স্বপ্নের রাজধানী
‘এই শহর জাদুর শহর প্রাণের শহর ঢাকা রে...’
১৯৬০ সালের ঘটনা। কিছু হাঁস তাদের ছানাদের নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল। আর এই হাঁসদের সম্মানে ঠাই দাড়িয়ে ছিল রিকশা, ট্রাক, প্রাইভেট কার। তবে ঢাকা তখন রাজধানী ছিল না, শহর গড়ে উঠছিল মাত্র। সেই ঢাকা ছিল প্রাণের ঢাকা।
আজ ঢাকা আমাদের রাজধানী। অনেকের স্বপ্ন, তবে অনেকেরই দুঃস্বপ্ন। প্রাণের ঢাকায় প্রাণ আছে ঠিকই কিন্তু সে প্রাণের সম্মান নেই। হাঁসতো দূরে থাক, মানুষের সম্মানেই থামছে না গাড়ি। রক্তের রাজপথে আজ স্বাধীনতা প্রাণ হারাচ্ছে। স্বপ্নের ঢাকায় দুঃস্বপ্নের মতো হারাচ্ছি সম্মান, হারাচ্ছি সম্ভ্রম।
চলুন স্বপ্নের ঢাকায় যাই। সদর ঘাটের পাশের পুরান ঢাকা ছেড়ে বর্তমান ঢাকায়। তারপর এবার একটু নয়া দিল্লি, নিউইয়র্কের মতো নিউ ঢাকা চিন্তা করি। স্বপ্নের রাজধানী, পরিকল্পিত নগরী।
আশে পাশের জেলা থেকে ঢাকায় আসতেই স্বাগতম জানাবে উচু উচু ঢাকা গেইট, পুলিশ চেকপোস্ট, আর জ্বলমলে বাতি। রাস্তার দু’পাশে গাছ আর একটু দূরে আবাসিক এলাকা। সুতরাং, মূল শহরের বাহিরে আবাসিক শহর। সেখানে থাকবে স্কুল, কিছু কলেজ আর অবশ্যই হাসপাতাল।
এরপর শহরে ঢুকছি। ঢুকতেই শপিং মল, হাট-বাজার, কিছু পার্ক, স্টেডিয়াম আর বিনোদনের সব কিছু। আরও একটু ভেতরে আসতেই প্রাইভেট কোম্পানি ও কিছু সরকারি কোম্পানির সদর দপ্তর। তারপর আমাদের নতুন সংসদ ভবন ও সুপ্রীম কোর্ট। প্রাণ কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান মন্ত্রীর বাসভবন।
চারদিকে আবাসন, মাঝের দিকে অফিস, প্রাণকেন্দ্রে দেশ পরিচালনার ব্যক্তিগণ। রাজধানীর অদূরে এয়ারপোর্ট ও ইকোনমি জোন। রাস্তায় সিগনাল গুলোতে লালবাতি জ্বলছে খুবই অল্পসময়। আর যারা ফার্মগেইট থেকে শাহবাগ আসতে ঘন্টা কাটান সিগনালে তারা উড়ে চলে আসছেন ফ্লাইওভার দিয়ে। একইভাবে কুড়িল থেকে রামপুরা হয়ে মালিবাগ। রিকশা নেই শহরে তবে শুধু আবাসিক এলাকায় আছে।
প্রতি কিলোমিটারে রয়েছে পাবলিক টয়লেট। ফুটপাত হাটার জন্য মুক্ত। ফুটপাতের একপাশে ছোট্ট বাগান আর কিছু সুন্দর বসার স্থান। যারা এক দুই কিলোমিটার পথ যাবেন তারা বাস অথবা কোন গাড়ি ব্যবহার না করে চলছেন পায়ে হেঁটে। বাস থামছে শুধু মাত্র নির্দিষ্ট স্টপেজে।
রাস্তায় কোথাও কোন ময়লা নেই। এমনকি শহরের কোথাও না। আপনার ঘুম ভাঙ্গার অনেক আগেই কতৃপক্ষ শহরকে করেছে সম্পূর্ণ পরিষ্কার, বেলা বাড়তে একটু ময়লা হতেই পারে, সেটাও দুপুরে হচ্ছে সাফাই। শুধু তাই না, ময়লা চলে যাচ্ছে শহরের বাইরে থাকা রিসাইক্লিং ফেক্টোরিতে।
শহরবাসির নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের অত্যাধুনিক গাড়ি নিয়ে একটু পরপর দিচ্ছে টহল, চলছে সারাদিন ও রাত। ধরুন রাত বারোটায় আপনার সঙ্গীনির ইচ্ছে হলো রাস্তায় হেটে গান গাইতে গাইতে পূর্ণিমা উপভোগ করবেন। বেরিয়ে পড়লেন দু’জন। রাস্তায় থাকা পুলিশ দূর থেকে পাহাড়া দিয়ে যাচ্ছে আপনাদের।
এই নয় কি আমাদের স্বপ্নের রাজধানী?
- আসিফ খন্দকারের “স্বপ্নের রাজধানী”
১৯৬০ সালের ঘটনা। কিছু হাঁস তাদের ছানাদের নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল। আর এই হাঁসদের সম্মানে ঠাই দাড়িয়ে ছিল রিকশা, ট্রাক, প্রাইভেট কার। তবে ঢাকা তখন রাজধানী ছিল না, শহর গড়ে উঠছিল মাত্র। সেই ঢাকা ছিল প্রাণের ঢাকা।
আজ ঢাকা আমাদের রাজধানী। অনেকের স্বপ্ন, তবে অনেকেরই দুঃস্বপ্ন। প্রাণের ঢাকায় প্রাণ আছে ঠিকই কিন্তু সে প্রাণের সম্মান নেই। হাঁসতো দূরে থাক, মানুষের সম্মানেই থামছে না গাড়ি। রক্তের রাজপথে আজ স্বাধীনতা প্রাণ হারাচ্ছে। স্বপ্নের ঢাকায় দুঃস্বপ্নের মতো হারাচ্ছি সম্মান, হারাচ্ছি সম্ভ্রম।
চলুন স্বপ্নের ঢাকায় যাই। সদর ঘাটের পাশের পুরান ঢাকা ছেড়ে বর্তমান ঢাকায়। তারপর এবার একটু নয়া দিল্লি, নিউইয়র্কের মতো নিউ ঢাকা চিন্তা করি। স্বপ্নের রাজধানী, পরিকল্পিত নগরী।
আশে পাশের জেলা থেকে ঢাকায় আসতেই স্বাগতম জানাবে উচু উচু ঢাকা গেইট, পুলিশ চেকপোস্ট, আর জ্বলমলে বাতি। রাস্তার দু’পাশে গাছ আর একটু দূরে আবাসিক এলাকা। সুতরাং, মূল শহরের বাহিরে আবাসিক শহর। সেখানে থাকবে স্কুল, কিছু কলেজ আর অবশ্যই হাসপাতাল।
এরপর শহরে ঢুকছি। ঢুকতেই শপিং মল, হাট-বাজার, কিছু পার্ক, স্টেডিয়াম আর বিনোদনের সব কিছু। আরও একটু ভেতরে আসতেই প্রাইভেট কোম্পানি ও কিছু সরকারি কোম্পানির সদর দপ্তর। তারপর আমাদের নতুন সংসদ ভবন ও সুপ্রীম কোর্ট। প্রাণ কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান মন্ত্রীর বাসভবন।
চারদিকে আবাসন, মাঝের দিকে অফিস, প্রাণকেন্দ্রে দেশ পরিচালনার ব্যক্তিগণ। রাজধানীর অদূরে এয়ারপোর্ট ও ইকোনমি জোন। রাস্তায় সিগনাল গুলোতে লালবাতি জ্বলছে খুবই অল্পসময়। আর যারা ফার্মগেইট থেকে শাহবাগ আসতে ঘন্টা কাটান সিগনালে তারা উড়ে চলে আসছেন ফ্লাইওভার দিয়ে। একইভাবে কুড়িল থেকে রামপুরা হয়ে মালিবাগ। রিকশা নেই শহরে তবে শুধু আবাসিক এলাকায় আছে।
প্রতি কিলোমিটারে রয়েছে পাবলিক টয়লেট। ফুটপাত হাটার জন্য মুক্ত। ফুটপাতের একপাশে ছোট্ট বাগান আর কিছু সুন্দর বসার স্থান। যারা এক দুই কিলোমিটার পথ যাবেন তারা বাস অথবা কোন গাড়ি ব্যবহার না করে চলছেন পায়ে হেঁটে। বাস থামছে শুধু মাত্র নির্দিষ্ট স্টপেজে।
রাস্তায় কোথাও কোন ময়লা নেই। এমনকি শহরের কোথাও না। আপনার ঘুম ভাঙ্গার অনেক আগেই কতৃপক্ষ শহরকে করেছে সম্পূর্ণ পরিষ্কার, বেলা বাড়তে একটু ময়লা হতেই পারে, সেটাও দুপুরে হচ্ছে সাফাই। শুধু তাই না, ময়লা চলে যাচ্ছে শহরের বাইরে থাকা রিসাইক্লিং ফেক্টোরিতে।
শহরবাসির নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের অত্যাধুনিক গাড়ি নিয়ে একটু পরপর দিচ্ছে টহল, চলছে সারাদিন ও রাত। ধরুন রাত বারোটায় আপনার সঙ্গীনির ইচ্ছে হলো রাস্তায় হেটে গান গাইতে গাইতে পূর্ণিমা উপভোগ করবেন। বেরিয়ে পড়লেন দু’জন। রাস্তায় থাকা পুলিশ দূর থেকে পাহাড়া দিয়ে যাচ্ছে আপনাদের।
এই নয় কি আমাদের স্বপ্নের রাজধানী?
- আসিফ খন্দকারের “স্বপ্নের রাজধানী”
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহন দাস (বিষাক্ত কবি) ০৭/০২/২০২০সুন্দর রচনাটি ।
-
ফয়জুল মহী ৩০/০১/২০২০সহজ, সুন্দর ও সাবলীল লেখনী।