ফোড়া দাদী
সেদিন বাসা থেকে বের হয়েছিলাম বেশ দেরি করেই। চামড়ার উপর রোদ বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল যে সময়টা সকাল হলেও প্রত্যুষ নয়। কুঁচকানো কপাল আর সরু হয়ে যাওয়া চোখ দিয়ে দেখছিলাম দৈনন্দিন ব্যস্ততা। কেউ ক্রেতার আশায় বসে আছে উদাস মুখে, কেউ টানছে রিকশা, কেউ হনহন করে হেঁটে যাচ্ছে নিদারুন তাড়াহুড়ায়। দমবন্ধ করা গরম, এই দ্রুতগতি জীবনের গতিকে কমাতে পারেনা এক বিন্দুও।
হঠাৎ, আমার চোখে পড়ল একজন কুৎসিত চেহারার মহিলা। তার শরীরের প্রতিটি ভাঁজ সাক্ষ্য দিচ্ছে বার্ধক্যের। শরীরের ঊর্ধ্বাংশ তার নিম্নাংশের সাথে সমকোণ তৈরি করেছে। তিনি বসে ছিলেন একটা গাছের ছায়ায়। তাকে ঘিরে থাকা কতগুলো শিশুদের তিনি কিছু বলছিলেন। দূরত্বের কারণে শুনতে পারছিলামনা তাঁর বক্তব্য। নিদারুন কৌতূহলে কাছে এগিয়ে গেলাম। শুনলাম, তিনি গল্প বলছেন। কোন এক হতভাগা রাজার গল্প। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাকে সারা দিতে হল কর্মস্থলের ডাকে। চলে আসলাম সেখান থেকে। তবে এক শিশুকে তাঁর পরিচয় জিজ্ঞেস করে জানলাম তিনি “ফোড়া দাদী”। আর যারা গল্প শুনছে তারা সবাই তাঁর নাতি-নাতনী।
প্রায় ছয় মাস পর এক সন্ধ্যায় আমার দেখা হোল “ফোড়া দাদী”র সাথে। তিনি রাস্তা পার হবেন। আমি তাকে পার করলাম হাত ধরে। তাঁর সাথে কথা বলে জানলাম তিনি তাঁর প্রকৃত বয়স জানেন না। তবে যুদ্ধের সময় তাঁর যে ছোটভাই নিহত হয়েছেন, মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল চার কুড়ি (৮০ বছর)।“ফোড়া দাদী” তাঁর চেয়ে চার বছরের বড়। এর পর থেকে প্রায়ই দেখা করে আসি “ফোড়া দাদী”র সাথে। তিনি সবসময় চিনতে পারেননা আমাকে। তবে পরিচয় দিলে চিনতে পারেন আর ঝাপসা দৃষ্টিশক্তির জন্য বয়সকে দোষারোপ করতে থাকেন।
যেকোনো ব্যাক্তির অনুকরণীয় আদর্শ হতে পারেন, এমন অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষ আমার বৈকালিক চায়ের সঙ্গী হন প্রায়ই। কিন্তু “ফোড়া দাদী”র প্রায় অতিক্রান্ত জীবন আমাকে যেভাবে আকর্ষণ করে, এতটা আকৃষ্ট আমি কখনই হইনি।
হঠাৎ, আমার চোখে পড়ল একজন কুৎসিত চেহারার মহিলা। তার শরীরের প্রতিটি ভাঁজ সাক্ষ্য দিচ্ছে বার্ধক্যের। শরীরের ঊর্ধ্বাংশ তার নিম্নাংশের সাথে সমকোণ তৈরি করেছে। তিনি বসে ছিলেন একটা গাছের ছায়ায়। তাকে ঘিরে থাকা কতগুলো শিশুদের তিনি কিছু বলছিলেন। দূরত্বের কারণে শুনতে পারছিলামনা তাঁর বক্তব্য। নিদারুন কৌতূহলে কাছে এগিয়ে গেলাম। শুনলাম, তিনি গল্প বলছেন। কোন এক হতভাগা রাজার গল্প। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাকে সারা দিতে হল কর্মস্থলের ডাকে। চলে আসলাম সেখান থেকে। তবে এক শিশুকে তাঁর পরিচয় জিজ্ঞেস করে জানলাম তিনি “ফোড়া দাদী”। আর যারা গল্প শুনছে তারা সবাই তাঁর নাতি-নাতনী।
প্রায় ছয় মাস পর এক সন্ধ্যায় আমার দেখা হোল “ফোড়া দাদী”র সাথে। তিনি রাস্তা পার হবেন। আমি তাকে পার করলাম হাত ধরে। তাঁর সাথে কথা বলে জানলাম তিনি তাঁর প্রকৃত বয়স জানেন না। তবে যুদ্ধের সময় তাঁর যে ছোটভাই নিহত হয়েছেন, মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল চার কুড়ি (৮০ বছর)।“ফোড়া দাদী” তাঁর চেয়ে চার বছরের বড়। এর পর থেকে প্রায়ই দেখা করে আসি “ফোড়া দাদী”র সাথে। তিনি সবসময় চিনতে পারেননা আমাকে। তবে পরিচয় দিলে চিনতে পারেন আর ঝাপসা দৃষ্টিশক্তির জন্য বয়সকে দোষারোপ করতে থাকেন।
যেকোনো ব্যাক্তির অনুকরণীয় আদর্শ হতে পারেন, এমন অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষ আমার বৈকালিক চায়ের সঙ্গী হন প্রায়ই। কিন্তু “ফোড়া দাদী”র প্রায় অতিক্রান্ত জীবন আমাকে যেভাবে আকর্ষণ করে, এতটা আকৃষ্ট আমি কখনই হইনি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।