একটি চার্জার
হঠাৎ করে খবর এলো কোন এক প্রয়োজনে ঢাকা যেতে হবে। বেলা তখন দুপুর দুইটার অধিক। লঞ্চ ছাড়ার সময় বিকেল পাঁচটা। বাড়ি থেকে ঘাটে এক ঘন্টা যথেষ্ট। তখনও যাওয়ার কোন প্রস্তুতি ছিলো না। ভাবনা ছিলো এখনো অনেক সময় যখন বের হব এক সাথেই যা যা লাগবে নিয়ে বের হওয়া যাবে। কিছুক্ষণ পর জানা গেলো আবহাওয়া খুবই খারাপ বাড়ির কাছের ঘাটে লঞ্চ আসবে না। যেতে হবে মির্জাকালু লঞ্চ ঘাটে। যেতেও সময় লাগবে আবার ছারার সময়ও অনেক দূরে। আবারও এক প্রকার দোটানায় পরে গেলাম যাব কি যাব না। ঠিক তখনই আমার বন্ধু পায়েল ও ঢাকা যাচ্ছে জানতে পারলাম। ওর সাথে কথা বলেই আমার যাওয়ার গতিটা বেড়ে গেলো। গতি না বারিয়ে আর উপায় ছিলো না কারন এরি মাঝে কয়েক বার কল দেয়া শেষ আর বলা শেষ আসবি না চলে যাব। ও নিকটবর্তী বাজারটাতেই অপেক্ষা করছিল।
বাহিরে গুরি গুরি বৃষ্টি ঝরছিল কাপড় গুলো বেশির ভাগই ছিলো আধা শুকনো। সেগুলোই দলাবদ্ধভাবে টিপে টিপে বেগ পুরে নিলাম আর কখন যে চার্জিং মেসিনটা রেখে আসলাম টেরই পেলাম না। খাবারটা হাতে দিতে ভুলেনি সে, কিন্তু তারও মনে ছিলো না চার্জার টা ব্যাগে পুরে দিতে। কেবিনে ঢুকার কিছুক্ষণ পূর্বেই বোধটা হলো যখনই লো ব্যাটারি শব্দ হলো। ব্যাগ খুজলাম পেলাম না কোথাও। ভাবলাম কারো থেকে নিয়ে চার্জিং করে নিবো কত লোকইতো আছে। কিন্তু ভাবনাটাও অনেকটা বিফলে যাওয়ার মত হতে লাগলো। বন্ধুটার চার্জার মেসিন অনেক চওড়া মিলছে না আমার ফোনের সাথে। প্রথমেই ধাক্কা খেলাম। পাসের কেবিন খুজলাম তাও চওড়া। আর কাকে বলা যায় ভাবতে ভাবতে অনেকটা ভদ্র মনে হয় এমন একটা লোককে বলতেই সে ও বলে দিলো আনিনি। আবার সঠান দাড়িয়ে রইলাম মনে মনে কাউকে খুজতে রইলাম। গুরি গুরি বৃষ্টিটা তখন একটু বেরে চলছিলো আমি অনেকটা হতাসায় পরে গেলাম কার কাছে পাব মেসিন। একটি লোক তার কেবিনের সামনে বসে বাদাম খাচ্ছিলেন। তাকে বলব কি বলবনা এ নিয়ে অনেক ভাবলাম অবশেষে বলেই তার হাতের ঈশারায় না শুনে অনেকটা নিজেকে ছোট ছোট মনে হচ্ছিল। মুখটা অনেকটা মলিন করে নদীর পানির পানে তাকিয়ে ভাবলাম কেন মানুষগুলো এমন পানির মত তরল হলো না। খানিক বাদেই পাশে একজন ভাই এসে দাড়ালো লুকিয়ে তার ফোনটা দেখলাম মোটা না চিকন। চিকন নজরে আসতেই মনটা খুশিতে ভরে গেলো। যেভাবেই হোক তার সাথে পরিচিত হতে হবে। অনেক্ক্ষণ কথা হলো অনেক কলাকৌশলে খুব কাছের হয়েগেলো যেন এক নিমিষে। মেসিনটার কথা বলতেই,,,,,
তাও আনা হয়নি তার নাকি মেসিন লাগে না। কি আর করার আবার মন খারাপ। যেভাবেই হোক মেসিন পেতেই হবে। মনে দারুণ একটা বুদ্ধি এলো। ঢেকে যাওয়া যাক, হয়ত পরিচিত কাউকে পেতে পারি। ঢেকে যাওয়ার সিঁড়িতে চোখে পরলো এক লোক একটি বাক্স খুলছে এবং তার হাতে একটি আমি যা খুঁজছি,,,,,,,
অনেক খুসি হয়ে এগিয়ে গেলাম। তার পাশে কিছুক্ষণ দাড়ালাম কি করে দেখলম। বাক্সের মধ্যে একটি মোবাইল চার্জে বসাচ্ছে আর বাড়তি একটি অন্য হাতে। আমি তাকে,
ভাই কি লঞ্চের লোক?
হ্যাঁ-
ভাই আমি 319 কেবিনের চার্জার একটু কিছু সময়ের জন্য দেয়া যাবে?
দুঃক্ষিত!
আমি মনে হয় অনেক বড় একটা ধাক্কা খেলাম।
কি আর করার সোজা নিচে চলে গেলাম। নামতেই দেখা মিললো এলাকার আহসান ভাইর সাথে। কথা শেষ করার মাঝে তার ফোনটাও দেখে নিলাম, আমারটার সাথে খুব মিল। ভাবলাম এবার বুঝি আমি নিশ্চিত ভাবে থাকতে পারবো। জিজ্ঞেস করতেই জবাব শুনে রিতিমত বোকাবনে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই মানে সে ঢাকা যাচ্ছে একদিনের জন্য আবার আজকেই সে ফিরবে তার ফোনও ছোট একদিন চার্জ দিলে তিন দিন থাকে।তাই প্রয়োজন ছিল না বিধায় আনা হয়নি। আহসান ভাইয়ের সাথে তার বসার জায়গায় গেলাম আসেপাশে কারো কাছে পাইকিনা তাই। কিন্তু কোনভাবেই মিল করা গেলো না। এই যান্ত্রিক যুগেও এমন একটি প্রয়জনিয় মেসিন পেলাম না। অথচ বন্ধুর সাথে কেবিনে ঠিকই জোর গলায় বলে এসেছি আমি না হয় তোর প্যারায় ভূল বসত রেখে এসেছি ঠিক কারো না কারো কাছ থেকে মেনেজ করে নিতে পারব। এই সব কিছু ভাবতে মনটা বিষন্ন লাগছিলো ফোনটা বোধ হয় আর কিছুক্ষণ পর বন্ধ হয়েই যাবে। বাহিরে অনেক বৃষ্টি লঞ্চটা মাঝারি ঢেউয়ে মাঝে মাঝেই কাত হয়ে আবার সোজা হয়। কিন্তু আমার নাছোড়বান্দা মনটা তো কোনভাবেই সোজা হয়না। কাল সকালে যেভাবেই হোক ফোন আমার খোলা রাখতেই হবে। ঠিক তখনি চোখের সামনে একটা ছবি আবছা আবছা ভাসতে লাগলো এলাকার কার মত যেন মনে হচ্ছে। সাদা পাঞ্জাবি আর সাথে সাদা লুঙ্গি আমাদের এলাকার একজনই পরে সে নয় তো? নিজেকে এসব প্রশ্ন করতে করতে কাছে যেতেই ঠিক সেই হলো। এলাকার মোহাম্মদ ভাই এলাকার হলেও তার সাথে কথা অনেকদিন পরে। কত আমার পাশ দিয়ে হেঁটেছে গ্রামের গঞ্জে কখনো প্রয়োজন হয়নি কথা বলাও হয়নি। আজ আলাপের মাঝে দেখলাম তার ফোন, কিন্তু ফোন দেখে লাভ কি হবে নিরাশই হওয়া ছারা। সেও ক্ষনিকের কান্ডারী। অবশেষে দোতলায় চলে গেলাম কেবিনের সামনে বাউন্ডারির উপর হাত রেখে মলিন মুখে অনেকটা গোমড়া প্রকৃতির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মিনিট তিরিশেক দাঁড়িয়ে থাকার পরে আমার সামনে অনেকটা সুখী মানুষের মত একজনের সাথে পরিচয় হওয়ার পর আমার সমস্যার কথা শুনতেই পকেট থেকে বের করে দিলো। বললো আপনি সারারাত রাখেন। সব কষ্টগুলো যেন এক নিমেষেই শেষ হয়ে গেলো।
১৭/০৬/২০২১
বাহিরে গুরি গুরি বৃষ্টি ঝরছিল কাপড় গুলো বেশির ভাগই ছিলো আধা শুকনো। সেগুলোই দলাবদ্ধভাবে টিপে টিপে বেগ পুরে নিলাম আর কখন যে চার্জিং মেসিনটা রেখে আসলাম টেরই পেলাম না। খাবারটা হাতে দিতে ভুলেনি সে, কিন্তু তারও মনে ছিলো না চার্জার টা ব্যাগে পুরে দিতে। কেবিনে ঢুকার কিছুক্ষণ পূর্বেই বোধটা হলো যখনই লো ব্যাটারি শব্দ হলো। ব্যাগ খুজলাম পেলাম না কোথাও। ভাবলাম কারো থেকে নিয়ে চার্জিং করে নিবো কত লোকইতো আছে। কিন্তু ভাবনাটাও অনেকটা বিফলে যাওয়ার মত হতে লাগলো। বন্ধুটার চার্জার মেসিন অনেক চওড়া মিলছে না আমার ফোনের সাথে। প্রথমেই ধাক্কা খেলাম। পাসের কেবিন খুজলাম তাও চওড়া। আর কাকে বলা যায় ভাবতে ভাবতে অনেকটা ভদ্র মনে হয় এমন একটা লোককে বলতেই সে ও বলে দিলো আনিনি। আবার সঠান দাড়িয়ে রইলাম মনে মনে কাউকে খুজতে রইলাম। গুরি গুরি বৃষ্টিটা তখন একটু বেরে চলছিলো আমি অনেকটা হতাসায় পরে গেলাম কার কাছে পাব মেসিন। একটি লোক তার কেবিনের সামনে বসে বাদাম খাচ্ছিলেন। তাকে বলব কি বলবনা এ নিয়ে অনেক ভাবলাম অবশেষে বলেই তার হাতের ঈশারায় না শুনে অনেকটা নিজেকে ছোট ছোট মনে হচ্ছিল। মুখটা অনেকটা মলিন করে নদীর পানির পানে তাকিয়ে ভাবলাম কেন মানুষগুলো এমন পানির মত তরল হলো না। খানিক বাদেই পাশে একজন ভাই এসে দাড়ালো লুকিয়ে তার ফোনটা দেখলাম মোটা না চিকন। চিকন নজরে আসতেই মনটা খুশিতে ভরে গেলো। যেভাবেই হোক তার সাথে পরিচিত হতে হবে। অনেক্ক্ষণ কথা হলো অনেক কলাকৌশলে খুব কাছের হয়েগেলো যেন এক নিমিষে। মেসিনটার কথা বলতেই,,,,,
তাও আনা হয়নি তার নাকি মেসিন লাগে না। কি আর করার আবার মন খারাপ। যেভাবেই হোক মেসিন পেতেই হবে। মনে দারুণ একটা বুদ্ধি এলো। ঢেকে যাওয়া যাক, হয়ত পরিচিত কাউকে পেতে পারি। ঢেকে যাওয়ার সিঁড়িতে চোখে পরলো এক লোক একটি বাক্স খুলছে এবং তার হাতে একটি আমি যা খুঁজছি,,,,,,,
অনেক খুসি হয়ে এগিয়ে গেলাম। তার পাশে কিছুক্ষণ দাড়ালাম কি করে দেখলম। বাক্সের মধ্যে একটি মোবাইল চার্জে বসাচ্ছে আর বাড়তি একটি অন্য হাতে। আমি তাকে,
ভাই কি লঞ্চের লোক?
হ্যাঁ-
ভাই আমি 319 কেবিনের চার্জার একটু কিছু সময়ের জন্য দেয়া যাবে?
দুঃক্ষিত!
আমি মনে হয় অনেক বড় একটা ধাক্কা খেলাম।
কি আর করার সোজা নিচে চলে গেলাম। নামতেই দেখা মিললো এলাকার আহসান ভাইর সাথে। কথা শেষ করার মাঝে তার ফোনটাও দেখে নিলাম, আমারটার সাথে খুব মিল। ভাবলাম এবার বুঝি আমি নিশ্চিত ভাবে থাকতে পারবো। জিজ্ঞেস করতেই জবাব শুনে রিতিমত বোকাবনে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই মানে সে ঢাকা যাচ্ছে একদিনের জন্য আবার আজকেই সে ফিরবে তার ফোনও ছোট একদিন চার্জ দিলে তিন দিন থাকে।তাই প্রয়োজন ছিল না বিধায় আনা হয়নি। আহসান ভাইয়ের সাথে তার বসার জায়গায় গেলাম আসেপাশে কারো কাছে পাইকিনা তাই। কিন্তু কোনভাবেই মিল করা গেলো না। এই যান্ত্রিক যুগেও এমন একটি প্রয়জনিয় মেসিন পেলাম না। অথচ বন্ধুর সাথে কেবিনে ঠিকই জোর গলায় বলে এসেছি আমি না হয় তোর প্যারায় ভূল বসত রেখে এসেছি ঠিক কারো না কারো কাছ থেকে মেনেজ করে নিতে পারব। এই সব কিছু ভাবতে মনটা বিষন্ন লাগছিলো ফোনটা বোধ হয় আর কিছুক্ষণ পর বন্ধ হয়েই যাবে। বাহিরে অনেক বৃষ্টি লঞ্চটা মাঝারি ঢেউয়ে মাঝে মাঝেই কাত হয়ে আবার সোজা হয়। কিন্তু আমার নাছোড়বান্দা মনটা তো কোনভাবেই সোজা হয়না। কাল সকালে যেভাবেই হোক ফোন আমার খোলা রাখতেই হবে। ঠিক তখনি চোখের সামনে একটা ছবি আবছা আবছা ভাসতে লাগলো এলাকার কার মত যেন মনে হচ্ছে। সাদা পাঞ্জাবি আর সাথে সাদা লুঙ্গি আমাদের এলাকার একজনই পরে সে নয় তো? নিজেকে এসব প্রশ্ন করতে করতে কাছে যেতেই ঠিক সেই হলো। এলাকার মোহাম্মদ ভাই এলাকার হলেও তার সাথে কথা অনেকদিন পরে। কত আমার পাশ দিয়ে হেঁটেছে গ্রামের গঞ্জে কখনো প্রয়োজন হয়নি কথা বলাও হয়নি। আজ আলাপের মাঝে দেখলাম তার ফোন, কিন্তু ফোন দেখে লাভ কি হবে নিরাশই হওয়া ছারা। সেও ক্ষনিকের কান্ডারী। অবশেষে দোতলায় চলে গেলাম কেবিনের সামনে বাউন্ডারির উপর হাত রেখে মলিন মুখে অনেকটা গোমড়া প্রকৃতির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মিনিট তিরিশেক দাঁড়িয়ে থাকার পরে আমার সামনে অনেকটা সুখী মানুষের মত একজনের সাথে পরিচয় হওয়ার পর আমার সমস্যার কথা শুনতেই পকেট থেকে বের করে দিলো। বললো আপনি সারারাত রাখেন। সব কষ্টগুলো যেন এক নিমেষেই শেষ হয়ে গেলো।
১৭/০৬/২০২১
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২৩/০৮/২০২৩অনিন্দ্যসুন্দর
-
আরিফ আহমেদ খান ১১/০৭/২০২১অসাধারণ