বেপরোয়া
আকাশ
এ পাড়ার নন্দ বাবুর ছেলে। ভারী মিষ্টি ছোটবেলা থেকে।একটু বেপরোয়া বটে, তবে নন্দ বাবুর এটাই পছন্দ। ভেবেছিলো ছেলে একদিন মস্ত বড় হবে গ্রামের সবার ভালো বুঝবে।সে স্বপ্ন নন্দবাবু পূরণ হয়েছে তার।বারবার নন্দবাবুর কথা কেন বলছি এটা নিয়ে একটা বড় গল্পও আছে।
তখন নন্দবাবু কলেজের ছাত্র। তাছাড়া এপাড়ায় নন্দবাবুদের কর্তৃত্বটা অনেক আগের থেকে। তখন এ পুরো এলাকার জমিদার ছিল নন্দ বাবুর দাদা তারকনাথ।অন্যান্য জমিদারেরা শ্রমিকদের উপর বরই অত্যাচার করতো কিন্তু এদিক থেকে তারকনাথ ছিল বেশ দয়াবান।
আর তার স্বপ্ন ছিল শুধু আমি একা নই। এ পাড়ার প্রত্যেকেই একেকজন জমিদার হবে। যদিও সে স্বপ্ন পূরণ করার আগেই তারকনাথ পটল তুলেছে।কিন্তু তারকনাথ তার মৃত্যুর আগে নাতি নন্দ বাবুর কাছে বলে গিয়েছিলেন যে, এ জমিদারিত্ব ভাগাভাগি করে দিতে।
যাতে পাড়ার প্রত্যেকেই একেকজন জমিদার হতে পারে। কারণ সে সব সময় দেখেছে জমিদারেরা তাদের শ্রমিকদের প্রতি শুধুই অত্যাচার করে।
কিন্তু বড় অবিশ্বাস্য এই যে আবদার তার ছেলে শম্ভুনাথ এর কাছে না করে নাতি নন্দ বাবুর কাছে করেছিলেন।
কারণ তিনি জানতেন তার ছেলে কখনো এটা করবেন না। অবশ্য এর কারনও একটা ছিল আর সেটি হল শম্ভুনাথ বাবুর ক্ষমতার প্রতি খুব লোভ সে চায়,তাদের জমিদারিত্ব তাদের কাছে সারা জীবন অর্পিত থাক।আর এ জন্যই তারকনাথ শম্ভুনাথ কে না বলে আবদার করলেন তার নাতি নন্দ বাবুর কাছে। নন্দবাবু খুব দয়াবান।
তার দাদার কথা একদমই ফেলতে পারেননি ক্ষমতা যখন হাতে এসেছে।সাথে সাথে পাড়ার সকল জমি ভাগ করে দিয়েছেন সৈন্যদের হাতে।এজন্য পাড়ার প্রত্যেকটি মানুষ নন্দবাবু কে প্রভুর মতো মানে।আর সেই নন্দবাবু স্বপ্ন তার ছেলে আকাশ তার অপূর্ণ স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করে এ পাড়ার প্রত্যেকটি মানুষকে সুখী ও সমৃদ্ধ করে তুলবে।
আকাশ, সজীব, মনিকান্ত ও দেবদাস একসাথে বড় হয়েছে।
পাড়ার প্রত্যেকেই চেনে এদের। মনিকান্ত, সজীব, দেবদাস এদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের কারণে।আর এসব সম্ভব হয়েছে আকাশের কারণে। আকাশের সাথে যে একবার মিশে সে একটু বেপরোয়া হয়ে যায়।
তবে তাদের বেপরোয়ার ধরণ একটু ভিন্নও বটে।কারণ তাদের ভালোবাসাটা ছিল সবসময়ই ন্যায়ের পক্ষে।
আকাশ সে ভালো করে জানে যে তার বাবা এ পাড়ার ভগবান।
প্রত্যেকটা মানুষ তাকে ভালোবাসে সে ভালবাসার অবস্থান থেকে অবশ্যই আমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে সেই ভালোবাসার দামটা আমি সুদে-আসলে পূরণ করতে পারি।ঠিক এ জন্যই আকাশ আজ বেপরোয়া। অন্যায় কি একদমই সইতে পারে না।
কেউ ওর সামনে কাউকে কষ্ট দিলে তার উচিত শিক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দেন ও আসলে কতটা অটল তার নিজ লক্ষ্যে।অনিতা আকাশের মামাতো বোন।বড্ড চালাক ও চটপটে।আকাশ যখনই ওদের বাড়িতে বেড়াতে যায় তখনই হাজারো আবদার মাথায় চেপে বসে আকাশের।
মেলায় যাওয়া,ফুল এনে দেয়া,ফল পেড়ে দেয়া। আরও কত আবদার।সব আবদারগুলো বেশ যত্নের সাথে পূরণ করে আকাশ।ছোট্ট আর মিষ্টি মেয়ে অনিতা।যে কেউ দেখলে চোখ ঝলসে যাবে।আকাশ দের পাড়া শহর থেকে অনেক দূরে তাই এখানকার মানুষ আলো বলে কেরোসিনের ল্যাম্ব আর হারিকান কে বুঝে।যদিও সময়টা উনিশ শতকের শেষের দিকে তখন গায়ে-গ্রামে বিদ্যুতের আলো পৌঁছয়নি।
অনিতা দুদিন হলো বেড়াতে এসেছে আকাশদের বাড়ি।এবার মাধ্যমিকে পরীক্ষা দিয়েছে সে।নিজেকে বেশ বড় বড় মনে করা শুরু করেছে।তাইতো বিকেলে যখন আকাশ ও অনিতা ঘুরতে বেড়িয়েছে।তখন ঘটে গেল এক অবাক কান্ড। অনিতা সোজাসাপটা ভাবে আকাশের সামনে বলে ফেললো, তুই আমার বর হবি!।আকাশ ততক্ষণে সে কথা আজও মনে করে আকাশ আর মুচকি হাসে।
আকাশ শহরের বড় কোন কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করে গ্রামে এসেছে অনেক বছর কেটে গেছে এরই মাঝে। আকাশ শহরের পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।অন্ধকার আর অপরিচ্ছন্ন এ পাড়া তার কাছে বেমানান লাগে কিন্তু তার বাবার স্বপ্ন সে একদিন ভালো মানুষ হবে এরপর আর সকলকে আলোর পথ দেখাবে।
আর সে স্বপ্ন কে পূরণ করার জন্য একটু তো কষ্ট করতেই হবে।
আর সেজন্যই সে চায় এই পাড়ার প্রত্যেকটা মানুষকে ঠিক আলোর পথ দেখাবে।আর যে আলোটা সে প্রজ্বলিত করবে সে আলো একদিন আর দুদিন এ নিভে যাবে না।তার অস্তিত্ব এ পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে ধ্বংস অব্ধি। সে পরিকল্পনা করলো গায়ের অনেক মানুষ এখনো অশিক্ষিত।
তাদের মাঝে শিক্ষার আলো জ্বালাতে পারলেই প্রকৃতপক্ষে তারা আলোকিত হবে। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অন্ধকার আর অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে হবে না।অনিতাও আজ কলেজে পড়ে।আগের মতো সেই চটপটে ভাবটা না থাকলে আকাশের সাথে ভাবটা আগের মতোই।তবে আকাশ কখন ওকে একফোঁটাও সুযোগ দেয়না পাকনামি করার।একজন্যও হাজার কথাও শুনতে হয় তার।আকাশ বদ মেজাজে,নির্দয়াবান এরকম হাজারও টালবাহানা।
বৈশাখ মাস
আকাশে কালো মেঘ। কয়েকদিন ধরে বেশ জোরালো বাতাস বইছে।
আকাশ, মনিকান্ত, ওরা সকলেই বসে আছে পুরোনো দেয়াল ঘেরা বাড়িতে। বসে বসে ভাবছি কি করা যায়।যদিও বিষয়টা সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে ঘরে ঘরে যেন আলোয় আলোকিত হচ্ছে সবাই।তাই ওদের চিন্তাভাবনাও একটু উন্নত সবাই মিলে ঠিক করলো গায়ে একটা স্কুল খুলবে।যেখানে গায়ের পত্রিকা ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার সুযোগ থাকবে। বাবা মায়ের সামান্য পরিমাণ অর্থে পরিচালিত হবে। যেই কথা সেই কাজ।
যদিও গ্রামের অনেকে তাতে রাজি হয়নি। কিন্তু তাতে কি।আকাশ তো তার অবস্থানে বেপরোয়া। আর সেজন্যই সে তার লক্ষ্য থেকে এক পা নড়বে না। তার কথা হলো, গায়ের প্রতিটি ছেলে মেয়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।স্কুল হিসেবে ঠিক করা হল আকাশদের বাড়ির এক পাশে পড়ে থাকা পুরনো ঘর যেটা তিন তলা বিশিষ্ট।
গায়ের লোকজন টাকা পয়সা দিতে রাজি না হলেও আকাশ, মনিকান্ত, দেবদাস ওদের সকলের মতো ব্যবস্থা করা হলো বিনামূল্যে শিক্ষা ব্যবস্থা।
কারণ ওরা জানে শুধু একটা স্কুলই নই।প্রতিটা যুবকই বেপরোয়া হতে হয় তার কল্যানময় কর্ম জীবনে।
তারপর কেটে গেল অনেক বছর।
সকালের রোদে চেয়ার পেতে বসে আছে আকাশ।চোখ থেকে চশমা নামিয়ে তাকিয়ে রইল সেই পুরনো দেয়াল ঘেরা বাড়িটার দিকে যেখানে এখনো আলো বিক্রি করা হয়।আর সে আলোটা নাম হলো শিক্ষা। মাঝে মাঝে নিজের বেপরোয়া চরিত্রটার কথা ভাবে। এরই মাঝে হঠাৎ করে ডাক দিলো সেই চরিত্রটি।"এই তোমার চা নাও" হাতের চুড়ির ঝংকারে কেঁপে ওঠলো যেন পুরনো অতীত।
সে অঙ্কিত হাতের ছবিটির দিকে তাকিয়ে যেন ঝাপসা হয়ে আসলো আকাশের চোখ।
এ পাড়ার নন্দ বাবুর ছেলে। ভারী মিষ্টি ছোটবেলা থেকে।একটু বেপরোয়া বটে, তবে নন্দ বাবুর এটাই পছন্দ। ভেবেছিলো ছেলে একদিন মস্ত বড় হবে গ্রামের সবার ভালো বুঝবে।সে স্বপ্ন নন্দবাবু পূরণ হয়েছে তার।বারবার নন্দবাবুর কথা কেন বলছি এটা নিয়ে একটা বড় গল্পও আছে।
তখন নন্দবাবু কলেজের ছাত্র। তাছাড়া এপাড়ায় নন্দবাবুদের কর্তৃত্বটা অনেক আগের থেকে। তখন এ পুরো এলাকার জমিদার ছিল নন্দ বাবুর দাদা তারকনাথ।অন্যান্য জমিদারেরা শ্রমিকদের উপর বরই অত্যাচার করতো কিন্তু এদিক থেকে তারকনাথ ছিল বেশ দয়াবান।
আর তার স্বপ্ন ছিল শুধু আমি একা নই। এ পাড়ার প্রত্যেকেই একেকজন জমিদার হবে। যদিও সে স্বপ্ন পূরণ করার আগেই তারকনাথ পটল তুলেছে।কিন্তু তারকনাথ তার মৃত্যুর আগে নাতি নন্দ বাবুর কাছে বলে গিয়েছিলেন যে, এ জমিদারিত্ব ভাগাভাগি করে দিতে।
যাতে পাড়ার প্রত্যেকেই একেকজন জমিদার হতে পারে। কারণ সে সব সময় দেখেছে জমিদারেরা তাদের শ্রমিকদের প্রতি শুধুই অত্যাচার করে।
কিন্তু বড় অবিশ্বাস্য এই যে আবদার তার ছেলে শম্ভুনাথ এর কাছে না করে নাতি নন্দ বাবুর কাছে করেছিলেন।
কারণ তিনি জানতেন তার ছেলে কখনো এটা করবেন না। অবশ্য এর কারনও একটা ছিল আর সেটি হল শম্ভুনাথ বাবুর ক্ষমতার প্রতি খুব লোভ সে চায়,তাদের জমিদারিত্ব তাদের কাছে সারা জীবন অর্পিত থাক।আর এ জন্যই তারকনাথ শম্ভুনাথ কে না বলে আবদার করলেন তার নাতি নন্দ বাবুর কাছে। নন্দবাবু খুব দয়াবান।
তার দাদার কথা একদমই ফেলতে পারেননি ক্ষমতা যখন হাতে এসেছে।সাথে সাথে পাড়ার সকল জমি ভাগ করে দিয়েছেন সৈন্যদের হাতে।এজন্য পাড়ার প্রত্যেকটি মানুষ নন্দবাবু কে প্রভুর মতো মানে।আর সেই নন্দবাবু স্বপ্ন তার ছেলে আকাশ তার অপূর্ণ স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করে এ পাড়ার প্রত্যেকটি মানুষকে সুখী ও সমৃদ্ধ করে তুলবে।
আকাশ, সজীব, মনিকান্ত ও দেবদাস একসাথে বড় হয়েছে।
পাড়ার প্রত্যেকেই চেনে এদের। মনিকান্ত, সজীব, দেবদাস এদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের কারণে।আর এসব সম্ভব হয়েছে আকাশের কারণে। আকাশের সাথে যে একবার মিশে সে একটু বেপরোয়া হয়ে যায়।
তবে তাদের বেপরোয়ার ধরণ একটু ভিন্নও বটে।কারণ তাদের ভালোবাসাটা ছিল সবসময়ই ন্যায়ের পক্ষে।
আকাশ সে ভালো করে জানে যে তার বাবা এ পাড়ার ভগবান।
প্রত্যেকটা মানুষ তাকে ভালোবাসে সে ভালবাসার অবস্থান থেকে অবশ্যই আমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে সেই ভালোবাসার দামটা আমি সুদে-আসলে পূরণ করতে পারি।ঠিক এ জন্যই আকাশ আজ বেপরোয়া। অন্যায় কি একদমই সইতে পারে না।
কেউ ওর সামনে কাউকে কষ্ট দিলে তার উচিত শিক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দেন ও আসলে কতটা অটল তার নিজ লক্ষ্যে।অনিতা আকাশের মামাতো বোন।বড্ড চালাক ও চটপটে।আকাশ যখনই ওদের বাড়িতে বেড়াতে যায় তখনই হাজারো আবদার মাথায় চেপে বসে আকাশের।
মেলায় যাওয়া,ফুল এনে দেয়া,ফল পেড়ে দেয়া। আরও কত আবদার।সব আবদারগুলো বেশ যত্নের সাথে পূরণ করে আকাশ।ছোট্ট আর মিষ্টি মেয়ে অনিতা।যে কেউ দেখলে চোখ ঝলসে যাবে।আকাশ দের পাড়া শহর থেকে অনেক দূরে তাই এখানকার মানুষ আলো বলে কেরোসিনের ল্যাম্ব আর হারিকান কে বুঝে।যদিও সময়টা উনিশ শতকের শেষের দিকে তখন গায়ে-গ্রামে বিদ্যুতের আলো পৌঁছয়নি।
অনিতা দুদিন হলো বেড়াতে এসেছে আকাশদের বাড়ি।এবার মাধ্যমিকে পরীক্ষা দিয়েছে সে।নিজেকে বেশ বড় বড় মনে করা শুরু করেছে।তাইতো বিকেলে যখন আকাশ ও অনিতা ঘুরতে বেড়িয়েছে।তখন ঘটে গেল এক অবাক কান্ড। অনিতা সোজাসাপটা ভাবে আকাশের সামনে বলে ফেললো, তুই আমার বর হবি!।আকাশ ততক্ষণে সে কথা আজও মনে করে আকাশ আর মুচকি হাসে।
আকাশ শহরের বড় কোন কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করে গ্রামে এসেছে অনেক বছর কেটে গেছে এরই মাঝে। আকাশ শহরের পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।অন্ধকার আর অপরিচ্ছন্ন এ পাড়া তার কাছে বেমানান লাগে কিন্তু তার বাবার স্বপ্ন সে একদিন ভালো মানুষ হবে এরপর আর সকলকে আলোর পথ দেখাবে।
আর সে স্বপ্ন কে পূরণ করার জন্য একটু তো কষ্ট করতেই হবে।
আর সেজন্যই সে চায় এই পাড়ার প্রত্যেকটা মানুষকে ঠিক আলোর পথ দেখাবে।আর যে আলোটা সে প্রজ্বলিত করবে সে আলো একদিন আর দুদিন এ নিভে যাবে না।তার অস্তিত্ব এ পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে ধ্বংস অব্ধি। সে পরিকল্পনা করলো গায়ের অনেক মানুষ এখনো অশিক্ষিত।
তাদের মাঝে শিক্ষার আলো জ্বালাতে পারলেই প্রকৃতপক্ষে তারা আলোকিত হবে। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অন্ধকার আর অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে হবে না।অনিতাও আজ কলেজে পড়ে।আগের মতো সেই চটপটে ভাবটা না থাকলে আকাশের সাথে ভাবটা আগের মতোই।তবে আকাশ কখন ওকে একফোঁটাও সুযোগ দেয়না পাকনামি করার।একজন্যও হাজার কথাও শুনতে হয় তার।আকাশ বদ মেজাজে,নির্দয়াবান এরকম হাজারও টালবাহানা।
বৈশাখ মাস
আকাশে কালো মেঘ। কয়েকদিন ধরে বেশ জোরালো বাতাস বইছে।
আকাশ, মনিকান্ত, ওরা সকলেই বসে আছে পুরোনো দেয়াল ঘেরা বাড়িতে। বসে বসে ভাবছি কি করা যায়।যদিও বিষয়টা সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে ঘরে ঘরে যেন আলোয় আলোকিত হচ্ছে সবাই।তাই ওদের চিন্তাভাবনাও একটু উন্নত সবাই মিলে ঠিক করলো গায়ে একটা স্কুল খুলবে।যেখানে গায়ের পত্রিকা ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার সুযোগ থাকবে। বাবা মায়ের সামান্য পরিমাণ অর্থে পরিচালিত হবে। যেই কথা সেই কাজ।
যদিও গ্রামের অনেকে তাতে রাজি হয়নি। কিন্তু তাতে কি।আকাশ তো তার অবস্থানে বেপরোয়া। আর সেজন্যই সে তার লক্ষ্য থেকে এক পা নড়বে না। তার কথা হলো, গায়ের প্রতিটি ছেলে মেয়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।স্কুল হিসেবে ঠিক করা হল আকাশদের বাড়ির এক পাশে পড়ে থাকা পুরনো ঘর যেটা তিন তলা বিশিষ্ট।
গায়ের লোকজন টাকা পয়সা দিতে রাজি না হলেও আকাশ, মনিকান্ত, দেবদাস ওদের সকলের মতো ব্যবস্থা করা হলো বিনামূল্যে শিক্ষা ব্যবস্থা।
কারণ ওরা জানে শুধু একটা স্কুলই নই।প্রতিটা যুবকই বেপরোয়া হতে হয় তার কল্যানময় কর্ম জীবনে।
তারপর কেটে গেল অনেক বছর।
সকালের রোদে চেয়ার পেতে বসে আছে আকাশ।চোখ থেকে চশমা নামিয়ে তাকিয়ে রইল সেই পুরনো দেয়াল ঘেরা বাড়িটার দিকে যেখানে এখনো আলো বিক্রি করা হয়।আর সে আলোটা নাম হলো শিক্ষা। মাঝে মাঝে নিজের বেপরোয়া চরিত্রটার কথা ভাবে। এরই মাঝে হঠাৎ করে ডাক দিলো সেই চরিত্রটি।"এই তোমার চা নাও" হাতের চুড়ির ঝংকারে কেঁপে ওঠলো যেন পুরনো অতীত।
সে অঙ্কিত হাতের ছবিটির দিকে তাকিয়ে যেন ঝাপসা হয়ে আসলো আকাশের চোখ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রূপক কুমার রক্ষিত ০৭/০৪/২০১৯দারুন।
-
নাসরীন আক্তার রুবি ০১/০৪/২০১৯ভালো লাগলো।