www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ঘোষিত হল জনস্বার্থ বার্তা-র আগমণী


‘জনস্বার্থ’ নামটার মধ্যেই রয়েছে আসন্ন নতুন সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘জনস্বার্থ বার্তা’-র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বুধবার অবনীন্দ্র সভাগৃহে জনস্বার্থ বার্তা-র বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে সভায় এমনই বক্তব্য উঠে এল। ছোটো সভাগৃহ হলেও সেখানে আসন সংখ্যা একশোর কিছু বেশিই। সব আসন তো পূর্ণ হলই, আরও কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে থেকেই শুনলেন সমগ্র অনুষ্ঠান। যারা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারী। ওয়ার্ধায় গান্ধী ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক তথা প্রাক্তন বিধায়ক ডঃ সন্দীপ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছিলেন বিশিষ্ট বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য তথা বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সভাপতি পদ অলঙ্কৃত করা বিজ্ঞানী ডঃ দিলীপ সিনহা, বোস ইন্সটিটিউটের প্রাক্তন অধিকর্তা মেহের ইঞ্জিনিয়ার, চেন্নাই এমআইটি-র অর্থনীতির প্রাক্তন প্রধান ডঃ সরজিত মজুমদার, বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা স্বাস্থ্যের অধিকার কর্মী ডঃ জ্ঞানব্রত শীল, প্রবীণ গান্ধীবাদী ডঃ সন্মথ ঘোষ, মানবাধিকার আন্দোলনের প্রবীণ নেতা নিরঞ্জন হালদার, শিক্ষাবিদ নার্গিস সাত্তার, বিশিষত সাংবাদিক অমিত সর্বাধিকারী, দেবাশিষ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট ্কৃষীবিজ্ঞানী সত্যব্রত মুখার্জি, মানবাধিকার কর্মী দেবজিত দত্ত, চিকিৎসক ডঃ কল্যাণ মুখার্জি প্রমুখ। এসেছিলেন এমন আরও অনেকেই যাদের সবার নাম দিতে গেলে তালিকা কেবলই দীর্ঘ হবে।
শুরুতে ভবানী সেনের ‘কি করবে’ কবিতা উচ্চারণের পর মুকুন্দদাসের গানে গেয়ে অব্যয় চট্টোপাধ্যায় অনুষ্ঠানের গীতিময় সূচনা করেন। কোন ভাবনা থেকে এই পত্রিকার সূচনা ও কি তাঁর করণীয়, শুরুতেই তা ব্যাখ্যা করেন সম্পাদক হিমাংশু হালদার। অনর্গল্ভাবে মার্ক্স, রাসেল, গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ, মাও ৎসে তুং থেকে উধৃতি-সহ তাঁর বক্তব্যে তিনি তা স্পষ্ট করে দেন। তিনি জানান, ‘পত্রিকার মালিকানা থাকবে ট্রাস্ট সংক্রান্ত নিয়মবিধি মেনে চলা ‘পথচলা ট্রাস্ট’-এর হাতে। কোনও কর্পোরেট সংস্থা বা কোনও শিল্পপতির দাক্ষিণ্যে নয়, কাগজের জন্য মানুষের কাছে হাত পেতেই অর্থ সংগ্রহ করে একটি ২৫ লক্ষ টাকার একটি স্থায়ী তহবিল গড়া হবে, যা ভবিষ্যতের পথ চলাকে স্বচ্ছন্দ করবে, বহুমুখী কাজেরও সুযোগ করে দেবে। কোনও কারণেই আমাদের নীতির বাইরে বাণিজ্যিক চাপের কাছে নত হবে না জনস্বার্থ বার্তা।‘
পত্রিকার পক্ষ থেকে প্রচারিত একটি ঘোষণাপত্রে এ-দিন জানানো হয়েছে, “‘জনস্বার্থ’ বলতে আমরা বুঝি প্রধানত মানুষের ব্যষ্টিগত স্বার্থ। তার মানে স্বার্থ-সর্বস্বতা কখনোই নয়। পরন্তু, আমরা ব্যষ্টিগত স্বার্থ আর সমষ্টিগত স্বার্থের মধ্যে মেলবন্ধনে প্রয়াসী হব। দুই স্বার্থের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকলে আমাদের প্রচেষ্টা হবে তা বৈরিতার চৌহদ্দির বাইরে সীমাবদ্ধ রাখা। এ কারণেই আমরা কোনও বিষয়কেই এক চোখ দিয়ে দেখার পক্ষপাতী নই, বহুর চোখে তাঁকে দেখতে চাই। আমরা কতটা পারলাম বা পারলাম না – তাঁর বিচার করবেন আমাদের পাঠকেরা ও তাঁর বাইরের যুক্তিনির্ভর জনসমাজ। … এই পত্রিকা কখনই কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শের বা দলের অনুগত থাকবে না। কোনও দলের বা ব্যাক্তির ভাল কাজের যেমন আমরা প্রশংসা করব, সেই দলেরই জনস্বার্থ-বিরোধী কাজের গঠনমূলক দৃষ্টি থেকে সমালোচনা থেকেও আমরা পিছিয়ে থাকব না। আমরা সকলে বিশ্বাস করি ধর্মনিরপেক্ষতায়, সব রকমের সন্ত্রাস-বিরোধীতায়। আর বিরোধিতা করা হবে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের। জনস্বার্থ ও গণতন্ত্রের শ্বাসরোধকারী সবরকমের প্রবণতার সঙ্গেই সমঝোতার বিরোধী আমরা, কিন্তু তার বিরোধিতা করা হবে যৌক্তিক পথে।”
সভায় ঘোষণা করা হয় দিল্লি থেকে টেলিফোনে জনস্বার্থ বার্তা-কে অভিনন্দন জানিয়ে অবিভক্ত সিপিআই-জাতীয় কমিটির সদস্য জলিমোহন কাউল সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। সঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছেন মালদার জঞ্জীবনের গবেষক তথা সংস্কৃতিকর্মী রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, আমেরিকা-প্রবাসী ডাক্তার দেবলীনা সেন, আন্দামানের সংস্কৃতি কর্মী অনাদী রঞ্জন বিশ্বাস সহ আরও অনেকেই।
এর পর তারপর বক্তারা তাঁদের সংক্ষিপ্ত ভাষণে জনস্বার্থ বার্তা কি ভূমিকা পালন করবে, সে সম্পর্কে মতামত দেন। প্রত্যেকেই বলেন, এই পত্রিকা যেন স্পষ্ট কথা স্পষ্ট ভাষাতেই বলে, নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং একপেশে রাজনৈতিক ভাবনার না এদিন মতামত জানান অতুল্য ঘোষ স্মারক সমিতির সভাপতি দীপ্তিমান ঘোষ, ডঃ সন্মথ ঘোষ, রাজ্যের মন্ত্রী তথা সিঙ্গুরের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রবীন ভট্টাচার্য, ডঃ জ্ঞানব্রত শীল, ডঃ দিলীপ সিনহা, অধ্যাপক নার্গিস সাত্তার, বিশিষ্ট আইনজীবি প্রদীপ রায়, পিআরএসআই (পূর্বাঞ্চল)-এর প্রাক্তন প্রধান তথা সাংবাদিকতার শিক্ষক সমীর গোস্বামী, নিরঞ্জন হালদার, অল ইন্ডিয়া হরিজন সেবক সঙ্ঘের সর্বভারতীয় সভাপতি শঙ্কর সান্যাল, নাট্যকর্মী ও লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সংগঠক প্রেমাংশু দাসগুপ্ত, ডঃ সরজিত মজুমদার, রোকেয়া-গবেষোক প্রাণতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলার হস্তশিল্পী-বস্ত্রশিল্পী সংগঠনের সংগঠক বিশ্বেন্দু নন্দ প্রমুখ। গান শোনান গণগায়ক অসীম গিরি ও রুমা ঘোষ।
জনস্বার্থ বার্তার আগমন-বার্তা যে বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ী উৎসাহী করে তুলেছে, তাঁর প্রমাণ পাওয়া গেল অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও দীর্ঘক্ষণ নন্দন চত্বরে তাঁদের অনৌপচারিক আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায়। বার বারই অনেকে বলছিলেন, সোচ্চারে মানুষের কথা বলার জন্য একটা কাগজ আজ ভীষণ জরুরী। জনস্বার্থ বার্তা সেই চাহিদা মেটাক।
বিষয়শ্রেণী: সংবাদ
ব্লগটি ১৩২০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২১/১১/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast