গড়ভুতুয়া
রাজস্থানের ভানগড় কেল্লা ভানগড় নগরে অবস্থিত যা জয়পুর এবং অলওয়ারের ঠিক মাঝখানে। দেশী-বিদেশী ট্যুরিস্টদের কাছে পৃথিবীর অন্যতম ভুতূড়ে স্থানরূপে ( one of the world's most haunted places ) পরিচিত এই কেল্লাখানি রাজা মাধো সিং 1573 ( মতান্তরে 1613 ) সালে নির্মান করেন। এই মাধো সিং ছিলেন রাজা ভগওয়ান্ত দাসের দ্বিতীয় পুত্র এবং আকবরের দক্ষিণ হস্ত প্রথম মান সিংহের অনুজ ভ্রাতা। কেল্লার অভ্যন্তরেই রাজগুরু বালু নাথের সমাধিখানি রাখা আছে।
আশেপাশের গ্রামের বাড়িগুলির কোন ছাদ নেই। যখনই কোন ছাদ নির্মান করা হয় তখনই নাকি কোন এক অদৃশ্য শক্তিবলে সেগুলি ধসে পড়ে যায়। একটি জনশ্রুতি অনুযায়ী রাজগুরুর ভবিষ্যৎবাণী মেনেই নাকি ভানগড় আজ জনশূন্য। বালু নাথ বলেছিলেন যে মুহূর্তে কেল্লার ছায়াখানি তাঁকে স্পর্শ করবে ঠিক সেই মুহূর্তে ভানগড় ধ্বংস হবে।
অপর একটি লোক-গাথা ভানগড়ের রাজকন্যা রত্নাবতীর কথা বলে। রাজকন্যার রূপমুগ্ধ তাণ্ত্রিক সিংহিয়া এক দিন রত্নাবতীর পরিচারিকাকে দেখতে পায় বাজারে। পরিচারিকা যখন বাজার থেকে তেল কিনছিল তখন দূর থেকে সেটিকে মণ্ত্রপূত করে দেয় তাণ্ত্রিক। কিন্তু রাজকন্যা তার দুরভিসন্ধির কথা জানতে পারেন এবং তেল ছুঁড়ে মাটিতে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে পায়ের তলার জমি নুড়িতে পরিণত হয় এবং তাণ্ত্রিককে জীবন্ত সমাধি দেয়। মরবার আগে সিংহিয়া অভিশাপ দিয়ে যায়। ঠিক তার পরের বছরেই অর্থাৎ 1783 ( মতান্তরে 1840 ) সালে আজবগড়ের সাথে যুদ্ধে ভানগড় লোকশূন্য হয়।
ভানগড় সংলগ্ন বৃক্ষগুলি জাতীয় সম্পত্তি এবং সেগুলির থেকে ফুল-ফল-পাতা ছেঁড়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ও হাজতবাসযোগ্য অপরাধ। আরেকটু দূরেই আছে গোপীনাথ, সোমেশ্বর ( শিব ), মঙ্গলা দেবী এবং কেশব রাইয়ের মন্দির, একাধিক হাভেলি ( রাজপুতানা স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ভবন ), ও একটি মসজিদ।
ভানগড়ে বেড়াতে আসা বিভিন্ন দেশী-বিদেশী টিভি ক্রু এবং ট্যুরিস্টদের অনেকেই নানা রকম ভুতুড়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে শোনা যায়। সত্যি-মিথ্যে যাচাই করতে কিন্তু যেতে হবে ভানগড়েই।
নয়া দিল্লী থেকে ফ্লাইট, ট্রেন, ক্যাব এবং ভলভো জয়পুরে যায়।
দেখা হবে ভানগড়ে!
( সমস্ত চিত্রের স্বত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। )
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৩/১২/২০১৪আসলে আপনার বাসায় থাকবো। এড্রেসটা প্লিজ.........
-
আবিদ আল আহসান ১২/১২/২০১৪awesome
-
অ ১১/১২/২০১৪সুন্দর পোস্ট ।
-
অনিরুদ্ধ বুলবুল ১১/১২/২০১৪দারুণ সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।
-
রক্তিম ১১/১২/২০১৪খূব খূব ভালো লাগল অনেক ধরণের ছবি সমেত সংবাদ গুলি পেয়ে। বেড়াতে যাবার ইচ্ছা উস্কে দিল ।