই আসব , একটু দাড়াও তোমার পা'টা দেখি?
মা:- আবার পা কেন! আমার পা ধরলি কেন?
সমুদ্র : না মা এমনি। তোমার পায়ের ছোয়া নিয়ে যাচ্ছি। তাহলে তাড়াতাড়ি টিকিট কনফর্ম হবে । তাহলে যাই মা । কিছু চিন্তা করনা ।
মা:- তুই আমার পা ধরলি , আয় তোকে একটু চুমু খাই। দেরী করিস না বাবা তাড়াতাড়ি আসিস.........( ছেলে ছুটে যায় ,একটু পারে ভিড়ে হারিয়ে যায় )
(টিক টিক করে ঘড়ি চলে পাঁচ মিনিট দশ মিনিট এক ঘন্টা দুই ঘন্টা মা বসে থাকে। এই বুঝি তার ছেলে আসে। ছেলে এসে বলবে.... মা ...চল দেরী হয়ে গেছে অনেক । মা চেয়ে থাকে ছেলের চলে যাওয়ার পথের দিকে। চোখ কখন ঝাপসা হ্য়, মা আঁচলে চোখ মোছে । এক প্রহরী এগিয়ে আসে) জিজ্ঞাসা করে-
প্রহরী : মা অনেকক্ষন থেকে লক্ষ্য করছি, আপনি কি কারোর জন্য অপেক্ষা করছেন?
মা : আমার ছেলে আমার ছেলে .........আচ্ছা বাবা আমেরিকার প্লেন কটায় ছাড়বে?
প্রহরী : সেতো কখন ছেড়ে গেছে। মা আপনার যাবার কথা ছিল?
মা : (ইতস্তত) না না মানে হা মান......ঐ মানে (হাসি কান্না মেশানো) আমি ছেলেকে সি অফ করতে এসেছিলাম বাব... এখন কি করব (স্বগতোক্তি) কি করি । একটু সাহায্য করবে বাবা একটা ট্যাক্সি ডেকে দেবে?
প্রহরী :ও নিশ্চয় নিশ্চয় ? কোথায় যাবেন বলুন ?
মা : (ভাবলেশ হীন)কোথায় যাব ?কো থা ই...... যাব। যাব হা হা হা ৮৮ প্রভাতী নগর /কলকাতা =৪৫
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ২০/০১/২০১৫দুঃখজনক.................
-
অ ২২/১১/২০১৪হয়তো বা টাকার লোভে...........
-
চন্দ্রশেখর ২২/১১/২০১৪বাস্তবের সমস্যা সুন্দরভাবে লিখেছেন বন্ধু
-
সুজন ২১/১১/২০১৪অবিশ্বাস্য শ্রুতিমধুর আলাপন
-
শম্পা ২১/১১/২০১৪ঘটনাটা দুঃখজনক।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ২১/১১/২০১৪বিশ্বাস হতে চায় না এমন মাতৃভক্ত ছেলে এমনটা করতে পারে।। ঘটনা কি আসলেই সত্যি?
-
শ্রী সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায় ২০/১১/২০১৪লেখক লেখা ভালো লেগেছে । কিন্তু গদ্য রুপে না লিখে কাব্যের রুপে লিখে ফেলেন ।