তনুর ভালোবাসার গল্প( প্রথম অংশ)
হ্যালো!!কে?
কথা বলছেন না কেন?হ্যালো... হ্যালো।
অপর প্রান্তে কোনো সাড়াশব্দ নেই।তনু তাই ফোনটা কেটে দিল।
রাত তখন ১ টা বাজে।
সাথে সাথে আবার ফোনটা বেজে উঠল।তনু রিসিভ করে হ্যালো.. হ্যালো.. করছে কিন্তু কোনো উত্তর নেই।
তনু এবার বলতে লাগল,
" এতরাতে ফোন করে কথা বলছেন না কেন?
কে আপনি?
আমার নাম্বার কোথায় পেলেন?
কথা যদি নাই বলবেন তো ফোন দিচ্ছেন কেনো?? "
তারপরও কোনো সাড়াশব্দ নেই।তনু তাই ফোনটা আবারো কেটে দিল।সাথে সাথে ফোনটা আবার বেজে উঠল।।তনু এবার কলটা রিসিভ করে বালিশের নিচে রেখে দিল।মিনিট তিনেক পর ফোনটা বের করে দেখে কলটা কাটেনি।তনু ফোনটা কানে দিয়ে চুপ করে রইল।
এবার সে কারো কণ্ঠস্বর শুনতে পেল।তবে তা স্পষ্ট না।ফিসফিস করে কেউ কী সব বলছে।আর একটু পরপর হ্যালো.. হ্যালো..করছে।তনু কান খাড়া করে মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করল।এবার কথাগুলো ভালোই বুঝা যাচ্ছে।
ফোনের অপরপ্রান্তে ফিসফিস করে কেউ বলছে,
"কথা বলছেন না কেন?এতরাতে ফোন দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।কী করবো বলুন, গরীব মানুষ, দিনে ফোন দিলে টাকা বেশি কাটে।তাই রাতের অফারে ফোন দিলাম।আমি ভূত -তুট নই।কথা বলুন প্লিজ।ফোনে বিল কাটছে।গরীবের প্রতি অত্যাচার করবেন না।আল্লাহ সহ্য করবে না।হ্যালো.. হ্যালো.."
তনুর আর বুঝতে বাকি রইল না।কোনো বখাটে নাম্বার যোগাড় করে পিক আওয়ারে ফোন করে মজা নিচ্ছে।তাই সে চুপ করে রইল।কলটা না কেটে ফোনটা আবার বালিশের নিচে রেখে দিল।
কিছুক্ষণ পর আবার ফোনটা বেজে উঠল।তনুর বিরক্তির মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।ঘুমের ভাবটা লেশ মাত্র নেই।তনু তাই এবার বখাটের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করবে সিদ্ধান্ত নিল।মনে মনে ঠিক করছে কী কী বলবে।
কিন্তু তনুর পাশেই তার অসুস্থ বড় বোন শুয়ে আছে। রাগ ঝারতে গেলে তাঁর ঘুম ভেঙে যাবে।তাই সে নিজেকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করল।
ফোনটা বেজেই চলছে।এবার সে কলটা রিসিভ করেই কেটে দিল।আবার ফোনটা বেজে উঠল।সে আবারো কেটে দিল।এভাবে পাঁচ ছয় বার কাটার পর রিসিভ করে কানের কাছে ফোনটা নিল।
অপর প্রান্ত থেকে গানের আওয়াজ এলো,,,"শ্রাবণের মেঘগুলো জড়ো হলো আকাশে, অঝোরে নামবে বুঝি শ্রাবণে ঝরায়ে ,,আজ কেন মন উদাসী হয়ে, দূর অজানায় চায় হারাতে"।
তনু চুপ করে গান শুনছিল।রেকর্ডিং গানের সাথে ছেলেটিও গলা মিলাচ্ছে।গান শেষ হতেই ছেলেটি হ্যালো,,,হ্যালো বলা শুরু করল।"
আপনি কী শুনছেন?
কেমন লাগল গানটা?
কথা বলছেন না কেনো?
আপনি কী জীবিত আছেন?নাকি মারা গেছেন?
কমপক্ষে একটা কাঁশিতো দিতে পারেন?
হ্যালো,, হ্যালো।
তনু চুপ করে সব শুনছে।তার রাগ অনেকটা কমে এসেছে।এখন বরং তার হাসি পাচ্ছে।সে মনে মনে ভাবছে, এ কেমন পাগলরে বাবা!নিজে নিজে প্রলাপ বকছে,গান শুনাচ্ছে।
এবার আরো একটি গান বেজে উঠল,,
কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে,,জোনাকির আলো নেভে আর জ্বলে শাল মহুয়ার বনে,,,,।
তনু মনে মনে ভাবছে ছেলেটির গানের রুচিতো ভালো।কিন্তু এতরাতে এসব যারা করে তারা বখাটে ছাড়া কিছু না। এরপর পরপর চারটা গান শুনালো।আর প্রতিটি গান শেষ হলেই আবোল তাবোল কিছু কথা বলল।তনুর এখন ঘুম পাচ্ছে।তাই সে ফোনটা কেটে পাওয়ার অফ করে দিলো।
সকাল আটটা।
খুব সকালে তনুকে জাগতে হয়।সাতটা থেকে স্যারের বাসায় পড়া।সামনে তার অনার্স থার্ড ইয়ার ফাইনাল এক্সাম।সাবজেক্টটা এমন যে, স্যারের কাছে বারো মাসই পড়তে হয়।তার ইচ্ছা ছিলো পদার্থ নিয়ে পড়বে কিন্তু সে গণিতে বরাবরই ভালো মার্কস পেত। তাই বড় ভাই আর গৃহশিক্ষকের পরামর্শে গণিত নিয়ে পড়ছে।এই সাবজেক্টটা পড়তে গিয়ে তনুর আরামের ঘুম হারাম।তিনজন স্যারের কাছে দুদিন করে সপ্তাহে ছয় দিন পড়তে হয়।তাও আবার সকাল সাতটা থেকে।তাই কাক ডাকা ভোরে তনুর বিছানা ত্যাগ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।বাড়ির সবার আগেই তনুর ঘুম ভাঙে।কিন্তু আজ সে এখনো ঘুমে। ফোনটা খোলা থাকলে বান্ধবিরা এতক্ষণে ঘুম ভাঙিয়ে দিতো।আজ আর তনুর পড়তে যাওয়া হবে না।সব দোষ ওই বখাটে ছেলেটার।
কথা বলছেন না কেন?হ্যালো... হ্যালো।
অপর প্রান্তে কোনো সাড়াশব্দ নেই।তনু তাই ফোনটা কেটে দিল।
রাত তখন ১ টা বাজে।
সাথে সাথে আবার ফোনটা বেজে উঠল।তনু রিসিভ করে হ্যালো.. হ্যালো.. করছে কিন্তু কোনো উত্তর নেই।
তনু এবার বলতে লাগল,
" এতরাতে ফোন করে কথা বলছেন না কেন?
কে আপনি?
আমার নাম্বার কোথায় পেলেন?
কথা যদি নাই বলবেন তো ফোন দিচ্ছেন কেনো?? "
তারপরও কোনো সাড়াশব্দ নেই।তনু তাই ফোনটা আবারো কেটে দিল।সাথে সাথে ফোনটা আবার বেজে উঠল।।তনু এবার কলটা রিসিভ করে বালিশের নিচে রেখে দিল।মিনিট তিনেক পর ফোনটা বের করে দেখে কলটা কাটেনি।তনু ফোনটা কানে দিয়ে চুপ করে রইল।
এবার সে কারো কণ্ঠস্বর শুনতে পেল।তবে তা স্পষ্ট না।ফিসফিস করে কেউ কী সব বলছে।আর একটু পরপর হ্যালো.. হ্যালো..করছে।তনু কান খাড়া করে মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করল।এবার কথাগুলো ভালোই বুঝা যাচ্ছে।
ফোনের অপরপ্রান্তে ফিসফিস করে কেউ বলছে,
"কথা বলছেন না কেন?এতরাতে ফোন দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।কী করবো বলুন, গরীব মানুষ, দিনে ফোন দিলে টাকা বেশি কাটে।তাই রাতের অফারে ফোন দিলাম।আমি ভূত -তুট নই।কথা বলুন প্লিজ।ফোনে বিল কাটছে।গরীবের প্রতি অত্যাচার করবেন না।আল্লাহ সহ্য করবে না।হ্যালো.. হ্যালো.."
তনুর আর বুঝতে বাকি রইল না।কোনো বখাটে নাম্বার যোগাড় করে পিক আওয়ারে ফোন করে মজা নিচ্ছে।তাই সে চুপ করে রইল।কলটা না কেটে ফোনটা আবার বালিশের নিচে রেখে দিল।
কিছুক্ষণ পর আবার ফোনটা বেজে উঠল।তনুর বিরক্তির মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।ঘুমের ভাবটা লেশ মাত্র নেই।তনু তাই এবার বখাটের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করবে সিদ্ধান্ত নিল।মনে মনে ঠিক করছে কী কী বলবে।
কিন্তু তনুর পাশেই তার অসুস্থ বড় বোন শুয়ে আছে। রাগ ঝারতে গেলে তাঁর ঘুম ভেঙে যাবে।তাই সে নিজেকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করল।
ফোনটা বেজেই চলছে।এবার সে কলটা রিসিভ করেই কেটে দিল।আবার ফোনটা বেজে উঠল।সে আবারো কেটে দিল।এভাবে পাঁচ ছয় বার কাটার পর রিসিভ করে কানের কাছে ফোনটা নিল।
অপর প্রান্ত থেকে গানের আওয়াজ এলো,,,"শ্রাবণের মেঘগুলো জড়ো হলো আকাশে, অঝোরে নামবে বুঝি শ্রাবণে ঝরায়ে ,,আজ কেন মন উদাসী হয়ে, দূর অজানায় চায় হারাতে"।
তনু চুপ করে গান শুনছিল।রেকর্ডিং গানের সাথে ছেলেটিও গলা মিলাচ্ছে।গান শেষ হতেই ছেলেটি হ্যালো,,,হ্যালো বলা শুরু করল।"
আপনি কী শুনছেন?
কেমন লাগল গানটা?
কথা বলছেন না কেনো?
আপনি কী জীবিত আছেন?নাকি মারা গেছেন?
কমপক্ষে একটা কাঁশিতো দিতে পারেন?
হ্যালো,, হ্যালো।
তনু চুপ করে সব শুনছে।তার রাগ অনেকটা কমে এসেছে।এখন বরং তার হাসি পাচ্ছে।সে মনে মনে ভাবছে, এ কেমন পাগলরে বাবা!নিজে নিজে প্রলাপ বকছে,গান শুনাচ্ছে।
এবার আরো একটি গান বেজে উঠল,,
কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে,,জোনাকির আলো নেভে আর জ্বলে শাল মহুয়ার বনে,,,,।
তনু মনে মনে ভাবছে ছেলেটির গানের রুচিতো ভালো।কিন্তু এতরাতে এসব যারা করে তারা বখাটে ছাড়া কিছু না। এরপর পরপর চারটা গান শুনালো।আর প্রতিটি গান শেষ হলেই আবোল তাবোল কিছু কথা বলল।তনুর এখন ঘুম পাচ্ছে।তাই সে ফোনটা কেটে পাওয়ার অফ করে দিলো।
সকাল আটটা।
খুব সকালে তনুকে জাগতে হয়।সাতটা থেকে স্যারের বাসায় পড়া।সামনে তার অনার্স থার্ড ইয়ার ফাইনাল এক্সাম।সাবজেক্টটা এমন যে, স্যারের কাছে বারো মাসই পড়তে হয়।তার ইচ্ছা ছিলো পদার্থ নিয়ে পড়বে কিন্তু সে গণিতে বরাবরই ভালো মার্কস পেত। তাই বড় ভাই আর গৃহশিক্ষকের পরামর্শে গণিত নিয়ে পড়ছে।এই সাবজেক্টটা পড়তে গিয়ে তনুর আরামের ঘুম হারাম।তিনজন স্যারের কাছে দুদিন করে সপ্তাহে ছয় দিন পড়তে হয়।তাও আবার সকাল সাতটা থেকে।তাই কাক ডাকা ভোরে তনুর বিছানা ত্যাগ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।বাড়ির সবার আগেই তনুর ঘুম ভাঙে।কিন্তু আজ সে এখনো ঘুমে। ফোনটা খোলা থাকলে বান্ধবিরা এতক্ষণে ঘুম ভাঙিয়ে দিতো।আজ আর তনুর পড়তে যাওয়া হবে না।সব দোষ ওই বখাটে ছেলেটার।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৬/০১/২০১৮খুব ভালো লাগলো..
-
আব্দুল হক ১৩/০১/২০১৮সুন্দর লিখার জন্য ধন্যবাদ!!