সোস্যাল উড়াল চিঠি
সুপ্রিয় জাহিদ,
দেশের এই সংকটকালে কেমন আছিস জানতে চেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দুর্মূল্যের বাজারে যেদিন তোর গরুর গোসতের উচ্চমূল্য নিয়ে পোস্ট দেখেছিলাম, সেদিনই টের পেয়েছি অনেক কিছুই সাধ ও সাধ্যের সাথে বেতালে চলছে তোর।
পরে এলি সবজির বাজারে, সব সবজিই এখন মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে, তবুও চালিয়ে নিতে হচ্ছে হাসিমুখে। সমাজ সংসারে পিঠে বিধিত ছুঁড়ির আঘাত নিয়েও পুরুষের মুখে হাসি রাখতে হয়, বিশেষত মধ্যবিত্ত পরিবারে। তবেই তুমি আসল পুরুষ! সুখ সংসারের কারিগর। সমাজ তোমায় বাহবা দিয়ে বলবে সাব্বাশ ব্যাটা!
পরসমাচার, আমি আছি আরও বেগতিতে অনেক কিছুই বলা যায়না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাহলে সামাজিকতা লংঘিত হতে পারে। তবুও কিছুটা না বললেও তো কিছুই বুঝবি না, আমার মেয়েটা এখনো দুগ্ধপোষ্য। আমদানি করা দুধের দাম বেড়েছে প্রতি প্যাকেটে ৫০-৬০টাকা। সাথে স্বাভাবিক খাবার হিসেবে সেরেলাক দিই, ওটাতে দাম বেড়েছে ৫০-৫৫ টাকা প্রতি প্যাকেটে। এক প্যাকেট দুধ আর সেরেলাক যায় ৪/৫ দিন। যার বাজারমূল্য ৯০০টাকার মতো। রইলো বাকী সংসার খরচ যেখানে বাসাভাড়া বিশাল একটা অংশ। চাল আসে বাড়ী থেকে। কাঁচা বাজার তো করতেই হয়, যেটার অবস্থা তোর ভালো মতোই জানা। উল্লেখ করে রাখি, শারিরীক সমস্যার কারণে গরুর গোসত খুব একটা খাই না। সিগারেটে অভ্যস্ত নই, জানিসই তো! নাহলে আরেক বিপদ ছিলো। আসলে নিজের সাথে সমঝোতা। মেয়েটা মুরগির গোশত পছন্দ করে, অতিউচ্চমাত্রায় এন্টিবায়োটিক থাকায় ব্রয়লার খেতে দিই না। দেশী মুরগীই ভরসা, সেটার বাজারদর সম্পর্কে আজ আর না বলি! মাছের বাজারে আজ আর যাবো না, মনকে বলবো ওতে কাটা আছে, খেতে গিয়ে গলায় আটকে গেলে আরেক সমস্যা! মধ্যবিত্তদের জন্য ডাক্তার দেখানো আরেক ঘোড়ারোগ! তারচেয়ে আজ বউ-বাচ্চা নিয়ে ভালো কোন রেস্তোরাঁয় খেয়ে আসবো। সমঝোতা তো করে চলেছি প্রতিনিয়ত নিজের সাথে, পরিবারের সাথে, বউয়ের সাথে অতঃপর সমাজ সংসার দেশের সাথে। আর কত!
জানিস তো সেই রূপচর্চা এখন প্রচণ্ড বিলাসিতা, এক সময় ঢাকা থেকে রূপচর্চার সামগ্রী কিনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্সেল করতে হতো তোকে! ধ্যাত্তুরী, এখন ওসব মনে হলে লজ্জিত হই নিজের কাছে।
পরিশেষে বলি, ভালোই আছি, এখনো জিন্দা আছি। তবে প্রতিনিয়ত পিষ্ট হচ্ছি, আর মুখে বলে চলেছি শুকরিয়া এই বেশ ভালো আছি।
বি. দ্র - বাচ্চাটাকে ডায়াপার দেওয়ার কী দরকার! (যদিও বাইরে গেলে কিংবা শীতিলকালে দিতেই হয়) ও জিনিসের যা দাম (বিদেশি ব্র্যাণ্ড নাহলে বাচ্চাদের র্যাশ হবে)! সে টাকায় মামণির জন্যে দেশী মাগুর শিং অথবা ফ্রেশ ফল কিনে খাওয়াতে পারিস।
ভাবীকে সালাম দিস। একদিন বাসায় আসিস, জম্পেশ আড্ডার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া হবে জমিয়ে। আজ এখানেই শেষ করছি, ভালো থাকিস, সাবধানে থাকিস।
ইতি -
তোর বন্ধু আশিক।
(সম্পূর্ণ কাল্পনিক, আমার সাহিত্য চর্চার অংশ এই চিঠিটি, যাতে অনেক সামাজিক অসংগতি তুলে ধরা হয়েছে)
রচনাকাল - ০৪/০৫/২০১৯ইং, ঢাকা।
দেশের এই সংকটকালে কেমন আছিস জানতে চেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দুর্মূল্যের বাজারে যেদিন তোর গরুর গোসতের উচ্চমূল্য নিয়ে পোস্ট দেখেছিলাম, সেদিনই টের পেয়েছি অনেক কিছুই সাধ ও সাধ্যের সাথে বেতালে চলছে তোর।
পরে এলি সবজির বাজারে, সব সবজিই এখন মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে, তবুও চালিয়ে নিতে হচ্ছে হাসিমুখে। সমাজ সংসারে পিঠে বিধিত ছুঁড়ির আঘাত নিয়েও পুরুষের মুখে হাসি রাখতে হয়, বিশেষত মধ্যবিত্ত পরিবারে। তবেই তুমি আসল পুরুষ! সুখ সংসারের কারিগর। সমাজ তোমায় বাহবা দিয়ে বলবে সাব্বাশ ব্যাটা!
পরসমাচার, আমি আছি আরও বেগতিতে অনেক কিছুই বলা যায়না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাহলে সামাজিকতা লংঘিত হতে পারে। তবুও কিছুটা না বললেও তো কিছুই বুঝবি না, আমার মেয়েটা এখনো দুগ্ধপোষ্য। আমদানি করা দুধের দাম বেড়েছে প্রতি প্যাকেটে ৫০-৬০টাকা। সাথে স্বাভাবিক খাবার হিসেবে সেরেলাক দিই, ওটাতে দাম বেড়েছে ৫০-৫৫ টাকা প্রতি প্যাকেটে। এক প্যাকেট দুধ আর সেরেলাক যায় ৪/৫ দিন। যার বাজারমূল্য ৯০০টাকার মতো। রইলো বাকী সংসার খরচ যেখানে বাসাভাড়া বিশাল একটা অংশ। চাল আসে বাড়ী থেকে। কাঁচা বাজার তো করতেই হয়, যেটার অবস্থা তোর ভালো মতোই জানা। উল্লেখ করে রাখি, শারিরীক সমস্যার কারণে গরুর গোসত খুব একটা খাই না। সিগারেটে অভ্যস্ত নই, জানিসই তো! নাহলে আরেক বিপদ ছিলো। আসলে নিজের সাথে সমঝোতা। মেয়েটা মুরগির গোশত পছন্দ করে, অতিউচ্চমাত্রায় এন্টিবায়োটিক থাকায় ব্রয়লার খেতে দিই না। দেশী মুরগীই ভরসা, সেটার বাজারদর সম্পর্কে আজ আর না বলি! মাছের বাজারে আজ আর যাবো না, মনকে বলবো ওতে কাটা আছে, খেতে গিয়ে গলায় আটকে গেলে আরেক সমস্যা! মধ্যবিত্তদের জন্য ডাক্তার দেখানো আরেক ঘোড়ারোগ! তারচেয়ে আজ বউ-বাচ্চা নিয়ে ভালো কোন রেস্তোরাঁয় খেয়ে আসবো। সমঝোতা তো করে চলেছি প্রতিনিয়ত নিজের সাথে, পরিবারের সাথে, বউয়ের সাথে অতঃপর সমাজ সংসার দেশের সাথে। আর কত!
জানিস তো সেই রূপচর্চা এখন প্রচণ্ড বিলাসিতা, এক সময় ঢাকা থেকে রূপচর্চার সামগ্রী কিনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্সেল করতে হতো তোকে! ধ্যাত্তুরী, এখন ওসব মনে হলে লজ্জিত হই নিজের কাছে।
পরিশেষে বলি, ভালোই আছি, এখনো জিন্দা আছি। তবে প্রতিনিয়ত পিষ্ট হচ্ছি, আর মুখে বলে চলেছি শুকরিয়া এই বেশ ভালো আছি।
বি. দ্র - বাচ্চাটাকে ডায়াপার দেওয়ার কী দরকার! (যদিও বাইরে গেলে কিংবা শীতিলকালে দিতেই হয়) ও জিনিসের যা দাম (বিদেশি ব্র্যাণ্ড নাহলে বাচ্চাদের র্যাশ হবে)! সে টাকায় মামণির জন্যে দেশী মাগুর শিং অথবা ফ্রেশ ফল কিনে খাওয়াতে পারিস।
ভাবীকে সালাম দিস। একদিন বাসায় আসিস, জম্পেশ আড্ডার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া হবে জমিয়ে। আজ এখানেই শেষ করছি, ভালো থাকিস, সাবধানে থাকিস।
ইতি -
তোর বন্ধু আশিক।
(সম্পূর্ণ কাল্পনিক, আমার সাহিত্য চর্চার অংশ এই চিঠিটি, যাতে অনেক সামাজিক অসংগতি তুলে ধরা হয়েছে)
রচনাকাল - ০৪/০৫/২০১৯ইং, ঢাকা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৮/০৫/২০২০দুধের দাম তো এখনও বাড়েনি।
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৭/০৫/২০২০Very good.
-
ফয়জুল মহী ০৭/০৫/২০২০Beautiful pome