www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বুদ্ধি জ্ঞান ও বিবেক

বুদ্ধি জ্ঞান ও বিবেক কে পরস্পর আলাদা আলাদা ভাবে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে আমি একবার বিব্রত হয়েছিলাম বেশ। আমি সেখানে বুঝাতে চেয়েছিলাম যে বুদ্ধি জ্ঞান ও বিবেক আসলে এক জিনিস নয় বরং তার প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ও প্রভাব আছে। আমার দৃষ্টিতে জ্ঞান হলো ব্যক্তির নিজস্ব চর্চা ও গবেষণালব্ধ বিষয় যার ফলাফল সব সময় ইতিবাচক কিন্তু বুদ্ধি হলো সেই জ্ঞানের কৌশলগত সংকীর্ণ ও সংকুচিত রুপ আর বিবেক হলো জ্ঞানের সর্বোচ্চ ধাপ....। আমার এমন মন্তব্য কে অনেকেই স্বাগত জানিয়ে সুন্দর সুন্দর মন্তব্যের জোয়ারে ভাসিয়ে দিলো আমি যখন সন্তোষ্টির ঢেকুর তুলতে শুরু করলাম ঠিক তখনই আমার এক বন্ধু মন্তব্য করে লিখলেন যে বিবেক বলে নাকি আলাদা কিছুই নেই বরং তা নাকি মানুষের নিজস্ব চিন্তা চেতনা ও কলপনাপ্রসূত ধারণা ছাড়া আর কিছু নয়।

আমার মনে হয় আমাদের আসল সমস্যাটা এখানেই। বিবেক সম্পর্কে বর্তমান প্রচলিত ও পরিবর্তিত ধারণাটাই আছে শুধু আমাদের। কিন্তুআদতে বিবেক বলতে এমন কিছুকে বুঝায় না বিবেক কখনো ব্যক্তিভেদে আলাদা আলাদা নয়। বর্তমানে আমরা যেটাকে বিবেক বলে চালিয়ে দিচ্ছি সেটাই বুদ্ধি। নিজস্ব ধারণা কখনো বিবেক হতে পারে না। বিবেক স্রষ্টা প্রদত্ত শান্ত সুপ্ত বিষয়। জ্ঞানের অনুশীলনই সেটাকে জাগিয়ে তোলে। আর তখন সেটাকে বলা হয় বিবেক বোধ। জ্ঞান বিবেকের সান্নিধ্যে মানুষকে সত্য ও সুন্দরের পথে পরিচালিত করে। যে জ্ঞান বিবেকের সান্নিধ্য পায়না সে জ্ঞান ই বুদ্ধি তে পরিণত হয় এবং তা মানুষকে ভিন্ন পথে নিয়ে যায়। যেমন ধরুন আল্লাহ তায়ালা প্রথম মানব আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করে তাঁর মধ্যে জ্ঞান বিবেক ফূকে দিয়ে সকল ফেরেশতাকে বললেন তাঁকে সেজদা করতে। অগনিত ফেরেশতা তাঁকে সেজদা করলো কিন্তু, ইবলিশের মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল।সে বলল- আল্লাহ আমাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন আগুন থেকে আর আদম কে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। আগুনের স্বভাব হলো উপরের দিকে ওঠা আর মাটির স্বভাব হলো নিচের দিকে নামা। সুতরাং আমিই শ্রেষ্ঠ, আমি কেনো মাটিকে সেজদা করবো। আল্লাহ তায়ালা খুব চমৎকার ভাবে সেটাকে পবিত্র কুরআনের একাধিক জায়গায় তুলে ধরেছেন। দেখুন এখানে তার যুক্তিটা তো স্বাভাবিক দৃষ্টিতে খারাপ ছিল না। কিন্তু, জ্ঞানের দৃষ্টি দিয়ে দেখলে বুঝা যায় যে, মাটি ও পানি দিয়ে যে কোনো জ্বলন্ত আগুনকে নিভিয়ে দেওয়া যায়। এখন প্রশ্ন হতে পারে- তবে কি ইবলিশের কোন জ্ঞান ছিল না? উত্তর হলো- অবশ্যই ছিল কিন্তু তা বিবেকের সান্নিধ্য না পেয়ে বুদ্ধি তে পরিণত হয়েছিল। তাই আমি তাওহীদের জ্ঞানকে মৌলিক জ্ঞান বলতে চাই। তাওহীদের সঠিক জ্ঞান না থাকলে অন্য সকল জ্ঞান মানুষকে বাঁকা পথে নিয়ে যেতে পারে খুব সহজেই।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৫১৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৭/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • অনিতা মুদি ২৮/০৭/২০২০
    অতি সুন্দর
  • ফয়জুল মহী ২৭/০৭/২০২০
    লেখা ভালো লেগেছে
 
Quantcast