গরম মাজার
চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডের পাশে কি কোন পীর সাহেবের মাজার আছে? আমি ঠিক জানি না। তবে মনে হয় আছে। মাইক্রোবাসে যাচ্ছি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার। ড্রাইভার রোডের এক স্থানে এসে গাড়ী স্লো করলেন। জিজ্ঞাসা করলাম, কি হলো ড্রাইভার সা’ব, গাড়ী স্লো করলেন কেন?
তিনি বললেন, ‘‘স্যার পাশে মাজার।’’
‘‘তো.....’’
‘‘স্যার এটা গরম মাজার, সম্মান জানাতে হয়, না হলে পথে ক্ষতি হতে পারে।’’
‘‘গরম মাজার, এটা আবার কি জিনিস?’’
‘‘স্যার এই মাজারের অনেক ক্ষমতা। তিনি (!) অসন্তুষ্ট হলে রাস্তায় বিপদ হতে পারে!’’
‘‘তাই নাকি! তাহলে বাবা তুমি ধীরে ধীরে সম্মান দেখিয়েই যাও, বিপদে পড়তে রাজী না।’’
শুনে ড্রাইভার একদম থামিয়েই দিল গাড়ী। আমরা দু’একজন নেমে পাশের দোকান থেকে কিছু কেনা-কাটা, এই ধরুন চিপস্, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি কিনে এসে গাড়ীতে উঠলাম। গরম মাজার বলে কথা! ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলাম,‘‘কোন দান-ধ্যানের ব্যাপার আছে নাকি?’’ তিনি বললেন, ‘‘সেটা লাগবে না স্যার’’।
‘‘এবার তাহলে এগোও।’’
ড্রাইভার খুশি মনে সামনে এগোল। আমরা নিশ্চিন্ত মনে এগিয়ে গেলাম কক্সবাজারে পথে। সহি সালামতে পৌঁছলাম। পথে কোথাও কোন সমস্যা হয়নি।
দু’দিন বাদে ফিরছি। চকোরিয়ার কাছে হঠাৎ রাস্তায় জ্যাম। দূরপাল্লার সমস্ত গাড়ী একপাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। রাস্তায় ব্যাপক লোক সমাগম। আমরা একটু ভীত। জনগণের মেজাজ মর্জি কখন কোন দিকে যায় বলা যায় না। কী হয়েছে, কে জানে! আমাদের ড্রাইভার বেশ দূরে নিরাপদে গাড়ী সাইড করল। আমাদের মধ্যে যারা উৎস্যুুক ও সাহসী তারা নেমে এগিয়ে গেলেন। সেই অগ্রবর্তী দলে আমিও আছি।
ভীড়ের কাছে গিয়ে জানতে পারলাম, একটু আগে কক্সবাজারগামী একটি গাড়ী একটি শিশুকে চাপা দিয়ে চলে গেছে। গাড়ী পালিয়ে গেছে। শিশুটি মারা গেছে। রাস্তার পাশে তাকে ঢেকে রাখা হয়ে হয়েছে। বাবা-মা কাঁদছে। অনেকেরই চোখে জল। আমরাও মনে ব্যথা পেলাম। ভাবছি, এই গাড়ীটি কি গরম পীরের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে? এজন্যই কি এই দুর্ঘটনা?
দুই ঘন্টা পরে রোড ব্লক উঠিয়ে নেয়া হলো, আমরা সহি সালামতে চট্টগ্রামে পৌঁছে গেলাম। পথে আর কোন বিঘ্ন হয়নি। গরম পীর মনে হয় আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। উল্লেখ্য, এখন ও আর নিজাম সড়কটি অনেক প্রশস্ত হয়েছে। গাড়ীও আগের তমিজ মেনে চলে না, দেখছি। এজন্যই কি দুর্ঘটনা বাড়ছে! কী জানি! আমি জানি না। তবে এটুকু জানি পীর হোক বা যেই হোক, মৃত্যুর পর কোন মানুষের কিছু করার ক্ষমতা থাকেন না। আর পীর-এর মাজার এ বিশ্বাস....সে তো শিরক্। নয় কি?
আরশাদ:alien:অপনালয়; বিনোদকক্ষ
১১ নভেম্বর ২০১৫; বুধবার; ঢাকা।
তিনি বললেন, ‘‘স্যার পাশে মাজার।’’
‘‘তো.....’’
‘‘স্যার এটা গরম মাজার, সম্মান জানাতে হয়, না হলে পথে ক্ষতি হতে পারে।’’
‘‘গরম মাজার, এটা আবার কি জিনিস?’’
‘‘স্যার এই মাজারের অনেক ক্ষমতা। তিনি (!) অসন্তুষ্ট হলে রাস্তায় বিপদ হতে পারে!’’
‘‘তাই নাকি! তাহলে বাবা তুমি ধীরে ধীরে সম্মান দেখিয়েই যাও, বিপদে পড়তে রাজী না।’’
শুনে ড্রাইভার একদম থামিয়েই দিল গাড়ী। আমরা দু’একজন নেমে পাশের দোকান থেকে কিছু কেনা-কাটা, এই ধরুন চিপস্, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি কিনে এসে গাড়ীতে উঠলাম। গরম মাজার বলে কথা! ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলাম,‘‘কোন দান-ধ্যানের ব্যাপার আছে নাকি?’’ তিনি বললেন, ‘‘সেটা লাগবে না স্যার’’।
‘‘এবার তাহলে এগোও।’’
ড্রাইভার খুশি মনে সামনে এগোল। আমরা নিশ্চিন্ত মনে এগিয়ে গেলাম কক্সবাজারে পথে। সহি সালামতে পৌঁছলাম। পথে কোথাও কোন সমস্যা হয়নি।
দু’দিন বাদে ফিরছি। চকোরিয়ার কাছে হঠাৎ রাস্তায় জ্যাম। দূরপাল্লার সমস্ত গাড়ী একপাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। রাস্তায় ব্যাপক লোক সমাগম। আমরা একটু ভীত। জনগণের মেজাজ মর্জি কখন কোন দিকে যায় বলা যায় না। কী হয়েছে, কে জানে! আমাদের ড্রাইভার বেশ দূরে নিরাপদে গাড়ী সাইড করল। আমাদের মধ্যে যারা উৎস্যুুক ও সাহসী তারা নেমে এগিয়ে গেলেন। সেই অগ্রবর্তী দলে আমিও আছি।
ভীড়ের কাছে গিয়ে জানতে পারলাম, একটু আগে কক্সবাজারগামী একটি গাড়ী একটি শিশুকে চাপা দিয়ে চলে গেছে। গাড়ী পালিয়ে গেছে। শিশুটি মারা গেছে। রাস্তার পাশে তাকে ঢেকে রাখা হয়ে হয়েছে। বাবা-মা কাঁদছে। অনেকেরই চোখে জল। আমরাও মনে ব্যথা পেলাম। ভাবছি, এই গাড়ীটি কি গরম পীরের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে? এজন্যই কি এই দুর্ঘটনা?
দুই ঘন্টা পরে রোড ব্লক উঠিয়ে নেয়া হলো, আমরা সহি সালামতে চট্টগ্রামে পৌঁছে গেলাম। পথে আর কোন বিঘ্ন হয়নি। গরম পীর মনে হয় আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। উল্লেখ্য, এখন ও আর নিজাম সড়কটি অনেক প্রশস্ত হয়েছে। গাড়ীও আগের তমিজ মেনে চলে না, দেখছি। এজন্যই কি দুর্ঘটনা বাড়ছে! কী জানি! আমি জানি না। তবে এটুকু জানি পীর হোক বা যেই হোক, মৃত্যুর পর কোন মানুষের কিছু করার ক্ষমতা থাকেন না। আর পীর-এর মাজার এ বিশ্বাস....সে তো শিরক্। নয় কি?
আরশাদ:alien:অপনালয়; বিনোদকক্ষ
১১ নভেম্বর ২০১৫; বুধবার; ঢাকা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শাহানাজ সুলতানা (শাহানাজ) ০৯/১২/২০১৫মাজাব কখনো ক্ষতির কারণ হতে পারে না। এটা আমাদের ভ্রান্ত ধারণা।
-
মরুভূমির জলদস্যু ১৩/১১/২০১৫এমনটা অনেক যায়গাতে আগে দেখেছি, এখনো মাঝে মাঝে দেখি।
-
নির্ঝর ১২/১১/২০১৫জব্বর!
-
দেবব্রত সান্যাল ১১/১১/২০১৫আরও লিখুন আপনার অভিজ্ঞতার কথা।