স্বপ্ন দিনের তুমি (দ্বিতীয় অধ্যায়)
মাঝ রাতে আজ যেন কে ডাকে আমায়
ঐ দূর সীমানায় কিসের শব্দ শোনা যায়।
পরানের গভীরে দিয়ে যায় ডাক
ভালবাসা এক নিত্য অভিরাম হাক।
সেদিন বিকেল বেলা। আমি বসেছিলাম আমার আলয়ে। কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে লাভলী আসল আমার রুমে। সুন্দর লাল টকটকে মুখখানা তার।আমাকে দেখেই বলল,কেমন আছো তুমি,অনেক দিন তোমাকে দেখিনা ,তাই তোমার কাছে ছোটে আসা। পেটে ক্ষুধা পেয়েছে বেশ,তবু ও তোমাকে দেখার তীব্র অভিলাষ নিয়ে আসলাম। এই যে গাধা ফুলটা তোমার জন্য। আমাদের কলেজের আঙ্গিনায় ফুটেছে। আমি চুরি করে নিয়ে এসেছি তোমার জন্য।
লাভলি তুমি কেমন আছো? তোমাকে খুবই ক্লান্ত দেখাচ্ছে। একটু ফ্রেশ হবে।
না আমিন।আমি বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিব।
তবে একটু বসো।
আজ নয় অন্য আরেকদিন তোমার সাথে চুটিয়ে আড্ডা দেব।
সন্ধ্যায় বাড়িতে এসো।
দেখি সময় পেলে যাব।
সময় পেলে যাব মানে,অবশ্যই তোমাকে আসতে হবে।
আচ্ছা ঠিক আছে আসব।
শেষ বিকেলের আভা চারিকে ছড়িয়ে পড়েছে। চারিদিকে সবুজ আর সবুজের সমারোহ। পাখি ডাকা বিকেলের শান্ত হাওয়ার মাঝে ডানা মেলে পাখির মত উড়তে মন চাইছে। লাভলীকে দেখলে আমার মনের মেধ্যে কি যেন এক সুখ পাখি উড়ে বেড়ায়। মন মাঝে কে যেন প্রেমের করুন সুরে বাশিঁ বাজায়।
একটু পরে বাজারে যাব। কিছু প্রয়োজনীয় কাজ আছে, সেগুলো করতে হবে। তারপর লাভলীদের বাড়িতে যেতে হবে।
শীতের প্রথম দিকে। এখনও হেমন্তের কিছুটা আবহ রয়ে গেছে। সন্ধ্যা সময় গাটা শির শির করে । হালকা গরম কাপড় পড়তে হয়। হিমেল হাওয়ায় তবুও মনটা বরে যায়। আবছা অন্ধকারে একা আমি চলছি আমার অন্তন্ত প্রিয় একটি পথ ধরে। এপথ দিয়ে যদি হাজার বছর ধরে চলতে পারতাম। এ পথের দিগন্ত যদি শেষ নাহতো কোনদিন। কথাগুলো কিসের সাথে যেন মিলে যাচ্ছে। মনে পড়েছে জহির রায়হানের একুশের গল্পে মনে হয় পড়েছিলাম।
দরজার টোকা দিতেই লাভলী এস দরজা খোলে দিল।
কি করতেছিলে তুমি।
না এমন কিছু নয়। তোমার কথাই ভাবতেছিলাম।
তাই নাকি।
তানাহলে কি? তুমি তো আমার শিরায় শিরায় মিশে আছো। আমার রক্ত বিন্দুতে প্রতিক্ষন তুমি আলোড়ন জাগাও ।
ভাল।
আচ্ছা তুমি বস আমি আসতেছি।
কোতথয় যাবে।
কোথাও না, আমার মনের মানুষের জন্য কিছু তৈরি করে নিয়ে আসি।
লাভলী কিছু আনতে হবেনা। আমি একটু আগে বাজার থেক নাস্তা করে এসছি।
একটু বসো তো। একটু ধমকের স্বরে বলল লাভলী।
আমি চুপ করে বেস রইলাম । আমার সামনে লাভলীর কলেজের নোট বই। তা নিয়ে দেখতে লাগলাম।
কয়েকটি কবিতার লাইন লখা আছে।
আমি পড়তে লাগলাম।
মধুর সুরে বাশি বজে হৃদয়ের মোহনায়
প্রেমের মহাকাব্যে আমি তোমায় ছাড়া অসহায়,
অন্তরে রেখেছি যারে খুবই যতন করে
তাকেই চাই মনে প্রাণে জীবন ধরে।
ভালবাসার মোহে নয় তুমি আমার জীবন
স্বপ্ন বাসরে তুমিই আমার একমাত্র আপন,
বুননে বুননে তুমি বিনি সুতার মালা
আমারে দিও না তুমি ব্যার্থ প্রেমের জ্বালা।
কাব্যে কাননে অসীম সীমানায়
হারিয়ে যেয়েও না তুমি অজানায়,
সদা চঞ্চল এই মন প্রান দিলাম তোমার তরে
ভালবাসা দিয়ে যেও জীবন ভরে।
কি ব্যাপার ,তুমি আমার খাতা থেকে কি পড়তেছ?
এই একটি কবিতা পড়লাম।
কেমন লেগেছে বলো?
বেশ ভাল।
তা তোমারই লেখা বুঝি?
হ্যা; আমি লিখেছি।
দারুন,এক কথায় চমৎকার।
তোমার আম্মু কোথায়?
রান্না ঘরে,রান্নাতে ব্যস্ত।
এখন তোমাকে তো খুবই ফ্রশ ফ্রেশ লাগতেছে।
গোসল করেছি তো তাই।
একটু পরে রিমা এস পড়েছে।
কেমন আছ রিমা।
ভাল,আপনি কেমন আছেন।
ভাল আছি, আর বলো তোমার লেখাপড়া কেমন চলছে।
ভাল।
লাভলী আজ আর বসতে পারবনা। আমার খুবই জরুরী কাজ আছে। আগামীকাল দেখা করো,কেমন?
আর একটু থেকে গেলে হয়না।
না আমার সোনা মনি। যদি তোমাদের বাড়িতে থাকতে পারতাম ,তাহলে তো ভাল হতো। দেখি কপালে কি আছে।
তাহলে আবার আসবা কিন্তু।
আমাগীকাল তো তোমার সাথে দেখা হচ্ছে।
আচ্ছা
বিদায়।
(অনেক দিন আগের কথাগুলি,মনের ভিতর উকি দিয়ে উঠে।তাই মনে পরে গেল। )জীবন পথে তোমার সাথে ঘটে যাওয়া স্মৃতি গুলি আমাকে বারবার পীড়া দেয়। তোমাকে ভুলতে গেলল যে ভুলতে পারিনা। তুমি তো হৃদয়ের মাঝে মিশে আছো স্বপ্নের মত। তোমার ভালবাসা ছাড়া আমি কিভাবে বাচিঁ বলো।
বেলা হয়েছে। এভাবে বসে লাভলীর কথা চিন্তা করলে হবেনা? আজ আমার ক্লাশ রয়েছ। তাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পরলাম। বেশ ভাল লাগছে । লাভলী কে নিয়ে চিন্তা ভাননা করলে যে আমার সহজ সরল মনটা অনেক ভাল হয়ে যায়। আমি তোমাকে খুবই ভাল বাসি।অনেক অনেক ভালবাসি। যে ভালবাসায় কোন ভেজাল নেই । আছে শুধু স্নিগ্ধতায় ভরা এক অসীম সুখ। সে স্বপ্ন বুকে লালন করে হাজার বছর কাটিয়ে দেয়া যায়।
৫. কেমন আছো প্রিয়রা। অনেক দিন হলো তোমাদের সাথে আমার ক্লাশ হয়না। আমি ও একটু খুব ব্যস্ত ছিলাম। আজ কেমন যেন ঘুমোট হয়ে রয়েছে প্রকৃতিটা । বৃষ্টি হতে পারে । আর এমন বৃষ্টি মাখা দিনে অনেক ভাল লাগে । আজ আমি তোমাদেরকে সামাজিক বিভন্ন সমস্যার কথা বলব । এর মধ্যে অন্যতম হলো বাল্য বিবাহ, এসিড সন্ত্রাস, দারিদ্র ও বেকারত্ব।
তোমরাই বলো কোন টপিকটি আগে পড়তে চাও ?
স্যার বেকারত্ব।
মূরত বেকার বলতে বোঝায় কাজ করতে ইচ্ছুক,অথচ কাজ পাযনা তাদেরকে । আর বেকারত্ব বলতে বোঝায় দেশের প্রচলিত মুজুরীর ভিত্ততে কাজ করতে ইচ্ছুক অথচ কাজ পায়না ,তাকে বেকারত্ব বলে।
আমাদের দেশে দিনদিন বেকারত্বের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মূল কারন হলো অমাদের দেশে আয়তনের তুলনায় লোক সংখ্যা অনেক বেশি। তাই তোমরা বুঝতে পারবে যে বেকারত্বের সহিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি যোগ সূত্র রয়েছে। আমাদের দেশে অর্ধ শিক্ষিত ,অশিক্ষিত, শিক্ষিত বেকার রয়েছ। কিন্তু তাদের যোগ্যতা মোতাবেক কাজ দেয়া যাচ্ছে না। আর এই বেকার সমস্যার কারনে আরও নানাবিধ সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ র ফলে দেশে খুন রাহাজানি, চুরি ডাকাতি ইত্যাদি বৃদ্ধ পাচ্ছে। যৈাতূক প্রথা, বাল্য বিবাহ ,নারী ও শিশু নির্যাতন সহ নানাবিধ সমস্যার মূল কারন হলো জনসংখা সমস্যা। তাই প্রথমে অমাদের কে এই সমস্যা মোকাাবেলা করতে হলে অবশ্যই জনসংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় সে দিকে নজর দিতে হবে।
বেকারত্ব দূরীকরনের অন্যতম একটি পথ হচ্ছে আত্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। আর এই কর্মসংস্থান শুধু সরকারই করবেনা,এদেশের আপামর জনসাধারন তা করতে পারে। আর এর জন্য আমাদের প্রথমেই প্রয়োজন নৈতিক বরে বলীয়ান হওয়া, সততার চাদর দিয়ে সব অন্যায় ও অসত্য কে দূরে ঠেলে দেয়া। আমরা যদি সৎ হই,পরিশ্রমী হই,তাহলে কেউ আমাদেরকে পিছনে ফেলতে পারবেনা। আরেক টি প্রধান সমস্যা হচ্ছে খ্যাদ্য ভেজাল ও বিষ মেশানেো। আসরা অনায়াসে প্রতি নিয়ত করে যাচ্ছি। কেই কোন কিছু বলছে না। তাই এথেকে আমাদের কে আগে বের হতে হেব। আজ বাজারে গেলে কি খাব তা কিনতে ভয় লাগে।কেননা ফল থেকে শুরু করে শাক-সবজ্বি সব খানেই দুই নম্বর বা ভেজাল রয়েছ।
এসব সমস্যাগুলি যদি আমরা আমাদের সমাজ হতে দূর করতে চাই ,তাহলে সকলে সমবেতভাবে মোকাবেলা করতে হবে।আর এর জন্য চাই সকলের আন্তরিক ও সৎ ইচ্ছা শক্তি।
আমি অনেক বলে ফেলেছি, তোমাদের কাছে কেমন লেগেছে,বলো।
ভাল স্যার।
আসেলে আমরা ক্লাশ করলে লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে অনেক কিছু শিক্ষা যায়।
আজ অার তোমাদের পড়াব না, অন্য আেরকদিন,কেমন? ভাল খেকো সবাই।
আর তোমরা তা বাড়িতে দেখে আসবে,তবে পড়ানোটা বেশি কাজে দিবে।
জী স্যার।
শান্ত বিকেল,উত্তরা হাওয়া বইছে। সীমানার পারে কি যেন মায়ার আহবান। দূরের নীল পাহাড়গুলোকে দেখলে মনের ভিতর কেমন যেন মনে হয়। শান্ত বিকেলে তাই একা একা হাটতে খুব ভাল লাগে। মনে পড়ে অনেক কিছু। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে লাভলীর কথা। আমার মনে অন্তরে হৃদয় মিনারে মিশে আছো তুমি। তুমি যে আমার অনাদিকালের স্বপ্ন। তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি আমি। এই সবুজ প্রকৃতিঘেরা মায়ার আলয়ে তোমাকে যদি আপন করে পেতাম তাহলে হাজার বছরের জমানো ব্যথা ও কষ্ট গুলো উড়ে যেত বৈরি বাতাসে।
কি নিরীবিলি , কি এত মায়ার জাল বুনেছ আমার মনের পরেত পরত। সাথী হারা এই আমি তোমাকে খুঁজি আপন ভেলায়। জীবন নদীতে তাই যেন এক অন্যরকম স্বপন জেগে উঠে। তোমাকে আমি হারাতে চাইনা কোন দিন। যদি আমার না হও তুমি মিশে রবে হৃদয়ের মনি কোঠায়। অনন্তকালের এক প্রেয়সী তুমি আমার।
পশ্চিমাকাশে সূর্যটা হেলে পড়েছে। বাতাসের বেগ একটু কমেছে। সূর্যের লাল আলোতে মায়ার আলোয় যেন তৈরি হয় এক অনন্য নিরবতা। যেখানে স্বপ্নের পাখািরা ঘুরে বেড়ায় স্বপ্নের দেশে।
৬.হেমন্তের পাকা ধানগুলো কি স এক সোনালী অাভা ছড়াচ্ছে যেন। চারিদিকে মানুষের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। এমন দিনে খুবই ভাল লাগে। ভাল লাগার পরশ যেন ছুঁয়ে যায় অনন্ত দিগন্তে। মানুষের ব্যস্ততার ভীরে নানা রকম উৎসব ও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে থাকে গ্রামের শান্ত নিরিবীলি প্রকৃতি। তবুল মাঝে মাঝে আকাশে কালো মোঘ দেখা দেয়। তখন বৃষ্টি এলে লোকজন অকাইল্যা বৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করে। আজ বিকেলে সোহাগ, মানিক আসার কথা । আর তাদের সাথে ঘুরতে যাও য়ার কথা। অনেকদিন ধরে কোন মজা পাইনা। চাই একটু অন্য রকম শান্তি। চাই বাতায়নে কেহ আমাকে ভালবাসার পরশ দিয়ে ভরিয়ে দিতে। আমার স্বপ্নের পরিধি তো এত ছোট নয়। স্বপ্ন দেখতে আমি ভালবাসি। আর এই হেমন্ত দিনে তোমাকে আপন করে পেতে মন চায়। তারা তো এখনও আসতেছেনা। এদিকে সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায়। নিস্তব্ধতা যেন আবার ফিরে আসবে। এখানে রাতের মৌনতা ঘীরে থাকে আমাকে।
এখানে টেংরাটিলা নামে একটি জায়গা রয়েছে। এ জায়গাটা খুবই সুন্দর। চারিদেকে সবুজের সমারোহ আর ছোট ছোট টিলা। টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ড থেকে একসময় প্রচুর পরিমানে গ্যাস উত্তোলন করা হতো। ২০০৫ সালে এক ভয়াবহ দূঘৃটনা ঘটে। প্রচন্ড বিস্ফোরনে আগুন লেগে যায়। এই আগুনের লেলিহান শিখা আমি সিলেট থেকে দেখেছি। বিশ্ববিদ্যারয়ের থাকাকালীন শাহপরান হলের ছাদে উঠে দেখেছি। এই আগুন লাগা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে। অনেকে বলে নাইকো ইচ্ছা করে এখানে দূর্ঘটনার সৃষ্টি করেছে।। এ গ্যাস ফিল্ড থেকে একসময় যে পরিমান গ্যাস উত্তোলন করত তা দিয়ে পুরো দেশ চালানো যেত। কথিত আছে কোন এক মহিলা গর্ভবতী ছিল। আর প্রচন্ড বিস্ফোরন এবং আগুন লাগার ভয়ে ঐ মহিলা দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তায় তার বাচ্ছা প্রসব হয়ে যায়। কি যেণ এক আতংকে এ এলাকার মানুষজন সবাই দৌড়িয়ে একেবারে সীমানার কাছে চলে যায়। এখনও মানুষজন অনেক আতংকে থাকে। টিলার ফাঁকে ফাঁকে গ্যাসের বুদবুদ রয়েছে। যা সংগ্রহ করে মানুষ জ্বালানী হিসাবে ব্রবহার করে থাকে। তবে এহেন পরিস্থিতিতে যে কোন সময় আবার দূর্ঘটনা হতে পারে। আমরা তো এমনিতে কোন রকম সচেতন হইনা। যখন কোন একটা কাহিনী ঘটে তখন সচেতন হই। যখন করার কিছু থাকেনা।
অনেক কিছু ভাবতে ভাকতে সোহাগ সহ অন্যরা এসে পরল। স্যার কি করতেছেন?
তোমাদের অপেক্ষায় ছিলাম।
তোমাদের এলাকাটা তো অনেক আকর্ষনীয় ও মনোরম।
জী স্যার।আপনার ভাল লেগেছে স্যার?
অনেক ভাল লেগেছে।
স্যার এই যে এই এলাকাটা দেখছেন একটু উচু এখানে নাইকোর লোকেরা থাকত।
আর দূরভীন দিয়ে চারিদিকে দৃষ্টি রাখত।
ভাল।
এই যে ঘেটটা দেখেছেন ,এখানে শতদিন অনেক মানুষের সমাগম হতো। অনেক টিভি চ্যানেল সহ নানা সংবাদকর্মীরা আসত।
এত সুন্দর জায়গা আমি জীবনে খুব কমই দেখেছি।
চারিদিকে কাঠাল বাগানের সারি সারি গাছ। মাঝে মাঝে সবুজের আচল বিছানো সুন্দর সাজানো বাগান যেন মনে হয়।
সারাদিন এখানে আড্ডা দিয়ে কাটানো যাবে।
একটু পরে সুমা এসে বলল,স্যার কেমন আেছেন? এই যে নারিকেল গাছটা দেখছেন এটা আমাদের বাড়ি।
আজ একটু চারিদিক তোমাদের এলাকাটা ঘুরে দেখতে চাই। অন্য আরেকদিন তোমাদের বাড়িতে এসে বেড়াতে যাব। কেমন।
আসেনা স্যার,আপনি গেলে অনেক ভাল লাগবে।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সুমা। আজ যেতে পারছিনা বলে অনেক দুঃখিত।বলেছি তো অন্য আরেক দিন যাব।
টেংরাটিলা ঘুরতে ঘুরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো। পূরর্নিমার চাঁদ উঠেছে। তাই অন্ধকারের হাতছানি নেই। এলোমেলো মনে নানান স্বপ্ন উকি দিয়ে বেড়াতে লাগল।
মনের মাঝে বেড়াতে লাগল হাজারো স্বপ্ন। কি যেন এক মায়ার বাধনে জড়িয়ে গেছি মনে হয়।জীবনের রংগিন ভেলাতে ভেসে ভেসে যেন চলছি অনেক দূরে ,বহু দূরে, স্বপ্নের খুব কাছাকাছি। যেথানে আমার হৃদয়ের হাজার মনপরিরা ঘুরে বেড়ায়।অনন্ত প্রেমময় মায়া বাগানে নেচে বেড়ায় প্রজাপ্রতিরা। রংগিন ফুলেরা ফুটেছে নানা বর্ণ নিয়ে। এমন দিনে যদি কোন প্রেয়সী আমার মনটা নাচিয়ে দিতে পারত,তাহলে কত ভাল লাগল। তবে এসব মূহূর্তে সবচেয়ে বেশি মনে পরে লাভলীকে । যে আমার মনের পরতে পরতে মিশে আছে আজীবন।
(চলবে)
ঐ দূর সীমানায় কিসের শব্দ শোনা যায়।
পরানের গভীরে দিয়ে যায় ডাক
ভালবাসা এক নিত্য অভিরাম হাক।
সেদিন বিকেল বেলা। আমি বসেছিলাম আমার আলয়ে। কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে লাভলী আসল আমার রুমে। সুন্দর লাল টকটকে মুখখানা তার।আমাকে দেখেই বলল,কেমন আছো তুমি,অনেক দিন তোমাকে দেখিনা ,তাই তোমার কাছে ছোটে আসা। পেটে ক্ষুধা পেয়েছে বেশ,তবু ও তোমাকে দেখার তীব্র অভিলাষ নিয়ে আসলাম। এই যে গাধা ফুলটা তোমার জন্য। আমাদের কলেজের আঙ্গিনায় ফুটেছে। আমি চুরি করে নিয়ে এসেছি তোমার জন্য।
লাভলি তুমি কেমন আছো? তোমাকে খুবই ক্লান্ত দেখাচ্ছে। একটু ফ্রেশ হবে।
না আমিন।আমি বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিব।
তবে একটু বসো।
আজ নয় অন্য আরেকদিন তোমার সাথে চুটিয়ে আড্ডা দেব।
সন্ধ্যায় বাড়িতে এসো।
দেখি সময় পেলে যাব।
সময় পেলে যাব মানে,অবশ্যই তোমাকে আসতে হবে।
আচ্ছা ঠিক আছে আসব।
শেষ বিকেলের আভা চারিকে ছড়িয়ে পড়েছে। চারিদিকে সবুজ আর সবুজের সমারোহ। পাখি ডাকা বিকেলের শান্ত হাওয়ার মাঝে ডানা মেলে পাখির মত উড়তে মন চাইছে। লাভলীকে দেখলে আমার মনের মেধ্যে কি যেন এক সুখ পাখি উড়ে বেড়ায়। মন মাঝে কে যেন প্রেমের করুন সুরে বাশিঁ বাজায়।
একটু পরে বাজারে যাব। কিছু প্রয়োজনীয় কাজ আছে, সেগুলো করতে হবে। তারপর লাভলীদের বাড়িতে যেতে হবে।
শীতের প্রথম দিকে। এখনও হেমন্তের কিছুটা আবহ রয়ে গেছে। সন্ধ্যা সময় গাটা শির শির করে । হালকা গরম কাপড় পড়তে হয়। হিমেল হাওয়ায় তবুও মনটা বরে যায়। আবছা অন্ধকারে একা আমি চলছি আমার অন্তন্ত প্রিয় একটি পথ ধরে। এপথ দিয়ে যদি হাজার বছর ধরে চলতে পারতাম। এ পথের দিগন্ত যদি শেষ নাহতো কোনদিন। কথাগুলো কিসের সাথে যেন মিলে যাচ্ছে। মনে পড়েছে জহির রায়হানের একুশের গল্পে মনে হয় পড়েছিলাম।
দরজার টোকা দিতেই লাভলী এস দরজা খোলে দিল।
কি করতেছিলে তুমি।
না এমন কিছু নয়। তোমার কথাই ভাবতেছিলাম।
তাই নাকি।
তানাহলে কি? তুমি তো আমার শিরায় শিরায় মিশে আছো। আমার রক্ত বিন্দুতে প্রতিক্ষন তুমি আলোড়ন জাগাও ।
ভাল।
আচ্ছা তুমি বস আমি আসতেছি।
কোতথয় যাবে।
কোথাও না, আমার মনের মানুষের জন্য কিছু তৈরি করে নিয়ে আসি।
লাভলী কিছু আনতে হবেনা। আমি একটু আগে বাজার থেক নাস্তা করে এসছি।
একটু বসো তো। একটু ধমকের স্বরে বলল লাভলী।
আমি চুপ করে বেস রইলাম । আমার সামনে লাভলীর কলেজের নোট বই। তা নিয়ে দেখতে লাগলাম।
কয়েকটি কবিতার লাইন লখা আছে।
আমি পড়তে লাগলাম।
মধুর সুরে বাশি বজে হৃদয়ের মোহনায়
প্রেমের মহাকাব্যে আমি তোমায় ছাড়া অসহায়,
অন্তরে রেখেছি যারে খুবই যতন করে
তাকেই চাই মনে প্রাণে জীবন ধরে।
ভালবাসার মোহে নয় তুমি আমার জীবন
স্বপ্ন বাসরে তুমিই আমার একমাত্র আপন,
বুননে বুননে তুমি বিনি সুতার মালা
আমারে দিও না তুমি ব্যার্থ প্রেমের জ্বালা।
কাব্যে কাননে অসীম সীমানায়
হারিয়ে যেয়েও না তুমি অজানায়,
সদা চঞ্চল এই মন প্রান দিলাম তোমার তরে
ভালবাসা দিয়ে যেও জীবন ভরে।
কি ব্যাপার ,তুমি আমার খাতা থেকে কি পড়তেছ?
এই একটি কবিতা পড়লাম।
কেমন লেগেছে বলো?
বেশ ভাল।
তা তোমারই লেখা বুঝি?
হ্যা; আমি লিখেছি।
দারুন,এক কথায় চমৎকার।
তোমার আম্মু কোথায়?
রান্না ঘরে,রান্নাতে ব্যস্ত।
এখন তোমাকে তো খুবই ফ্রশ ফ্রেশ লাগতেছে।
গোসল করেছি তো তাই।
একটু পরে রিমা এস পড়েছে।
কেমন আছ রিমা।
ভাল,আপনি কেমন আছেন।
ভাল আছি, আর বলো তোমার লেখাপড়া কেমন চলছে।
ভাল।
লাভলী আজ আর বসতে পারবনা। আমার খুবই জরুরী কাজ আছে। আগামীকাল দেখা করো,কেমন?
আর একটু থেকে গেলে হয়না।
না আমার সোনা মনি। যদি তোমাদের বাড়িতে থাকতে পারতাম ,তাহলে তো ভাল হতো। দেখি কপালে কি আছে।
তাহলে আবার আসবা কিন্তু।
আমাগীকাল তো তোমার সাথে দেখা হচ্ছে।
আচ্ছা
বিদায়।
(অনেক দিন আগের কথাগুলি,মনের ভিতর উকি দিয়ে উঠে।তাই মনে পরে গেল। )জীবন পথে তোমার সাথে ঘটে যাওয়া স্মৃতি গুলি আমাকে বারবার পীড়া দেয়। তোমাকে ভুলতে গেলল যে ভুলতে পারিনা। তুমি তো হৃদয়ের মাঝে মিশে আছো স্বপ্নের মত। তোমার ভালবাসা ছাড়া আমি কিভাবে বাচিঁ বলো।
বেলা হয়েছে। এভাবে বসে লাভলীর কথা চিন্তা করলে হবেনা? আজ আমার ক্লাশ রয়েছ। তাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পরলাম। বেশ ভাল লাগছে । লাভলী কে নিয়ে চিন্তা ভাননা করলে যে আমার সহজ সরল মনটা অনেক ভাল হয়ে যায়। আমি তোমাকে খুবই ভাল বাসি।অনেক অনেক ভালবাসি। যে ভালবাসায় কোন ভেজাল নেই । আছে শুধু স্নিগ্ধতায় ভরা এক অসীম সুখ। সে স্বপ্ন বুকে লালন করে হাজার বছর কাটিয়ে দেয়া যায়।
৫. কেমন আছো প্রিয়রা। অনেক দিন হলো তোমাদের সাথে আমার ক্লাশ হয়না। আমি ও একটু খুব ব্যস্ত ছিলাম। আজ কেমন যেন ঘুমোট হয়ে রয়েছে প্রকৃতিটা । বৃষ্টি হতে পারে । আর এমন বৃষ্টি মাখা দিনে অনেক ভাল লাগে । আজ আমি তোমাদেরকে সামাজিক বিভন্ন সমস্যার কথা বলব । এর মধ্যে অন্যতম হলো বাল্য বিবাহ, এসিড সন্ত্রাস, দারিদ্র ও বেকারত্ব।
তোমরাই বলো কোন টপিকটি আগে পড়তে চাও ?
স্যার বেকারত্ব।
মূরত বেকার বলতে বোঝায় কাজ করতে ইচ্ছুক,অথচ কাজ পাযনা তাদেরকে । আর বেকারত্ব বলতে বোঝায় দেশের প্রচলিত মুজুরীর ভিত্ততে কাজ করতে ইচ্ছুক অথচ কাজ পায়না ,তাকে বেকারত্ব বলে।
আমাদের দেশে দিনদিন বেকারত্বের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মূল কারন হলো অমাদের দেশে আয়তনের তুলনায় লোক সংখ্যা অনেক বেশি। তাই তোমরা বুঝতে পারবে যে বেকারত্বের সহিত জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি যোগ সূত্র রয়েছে। আমাদের দেশে অর্ধ শিক্ষিত ,অশিক্ষিত, শিক্ষিত বেকার রয়েছ। কিন্তু তাদের যোগ্যতা মোতাবেক কাজ দেয়া যাচ্ছে না। আর এই বেকার সমস্যার কারনে আরও নানাবিধ সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ র ফলে দেশে খুন রাহাজানি, চুরি ডাকাতি ইত্যাদি বৃদ্ধ পাচ্ছে। যৈাতূক প্রথা, বাল্য বিবাহ ,নারী ও শিশু নির্যাতন সহ নানাবিধ সমস্যার মূল কারন হলো জনসংখা সমস্যা। তাই প্রথমে অমাদের কে এই সমস্যা মোকাাবেলা করতে হলে অবশ্যই জনসংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় সে দিকে নজর দিতে হবে।
বেকারত্ব দূরীকরনের অন্যতম একটি পথ হচ্ছে আত্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। আর এই কর্মসংস্থান শুধু সরকারই করবেনা,এদেশের আপামর জনসাধারন তা করতে পারে। আর এর জন্য আমাদের প্রথমেই প্রয়োজন নৈতিক বরে বলীয়ান হওয়া, সততার চাদর দিয়ে সব অন্যায় ও অসত্য কে দূরে ঠেলে দেয়া। আমরা যদি সৎ হই,পরিশ্রমী হই,তাহলে কেউ আমাদেরকে পিছনে ফেলতে পারবেনা। আরেক টি প্রধান সমস্যা হচ্ছে খ্যাদ্য ভেজাল ও বিষ মেশানেো। আসরা অনায়াসে প্রতি নিয়ত করে যাচ্ছি। কেই কোন কিছু বলছে না। তাই এথেকে আমাদের কে আগে বের হতে হেব। আজ বাজারে গেলে কি খাব তা কিনতে ভয় লাগে।কেননা ফল থেকে শুরু করে শাক-সবজ্বি সব খানেই দুই নম্বর বা ভেজাল রয়েছ।
এসব সমস্যাগুলি যদি আমরা আমাদের সমাজ হতে দূর করতে চাই ,তাহলে সকলে সমবেতভাবে মোকাবেলা করতে হবে।আর এর জন্য চাই সকলের আন্তরিক ও সৎ ইচ্ছা শক্তি।
আমি অনেক বলে ফেলেছি, তোমাদের কাছে কেমন লেগেছে,বলো।
ভাল স্যার।
আসেলে আমরা ক্লাশ করলে লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে অনেক কিছু শিক্ষা যায়।
আজ অার তোমাদের পড়াব না, অন্য আেরকদিন,কেমন? ভাল খেকো সবাই।
আর তোমরা তা বাড়িতে দেখে আসবে,তবে পড়ানোটা বেশি কাজে দিবে।
জী স্যার।
শান্ত বিকেল,উত্তরা হাওয়া বইছে। সীমানার পারে কি যেন মায়ার আহবান। দূরের নীল পাহাড়গুলোকে দেখলে মনের ভিতর কেমন যেন মনে হয়। শান্ত বিকেলে তাই একা একা হাটতে খুব ভাল লাগে। মনে পড়ে অনেক কিছু। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে লাভলীর কথা। আমার মনে অন্তরে হৃদয় মিনারে মিশে আছো তুমি। তুমি যে আমার অনাদিকালের স্বপ্ন। তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি আমি। এই সবুজ প্রকৃতিঘেরা মায়ার আলয়ে তোমাকে যদি আপন করে পেতাম তাহলে হাজার বছরের জমানো ব্যথা ও কষ্ট গুলো উড়ে যেত বৈরি বাতাসে।
কি নিরীবিলি , কি এত মায়ার জাল বুনেছ আমার মনের পরেত পরত। সাথী হারা এই আমি তোমাকে খুঁজি আপন ভেলায়। জীবন নদীতে তাই যেন এক অন্যরকম স্বপন জেগে উঠে। তোমাকে আমি হারাতে চাইনা কোন দিন। যদি আমার না হও তুমি মিশে রবে হৃদয়ের মনি কোঠায়। অনন্তকালের এক প্রেয়সী তুমি আমার।
পশ্চিমাকাশে সূর্যটা হেলে পড়েছে। বাতাসের বেগ একটু কমেছে। সূর্যের লাল আলোতে মায়ার আলোয় যেন তৈরি হয় এক অনন্য নিরবতা। যেখানে স্বপ্নের পাখািরা ঘুরে বেড়ায় স্বপ্নের দেশে।
৬.হেমন্তের পাকা ধানগুলো কি স এক সোনালী অাভা ছড়াচ্ছে যেন। চারিদিকে মানুষের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। এমন দিনে খুবই ভাল লাগে। ভাল লাগার পরশ যেন ছুঁয়ে যায় অনন্ত দিগন্তে। মানুষের ব্যস্ততার ভীরে নানা রকম উৎসব ও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে থাকে গ্রামের শান্ত নিরিবীলি প্রকৃতি। তবুল মাঝে মাঝে আকাশে কালো মোঘ দেখা দেয়। তখন বৃষ্টি এলে লোকজন অকাইল্যা বৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করে। আজ বিকেলে সোহাগ, মানিক আসার কথা । আর তাদের সাথে ঘুরতে যাও য়ার কথা। অনেকদিন ধরে কোন মজা পাইনা। চাই একটু অন্য রকম শান্তি। চাই বাতায়নে কেহ আমাকে ভালবাসার পরশ দিয়ে ভরিয়ে দিতে। আমার স্বপ্নের পরিধি তো এত ছোট নয়। স্বপ্ন দেখতে আমি ভালবাসি। আর এই হেমন্ত দিনে তোমাকে আপন করে পেতে মন চায়। তারা তো এখনও আসতেছেনা। এদিকে সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায়। নিস্তব্ধতা যেন আবার ফিরে আসবে। এখানে রাতের মৌনতা ঘীরে থাকে আমাকে।
এখানে টেংরাটিলা নামে একটি জায়গা রয়েছে। এ জায়গাটা খুবই সুন্দর। চারিদেকে সবুজের সমারোহ আর ছোট ছোট টিলা। টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ড থেকে একসময় প্রচুর পরিমানে গ্যাস উত্তোলন করা হতো। ২০০৫ সালে এক ভয়াবহ দূঘৃটনা ঘটে। প্রচন্ড বিস্ফোরনে আগুন লেগে যায়। এই আগুনের লেলিহান শিখা আমি সিলেট থেকে দেখেছি। বিশ্ববিদ্যারয়ের থাকাকালীন শাহপরান হলের ছাদে উঠে দেখেছি। এই আগুন লাগা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে। অনেকে বলে নাইকো ইচ্ছা করে এখানে দূর্ঘটনার সৃষ্টি করেছে।। এ গ্যাস ফিল্ড থেকে একসময় যে পরিমান গ্যাস উত্তোলন করত তা দিয়ে পুরো দেশ চালানো যেত। কথিত আছে কোন এক মহিলা গর্ভবতী ছিল। আর প্রচন্ড বিস্ফোরন এবং আগুন লাগার ভয়ে ঐ মহিলা দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তায় তার বাচ্ছা প্রসব হয়ে যায়। কি যেণ এক আতংকে এ এলাকার মানুষজন সবাই দৌড়িয়ে একেবারে সীমানার কাছে চলে যায়। এখনও মানুষজন অনেক আতংকে থাকে। টিলার ফাঁকে ফাঁকে গ্যাসের বুদবুদ রয়েছে। যা সংগ্রহ করে মানুষ জ্বালানী হিসাবে ব্রবহার করে থাকে। তবে এহেন পরিস্থিতিতে যে কোন সময় আবার দূর্ঘটনা হতে পারে। আমরা তো এমনিতে কোন রকম সচেতন হইনা। যখন কোন একটা কাহিনী ঘটে তখন সচেতন হই। যখন করার কিছু থাকেনা।
অনেক কিছু ভাবতে ভাকতে সোহাগ সহ অন্যরা এসে পরল। স্যার কি করতেছেন?
তোমাদের অপেক্ষায় ছিলাম।
তোমাদের এলাকাটা তো অনেক আকর্ষনীয় ও মনোরম।
জী স্যার।আপনার ভাল লেগেছে স্যার?
অনেক ভাল লেগেছে।
স্যার এই যে এই এলাকাটা দেখছেন একটু উচু এখানে নাইকোর লোকেরা থাকত।
আর দূরভীন দিয়ে চারিদিকে দৃষ্টি রাখত।
ভাল।
এই যে ঘেটটা দেখেছেন ,এখানে শতদিন অনেক মানুষের সমাগম হতো। অনেক টিভি চ্যানেল সহ নানা সংবাদকর্মীরা আসত।
এত সুন্দর জায়গা আমি জীবনে খুব কমই দেখেছি।
চারিদিকে কাঠাল বাগানের সারি সারি গাছ। মাঝে মাঝে সবুজের আচল বিছানো সুন্দর সাজানো বাগান যেন মনে হয়।
সারাদিন এখানে আড্ডা দিয়ে কাটানো যাবে।
একটু পরে সুমা এসে বলল,স্যার কেমন আেছেন? এই যে নারিকেল গাছটা দেখছেন এটা আমাদের বাড়ি।
আজ একটু চারিদিক তোমাদের এলাকাটা ঘুরে দেখতে চাই। অন্য আরেকদিন তোমাদের বাড়িতে এসে বেড়াতে যাব। কেমন।
আসেনা স্যার,আপনি গেলে অনেক ভাল লাগবে।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সুমা। আজ যেতে পারছিনা বলে অনেক দুঃখিত।বলেছি তো অন্য আরেক দিন যাব।
টেংরাটিলা ঘুরতে ঘুরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো। পূরর্নিমার চাঁদ উঠেছে। তাই অন্ধকারের হাতছানি নেই। এলোমেলো মনে নানান স্বপ্ন উকি দিয়ে বেড়াতে লাগল।
মনের মাঝে বেড়াতে লাগল হাজারো স্বপ্ন। কি যেন এক মায়ার বাধনে জড়িয়ে গেছি মনে হয়।জীবনের রংগিন ভেলাতে ভেসে ভেসে যেন চলছি অনেক দূরে ,বহু দূরে, স্বপ্নের খুব কাছাকাছি। যেথানে আমার হৃদয়ের হাজার মনপরিরা ঘুরে বেড়ায়।অনন্ত প্রেমময় মায়া বাগানে নেচে বেড়ায় প্রজাপ্রতিরা। রংগিন ফুলেরা ফুটেছে নানা বর্ণ নিয়ে। এমন দিনে যদি কোন প্রেয়সী আমার মনটা নাচিয়ে দিতে পারত,তাহলে কত ভাল লাগল। তবে এসব মূহূর্তে সবচেয়ে বেশি মনে পরে লাভলীকে । যে আমার মনের পরতে পরতে মিশে আছে আজীবন।
(চলবে)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবিদ আল আহসান ০৯/০৮/২০১৫Awesome