একটি ফুঁ-ই মানিক-রত্ন
ময়মনসিংহ।
২০১৬ সালে আমি ময়মনসিংহ এসেছিলাম। তখন কত তারিখ ছিল তা সঠিক বলতে পাচ্ছি না। তবে অনুমানে বলতে পারি মার্চ মাসের প্রথম দিকটা। আর এই ময়মনসিংহ আসাই ছিল আমার জীবনের প্রথম ভ্রমন।
জীবনের প্রথম নতুন কোন জায়গায় গেলে মনের ভিতর অনেকটা উল্লাস জন্মে। আমিও যখন শোনেছিলাম, আমি ময়মনসিংহ পলিটেকনিক কলেজে পড়তে যাবো-তখন আমার মাঝেও অনেকটা আনন্দ জন্মিল। আমি শহর দেখতে পারবো। মনের মাধ্যে আনন্দ লাগছে। এর পূর্বে যা দেখি নি তা যদি শোনি এখন দেখবো। তাহলে তো আনন্দ লাগবেই।
যে দিন ময়মনসিংহ আসবো, সে দিন আমি সকাল সকাল ঘুম ভেঙে উঠেছিলাম। মনে হলো আনন্দের কারণেই সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো। ঘুম হতে উঠে আমি আমার মায়ের কাছে গিয়ে বললাম, আম্মা আমি কি আজকে যাবো না?
হে। আজকেই যাবি।
তাহলে কখন যাবো? দাদা ভাইয়ের ঘুম তো এখনো ভাঙে নি।
ডাক দে। যা।
আমরা ছিলাম চার ভাই। দাদা ভাই বলে ডাকি আমদের মাঝে যে সবচেয়ে বড় ভাই। তার নাম আজিজুল হক এবং বাকি দুই ভাইয়ের নাম- মিসকাতুল মেহেদী মিজান। তার ডাক নাম ছিল মিজান এবং আরেক ভাইয়ের নাম ছিল সাইফুল ইসলাম। আমি যখন ময়মনসিংহ আসি তখন আমার এই ভাই (সাইফুল ইসলাম) ছিল দেশের বাহিরে (মালয়েশিয়া)। যায় হোক মূল কাহিনীতে আসি।
দক্ষিন মুখী ঘর। আমি উত্তরের ঘরে গিয়ে দাদা ভাইকে ডাক দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ঘরে ঢুকার আগেই দোয়ার ভাঙা কল্লোল হতেই একটি ডাক দিলাম। দাদা ভাই ঘর হতে হালকা ঘুম হতেই জিহ্বার ডগায় বাজিয়ে বাজিয়ে বলল, কয়টা বাজে। আমি বেশ আনন্দ। আনন্দ হওয়ার কারণ আগেই বলেছি। সেই আনন্দের বলে উচ্চস্বরে বললাম, সাড়ে দশটা। এবার সে একটু ঘুম ভেঙে বলল, তৈরি হয়ে নে। বেলা তো অনেক হয়ে গেলো। দাদা ভাই এই কথা বললে আমি ঘরে প্রবেশ করলাম। গোসল করার জন্য সাবান হাতে নিয়ে নদীর ঘাটের দিকে যাচ্ছি।
নদীর নাম মঙ্গলশ্বরী। গ্রামের ছোট নদী হলেও গোসল করতে বেশ মজা। সেখানে মনের মতো করে সাঁতার কাটা যায়। তার দুই দিকে ঝুলে আছে কলমি গাছ। কোন কোন কলমি গাছে বেশ কলমি ফুলও ফুটে আছে।
ছোট বেলা হতে তার সাথে স্কুলে গিয়েছি। প্রাইমারী হতে দু‘জন এক সঙ্গে স্কুলে যায়। সে আর কেউ নয় পর্শী সম্পর্কে আমার ভাতিজা। তার নাম মাহবুব আলম। সেও সেই ঘাটে গেল। আমি ঘাটে গিয়ে দু‘হাত ধোঁতে ধোঁতে বললাম, ভাতিজা?
সে একটু হেসে হেসে বলল, হ চাচা। আজকে চলে যাইবা?
আমার মাঝে আনন্দ। তাই হাসি হাসি মুখে বললাম, হুম..!
আইবা কবে?
সামনে মাসে।
শহরে গিয়ে ভুলে যেওনা।
মাহবুব আলম এই কথা বলে চলে গেল। আমি আনন্দ মন নিয়ে নদীর ঘাটে একা একা খুব ভাল করে গোসল করছি। মনের ভিতর নানা ধরনের কথা জাগলো। কভু কভু জাগে, দেখি শহরের মানুষ অনেক সুন্দর থাকে। আমিও সেখানে গেলে বোধয় সুন্দর হয়ে যাবো। আবার কখনো কখনো ভাবি, শহরে যাবো ভাল করে সাবান লাগিয়ে গোসল করে নেই। এই কথা ভেবে এই দিন এখানে প্রায় তিন বার গায়ে সাবান লাগিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম জীবনের প্রথম শহরে আসবো। সেখানে মনে হয় ভাল পরিবেশ নিয়ে যেতে পারবো না। শহরের মানুষ মনে হয় আরো ভাল পরিবেশে বসবাস করে। এই কথা ভেবেই তিন বার সাবান লাগিয়েছিলাম।
বাড়িতে এসে দেখি আরেক জন আসলো। রেজ্জাক করিম। তিনি ছিল দাদা ভাইয়ের ভাল বন্ধু। সেও ময়মনসিংহ আসবে। ভালই হলো তাহলে আমরা তিন জন ময়মনসিংহ আসবো। আমি গোসল করে নতুন শার্ট-পেন্ট পড়লাম। মনটা কেমন যেন প্রেশ প্রেশ লাগছে। নিজেকে নিজের কাছে এই দিন খুব সুন্দর দেখাইয়া ছিল। আমি আমার মন মতো করেই সেজেছিলাম। বাড়িতে আমার বড় বোন এবং মা-বাবা আরেক ছোট বোন ছিল। আমি তৈরি হয়ে ময়মনসিংহ আসার সময় ঘর হতে বের হলাম। তখন আমার বড় বোন (নুরুনাহার আক্তার) বলল, এই তো এনামুলকেও সুন্দর দেখা যায়। এই কথা বলার একটি কারণ আছে। তা অন্য গল্পে আলোচনা করবো। যায় হোক আমি ময়মনসিংহ আসার জন্য রওনা দিবো। এমন সময় মা আমায় বলল, তোর বাবার কাছ হতে বিদায় নিয়ে যা। আমি আবার ঘরে গিয়ে বাবার কাছ হতে বিদায় নিতে গেলে বাবা তার পকেট হতে একশত টাকা বের করে দিল। দেওয়ার সময় বলে দিল আমি ইহা রাস্তায় খরচ করতাম। বাবার কাছ হতে বিদায় নিয়ে বাহিরে আসতেই মা আমাকে তার কাছে টান দিয়ে নিয়ে কি যেন সূরা বলে আমার মাথায় ফুঁ দিল। তখন দাদা ভাই একটু হাসতে হাসতে বলল, তোরে দোয়া করে দিল। সেই থেকেই আমি বিশ্বাস করি আমি যেখানে যায় বা যেই কাজেই করি না কেন! আমার সাথে আমার মায়ের দোয়া আছে। তারপর চাচা, চাচাতো ভাই, চাচী, আরো পর্শীদের কাছ হতে বিদায় নিলাম।
২০১৬ সালে আমি ময়মনসিংহ এসেছিলাম। তখন কত তারিখ ছিল তা সঠিক বলতে পাচ্ছি না। তবে অনুমানে বলতে পারি মার্চ মাসের প্রথম দিকটা। আর এই ময়মনসিংহ আসাই ছিল আমার জীবনের প্রথম ভ্রমন।
জীবনের প্রথম নতুন কোন জায়গায় গেলে মনের ভিতর অনেকটা উল্লাস জন্মে। আমিও যখন শোনেছিলাম, আমি ময়মনসিংহ পলিটেকনিক কলেজে পড়তে যাবো-তখন আমার মাঝেও অনেকটা আনন্দ জন্মিল। আমি শহর দেখতে পারবো। মনের মাধ্যে আনন্দ লাগছে। এর পূর্বে যা দেখি নি তা যদি শোনি এখন দেখবো। তাহলে তো আনন্দ লাগবেই।
যে দিন ময়মনসিংহ আসবো, সে দিন আমি সকাল সকাল ঘুম ভেঙে উঠেছিলাম। মনে হলো আনন্দের কারণেই সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো। ঘুম হতে উঠে আমি আমার মায়ের কাছে গিয়ে বললাম, আম্মা আমি কি আজকে যাবো না?
হে। আজকেই যাবি।
তাহলে কখন যাবো? দাদা ভাইয়ের ঘুম তো এখনো ভাঙে নি।
ডাক দে। যা।
আমরা ছিলাম চার ভাই। দাদা ভাই বলে ডাকি আমদের মাঝে যে সবচেয়ে বড় ভাই। তার নাম আজিজুল হক এবং বাকি দুই ভাইয়ের নাম- মিসকাতুল মেহেদী মিজান। তার ডাক নাম ছিল মিজান এবং আরেক ভাইয়ের নাম ছিল সাইফুল ইসলাম। আমি যখন ময়মনসিংহ আসি তখন আমার এই ভাই (সাইফুল ইসলাম) ছিল দেশের বাহিরে (মালয়েশিয়া)। যায় হোক মূল কাহিনীতে আসি।
দক্ষিন মুখী ঘর। আমি উত্তরের ঘরে গিয়ে দাদা ভাইকে ডাক দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ঘরে ঢুকার আগেই দোয়ার ভাঙা কল্লোল হতেই একটি ডাক দিলাম। দাদা ভাই ঘর হতে হালকা ঘুম হতেই জিহ্বার ডগায় বাজিয়ে বাজিয়ে বলল, কয়টা বাজে। আমি বেশ আনন্দ। আনন্দ হওয়ার কারণ আগেই বলেছি। সেই আনন্দের বলে উচ্চস্বরে বললাম, সাড়ে দশটা। এবার সে একটু ঘুম ভেঙে বলল, তৈরি হয়ে নে। বেলা তো অনেক হয়ে গেলো। দাদা ভাই এই কথা বললে আমি ঘরে প্রবেশ করলাম। গোসল করার জন্য সাবান হাতে নিয়ে নদীর ঘাটের দিকে যাচ্ছি।
নদীর নাম মঙ্গলশ্বরী। গ্রামের ছোট নদী হলেও গোসল করতে বেশ মজা। সেখানে মনের মতো করে সাঁতার কাটা যায়। তার দুই দিকে ঝুলে আছে কলমি গাছ। কোন কোন কলমি গাছে বেশ কলমি ফুলও ফুটে আছে।
ছোট বেলা হতে তার সাথে স্কুলে গিয়েছি। প্রাইমারী হতে দু‘জন এক সঙ্গে স্কুলে যায়। সে আর কেউ নয় পর্শী সম্পর্কে আমার ভাতিজা। তার নাম মাহবুব আলম। সেও সেই ঘাটে গেল। আমি ঘাটে গিয়ে দু‘হাত ধোঁতে ধোঁতে বললাম, ভাতিজা?
সে একটু হেসে হেসে বলল, হ চাচা। আজকে চলে যাইবা?
আমার মাঝে আনন্দ। তাই হাসি হাসি মুখে বললাম, হুম..!
আইবা কবে?
সামনে মাসে।
শহরে গিয়ে ভুলে যেওনা।
মাহবুব আলম এই কথা বলে চলে গেল। আমি আনন্দ মন নিয়ে নদীর ঘাটে একা একা খুব ভাল করে গোসল করছি। মনের ভিতর নানা ধরনের কথা জাগলো। কভু কভু জাগে, দেখি শহরের মানুষ অনেক সুন্দর থাকে। আমিও সেখানে গেলে বোধয় সুন্দর হয়ে যাবো। আবার কখনো কখনো ভাবি, শহরে যাবো ভাল করে সাবান লাগিয়ে গোসল করে নেই। এই কথা ভেবে এই দিন এখানে প্রায় তিন বার গায়ে সাবান লাগিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম জীবনের প্রথম শহরে আসবো। সেখানে মনে হয় ভাল পরিবেশ নিয়ে যেতে পারবো না। শহরের মানুষ মনে হয় আরো ভাল পরিবেশে বসবাস করে। এই কথা ভেবেই তিন বার সাবান লাগিয়েছিলাম।
বাড়িতে এসে দেখি আরেক জন আসলো। রেজ্জাক করিম। তিনি ছিল দাদা ভাইয়ের ভাল বন্ধু। সেও ময়মনসিংহ আসবে। ভালই হলো তাহলে আমরা তিন জন ময়মনসিংহ আসবো। আমি গোসল করে নতুন শার্ট-পেন্ট পড়লাম। মনটা কেমন যেন প্রেশ প্রেশ লাগছে। নিজেকে নিজের কাছে এই দিন খুব সুন্দর দেখাইয়া ছিল। আমি আমার মন মতো করেই সেজেছিলাম। বাড়িতে আমার বড় বোন এবং মা-বাবা আরেক ছোট বোন ছিল। আমি তৈরি হয়ে ময়মনসিংহ আসার সময় ঘর হতে বের হলাম। তখন আমার বড় বোন (নুরুনাহার আক্তার) বলল, এই তো এনামুলকেও সুন্দর দেখা যায়। এই কথা বলার একটি কারণ আছে। তা অন্য গল্পে আলোচনা করবো। যায় হোক আমি ময়মনসিংহ আসার জন্য রওনা দিবো। এমন সময় মা আমায় বলল, তোর বাবার কাছ হতে বিদায় নিয়ে যা। আমি আবার ঘরে গিয়ে বাবার কাছ হতে বিদায় নিতে গেলে বাবা তার পকেট হতে একশত টাকা বের করে দিল। দেওয়ার সময় বলে দিল আমি ইহা রাস্তায় খরচ করতাম। বাবার কাছ হতে বিদায় নিয়ে বাহিরে আসতেই মা আমাকে তার কাছে টান দিয়ে নিয়ে কি যেন সূরা বলে আমার মাথায় ফুঁ দিল। তখন দাদা ভাই একটু হাসতে হাসতে বলল, তোরে দোয়া করে দিল। সেই থেকেই আমি বিশ্বাস করি আমি যেখানে যায় বা যেই কাজেই করি না কেন! আমার সাথে আমার মায়ের দোয়া আছে। তারপর চাচা, চাচাতো ভাই, চাচী, আরো পর্শীদের কাছ হতে বিদায় নিলাম।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোহরাব রিপন ১৯/১০/২০১৮সুন্দর