বুড়ো ভগবান
“বুড়ো ভগবান নুয়ে নুয়ে চলে
পিঠে উইলের বস্তা
গোলমেলে এই দুনিয়ার সম্পত্তি
কাকে দিয়ে যাবে,
ভাবনায় সারা মাথাটায় টাক ভর্তি।“
(শেষ উইল/ বিমলচন্দ্র ঘোষ)
(এই কবিতা আমাকে নাড়িয়ে দেয় যখন নোনাডাঙ্গায় বস্তিবাসীদের উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয় আর সরকার জোর করা শুরু করে, লাঠি চালায়। তখনই এটা লিখে ফেলি)
বড় ভগবান ঝুঁকে ঝুঁকে চলে
লবনডাঙ্গার মাঠে
‘কচি ছেলেগুলো কোথা চলে গেল’,
বুড়ো ভাবে, চিন্তায় মাথা নাড়ে
উৎকণ্ঠায় ঘোলা চোখে চায় দূরে
‘ছেলেগুলো ছিল বড় ডানপিটে!
ধুতি টানে, দুয়ো দিয়ে ছোটে।
ধুলোমাখা যত ন্যাংটা ছেলেরা!
ওদের ঝুপড়িগুলো…’, বুড়ো ভাবে…
‘কারা এসে ভেঙে দিল?’
যোসেফ কামার, করিম চামার
চা-দোকানী রাম নেই
তুলসীমঞ্চ, তসবীর মালা,
ক্রিস-মাস ট্রি ধুলোয় লুটায়
চোখ মুছে বুড়ো ঘোলাচোখে চায়।
হাজার বছরী কলজে হাঁফায়
পোকা-কাটা শাল ধুলোয় লুটায়
বুড়ো নির্বাক
ভাঙা খাটিয়ার পাশে
রোদ এসে পড়ে টাকে।
মাথা ঘোরে, পা টলে যায়
শূন্য দৃষ্টি, দু-পাশে তাকায়
ধুলোমাখা এই শিশুদের নামে লেখা
গোলমেলে এই দুনিয়ার সম্পত্তি
কাকে দেবে তবে? বুড়ো পা বাড়ায়…
কোটাল আসছে লাঠি হাতে তেড়ে
ভগবান দেখে… বস্তা নামায়,
তামাক ধরায়… গালাগালি দেয়।
দূর থেকে দেখে আমিনা, প্রতিমা—
বস্তা পিঠে বুড়ো ফিরে যায়…
পায়ে পায়ে হাঁটে, ঝুঁকে ঝুঁকে চলে
পিঠে উইলের বস্তা
অশ্রু-ঘামের নোনাডাঙা ছেড়ে
নিরুদ্দেশের দিগন্তরেখায়
বস্তির যত ন্যাংটা ছেলের খোঁজে
বুড়ো ভগবান ফিরে চলে যায়…
বুড়ো ভগবান ফিরে চলে যায়…
---------------------------
(Durbasa, 2013)
পিঠে উইলের বস্তা
গোলমেলে এই দুনিয়ার সম্পত্তি
কাকে দিয়ে যাবে,
ভাবনায় সারা মাথাটায় টাক ভর্তি।“
(শেষ উইল/ বিমলচন্দ্র ঘোষ)
(এই কবিতা আমাকে নাড়িয়ে দেয় যখন নোনাডাঙ্গায় বস্তিবাসীদের উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয় আর সরকার জোর করা শুরু করে, লাঠি চালায়। তখনই এটা লিখে ফেলি)
বড় ভগবান ঝুঁকে ঝুঁকে চলে
লবনডাঙ্গার মাঠে
‘কচি ছেলেগুলো কোথা চলে গেল’,
বুড়ো ভাবে, চিন্তায় মাথা নাড়ে
উৎকণ্ঠায় ঘোলা চোখে চায় দূরে
‘ছেলেগুলো ছিল বড় ডানপিটে!
ধুতি টানে, দুয়ো দিয়ে ছোটে।
ধুলোমাখা যত ন্যাংটা ছেলেরা!
ওদের ঝুপড়িগুলো…’, বুড়ো ভাবে…
‘কারা এসে ভেঙে দিল?’
যোসেফ কামার, করিম চামার
চা-দোকানী রাম নেই
তুলসীমঞ্চ, তসবীর মালা,
ক্রিস-মাস ট্রি ধুলোয় লুটায়
চোখ মুছে বুড়ো ঘোলাচোখে চায়।
হাজার বছরী কলজে হাঁফায়
পোকা-কাটা শাল ধুলোয় লুটায়
বুড়ো নির্বাক
ভাঙা খাটিয়ার পাশে
রোদ এসে পড়ে টাকে।
মাথা ঘোরে, পা টলে যায়
শূন্য দৃষ্টি, দু-পাশে তাকায়
ধুলোমাখা এই শিশুদের নামে লেখা
গোলমেলে এই দুনিয়ার সম্পত্তি
কাকে দেবে তবে? বুড়ো পা বাড়ায়…
কোটাল আসছে লাঠি হাতে তেড়ে
ভগবান দেখে… বস্তা নামায়,
তামাক ধরায়… গালাগালি দেয়।
দূর থেকে দেখে আমিনা, প্রতিমা—
বস্তা পিঠে বুড়ো ফিরে যায়…
পায়ে পায়ে হাঁটে, ঝুঁকে ঝুঁকে চলে
পিঠে উইলের বস্তা
অশ্রু-ঘামের নোনাডাঙা ছেড়ে
নিরুদ্দেশের দিগন্তরেখায়
বস্তির যত ন্যাংটা ছেলের খোঁজে
বুড়ো ভগবান ফিরে চলে যায়…
বুড়ো ভগবান ফিরে চলে যায়…
---------------------------
(Durbasa, 2013)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ২৭/১০/২০১৩দাদা, কোথায় আপনি?
-
Înšigniã Āvî ২৪/০৯/২০১৩কিছু কিছু লেখা পড়ে শুধু অনুভব করা যায, কোনও মতামত দিতে পারি না কারণ কোনও বিশেষণই সেখানে যথার্থ নয়.....
এই কবিতাটি সেরকম এক কবিতা । -
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ২৩/০৯/২০১৩দাদা মুগ্ধ হয়ে পড়লাম