স্বপ্নদিনের তুমি
খুব বেশি বৃষ্টি হয়েছে আজ। উত্তরের শিতল হাওয়া প্রাণে দোলা দিয়ে যায়। এত কোমলতা, এতো স্নিগ্ধতা মনটা যেন ফুরফুরে হয়ে যায়। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালে দূরের নীল পাহাড় গুলোকে যেন মনে হয় একবারে নিকটে। এত নিকটে মনে হয় যেন একটু দূরে গ্রামটি পেরুলেই তা ছুঁয়া যাবে,কিন্তু কম করে হলেও প্রায় ১০ কিলোমিটার হবে। পাহাড়গুলো ভারতের ।আমরা ইচ্ছে করলেও তা পেরুতে পারবনা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা হলো সুনামগঞ্জ। আর সুনামগঞ্জের সীমানা সংলগ্ন উপজেলা গুলোর মধ্যে দোয়ার বাজার অন্যতম।এখানে সীমান্তের কাছে বাশতলা, ঝুমগাওঁ, বাগানবাড়ী অনেক প্রাকৃতিক লীলাভূমির আধার। এই এলাকাগুলে আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি। এত ভাল লাগে যে মন চায় বারবার ঘুরে আসি।
৯ টা প্রায় বেজে গেছে ,১০ টা থেকে ক্লাশ আমার। এখনও শুয়ে থাকা উচিত নয় । তাই তাড়াহুড়ো করে বিছানা থেকে উঠতে হলো। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবে মাত্র পাশ করে এখানে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেছি। সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজ। প্রথমে যেদিন এখানে এসেছিলাম মনে হচ্ছিল যেন পথ ফুড়াতে চায়না। সিলেট থেকে আসতে আসতে প্রায় ৪ ঘন্টার মত লেগে যায়। ভেবেছিলাম এখানে চাকুরী করা যাবে না,কিন্তু পরে এখানের প্রাকৃতিক দৃশ্য আর কোমলমতি আমার প্রিয় ছাত্র/ছাত্রীদের কথা ভেবে থেকে গেলাম। আর এই খেকে যাওয়ার মাঝে আমাকে জীবনে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। যা হউক অন্য আরেক দিন এগুলো হয়তো বলা যাবে।
আজ তোমাদের সাথে আমার প্রথম ক্লাশ। আমি সবেমাত্র পাশ করে বের হয়েছি। বলতে পার তোমাদের মতই আমি। তোমাদের সাথে আমরা বয়সের ব্যবধান তেমন নয়। আমি তোমাদের শিক্ষক আর তোমরা আমার ছাত্র। তবে তোমাদের আর আমার মাঝে আরেকটি সম্পর্ক রয়েছে,তা হলো বন্ধুত্ব। আমাকে তোমরা বন্ধূর মতই ভাবতে পার। আমরা সব বিষয়ে আলোচনা করব খুব খোলাখোলিভাবে।আমাদের মাঝে কোন অদৃশ্য দেয়াল থাকবে না। তোমাদের যে কোন প্রশ্ন, যে কোন বিষেয় আমার সাথে শেয়ার করতে পার। আর তোমার যদি আমার পড়া ভাল মনে না হয়, ভাল না লাগে তাহলে সরাসরি আমাকে বলবে,কোন রকম সংকোচ করেবনা। আমরা লেখাপড়াটাকে ঝামেলা বা বোঝা হিসেবে নিতে চাইনা্ ;আমরা চাই লেখা পড়াটা যতটুকু পারি যাতে আনন্দ এবং মজা করে সহজ করে নিতে পারি।লেখা পড়া ভাল লাগবেনা জানি তবুও জীবনের প্রয়োজনে তা ভাল লাগাতে হবে।আজ যা তোমরা শিখবে একদিন তা অবশ্যই কাজে লাগবে।আমরা আমাদের জীবনকে সুন্দর করার জন্য শিখবো,জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য শিখব,আমরা শিখব আমাদের দেশের জন্য,মায়ের জন্য, পরিবারের জন্য।আসলে জীবনটা অনেক কঠিন,আর সেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ার জন্য আমরা শিখব।আমরা আমাদের নিজেদের জন্য শিখব,আর এ শিক্ষা শুধু বই পড়া নয়,আর অনেক কিছু আছে শিক্ষার।নৈতিকতা বর্জিত সকল শিক্ষাই অসাড়। আজ আর নয় আমি অনেক বলে ফেলেছি। তবু তোমাদের মুখ থেকে কিছু জানতে টাই। তোমাদের দূর্বলতা ,তোমাদের চাওয়া আগে জানতে হবে। আমার কথা কি তোমাদের খুব খারাপ লাগতেছে। মিথ্যে বলবেনা,সরাসরি বলবে।
না স্যার আপনার কথা আমাদের অনেক ভাল লেগেছে,জীবনে এমন করে কোন স্যার আমাদের বলেনি।
ধন্যবাদ তোমাদের।
আপনাকে ধন্যবাদ স্যার।
তাহলে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।আগামীকাল তোমরা এই টপিকটি দেখে আসবে,কেমন।
ঠিক আছে স্যার।
২. আজ বিকেলটা কেমন জানি মেঘলাময়। এই মেঘলা দিনে প্রচন্ড আড্ডা দিতে ভাল লাগে। এখানে বৃষ্টি এলে চারিদিকে পানিতে ভরে যায়,মূহুর্তের মধ্যে আবার পানি কোথায় যেন বিলিন হয়ে যায়।একা একা বসে আছি। যদি কেউ থাকত পাশে তাহলে অনেক ভাল লাগত। লাভলীর কথা খুব বেশি মনে পরছে। মনে পরে এমন বৃষ্টির দিনে তার সাথে কাটানো স্মরনীয় কিছু মূহুর্ত যা জীবনে ভোলার নয়। আজ সে অনেক দূরে। আমার জীবনের পাতা হতে খসে পড়েছে। তার কথা মনে হলে আজ ও মনের মাঝে ঝড় উঠে। বৈশাখের দিনে প্রচন্ড ঝড়ে যেমন সব কিছু লন্ডভন্ড করে দেয় ,তেমনি আমার মনের গহীনে এক কষ্ট বাসা বাঁধে। আজ কোথায় আছো লাভলী? তোমাকে খুব বেশি মনে পড়ছে।এমন বাদল দিনে বর্ষার আবহে তোমাকে কাছে পেতে মন চাচ্ছে। প্রেমের বৃন্দাবনে কে যেন প্রেমর দুরন্ত বাশিঁ বাজায়।একান্ত মনে কাকে যেন আবার মন চায়। তুমি আবার এসো আমার প্রিয়া হয়ে, ভালবাসায় ভরিয়ে দেব তোমায়। কোনদিন যেতে দেবনা আমার হৃদয় হতে। নাহ, এতো কি ভাবছি; যে চলে গেছে সে কি আসবে ফিরে? জানি আসবেনা। তবুও কেন যেন মনে হয় এই তুমি ছাড়া আমার জীবনটা অচল। আমা যেন প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছি। শুধু তোমার জন্য আমি আজ দিক ভ্রান্ত। যাকে ছাড়া অন্যকিছু কল্পনা করেত গেলেও খারাপ লাগে। আমার মনের প্রতিটি পরতে পরতে তুমি যেন মিশে আছো। তোমাকে ভোলার সাধ্য আমার নেই।
বৃষ্টিটি একটু কমে গেছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। বাহিরে বের হতে মন চাচ্ছেনা। তবূও বের হেত হলো। মনটা যেহেতু খারাপ হয়ে গেছে,তাই লোকজনের সাথে কথা বললে হয়তো মনটা হালকা হবে। তবে এখানে এসে এক নিরিবিলী জায়গা পেয়েছি। পেয়েছি কোমলমতি কচিমনের একঝাক তরতাজা গোলাপ। যাদের গন্ধে সারাক্ষন হৃদয় ভরে যায়। সেই বাগানে আমি এসেছি গোলাপের চাষ করেত। জানিনা কেমন যাবে আগামী দিনগুলো। শুধু জানি আমি আমার বর্তমান অবস্থা হতে মুক্তি চাই। একটু শান্তি চাই। সবুজের পরশ চাই। নিলিমার আবহ চাই। দূরের পাহাড়ের সবুজ চাই। আর চাই অনাবিল প্রশান্তি।সবুজ দেখলে এমনিতেই আমার মনটা ভরে যায়। আর এখানকার পাহাড়ঘেরা সবুজ আরও যেন মায়াময়। প্রকৃতির পরেত পরেত যেন কি যাদু। মনের ভেতর কি যেন বয়ে যায়। সুখের নদীতে স্মান সেরে আমি অমার যত গ্লানি দূরে ফেলে নতুন করে স্বপ্ন সাজাতে চাই।
আসলে দেখেছি মানুষের জীবনে কষ্ট আসে,বেদনা আসে আবার তা চলেও যায় কিন্তু যারা তা সহ্য করতে পারেনা তারা অকালে ঝড়ে য়ায়। আমাদের এ ছোট্র জীবনে নানা ঘাত প্রতিঘাতের ভেতর দিয়ে চলতে হয়।পাওয়া ও না পাওয়ার মাঝে চলতে হয়। অনেক সময় আমরা আমাদের ভাগ্যের কাছে বন্দী। জীবনে হতাশা,দুঃখ আসতে পারে। আসতে পারে ব্যার্থতা। তাই বলে কি আমরা থমকে যাব। জীবন বিলিয়ে দেব কালের নির্মম স্রোতো । জীবনটা অনেক ছোট ,আবার ছোট ও না। তবুও জীবন পথে আমাদের চলতে হয়। আমরা কেন আমাদের জীবন বিলিয়ে দেব। আমরা যদি মনে করি জীবনটা দুঃখের,তাহলে দুঃখের; আবার যদি মনে করি জীবনটা সুখের তাহলে সুখের। আসলে সব কিছুই মানুষের মনের ব্যাপার। কে কি ভাবে তার জীবনকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে তা একান্তই নির্ভর তার ব্যাক্তিসত্তার উপর।
আমি আমার এ জীবনে অনেক গুলো মানুষকে দেখেছি আত্নহত্যা করতে। জানিনা কেন তারা এটা করে। আবার দেখেছি অনেক দুঃখ কষ্টের মাঝেও নিজের জীবনকে সাজাতে। আত্নহত্যার মাঝে যে কারন গুলো বিদ্যমান তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে প্রেমে ব্যার্থ হওয়া। অনেকেই এর মধ্যে অপরিপক্ক । জীবন সম্পর্কে যাদের এখনও ভালভাবে উপলব্দি আসেনি,জীবন যাদের কাছে নিছক একটা অদ্ভূত কল্পনা। যারা সর্বদা কল্পনার অসীম রাজ্যে ঘুরে বেড়ায়। তারা মনে করে প্রেমে ব্যার্থতা মানে এ জীবন রেখে আর কি লাভ। প্রেমিক প্রেমিকারা অতি মোহে এ কাজ করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক নানা নির্যাতনের কারনেও মানুষ আত্নহত্না করে। জীবনের কাছে পরাজিত ব্যাক্তিরা একাজ করে থাকে।
জীবনটা এক রংগিন প্রজাপ্রতির ডানার মত স্বপ্নময় নয়। আসলে জীবনটা অনেক কঠিন ও কষ্টকর। আর এ কষ্টের পথ পারি দিয়েই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জীবন চলার পধথকে আমরাই পারি সুন্দর করতে আবার আমরাই পারি অসুন্দর করতে । মানুষের নিজের কাছেই নিজের ভাগ্যের চাবাকাঠি। এ ভাগ্যের চাবিকাঠি যে সঠিকভাবে নাড়াচরা করতে পারে তার কাছেই জীবনের সাফল্য ধরা দেয়। জীবনে চলতে চলতে কত বাধাবিপত্তি আসে। আর সে গুলো মোকাবেলা করেই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
৩. খুব সকালে আজ খুম থকে উঠতে হয়েছে। ঘুমের ঘোরে কি এক দুঃস্বপ্ন আমাকে আর ঘোমাতে দেয়নি। সকালের নয়নাভিরাম রূপ আমাকে মুগ্ধ করে। কুয়াশা আর শিশির ভেজা সকালে চমৎকার এক মায়াবী আবহ তৈরি করে। কি এক ভাললাগা যেন মনের ভিতর দিয়ে বয়ে যায়। এমন সময় মায়ের হাতে বানানো পিঠা খেতে খুবই ভাল লাগে। আর সাথে যদি গরম চা হয় তাও ভাল হয়। আমি আছি দূরে বহু দূরে, কে আমাকে বানিয়ে দেবে। তাই কষ্ট মনে করে কোন লাভ নেই। ও আর যেটা বলছিলাম দুঃস্বপ্ন। আমার বাবাকে নিয়ে দেখা দুঃস্বপ্ন। যাই হউক এই দুঃস্বপ্নের কথা বলে অন্য কাইকে কষ্ট দিতে চাই না । এটা আমার মনের ভিতরই পুষে থাকুক।
তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ক্লাশে যেতে হবে। আজ আমার দুটি ক্লাশ আছে।
কেমন আছ সবাই?
আমরা ভাল আছি স্যার,আপনি কেমন আছেণ?
ভাল।
তোমাদেরকে বাসায় যে পড়াটি পড়তে বলেছিলাম তা পড়েছ তো?
জী স্যার।
আচ্ছা ভাল কথা। তবে আজ আমি তোমাদেরকে জীবনের অন্য একটি দিকের কথা বলব, কেমন? তার পূর্বে তোমার পড়াটা একটু ঝালিয়ে নেই।
সুমা বলতো কি পড়েছ ? জাষ্ট এই টপিকের থিমটা বলবা।
স্যার আপনি যে টপিকটা পড়ে আসতে বলেছিলেন সেটা হলো শিশু কল্যান। শিশুরা আমাদের দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ,তারা হচ্ছে আগামী দিনের এদেশের কান্ডারী। আমরা যদি দেশের কল্যাণ করতে চাই ,তাহলে তাদের কল্যান করতে হবে । তাদের কে সঠিক পথে ধাবিত করতে হবে। তাদের জীবনকে সঠিক পথে চালনা করেত হবে। তাদের সার্বিক দিকে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের কল্যানে নানা ধরনের কল্যানমুখী কর্মসূচী হাতে নিতে হেব । যদিও সরকার এর মধ্যে নানা ধরনের কল্যান মূলক কাজ করে যাচ্ছে তবুও তা পর্যাপ্ত নয়। আর এই কর্মসূচী গুলোকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে । সময় এসেছ আমাদের বদলাবার । আমরা যদি কালের স্রোতে গা ভাসিয়ে চলি তাহলে আমরা আগামী প্রজন্ম পাব না। আমাদের দেশের উন্নতি হবেনা। তাদেরকে যেমন নৈতিক শিক্ষায় বলীয়মান হতে হবে। তেমনি সততার সঠিক শপথ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেত হবে। তাহলেই আমরা একটা সুন্দর আগাশী পাব । ধন্যবাদ স্যার।
বাহ! দারুন বলেছ সুমা। আমি যা আশা করিনি তা তোমার কাছ থেকে পেয়েছি। আসলে মনে হচ্ছে তুমি তা খুবই যত্ন নিয়ে পড়ে এসেছ। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে তোমরা যদি একটু মনোযোগ দিয়ে এটি পড়,তাহলে বেশি কঠিন মনে হবার কোন কারন নেই।
একটি দেশের সম্পদ হলো তার তরে বেড়ে ইঠি শিশুরা। তাই দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করতে হলে আমাদেরকে শিশুদের মঙগল ও তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। তাদেরকে সঠিক ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠা,তাদের পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্খা করা ,তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষত করা এবং তাদের সুন্দর আগামী তৈরি করতে সাহায্য করা আমাদের উচিত। শিশুরা জাতির ভবিষ্যত। অতএব তাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দান করা উচিত। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকারকে যেমন নানা ধরনের সাফল কমৃসূচী হাতে নিতে হবে ,তেমনি সমাজের বিত্তবানদের এবিষয়ে এগিয়ে এসে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই গরিব। আর গ্রামে এ গরিবের সংখ্যা অসংখ্য । তাই শিশুদের কল্যানে যে সকল কর্মসূছী হাতে নিতে হবে তা অবশ্যই গ্রাম কেন্দ্রীক হতে হেব। গ্রামের শিশুদের লেখাপড়া থেক শুরু করে তাদের সার্বিক দিকে খেয়াল লাখতে হবে। শিশু নির্যাতন ,বাল্য বিবাহ, শুমু শ্রম ইত্যাদি সমাজ হতে চিরতরে বিদায় করে দিতে হবে। তাহলেই শিশুদের কল্যান সম্ভব এবং শিশুরা আগামীদিন দেশর জন্য কাজ করতে পারবে এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে পারবে।
আমি কি বলতে চেয়েছি তোমরা কি বুঝেছ?
জী স্যার।
এবিষেয় তোমাদের কোন প্রশ্ন থাকলে আমাকে করতে পার। এবিষেয় আগামীকাল কিন্তু পরীক্ষা দিতে হবে। কেমন।
না স্যার কোন প্রশ্ন নেই। আমরা বুঝেছি।
ধন্যবাদ তোমাদের । আজকের মত এখানেই ক্লাশ শেষ।
আপনাকে ও ধন্যবাদ স্যার।
৪.স্যার আজ বিকেলে ফুটবল খেলা আছে।আপনি আমাদের দলে খেলবেন। বিনীত স্বরে বলল হাবিব।
কার সাথে খেলা।
ভোগলা ইউনিয়ন বনাম সুরমা ইউনিয়ন।
কোখায় খেলবে?
স্যার এমন সুন্দর একটা জায়গায় খেলা যে,আপনার অনেক ভাল লাগবে।
কোথায়?
বাগানবাড়ী।
এটা কোথায়?
স্যার এটা হলো ভারতের একেবারে সীমান্তে।অনেক সুন্দর একটা যায়গা। যেখানে খুবই সুন্দর সুন্দর পাহাড় রয়েছ। এক কথায় বলতে গেলে পাহাড়ঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর একটি এলাকা। যেকানে গেলে চারিদিকে সবুজের সমারোহে ভরা নয়নাভিরাম প্র্রকৃতি হৃদয় মন জুড়িয়ে যায়।
আচ্ছা যাব। ফুটবল খেলি আর না খেলি অনেকদিন পাহাড়ের সংষ্পর্শে যাওয়া হয়না।
স্যা্র আমাদের ছুটি দিয়ে দেন। আমরা বিড়িতে গিয়ে প্রস্তুত হয়ে আসি।
অধ্যক্ষ স্যার কে বলে যাও ,আর আমার কথা বলিও ।যাওয়ার সময় বাসা থেকে আমাকে নিয়ে যেও ।
ঠিক আছে স্যার।
৩টার দিকে হাবিব,মোশাহিদ.নূরে আলম ও নাছির সহ আমার কাছে আসল আমাকে নিয়ে যাবার জন্য।
কিভাবে যাওয়া য়ায় স্যার?
তোমরা বলো কিভাবে যাবে।
হাবিব ৩ টা মোটর সাইকেল রয়েছে। কমপক্ষে ৫টি মোটর সাইকেল দরকার।
সিএনজি পাওয়া যাবেনা?
রাস্তা তেমন ভাল নয় আর সিএনচজি দিয়ে গেলে,অনেক টুকু পথ হেটে যেতে হবে।
তাই চলো মোটর সাইকেল দিয়ে যাওয়া যাক।
আকাঁবাকাঁ রাস্তা। অনেকটুকু পথ যাওয়ার পর কাচা রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। খুবই অসিস্থকর আবার মনের মেধ্যে একধরনের এডভেঞ্চার এডভেঞ্চার লাগছে। পাহাড়ের পাদদেশে ফুটবল খেলব ।তাও আবার ভারতের সীমানায়। এক কথায় দারুন। বলে রাখা দরকার এখানে যে মাঠে আমরা খেলব এই জায়গাটার মালিক ভারত। ভারত তার সীমানা থেক একশো গজ দূলে কাটাঁতারের বেড়া দিয়েছ। আন্তর্জাতিকভাবে এটাই নিয়ম। কোন দেশ যদি তার সীমানা প্রাচীর করতে চায় সেদেশকে অবশ্যই একশো গজ জায়গা দূরে তা করেত হবে। তাই এই জায়গাটা অঘোষিত ফুটবল খেলার মাঠ হয়েছ। প্রতিদিনই এখানে অত্র এলাকার খেলোয়াররা এখানে ফুটবল খেলে থাকে।
আমরা মূলত খেলাটার জন্য আসা নয়। মূলত আমরা চাই এখানে একটা মজা করতে । হুমায়ূনদের পাশে যে বাড়িটা তার পাশেই খেলা্ তাই হূমায়ুন আগে থেকেই বিরিয়ানির ব্যবস্থা করে রেখেছিল ।
খেলা শেষে যখন প্রায় সন্ধ্যা আসন্ন তখন কাটা তারের বেড়ার কাছে আয়েসি ভংগিতে আড্ডা দিচ্ছিলাম,তখন বিএসএফ এসে আমাদের শাসিয়ে গেলাল,যেন তাড়াতাড়ি চরে যাই,কেননা এখন আমরা তাদের সীমানার ভিতরে অবস্থান করছি। আমরা কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম। কারণ সন্ধ্যা সময় তাদের সীমানায় আমাদের এভাবে বসে থাকানা উচিত হয়নি।
ক্লান্ত বিকেলের সবটুকু ক্লান্তি আমাকে জরে ধরেছে। হঠাৎ করে খেলতে এসে একেবারে নাস্তানুবাদ হয়ে গিয়েছি।
তাই বিলম্ব না করে গোসল সেড়ে নিলাম। বেশ ফুরফুরে লাগছে মনের মধ্যে কি যেন এক আবহ চলে এসছে। ঘুমঘুম ভাব এস পড়েছে। যাই হইক তাগড়াতাড়ি যে বাসায় আসতে হবে সেটা মনে মনে ভাবতে লাগলাম। অবশেষে বিরিয়ানি খেয়ে অনেক আনন্দের অবসান ঘটিয়ে আমরা চলে এলাম আমাদের গন্তব্যে।
আসার পথে নানা রকম অবাক করা কান্ড ঘটিয়ে এসেছি। হাবিব যে মোটার সাইকেলটা নিয়ে এসেছিল তার ব্রেক ছিলনা। তবুও যে করি করে সে সামলিয়ে এসছে তা বলা বোঝানোযাবেনা। মাঝে মাঝে হেডলাইট জ্বলছিলনা। পূর্নিমার আলোই আমাদের ভরসা ছিল । তবুও তারুন্যের জয় গান বাজবেই। আসরা সিহি সালামতে আল্লাহর করুনায় বামায় আসতে পেরেছি।
কেই কেই মানুয়ের গাছের আম, নারিকেল পেড়ে এনেছে,শেষ আমাকে খেত দিয়েছে, তারা আমাকে বুঝতে দেয়নি এগুলো যে চুরি করে এনেছে।
আমিও বুঝে না বুঝার ভান করেছি।
ক্লান্ত শরীলে রোমে এসে একটানা আট ঘন্টা গুম দিলাম। সকালের সূর্যটা এর আগেই তার আলোর ঝলকানি দেখিয়েছ।
৫. ধীর পায়ে ক্লাশে ডুকলাম। মনের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে। সব সময় অবশ্য এরকম অনূভুতি আসেনা। আজ সকাল হতেই আকাশে বাতাসে কি যেন আনন্দ ধ্বনি। লাভলী আজকে অনেক বার আমাকে স্মরন করেছে। আমাকে সে ভূলে যায়নি। মনের মধ্যে রাঙগা প্রজাপ্রতিরা যেন ঘুরছে। স্বপ্ন আধারের মত মনটা উড়তে চাইছে অনন্ত আকাশ পানে।
অনেক ক্ষন আনমনা হয়ে যখন এগুলো ভাবতে লাগলাম,তখন একজন বলে উঠল,স্যার আজ কি হয়েছে আপনার।
নিজেকে সংযত করে,বল্লাম না কিছুনা।
এই তোমাদের কথাই ভাবতেছিলাম।
স্যার আজকের পরীক্ষা নিবেন না?
না আজ তোমাদের পরীক্ষা নিবনা।
আজ তোমাদের জীবনের গল্প বলব।
জী স্যার আমরা আপনার গল্প শুনতে চাই।
সত্যি বলতে কি তা গল্প না, আমার মনের একান্ত কিছু কথা।
আামাদের জীবন সম্পর্কে আমরা ভাবিনা। ভাবনার সময় পাইনা্ ব্যাস্ততা আমাদের অবসর দেয়না। তাই আমরা নিজের সম্পর্কে জানিনা।আমরা নিজে চিনতে পারিনা,নিজের কি করা উচিত, কি করা উচিত নয়,তা বুঝে উঠা দুষ্কর।আমাদের আচার আচরণ অনেক সময় অসংযত হয়ে যায়। জীবনে আসে ঊদাসিন্য। আসে নানা সমস্যা্ ; আর এই সম্যাসা আমরা অনেক সময় কাটিয়ে উঠতে পারিনা॥
জীবনটা যেন একটা ধাঁধার মত। জীবন চলছে তো চলছেই। জীবন চলা তো চলা নয় ,একদিন তা থেমে যাবে। তখন আমাদের কিছুই করার থাকবেনা। তাই আমরা যাই করিনা কেন তার মাঝে দরকার বিন্দু বিন্দু সরলতা। সহজ সরল মন নিয়ে চলতে পারিনা। এ চলা অনন্তকাল ধরে চলা নয়। এমন একদিন আসবে যেদিন আমাদের পাশে কেউ থাকবেনা্ ।আমরা শুধু মানুষকে সুথের দিনে পাই, দুঃখের দিনে কেউ আসেনা সাহায্য করতে। জীবন চলার পথে নানা প্রতিকূলতা ,বাধাঁ আসবে । আর সেগুলো মোকাবেলা করেই আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
আমাদের নিজের মাঝে আত্ব উপলব্দি আসতে হেব । তানাহলে আমরা জীবনে উন্নতি লাভ করতে পারবনা।
আজ দুনিয়াজুড়ে নানা অশান্তি। দেশে, সমাজে অশান্তির কালো থাবা ঘ্রাস করছে প্রতিনিয়ত।এমন একদিন আসবে সেদিন হয়তো সৎ মানুষের কথা কেই ভাবেনা। সবাই অসৎকে নানা বিষয়ে কাপিঁয়ে তুলবে। তাই আমাদেরকে সত্যের জয়গান গাইতে হবে। সুন্দর আগামী পথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে। দেশের জন্য ,সমাজের জন্য আমাদের কে নিজেদেরকে ভাবতে হবে।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, সভ্যতার নামে আমরা দিনদিন অসভ্য হচ্ছি। আধুনিকতার নামে যৌনতাকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসছি। এথেকে আমাদের কে মুক্তি লাভ করতে হবে। তানাহলে আমাদের জাতির ভাগ্যে কি আছে জানিনা।
আমার অমাদের দেশ প্রেম ভুলে যাই । আমরা আমাদের সততাকে ভূলে যাই। আমরা ভূলে যাই আমাদের অতীতকে। এথেকে আমাদের পরিত্রান পাওয়া দরকার।
আসরা নিজের জাতিকে চিনিনা। স্বার্খের কারনে খুন করকতে চিন্তা করিনা। যেভাবেই হউক চুরি করি,ডাকাতি করি, । কিন্তু এর থেকে আমাদের রেহাই পেতে হবে।
আমার কথাগুলো তোমরা কি বুঝতে পারছ।
জী স্যার।
আজ আর কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা। অন্য আরেকদিন বাকিটুকু শেষ করব।আমার শরীলটা
বেশি বাল নয়। তাই বিশ্রাম নেয়া দরকার।
জী স্যার।
তাহলে আজ এ পর্যন্তই।
ধন্যবাদ তোমাদের। স্যার আপনাকেও ধন্যবাদ।
(চলবে)
৯ টা প্রায় বেজে গেছে ,১০ টা থেকে ক্লাশ আমার। এখনও শুয়ে থাকা উচিত নয় । তাই তাড়াহুড়ো করে বিছানা থেকে উঠতে হলো। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবে মাত্র পাশ করে এখানে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেছি। সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজ। প্রথমে যেদিন এখানে এসেছিলাম মনে হচ্ছিল যেন পথ ফুড়াতে চায়না। সিলেট থেকে আসতে আসতে প্রায় ৪ ঘন্টার মত লেগে যায়। ভেবেছিলাম এখানে চাকুরী করা যাবে না,কিন্তু পরে এখানের প্রাকৃতিক দৃশ্য আর কোমলমতি আমার প্রিয় ছাত্র/ছাত্রীদের কথা ভেবে থেকে গেলাম। আর এই খেকে যাওয়ার মাঝে আমাকে জীবনে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। যা হউক অন্য আরেক দিন এগুলো হয়তো বলা যাবে।
আজ তোমাদের সাথে আমার প্রথম ক্লাশ। আমি সবেমাত্র পাশ করে বের হয়েছি। বলতে পার তোমাদের মতই আমি। তোমাদের সাথে আমরা বয়সের ব্যবধান তেমন নয়। আমি তোমাদের শিক্ষক আর তোমরা আমার ছাত্র। তবে তোমাদের আর আমার মাঝে আরেকটি সম্পর্ক রয়েছে,তা হলো বন্ধুত্ব। আমাকে তোমরা বন্ধূর মতই ভাবতে পার। আমরা সব বিষয়ে আলোচনা করব খুব খোলাখোলিভাবে।আমাদের মাঝে কোন অদৃশ্য দেয়াল থাকবে না। তোমাদের যে কোন প্রশ্ন, যে কোন বিষেয় আমার সাথে শেয়ার করতে পার। আর তোমার যদি আমার পড়া ভাল মনে না হয়, ভাল না লাগে তাহলে সরাসরি আমাকে বলবে,কোন রকম সংকোচ করেবনা। আমরা লেখাপড়াটাকে ঝামেলা বা বোঝা হিসেবে নিতে চাইনা্ ;আমরা চাই লেখা পড়াটা যতটুকু পারি যাতে আনন্দ এবং মজা করে সহজ করে নিতে পারি।লেখা পড়া ভাল লাগবেনা জানি তবুও জীবনের প্রয়োজনে তা ভাল লাগাতে হবে।আজ যা তোমরা শিখবে একদিন তা অবশ্যই কাজে লাগবে।আমরা আমাদের জীবনকে সুন্দর করার জন্য শিখবো,জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য শিখব,আমরা শিখব আমাদের দেশের জন্য,মায়ের জন্য, পরিবারের জন্য।আসলে জীবনটা অনেক কঠিন,আর সেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ার জন্য আমরা শিখব।আমরা আমাদের নিজেদের জন্য শিখব,আর এ শিক্ষা শুধু বই পড়া নয়,আর অনেক কিছু আছে শিক্ষার।নৈতিকতা বর্জিত সকল শিক্ষাই অসাড়। আজ আর নয় আমি অনেক বলে ফেলেছি। তবু তোমাদের মুখ থেকে কিছু জানতে টাই। তোমাদের দূর্বলতা ,তোমাদের চাওয়া আগে জানতে হবে। আমার কথা কি তোমাদের খুব খারাপ লাগতেছে। মিথ্যে বলবেনা,সরাসরি বলবে।
না স্যার আপনার কথা আমাদের অনেক ভাল লেগেছে,জীবনে এমন করে কোন স্যার আমাদের বলেনি।
ধন্যবাদ তোমাদের।
আপনাকে ধন্যবাদ স্যার।
তাহলে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।আগামীকাল তোমরা এই টপিকটি দেখে আসবে,কেমন।
ঠিক আছে স্যার।
২. আজ বিকেলটা কেমন জানি মেঘলাময়। এই মেঘলা দিনে প্রচন্ড আড্ডা দিতে ভাল লাগে। এখানে বৃষ্টি এলে চারিদিকে পানিতে ভরে যায়,মূহুর্তের মধ্যে আবার পানি কোথায় যেন বিলিন হয়ে যায়।একা একা বসে আছি। যদি কেউ থাকত পাশে তাহলে অনেক ভাল লাগত। লাভলীর কথা খুব বেশি মনে পরছে। মনে পরে এমন বৃষ্টির দিনে তার সাথে কাটানো স্মরনীয় কিছু মূহুর্ত যা জীবনে ভোলার নয়। আজ সে অনেক দূরে। আমার জীবনের পাতা হতে খসে পড়েছে। তার কথা মনে হলে আজ ও মনের মাঝে ঝড় উঠে। বৈশাখের দিনে প্রচন্ড ঝড়ে যেমন সব কিছু লন্ডভন্ড করে দেয় ,তেমনি আমার মনের গহীনে এক কষ্ট বাসা বাঁধে। আজ কোথায় আছো লাভলী? তোমাকে খুব বেশি মনে পড়ছে।এমন বাদল দিনে বর্ষার আবহে তোমাকে কাছে পেতে মন চাচ্ছে। প্রেমের বৃন্দাবনে কে যেন প্রেমর দুরন্ত বাশিঁ বাজায়।একান্ত মনে কাকে যেন আবার মন চায়। তুমি আবার এসো আমার প্রিয়া হয়ে, ভালবাসায় ভরিয়ে দেব তোমায়। কোনদিন যেতে দেবনা আমার হৃদয় হতে। নাহ, এতো কি ভাবছি; যে চলে গেছে সে কি আসবে ফিরে? জানি আসবেনা। তবুও কেন যেন মনে হয় এই তুমি ছাড়া আমার জীবনটা অচল। আমা যেন প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছি। শুধু তোমার জন্য আমি আজ দিক ভ্রান্ত। যাকে ছাড়া অন্যকিছু কল্পনা করেত গেলেও খারাপ লাগে। আমার মনের প্রতিটি পরতে পরতে তুমি যেন মিশে আছো। তোমাকে ভোলার সাধ্য আমার নেই।
বৃষ্টিটি একটু কমে গেছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। বাহিরে বের হতে মন চাচ্ছেনা। তবূও বের হেত হলো। মনটা যেহেতু খারাপ হয়ে গেছে,তাই লোকজনের সাথে কথা বললে হয়তো মনটা হালকা হবে। তবে এখানে এসে এক নিরিবিলী জায়গা পেয়েছি। পেয়েছি কোমলমতি কচিমনের একঝাক তরতাজা গোলাপ। যাদের গন্ধে সারাক্ষন হৃদয় ভরে যায়। সেই বাগানে আমি এসেছি গোলাপের চাষ করেত। জানিনা কেমন যাবে আগামী দিনগুলো। শুধু জানি আমি আমার বর্তমান অবস্থা হতে মুক্তি চাই। একটু শান্তি চাই। সবুজের পরশ চাই। নিলিমার আবহ চাই। দূরের পাহাড়ের সবুজ চাই। আর চাই অনাবিল প্রশান্তি।সবুজ দেখলে এমনিতেই আমার মনটা ভরে যায়। আর এখানকার পাহাড়ঘেরা সবুজ আরও যেন মায়াময়। প্রকৃতির পরেত পরেত যেন কি যাদু। মনের ভেতর কি যেন বয়ে যায়। সুখের নদীতে স্মান সেরে আমি অমার যত গ্লানি দূরে ফেলে নতুন করে স্বপ্ন সাজাতে চাই।
আসলে দেখেছি মানুষের জীবনে কষ্ট আসে,বেদনা আসে আবার তা চলেও যায় কিন্তু যারা তা সহ্য করতে পারেনা তারা অকালে ঝড়ে য়ায়। আমাদের এ ছোট্র জীবনে নানা ঘাত প্রতিঘাতের ভেতর দিয়ে চলতে হয়।পাওয়া ও না পাওয়ার মাঝে চলতে হয়। অনেক সময় আমরা আমাদের ভাগ্যের কাছে বন্দী। জীবনে হতাশা,দুঃখ আসতে পারে। আসতে পারে ব্যার্থতা। তাই বলে কি আমরা থমকে যাব। জীবন বিলিয়ে দেব কালের নির্মম স্রোতো । জীবনটা অনেক ছোট ,আবার ছোট ও না। তবুও জীবন পথে আমাদের চলতে হয়। আমরা কেন আমাদের জীবন বিলিয়ে দেব। আমরা যদি মনে করি জীবনটা দুঃখের,তাহলে দুঃখের; আবার যদি মনে করি জীবনটা সুখের তাহলে সুখের। আসলে সব কিছুই মানুষের মনের ব্যাপার। কে কি ভাবে তার জীবনকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে তা একান্তই নির্ভর তার ব্যাক্তিসত্তার উপর।
আমি আমার এ জীবনে অনেক গুলো মানুষকে দেখেছি আত্নহত্যা করতে। জানিনা কেন তারা এটা করে। আবার দেখেছি অনেক দুঃখ কষ্টের মাঝেও নিজের জীবনকে সাজাতে। আত্নহত্যার মাঝে যে কারন গুলো বিদ্যমান তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে প্রেমে ব্যার্থ হওয়া। অনেকেই এর মধ্যে অপরিপক্ক । জীবন সম্পর্কে যাদের এখনও ভালভাবে উপলব্দি আসেনি,জীবন যাদের কাছে নিছক একটা অদ্ভূত কল্পনা। যারা সর্বদা কল্পনার অসীম রাজ্যে ঘুরে বেড়ায়। তারা মনে করে প্রেমে ব্যার্থতা মানে এ জীবন রেখে আর কি লাভ। প্রেমিক প্রেমিকারা অতি মোহে এ কাজ করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক নানা নির্যাতনের কারনেও মানুষ আত্নহত্না করে। জীবনের কাছে পরাজিত ব্যাক্তিরা একাজ করে থাকে।
জীবনটা এক রংগিন প্রজাপ্রতির ডানার মত স্বপ্নময় নয়। আসলে জীবনটা অনেক কঠিন ও কষ্টকর। আর এ কষ্টের পথ পারি দিয়েই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জীবন চলার পধথকে আমরাই পারি সুন্দর করতে আবার আমরাই পারি অসুন্দর করতে । মানুষের নিজের কাছেই নিজের ভাগ্যের চাবাকাঠি। এ ভাগ্যের চাবিকাঠি যে সঠিকভাবে নাড়াচরা করতে পারে তার কাছেই জীবনের সাফল্য ধরা দেয়। জীবনে চলতে চলতে কত বাধাবিপত্তি আসে। আর সে গুলো মোকাবেলা করেই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
৩. খুব সকালে আজ খুম থকে উঠতে হয়েছে। ঘুমের ঘোরে কি এক দুঃস্বপ্ন আমাকে আর ঘোমাতে দেয়নি। সকালের নয়নাভিরাম রূপ আমাকে মুগ্ধ করে। কুয়াশা আর শিশির ভেজা সকালে চমৎকার এক মায়াবী আবহ তৈরি করে। কি এক ভাললাগা যেন মনের ভিতর দিয়ে বয়ে যায়। এমন সময় মায়ের হাতে বানানো পিঠা খেতে খুবই ভাল লাগে। আর সাথে যদি গরম চা হয় তাও ভাল হয়। আমি আছি দূরে বহু দূরে, কে আমাকে বানিয়ে দেবে। তাই কষ্ট মনে করে কোন লাভ নেই। ও আর যেটা বলছিলাম দুঃস্বপ্ন। আমার বাবাকে নিয়ে দেখা দুঃস্বপ্ন। যাই হউক এই দুঃস্বপ্নের কথা বলে অন্য কাইকে কষ্ট দিতে চাই না । এটা আমার মনের ভিতরই পুষে থাকুক।
তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ক্লাশে যেতে হবে। আজ আমার দুটি ক্লাশ আছে।
কেমন আছ সবাই?
আমরা ভাল আছি স্যার,আপনি কেমন আছেণ?
ভাল।
তোমাদেরকে বাসায় যে পড়াটি পড়তে বলেছিলাম তা পড়েছ তো?
জী স্যার।
আচ্ছা ভাল কথা। তবে আজ আমি তোমাদেরকে জীবনের অন্য একটি দিকের কথা বলব, কেমন? তার পূর্বে তোমার পড়াটা একটু ঝালিয়ে নেই।
সুমা বলতো কি পড়েছ ? জাষ্ট এই টপিকের থিমটা বলবা।
স্যার আপনি যে টপিকটা পড়ে আসতে বলেছিলেন সেটা হলো শিশু কল্যান। শিশুরা আমাদের দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ,তারা হচ্ছে আগামী দিনের এদেশের কান্ডারী। আমরা যদি দেশের কল্যাণ করতে চাই ,তাহলে তাদের কল্যান করতে হবে । তাদের কে সঠিক পথে ধাবিত করতে হবে। তাদের জীবনকে সঠিক পথে চালনা করেত হবে। তাদের সার্বিক দিকে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের কল্যানে নানা ধরনের কল্যানমুখী কর্মসূচী হাতে নিতে হেব । যদিও সরকার এর মধ্যে নানা ধরনের কল্যান মূলক কাজ করে যাচ্ছে তবুও তা পর্যাপ্ত নয়। আর এই কর্মসূচী গুলোকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে । সময় এসেছ আমাদের বদলাবার । আমরা যদি কালের স্রোতে গা ভাসিয়ে চলি তাহলে আমরা আগামী প্রজন্ম পাব না। আমাদের দেশের উন্নতি হবেনা। তাদেরকে যেমন নৈতিক শিক্ষায় বলীয়মান হতে হবে। তেমনি সততার সঠিক শপথ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেত হবে। তাহলেই আমরা একটা সুন্দর আগাশী পাব । ধন্যবাদ স্যার।
বাহ! দারুন বলেছ সুমা। আমি যা আশা করিনি তা তোমার কাছ থেকে পেয়েছি। আসলে মনে হচ্ছে তুমি তা খুবই যত্ন নিয়ে পড়ে এসেছ। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে তোমরা যদি একটু মনোযোগ দিয়ে এটি পড়,তাহলে বেশি কঠিন মনে হবার কোন কারন নেই।
একটি দেশের সম্পদ হলো তার তরে বেড়ে ইঠি শিশুরা। তাই দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করতে হলে আমাদেরকে শিশুদের মঙগল ও তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। তাদেরকে সঠিক ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠা,তাদের পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্খা করা ,তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষত করা এবং তাদের সুন্দর আগামী তৈরি করতে সাহায্য করা আমাদের উচিত। শিশুরা জাতির ভবিষ্যত। অতএব তাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দান করা উচিত। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকারকে যেমন নানা ধরনের সাফল কমৃসূচী হাতে নিতে হবে ,তেমনি সমাজের বিত্তবানদের এবিষয়ে এগিয়ে এসে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই গরিব। আর গ্রামে এ গরিবের সংখ্যা অসংখ্য । তাই শিশুদের কল্যানে যে সকল কর্মসূছী হাতে নিতে হবে তা অবশ্যই গ্রাম কেন্দ্রীক হতে হেব। গ্রামের শিশুদের লেখাপড়া থেক শুরু করে তাদের সার্বিক দিকে খেয়াল লাখতে হবে। শিশু নির্যাতন ,বাল্য বিবাহ, শুমু শ্রম ইত্যাদি সমাজ হতে চিরতরে বিদায় করে দিতে হবে। তাহলেই শিশুদের কল্যান সম্ভব এবং শিশুরা আগামীদিন দেশর জন্য কাজ করতে পারবে এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে পারবে।
আমি কি বলতে চেয়েছি তোমরা কি বুঝেছ?
জী স্যার।
এবিষেয় তোমাদের কোন প্রশ্ন থাকলে আমাকে করতে পার। এবিষেয় আগামীকাল কিন্তু পরীক্ষা দিতে হবে। কেমন।
না স্যার কোন প্রশ্ন নেই। আমরা বুঝেছি।
ধন্যবাদ তোমাদের । আজকের মত এখানেই ক্লাশ শেষ।
আপনাকে ও ধন্যবাদ স্যার।
৪.স্যার আজ বিকেলে ফুটবল খেলা আছে।আপনি আমাদের দলে খেলবেন। বিনীত স্বরে বলল হাবিব।
কার সাথে খেলা।
ভোগলা ইউনিয়ন বনাম সুরমা ইউনিয়ন।
কোখায় খেলবে?
স্যার এমন সুন্দর একটা জায়গায় খেলা যে,আপনার অনেক ভাল লাগবে।
কোথায়?
বাগানবাড়ী।
এটা কোথায়?
স্যার এটা হলো ভারতের একেবারে সীমান্তে।অনেক সুন্দর একটা যায়গা। যেখানে খুবই সুন্দর সুন্দর পাহাড় রয়েছ। এক কথায় বলতে গেলে পাহাড়ঘেরা অনিন্দ্য সুন্দর একটি এলাকা। যেকানে গেলে চারিদিকে সবুজের সমারোহে ভরা নয়নাভিরাম প্র্রকৃতি হৃদয় মন জুড়িয়ে যায়।
আচ্ছা যাব। ফুটবল খেলি আর না খেলি অনেকদিন পাহাড়ের সংষ্পর্শে যাওয়া হয়না।
স্যা্র আমাদের ছুটি দিয়ে দেন। আমরা বিড়িতে গিয়ে প্রস্তুত হয়ে আসি।
অধ্যক্ষ স্যার কে বলে যাও ,আর আমার কথা বলিও ।যাওয়ার সময় বাসা থেকে আমাকে নিয়ে যেও ।
ঠিক আছে স্যার।
৩টার দিকে হাবিব,মোশাহিদ.নূরে আলম ও নাছির সহ আমার কাছে আসল আমাকে নিয়ে যাবার জন্য।
কিভাবে যাওয়া য়ায় স্যার?
তোমরা বলো কিভাবে যাবে।
হাবিব ৩ টা মোটর সাইকেল রয়েছে। কমপক্ষে ৫টি মোটর সাইকেল দরকার।
সিএনজি পাওয়া যাবেনা?
রাস্তা তেমন ভাল নয় আর সিএনচজি দিয়ে গেলে,অনেক টুকু পথ হেটে যেতে হবে।
তাই চলো মোটর সাইকেল দিয়ে যাওয়া যাক।
আকাঁবাকাঁ রাস্তা। অনেকটুকু পথ যাওয়ার পর কাচা রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। খুবই অসিস্থকর আবার মনের মেধ্যে একধরনের এডভেঞ্চার এডভেঞ্চার লাগছে। পাহাড়ের পাদদেশে ফুটবল খেলব ।তাও আবার ভারতের সীমানায়। এক কথায় দারুন। বলে রাখা দরকার এখানে যে মাঠে আমরা খেলব এই জায়গাটার মালিক ভারত। ভারত তার সীমানা থেক একশো গজ দূলে কাটাঁতারের বেড়া দিয়েছ। আন্তর্জাতিকভাবে এটাই নিয়ম। কোন দেশ যদি তার সীমানা প্রাচীর করতে চায় সেদেশকে অবশ্যই একশো গজ জায়গা দূরে তা করেত হবে। তাই এই জায়গাটা অঘোষিত ফুটবল খেলার মাঠ হয়েছ। প্রতিদিনই এখানে অত্র এলাকার খেলোয়াররা এখানে ফুটবল খেলে থাকে।
আমরা মূলত খেলাটার জন্য আসা নয়। মূলত আমরা চাই এখানে একটা মজা করতে । হুমায়ূনদের পাশে যে বাড়িটা তার পাশেই খেলা্ তাই হূমায়ুন আগে থেকেই বিরিয়ানির ব্যবস্থা করে রেখেছিল ।
খেলা শেষে যখন প্রায় সন্ধ্যা আসন্ন তখন কাটা তারের বেড়ার কাছে আয়েসি ভংগিতে আড্ডা দিচ্ছিলাম,তখন বিএসএফ এসে আমাদের শাসিয়ে গেলাল,যেন তাড়াতাড়ি চরে যাই,কেননা এখন আমরা তাদের সীমানার ভিতরে অবস্থান করছি। আমরা কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম। কারণ সন্ধ্যা সময় তাদের সীমানায় আমাদের এভাবে বসে থাকানা উচিত হয়নি।
ক্লান্ত বিকেলের সবটুকু ক্লান্তি আমাকে জরে ধরেছে। হঠাৎ করে খেলতে এসে একেবারে নাস্তানুবাদ হয়ে গিয়েছি।
তাই বিলম্ব না করে গোসল সেড়ে নিলাম। বেশ ফুরফুরে লাগছে মনের মধ্যে কি যেন এক আবহ চলে এসছে। ঘুমঘুম ভাব এস পড়েছে। যাই হইক তাগড়াতাড়ি যে বাসায় আসতে হবে সেটা মনে মনে ভাবতে লাগলাম। অবশেষে বিরিয়ানি খেয়ে অনেক আনন্দের অবসান ঘটিয়ে আমরা চলে এলাম আমাদের গন্তব্যে।
আসার পথে নানা রকম অবাক করা কান্ড ঘটিয়ে এসেছি। হাবিব যে মোটার সাইকেলটা নিয়ে এসেছিল তার ব্রেক ছিলনা। তবুও যে করি করে সে সামলিয়ে এসছে তা বলা বোঝানোযাবেনা। মাঝে মাঝে হেডলাইট জ্বলছিলনা। পূর্নিমার আলোই আমাদের ভরসা ছিল । তবুও তারুন্যের জয় গান বাজবেই। আসরা সিহি সালামতে আল্লাহর করুনায় বামায় আসতে পেরেছি।
কেই কেই মানুয়ের গাছের আম, নারিকেল পেড়ে এনেছে,শেষ আমাকে খেত দিয়েছে, তারা আমাকে বুঝতে দেয়নি এগুলো যে চুরি করে এনেছে।
আমিও বুঝে না বুঝার ভান করেছি।
ক্লান্ত শরীলে রোমে এসে একটানা আট ঘন্টা গুম দিলাম। সকালের সূর্যটা এর আগেই তার আলোর ঝলকানি দেখিয়েছ।
৫. ধীর পায়ে ক্লাশে ডুকলাম। মনের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে। সব সময় অবশ্য এরকম অনূভুতি আসেনা। আজ সকাল হতেই আকাশে বাতাসে কি যেন আনন্দ ধ্বনি। লাভলী আজকে অনেক বার আমাকে স্মরন করেছে। আমাকে সে ভূলে যায়নি। মনের মধ্যে রাঙগা প্রজাপ্রতিরা যেন ঘুরছে। স্বপ্ন আধারের মত মনটা উড়তে চাইছে অনন্ত আকাশ পানে।
অনেক ক্ষন আনমনা হয়ে যখন এগুলো ভাবতে লাগলাম,তখন একজন বলে উঠল,স্যার আজ কি হয়েছে আপনার।
নিজেকে সংযত করে,বল্লাম না কিছুনা।
এই তোমাদের কথাই ভাবতেছিলাম।
স্যার আজকের পরীক্ষা নিবেন না?
না আজ তোমাদের পরীক্ষা নিবনা।
আজ তোমাদের জীবনের গল্প বলব।
জী স্যার আমরা আপনার গল্প শুনতে চাই।
সত্যি বলতে কি তা গল্প না, আমার মনের একান্ত কিছু কথা।
আামাদের জীবন সম্পর্কে আমরা ভাবিনা। ভাবনার সময় পাইনা্ ব্যাস্ততা আমাদের অবসর দেয়না। তাই আমরা নিজের সম্পর্কে জানিনা।আমরা নিজে চিনতে পারিনা,নিজের কি করা উচিত, কি করা উচিত নয়,তা বুঝে উঠা দুষ্কর।আমাদের আচার আচরণ অনেক সময় অসংযত হয়ে যায়। জীবনে আসে ঊদাসিন্য। আসে নানা সমস্যা্ ; আর এই সম্যাসা আমরা অনেক সময় কাটিয়ে উঠতে পারিনা॥
জীবনটা যেন একটা ধাঁধার মত। জীবন চলছে তো চলছেই। জীবন চলা তো চলা নয় ,একদিন তা থেমে যাবে। তখন আমাদের কিছুই করার থাকবেনা। তাই আমরা যাই করিনা কেন তার মাঝে দরকার বিন্দু বিন্দু সরলতা। সহজ সরল মন নিয়ে চলতে পারিনা। এ চলা অনন্তকাল ধরে চলা নয়। এমন একদিন আসবে যেদিন আমাদের পাশে কেউ থাকবেনা্ ।আমরা শুধু মানুষকে সুথের দিনে পাই, দুঃখের দিনে কেউ আসেনা সাহায্য করতে। জীবন চলার পথে নানা প্রতিকূলতা ,বাধাঁ আসবে । আর সেগুলো মোকাবেলা করেই আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
আমাদের নিজের মাঝে আত্ব উপলব্দি আসতে হেব । তানাহলে আমরা জীবনে উন্নতি লাভ করতে পারবনা।
আজ দুনিয়াজুড়ে নানা অশান্তি। দেশে, সমাজে অশান্তির কালো থাবা ঘ্রাস করছে প্রতিনিয়ত।এমন একদিন আসবে সেদিন হয়তো সৎ মানুষের কথা কেই ভাবেনা। সবাই অসৎকে নানা বিষয়ে কাপিঁয়ে তুলবে। তাই আমাদেরকে সত্যের জয়গান গাইতে হবে। সুন্দর আগামী পথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে। দেশের জন্য ,সমাজের জন্য আমাদের কে নিজেদেরকে ভাবতে হবে।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, সভ্যতার নামে আমরা দিনদিন অসভ্য হচ্ছি। আধুনিকতার নামে যৌনতাকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসছি। এথেকে আমাদের কে মুক্তি লাভ করতে হবে। তানাহলে আমাদের জাতির ভাগ্যে কি আছে জানিনা।
আমার অমাদের দেশ প্রেম ভুলে যাই । আমরা আমাদের সততাকে ভূলে যাই। আমরা ভূলে যাই আমাদের অতীতকে। এথেকে আমাদের পরিত্রান পাওয়া দরকার।
আসরা নিজের জাতিকে চিনিনা। স্বার্খের কারনে খুন করকতে চিন্তা করিনা। যেভাবেই হউক চুরি করি,ডাকাতি করি, । কিন্তু এর থেকে আমাদের রেহাই পেতে হবে।
আমার কথাগুলো তোমরা কি বুঝতে পারছ।
জী স্যার।
আজ আর কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা। অন্য আরেকদিন বাকিটুকু শেষ করব।আমার শরীলটা
বেশি বাল নয়। তাই বিশ্রাম নেয়া দরকার।
জী স্যার।
তাহলে আজ এ পর্যন্তই।
ধন্যবাদ তোমাদের। স্যার আপনাকেও ধন্যবাদ।
(চলবে)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বাধীন আমিনুল ইসলাম ১৩/০৮/২০১৫ধন্যবাদ কবি
-
সুহেল ইবনে ইসহাক ১১/০৮/২০১৫Nice, nicely presented nature. Thanks.
-
স্বাধীন আমিনুল ইসলাম ১১/০৮/২০১৫ধন্যবাদ কবি।
-
অভিষেক মিত্র ১১/০৮/২০১৫খুব ভালো
-
শ্রাবন শুভ্র ১০/০৮/২০১৫অনেক সুন্দর ।
-
আবুল হাসান ০৮/০৮/২০১৫পরাটা খুব দারুন।
-
ইমরান কবির রুপম ০৭/০৮/২০১৫ভাল লাগলো
-
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ০৩/০৮/২০১৫লেখাতে একটা আকর্ষণ রয়েছে। বার বার পড়তে ইচ্ছে করে। খুব ভালো।
-
মেহেদী হাসান (নয়ন) ০১/০৮/২০১৫ভাল লাগলো। বানান ভুল থাকবে এইটায় স্বাভাবিক তা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই লিখতে থাকুন।
-
কিশোর কারুণিক ০১/০৮/২০১৫ভালোই
-
আবুল হাসান ০১/০৮/২০১৫পরাটা মোটামুটি ভালোই।
তবে বানান শুদ্ধ করতে হবে। -
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ০১/০৮/২০১৫লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। কিছু বানান শুদ্ধ করতে হবে। শুভেচ্ছা রইল। লিখতে থাকুন।