www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়

আমরা সাধারণত সবসময়ই কোন না কোন মানসিক চাপে থাকি। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে উত্তরণের জন্যে কিন্তু আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হলে এই সব নিত্যদিনের সমস্যা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে পারি । আর তার জন্যে আত্ননিয়ন্ত্রণ, আন্তরিকতাই যথেষ্ট । খুব বেশি ভুমিকায় না গিয়ে সরাসরি আমাদের প্রাত্যহিক জীবন থেকে তৈরী হওয়া কিছু মানসিক সমস্যা নিয়ে নিজের মতো করে লিখার চেষ্টা করলাম।

অবাস্তব প্রত্যাশাঃ
আমাদের প্রত্যাশা অনেক সময়ই আমাদের সামর্থ্যের চেয়ে বেশিই হয়ে যায় । যদিও মানুষ তার আশার সমান বড় । কিন্তু ধরুণ আপনি একজন গৃহ ব্যবস্থাপক । এক বা দুই বা ততোধিক সন্তানের জননী (জনক বলছি না বিশেষ কারণে) । আপনার পক্ষে এমতাবস্থায় নতুন করে ঘরের বাইরে বা ঘর থেকে দুরে কোথাও ৯ টা - ৫টা চাকুরী নিতে গেলে আপনার কাছের অনভ্যস্থ মানুষগুলো কোনভাবেই আপনাকে সহযোগিতা করবে না । সেক্ষেত্রে আপনাকে বিকল্প উপায় খুঁজে নিতে হবে । কেননা বিকল্প উপায় খুঁজে না নিলে হয় আপনি জেদ করে চাকুরীতে গেলেন আপনার সন্তানদের সমস্ত দায়ভার কাজের মানুষটির উপর দিয়ে অথবা সন্তানদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে । অথবা চাকুরীতে না গিয়ে নিজে হতাশায় নিমজ্জিত হলেন । তাই নিজেকে হতাশা থেকে বাঁচানোর জন্যে আপনাকে বিকল্প পথ খুঁজে বের করতেই হবে । এই বিকল্প উপায় কোন সৃজনশীল কাজও হতে পারে । তা লেখালেখি থেকে শুরু করে অন্য যে কোন ধরণের কাজ হতে পারে।

অহেতুক সময় সীমাঃ
অনেকেই রুটিন অনুসরণ করে কাজ করতে পছন্দ করেন । কিন্তু সংসার জীবনটা পুরোপুরি রুটিন মেনে চলা সম্ভব নয় । তাই সময়গুলোকে নিজের মতো করে ব্যবহার করুন । তবে তা যেন যথেচ্ছা না হয় । সারারাত কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমানো বা সারাদিন ঝিমানো কোন কাজের কথা না । অনেককেই দেখা যায় রাত জেগে কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমায়...যদিও এই কাজটা অনেকেই নির্জনতায় কাজ করার জন্যেই করে থাকেন । তবে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে যেন শরীর তার প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায় এবং এই বিশ্রাম নেয়াটা যেন এমন সময়ে না হয় যখন আপনার অন্য কোন প্রয়োজনীয় কাজ করার সময়।

সমস্যাকে মোকাবেলা করতে শেখাঃ
অনেক সময়ই কাজের চাপ বেড়ে গেলে আমরা তা দুরে সরিয়ে রাখি পরে করবো ভেবে । এতে প্রকৃতপক্ষে নিজেরই ক্ষতি করা হয় । কেননা সেই কাজটা কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করে শেষ করতে না পারলে তা আমাদের মাঝে বোঝা হয়ে হতাশার সৃষ্টি করে । কাজেই প্রয়োজনীয় কাজটি যতোই তিক্ত হোক তা কষ্ট করে হলেও করে ফেলতে হবে সময় মতোই । উদাহরণ স্বরূপ অনেক কথাই বলা যায়, কিন্তু ধরুন আপনি যাদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করুন, গল্প করে মজা পান শুধু তাদেরকেই ফোন করে আলাপ চারিতা চালান । কিন্তু অনেকদিন ফোন করা হয় না এমন কাউকে হঠাৎ করেই আপনার খুব দরকার পরে গেল, তখন তাকে শুধু নিজের দরকারে ফোন করাটা খুবই অশভোনীয় এবং যাকে ফোন করলেন তিনিও যে সবসময় এই অভ্যাসটিকে সাদরে গ্রহণ করবেন তা কিন্তু নয় । আবার ধরুন, আপনার পরিচিত কেউ হাসপাতালে বা রোগাক্রান্ত । তাকে সশরীরে দেখতে যেতে না পারলেও অন্তত ফোন করে খোঁজ নেয়াটাও আপনার একটা সামাজিক সমস্যাকে কমিয়ে দিচ্ছে।

স্বনির্ভরতাঃ
এটা খুবই জরূরী । আমরা স্বনির্ভরতা বলতে সাধারণ অর্থনৈতিক নির্ভরতাকেই বুঝে থাকি । কিন্তু নিজের চারপাশের কাজগুলোকে অন্যের উপর নির্ভর করে না করে নিজে নিজে করাটাও স্বনির্ভরতা । অনেককেই দেখা যায় শপিংয়ে যাবে, তার সাথে যাওয়ার জন্যে অন্য কাউকে জোর করেই নিয়ে যাচ্ছে, হয়তো যে সাথে যাচ্ছে সে অনুরোধে ঢেকি গিলেই যাচ্ছে ।

কাজের গতিঃ
যে কাজটি যে সময়ে শেষ করতে হবে তা ঠিক সময়ে শেষ করতে আমরা সাধারণতই গরিমসি করে থাকি এতে আমরা সাধারণতই পিছিয়ে পরি । কেউ কেউ বলতে পারেন, এভাবেই তো জীবনটা কেটে গেল...ঠিক সময়ে কাজ করলে তো আজ আমি অমুক থাকতাম, তমুক থাকতাম । কিন্তু যদি বুঝতেই পাচ্ছেন তবে এখন থেকেই চেষ্টা করুন না কেন...আর হতাশা নয় অমুক তমুক হওয়ার...যা আছেন সেই অবস্থাটাকেই নিজের মন মতো করে নিন ।

পারিবারিক জীবন উপভোগঃ
কাজের চাপে অস্থির হয়ে আমরা নিজেদের কাছের মানুষগুলোর প্রতিও অনেক সময় উদাসীন থাকি। কিন্তু কাছের মানুষগুলোর সাথে সময়গুলো ভালো না কাটানোর চেষ্টাকে বলবো আত্নহত্যার সামিল । কেননা কাছের মানুষগুলোই আপনার সুখ, সমৃদ্ধির প্রধান নিয়ামক । কাজেই তাদের প্রতি মনোযোগ দেয়াটা, সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করা এবং তা বাস্তবে কাজে লাগানো নিজের সুখি জীবনের জন্যেই জরূরী ।

শ্রোতা এবং দর্শকের ভুমিকা নিনঃ
অনেকেই অনেক কথা বলছে । কিন্তু শ্রোতা বা দর্শক কমই ... যদি সময়গুলো খারাপ যায় তবে অন্যের কথা শুনুন । দেখুন অন্যে কি করছে । তা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন । তাতে বরং কখনো কখনো আপনার মঙ্গলই হবে । আর সময় যখন নিজের অনুকুলে না থাকে তখন বলার চেয়ে শোনার অভ্যেসটাই কাজে লাগে ।

চাহিদার অযৌক্তিকতাঃ
আপনার হয়তো কোন কিছু কিনতে ইচ্ছে করছে বা একটা নতুন ডিগ্রী অর্জন করতে ইচ্ছে করছে বা কোন একটা দেশ ভ্রমণ করতে ইচ্ছে করছে । কিন্তু তা কতোটা সময়োপযোগী বা তা কতোটুকু আপনার জন্যে এই মুহুর্তে যৌক্তিক তা নিজের কাছেই জিজ্ঞেস করুন । এতে সেই ডিগ্রী নিতে না পারার বা সেই দেশটাতে ভ্রমণ করতে না পারার বা সেই মূল্যবাদ দ্রব্যটি কিনতে না পারার হতাশা , কষ্টটা দূর হয়ে যাবে ।

সময়গুলো নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখুন । ভালো থাকুন সর্বদা ।


বিশেষ কৃতজ্ঞতা ড. গার্গী দত্ত।


লেখাটি নিজস্ব ব্লগ সাইটে পড়তে দেখুন -মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়


------------------------------
বি.দ্র: তারুণ্য ব্লগে এটিই আমার প্রথম লেখা । আশা করি আপনাদের ভালো লাগলে নিয়মিত লেখার চেষ্টা করবো ।
সবাইকে শুভেচ্ছা ।।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৯৮৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১১/১০/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • অসাধারন উপকার করলেন। বেশ উপকৃত হলাম। কয়েকদিন ধরে বেশ মানসিক ঝামেলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো..........
  • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
    একটা পারসোনাল প্রশ্ন করতে পারি ? যদি কিছু মনে না করেন...
    • আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩
      করতে পারেন, তবে না জেনে বুঝতে পারছি না সেটা কেমন হবে ...
      • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
        আসলে 'আরজু' নামে আমার এক পাড়াত আপু আছেন, আবার 'আরজু' নামে আমার পরিচিতি এক ভাই আছে। আমি নিশ্চয় বুঝাতে পারছি আমি কি জানতে চাই?
        • আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩
          আমি বুঝতে পেরেছি ।
          তবে বলবো কি না তাই ভাবছি ।
          ব্লগে আমাকে যখন কেউ 'আপু' বা 'দিদি' ডাকে অথবা 'দাদা' 'দা' অথবা 'ভাই' ডাকে তার কোনটাতেই আমার স্বস্তি হয় না ।
          আমি লিঙ্গ পরিচয়ের উর্দ্ধে একজন লেখক হতে চাই ।
          যে লেখে সেই লেখক...সেখানে 'লেখিকা' শব্দটিও আমার পছন্দ নয় ।
          গুণের প্রকাশে লিঙ্গভেদ আমার পছন্দ নয় ।
          কখনো আপনার সাথে ব্লগের বাইরে যোগাযোগ হলে তখন আপনার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে লৈঙ্গিক পরিচয়ে আমাকে 'দাদা' 'ভাই' 'দিদি' বা 'আপু' ডাকতে ।

          আজকে যদি আমি আপনার প্রশ্নের জবাব দিয়ে দেই তবেই আপনি আমার নামের সাথে একটা 'ভাই' বা 'বোন', 'আপু' সম্বোধন জুরে দিবেন ।
          আমি যে স্বস্তি পাব না তাতে ।
          আমার লেখায় সার্বজনীনতা থাকুক ।
          তবে একটা গোপন তথ্য দেই...আপনাকে ব্লগের বাইরেও দেখেছি ।
          ভালো লেগেছে ।
          অনেক শুভকামনা রইল, প্রিয় জহির ।
          নাম ধরেই ডাকুন । আমার তাতেই স্বস্তি, আনন্দ ।।
          • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
            আমি আপনার প্রশ্নের জবাবে লেঙ্গিক পরিচয়ে সম্বোধন করবোনা- কথা দিচ্ছি। প্লিজ... তারপরও বলেন। আপনি চাইলে আমি আপনার নাম ধরেই ডাকবো যদি আপনি তাতে আনন্দ বা স্বস্তি পান।
            আমিও এই ব্লগে নতুন। আপনার অনেক পরে এসেছি।
            • আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩
              আমার প্রোফাইল পিকচারটা দেখলেই বুঝবেন ।
              আমি তেমনই । যদিও তেমন আকর্ষনীয় না ...হাহা
              • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
                আমাকে বাইরে কোথায় দেখছেন তা কিন্তু বলেননি! খুব জানার ইচ্ছে... প্লিজ!
                • আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩
                  হাহা
                  আপনি আমাকে আজকে ব্লগ ছাড়তে দিচ্ছেন না...
                  ফেসবুকে দেখেছি ।
                  হাহা...
                  পৃথিবীটা আসলেই অনেক ছোট । পরে আবার কথা হবে ।
                  • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
                    ঠিক বলেছেন, পৃথিবীটা আসলেই অনেক ছোট! ফেসবুকে কি আপনি আমার সাথে এড আছেন?
              • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
                আমাকে বাইরে কোথায় দেখছেন তা কিন্তু বলেননি! খুব জানার ইচ্ছে... প্লিজ!
              • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
                একটা কথা জানি- "কারো কাছে হয়তো তুমি কিছু নও, আবার কারো কাছে তুমিই তার পৃথিবী"। জানিনা কথা কতটুকু সত্য। নিজেকে এভাবে ছোট করার কারণ দেখছিনা। অবশ্য- "বড় যদি হতে চাও- ছোট হও তবে।"
                জেনে ভালো লাগলো। :D
                • আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩
                  হাসির ইমোটা দেখে মন ভরে গেল । এবার যাই... বেশ কাজ পরে আছে ।
                  • জহির রহমান ১২/১১/২০১৩
                    আমারো বেশ কাজ পড়ে আছে। কিন্তু আপনার সাথে আলাপ করতে বেশ ভালো লাগছিল। অনেকটা ক্লান্তিও দূর হচ্ছিলো...।
                    ওকে পরে আবার ইনশা আল্লাহ কথা হবে।
          • আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩
            আরেকটা কথা, এই ব্লগে আমি নতুন তো, কয়দিন পর এমনিতেই জেনে যাবেন...হাহা
  • প্রথম লেখাতেই বাজিমাত! অসাধারণ একটি লেখা উপহার দিলেন ভাই।খুবই সময়োপযোগী একটি বিষয়ের উপর এমন বিশ্লেষণ ধর্মীী লেখা, সত্যিই আমাদের খুবই কাজেে লাগবে বলে মনে করি।আপনি আপনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।আপনার নতুন লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।শুভকামনা আপনার জন্য।
    • আরজু নাসরিন পনি ১২/১০/২০১৩
      খুব অনুপ্রেরণা পেলাম আপনার মন্তব্যে ।
      আশা করি সামনেও চেষ্টা থাকবে এমন লেখার চেষ্টা ।
      মন্তব্য করার জন্যে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই ।
      ভালো থাকুন সবসময়ই ।।
  • গাজী তারেক আজিজ ১২/১০/২০১৩
    দারুণ কাজে আসবে এই লেখা।
    কেমন আছেন?
    এতো তাড়া কিসের ছিল সেদিন?
    • আরজু নাসরিন পনি ১২/১০/২০১৩
      কারো কাজে আসলেই এই লেখা সার্থক মনে করবো ।
      সেদিন আমার কলেজে পরীক্ষার ডিউটি ছিল ।
      আমার ব্লগে আপনাকে পেয়ে ভালো লাগলো ।
      অনেক ভালো থাকুন ।।
  • suman ১১/১০/২০১৩
    প্রয়োজনিয় লেখা ...আরো লিখুন ...
  • মাহমুদ নাহিদ ১১/১০/২০১৩
    ভালো লাগলো ।এমন একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য লেখককে অনেক ধন্যবাদ ।আশা করি সামনে আরো ভালো ভালো লেখা পাব ।।
    • আরজু নাসরিন পনি ১১/১০/২০১৩
      আরো ভালো লিখতে পারবো কি না জানি না ।
      তবে এই ধরনের লেখা দেওয়ার চেষ্টা করবো ।
      আপনার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম ।
      অনেক ভালো থাকুন মাহমুদ ।।
  • আরজু নাসরিন পনি ১১/১০/২০১৩
    একজন নতুন ব্লগার হিসেব আমার পোস্টটিকে প্রকাশ করার জন্যে বিবেচনা করায় কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানাই ।।
  • সহিদুল হক ১১/১০/২০১৩
    অনেকের কাজে আসবে লেখাটি।
    • আরজু নাসরিন পনি ১১/১০/২০১৩
      কারো কাজে আসলে পোস্ট দেয়া সার্থক মনে করবো ।
      আমার ব্লগে প্রথম মন্তব্যকারী আপনি ।
      অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই ।।
 
Quantcast