আমরা মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে গেছি।
ভারতের স্বার্থে আর কত কিছু করবো আমরা? তার চেয়ে ভালো নয় কি যে বাংলাদেশকে ভারতের অংশ বলে ঘোষণা দিয়ে দেয়া। তবু যদি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেত সুন্দরবন। আশা করি আমার লেখার বিষয়বস্তু সবার কাছে পরিষ্কার।আসলে ভেবেছিলাম সবাই যখন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র আর সুন্দরবন নিয়ে লিখছেন তাহলে আমি না হয় আর না লিখি। কিন্তু চারপাশে এমন কিছু মন্তব্য শুনলাম যে আর না লিখে থাকতে পারলাম না। জ্বি আমিও আরো ৮/১০ জনের মতোই বলবো ভারতের স্বার্থে আমরা সুন্দরবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি।
আসলে বর্তমানে আমরা মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে গেছি। কেননা সরকার দেশ ও জনগনের স্বার্থে কিছু করলেও তাকে দেশের ক্ষতি ও তাতে ভারতের স্বার্থ বলে বিরোধীতা করছি। দেশের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে সরকার রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। আর যেহেতু সূচনালগ্ন থেকে ভারত আমাদেরকে বন্ধুর মত সাহায্য করে আসছে সেহেতু এবারও বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনেও তারাই সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছে। তাই বাংলাদেশ সরকার চুক্তি স্বাক্ষর করেন যে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপিত হবে। আসলে ভারতের সাহায্যের উদরতা বরাবরই আমাদের তাদের কাছে ঋণী হয়ে আসছি। আর এই ঋণ শোধ করতে করতেই হয়ত আগামীর বাংলাদেশ এক সময় ভারত হয়ে যাবে।
আচ্ছা চলুন ভারতের এমন সাহায্য ও উদারনীতির আড়ালের সত্যিটা কি তা জেনে আসি।
বেশকিছু দিন আগে "ইউনিভার্সেল ক্রিসেন্ট পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড " নামক একটি সংস্থা নয়া চরে ৭'শ একর জমির উপর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য পরিবেশ দপ্তরে অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু পরিবেশ দপ্তর ম্যানগ্রোভ বনের ক্ষতি হবে বলে তা নাকোচ করে দেয়। তখনই ভারত বিকল্প জমি খুঁজতে থাকে।আর তারর কিছুদিন পরই বাংলাদেশ সরকার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘোষণা দেন। সেই সুযোগে ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করে। ভারতের আইনে বনানঞ্চলের ২৫ কি.মিটারের মধ্যে কোন প্রকার জ্বালানি প্রকল্প করা যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের আইনে তা মাত্র ১০ কি.মিটার। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র তো প্রায় ১৪ কি.মিটার দূরে করা হচ্ছে। তার মানে আইনের দিক থেকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কোন বাধা নেই। তার মানে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের নয় বরং ভারত যে বিকল্প জমি খুঁজছিল এটা সেই বিকল্প জমি।
এবার আসি খরচাপাতির হিসেবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাত্র ৩০% খরচের সমান সমান ভাগ দেবে বাংলাদেশ-ভারত সরকার। তাহলে বাকি ৭০% কে দেবে। বাকি ৭০% দেবে ভারতের রাষ্ট্রয়াত্ব এক্সিম ব্যাংক লোন হিসেবে অনুদান নয় আই রিপিট ইট অনুদান নয় লোন ।তার মানে হিসেব অনুযায়ী ভারত দিচ্ছে ৮৫% খরচ। তাহলে বলুন তো ভারতের চেয়ে এমন ভালো ও উদার বন্ধু কে হতে পারে। তা আমরা শুধু বন্ধুদের সাহায্য নেবো কোন বিনিময় করবো না তা কি হয়। আমাদের সাহায্য হয়ত তাদের লাগবে না তাই বলে তো কিছু উপহার দিতেই পারি। তাই তো দেখা যাবে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই উপহার হিসেবে দাদাদের দিয়ে দিলাম। বন্ধু বলে কথা। তারা এত করলো কিছুটা ঋণও তো শোধ করা দরকার বলুন।
আচ্ছা এবার আসি বাংলাদেশ সরকারের ভূমি অধি গ্রহণের গল্পে। বাংলাদেশের ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী ভূমি অধি গ্রহণ করতে হলে আগে ৩ দফা নথি দেবে এবং তার উপর জনগনের কোন অভিযোগ থাকলে তা সমাধান করে তবেই সরকার ভূমি অধিগ্রহণ করতে পারবো। কিন্তু সরকার যখন দেখলো এতকিছু করতে গেলে ভূমি আর পাওয়া যাবে না। তাই তারা নিজস্ব বাহিনী লাগিয়ে সেখান থেকে প্রায় ৪০০ পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করালো। জনগন যখন অভিযোগ করলো তখন তা আর কেউ আমলে নিল না। জমি তো যেভাবেই হউক দখল করতেই হবে। কেননা দাদারা যে চান।তাই দাদাদের খুশির জন্য প্রায় ৪০০ পরিবার ও তাদের জীবন জীবিকাকে শেষ করে দেয়া হলো।এটি কোন পরিত্যক্ত জায়গা ছিল না। এ জমি থেকে বছরে প্রায় ৬২ হাজার টন চাউল উৎপন্ন হত এবং প্রায় ১৪০,৪৬১ টন অন্যান্য শস্য উৎপন্ন হতো। এছাড়াও ছিল চিংড়ির ঘের। যা থেকে আয় করা হত মোটা অংক। তাহলে দেশের এত পরিত্যক্ত জমি থাকতে কেন এখানেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে? কেননা এখানে না হলে তো আর দাদাদের সুবিধা হবে না।
এবার বলি কয়লার কথা। বলা হচ্ছে কয়লা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হবে। বিভিন্ন দেশ নাকি শুধুমাত্র ভারত থেকে তা কিন্তু সরকার পরিষ্কার করে বলেন নি। তবে একটা উত্তর কিন্তু দিয়েছেন। বলেছেন ভারত থেকেও আমদানি করা হতে পারে। তাহলে তো হয়েই গেল। হিসেব পাক্কা। আরো এক দফা ভারতের লাভের অংক মোটা হবে। ভারত তাদের কয়লা রপ্তানি করার জন্য আর কোন চিন্তা নেই তারা কয়লা রপ্তানি করবে বাংলাদেশে। আর রপ্তানি আয়ের টাকাটাও তাদের ঝুলিতে যাবে।তার মানে এক প্রকল্পের সকল লাভই তাদের। তাহলে এখানে বাংলাদেশের কি? কেন বাংলাদেশ এতকিছু করছে? হ্যাঁ বাংলাদেশেরও তো কিছু একটা আছে। এতকিছু করেও কিছু পাবেন না তা কি করে হয়।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে বাংলাদেশের কপালে কি জুটবে চলুন এবার তা তুলে ধরি। রামপালে যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা বলা হয়েছে তার জন্য ব্যবহৃত সকল কয়লা বিদেশ থেকে নৌপথে জাহাজ যোগে পশুর নদীর মধ্য দিয়ে তা সেখানে আনা হবে। তাহলে বলা যায় বছরে প্রায় হাজারখানেক কয়লা বোজাই জাহাজ পশুর নদীতে যাতায়াত করবে। আচ্ছা মনে আছে কিছুদিন আগে মংলা সমুদ্র বন্দরে ঢুকার পথে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় তেলের ট্যাংকার শ্যালা নদীতে ডুবেছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে রামপালে কয়লা আনার সময় যদি এমন কোন দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে তার ভয়াবহতা কি করে মোকাবিলা করবে। এমনটি ঘটবে না যে তার কোন গ্যারান্টি নেই। তাহলে কেন এমন ঝুঁকি নিল সরকার এ এক বিরাট প্রশ্ন। যার উত্তর হয়ত অধরাই রয়ে যাবে আমাদের কাছে।
কয়লাকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার কারণে বছরে প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ টন ছাই তৈরি হবে। যা পরিবেশের জন্য খুবই ভয়ংকর। কেননা যেকোন সময় ব্যানার পানির সাথে তা মিশে যেয়ে দূষিত করতে পারে পানি, মাটি, বায়ু তথা পুরো পরিবেশকে। এসকল ছাই কি করা হবে সরকারের কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা কোন সদোত্তরই দিতে পারেন নি।
তাহলে এটা সত্যি যে লাভের অংশের মালিক যারাই হউক ক্ষতি কিন্তু একার বাংলাদেশের। এছাড়াও আরো অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে যা কেবল বাংলাদেশকেই ভোগ করতে হবে। যেমন কয়লা জ্বালানোর ফলে সেখানে যে সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস তৈরি হবে তার ফলে এসিড বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া এসব সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস দ্বারা সুন্দরবনের কেওড়া গাছসহ অন্যান্য গাছগুলো আক্রান্ত হবে। যে গাছগুলো সুন্দরবনে বসবাসকারী পশুপাখিদের খাবার। তার মানে সুন্দরবন পুরোপুরি ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। যত উন্নত টেকনোলজি ব্যবহার করা হউক না কেন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে পরিবেশের উপর যে চাপ পড়বে তা কোন ভাবেই এড়ানো সম্ভব নয়।
সুতরাং যে কোন মূল্যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করতে হবে। যারা এখনো আমাদের এই বিরোধীতার পিছনে কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। তাদেরকে বলবো আপনারা যুক্তি খুঁজতে থাকুন আর দেশ সমুদ্রে তলিয়ে যাক।
নিজেদের স্বার্থ ঠিক রাখতে দেশ ও জনগনের স্বার্থকে পদদলিত করা বন্ধ করুন। দেশ ও জনগনের স্বার্থে কাজ করুন জনগনই আপনাদের ক্ষমতা ঠিক রাখবে
মনে রাখবেন লাভের অংশ ভারত নেবে কিন্তু একার বাংলাদেশের একা। তাই যা করার ভেবে চিন্তে করা প্রয়োজন। কেবল দাদাদের খুশি করলেই ক্ষমতায় ঠিকে থাকবেন এমনটি ভাবা ভুল।
নির্বাহী পারিস বার্তা ফ্রান্স
আসলে বর্তমানে আমরা মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে গেছি। কেননা সরকার দেশ ও জনগনের স্বার্থে কিছু করলেও তাকে দেশের ক্ষতি ও তাতে ভারতের স্বার্থ বলে বিরোধীতা করছি। দেশের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে সরকার রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। আর যেহেতু সূচনালগ্ন থেকে ভারত আমাদেরকে বন্ধুর মত সাহায্য করে আসছে সেহেতু এবারও বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনেও তারাই সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছে। তাই বাংলাদেশ সরকার চুক্তি স্বাক্ষর করেন যে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপিত হবে। আসলে ভারতের সাহায্যের উদরতা বরাবরই আমাদের তাদের কাছে ঋণী হয়ে আসছি। আর এই ঋণ শোধ করতে করতেই হয়ত আগামীর বাংলাদেশ এক সময় ভারত হয়ে যাবে।
আচ্ছা চলুন ভারতের এমন সাহায্য ও উদারনীতির আড়ালের সত্যিটা কি তা জেনে আসি।
বেশকিছু দিন আগে "ইউনিভার্সেল ক্রিসেন্ট পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড " নামক একটি সংস্থা নয়া চরে ৭'শ একর জমির উপর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য পরিবেশ দপ্তরে অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু পরিবেশ দপ্তর ম্যানগ্রোভ বনের ক্ষতি হবে বলে তা নাকোচ করে দেয়। তখনই ভারত বিকল্প জমি খুঁজতে থাকে।আর তারর কিছুদিন পরই বাংলাদেশ সরকার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘোষণা দেন। সেই সুযোগে ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করে। ভারতের আইনে বনানঞ্চলের ২৫ কি.মিটারের মধ্যে কোন প্রকার জ্বালানি প্রকল্প করা যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের আইনে তা মাত্র ১০ কি.মিটার। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র তো প্রায় ১৪ কি.মিটার দূরে করা হচ্ছে। তার মানে আইনের দিক থেকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কোন বাধা নেই। তার মানে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের নয় বরং ভারত যে বিকল্প জমি খুঁজছিল এটা সেই বিকল্প জমি।
এবার আসি খরচাপাতির হিসেবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাত্র ৩০% খরচের সমান সমান ভাগ দেবে বাংলাদেশ-ভারত সরকার। তাহলে বাকি ৭০% কে দেবে। বাকি ৭০% দেবে ভারতের রাষ্ট্রয়াত্ব এক্সিম ব্যাংক লোন হিসেবে অনুদান নয় আই রিপিট ইট অনুদান নয় লোন ।তার মানে হিসেব অনুযায়ী ভারত দিচ্ছে ৮৫% খরচ। তাহলে বলুন তো ভারতের চেয়ে এমন ভালো ও উদার বন্ধু কে হতে পারে। তা আমরা শুধু বন্ধুদের সাহায্য নেবো কোন বিনিময় করবো না তা কি হয়। আমাদের সাহায্য হয়ত তাদের লাগবে না তাই বলে তো কিছু উপহার দিতেই পারি। তাই তো দেখা যাবে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই উপহার হিসেবে দাদাদের দিয়ে দিলাম। বন্ধু বলে কথা। তারা এত করলো কিছুটা ঋণও তো শোধ করা দরকার বলুন।
আচ্ছা এবার আসি বাংলাদেশ সরকারের ভূমি অধি গ্রহণের গল্পে। বাংলাদেশের ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী ভূমি অধি গ্রহণ করতে হলে আগে ৩ দফা নথি দেবে এবং তার উপর জনগনের কোন অভিযোগ থাকলে তা সমাধান করে তবেই সরকার ভূমি অধিগ্রহণ করতে পারবো। কিন্তু সরকার যখন দেখলো এতকিছু করতে গেলে ভূমি আর পাওয়া যাবে না। তাই তারা নিজস্ব বাহিনী লাগিয়ে সেখান থেকে প্রায় ৪০০ পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করালো। জনগন যখন অভিযোগ করলো তখন তা আর কেউ আমলে নিল না। জমি তো যেভাবেই হউক দখল করতেই হবে। কেননা দাদারা যে চান।তাই দাদাদের খুশির জন্য প্রায় ৪০০ পরিবার ও তাদের জীবন জীবিকাকে শেষ করে দেয়া হলো।এটি কোন পরিত্যক্ত জায়গা ছিল না। এ জমি থেকে বছরে প্রায় ৬২ হাজার টন চাউল উৎপন্ন হত এবং প্রায় ১৪০,৪৬১ টন অন্যান্য শস্য উৎপন্ন হতো। এছাড়াও ছিল চিংড়ির ঘের। যা থেকে আয় করা হত মোটা অংক। তাহলে দেশের এত পরিত্যক্ত জমি থাকতে কেন এখানেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে? কেননা এখানে না হলে তো আর দাদাদের সুবিধা হবে না।
এবার বলি কয়লার কথা। বলা হচ্ছে কয়লা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হবে। বিভিন্ন দেশ নাকি শুধুমাত্র ভারত থেকে তা কিন্তু সরকার পরিষ্কার করে বলেন নি। তবে একটা উত্তর কিন্তু দিয়েছেন। বলেছেন ভারত থেকেও আমদানি করা হতে পারে। তাহলে তো হয়েই গেল। হিসেব পাক্কা। আরো এক দফা ভারতের লাভের অংক মোটা হবে। ভারত তাদের কয়লা রপ্তানি করার জন্য আর কোন চিন্তা নেই তারা কয়লা রপ্তানি করবে বাংলাদেশে। আর রপ্তানি আয়ের টাকাটাও তাদের ঝুলিতে যাবে।তার মানে এক প্রকল্পের সকল লাভই তাদের। তাহলে এখানে বাংলাদেশের কি? কেন বাংলাদেশ এতকিছু করছে? হ্যাঁ বাংলাদেশেরও তো কিছু একটা আছে। এতকিছু করেও কিছু পাবেন না তা কি করে হয়।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে বাংলাদেশের কপালে কি জুটবে চলুন এবার তা তুলে ধরি। রামপালে যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা বলা হয়েছে তার জন্য ব্যবহৃত সকল কয়লা বিদেশ থেকে নৌপথে জাহাজ যোগে পশুর নদীর মধ্য দিয়ে তা সেখানে আনা হবে। তাহলে বলা যায় বছরে প্রায় হাজারখানেক কয়লা বোজাই জাহাজ পশুর নদীতে যাতায়াত করবে। আচ্ছা মনে আছে কিছুদিন আগে মংলা সমুদ্র বন্দরে ঢুকার পথে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় তেলের ট্যাংকার শ্যালা নদীতে ডুবেছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে রামপালে কয়লা আনার সময় যদি এমন কোন দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে তার ভয়াবহতা কি করে মোকাবিলা করবে। এমনটি ঘটবে না যে তার কোন গ্যারান্টি নেই। তাহলে কেন এমন ঝুঁকি নিল সরকার এ এক বিরাট প্রশ্ন। যার উত্তর হয়ত অধরাই রয়ে যাবে আমাদের কাছে।
কয়লাকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার কারণে বছরে প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ টন ছাই তৈরি হবে। যা পরিবেশের জন্য খুবই ভয়ংকর। কেননা যেকোন সময় ব্যানার পানির সাথে তা মিশে যেয়ে দূষিত করতে পারে পানি, মাটি, বায়ু তথা পুরো পরিবেশকে। এসকল ছাই কি করা হবে সরকারের কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা কোন সদোত্তরই দিতে পারেন নি।
তাহলে এটা সত্যি যে লাভের অংশের মালিক যারাই হউক ক্ষতি কিন্তু একার বাংলাদেশের। এছাড়াও আরো অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে যা কেবল বাংলাদেশকেই ভোগ করতে হবে। যেমন কয়লা জ্বালানোর ফলে সেখানে যে সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস তৈরি হবে তার ফলে এসিড বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া এসব সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস দ্বারা সুন্দরবনের কেওড়া গাছসহ অন্যান্য গাছগুলো আক্রান্ত হবে। যে গাছগুলো সুন্দরবনে বসবাসকারী পশুপাখিদের খাবার। তার মানে সুন্দরবন পুরোপুরি ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। যত উন্নত টেকনোলজি ব্যবহার করা হউক না কেন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে পরিবেশের উপর যে চাপ পড়বে তা কোন ভাবেই এড়ানো সম্ভব নয়।
সুতরাং যে কোন মূল্যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করতে হবে। যারা এখনো আমাদের এই বিরোধীতার পিছনে কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। তাদেরকে বলবো আপনারা যুক্তি খুঁজতে থাকুন আর দেশ সমুদ্রে তলিয়ে যাক।
নিজেদের স্বার্থ ঠিক রাখতে দেশ ও জনগনের স্বার্থকে পদদলিত করা বন্ধ করুন। দেশ ও জনগনের স্বার্থে কাজ করুন জনগনই আপনাদের ক্ষমতা ঠিক রাখবে
মনে রাখবেন লাভের অংশ ভারত নেবে কিন্তু একার বাংলাদেশের একা। তাই যা করার ভেবে চিন্তে করা প্রয়োজন। কেবল দাদাদের খুশি করলেই ক্ষমতায় ঠিকে থাকবেন এমনটি ভাবা ভুল।
নির্বাহী পারিস বার্তা ফ্রান্স
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোলাইমান ৩০/০৯/২০১৬আপনার ব্লগটি পড়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কবি এই সুন্দর ব্লগটি দেওয়ার জন্য। রামপালে যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও আমি চাই না।প্রকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে একা একা অনেক ভাল লাগে।