www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

চতুর্মাত্রিক জগৎ

"তুমি যাবে আমার সাথে?"-নীলার
দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস করে সজল।
-কোথায়?
-আরে বলেছিলাম না!
আমি চতুর্মাত্রিক জগতে প্রবেশ করার
উপায় প্রায় বের করে ফেলেছি।
-চতুর্মাত্রিক জগত আবার কী?
-আমরা থাকি ত্রিমাত্রিক জগতে।
যা তৈরি দৈর্ঘ,প্রস্থ আর
উচ্চতা দিয়ে।চতুর্মাত্রিক
জগতটা তৈরি দৈর্ঘ,প্রস্থ,উচ্চতা আর
সময় দিয়ে।ওখানে সময় একটা ধ্রুব
রাশি।এখন যা,হাজার বছর পরেও তা।
-ধুর ছাই!তোমার এই বিজ্ঞান আমার
ভাললাগেনা।চতুর্মাত্রিক জগত্!সময়
ধ্রুব!তার মানে তুমি ওখানে প্রবেশ
করলে তোমার বয়স বাড়বে না?
-ঠিক তা নয়।বয়স বাড়বে।কিন্তু
সেটা হবে আপেক্ষিক।
-বয়সের আমার আপেক্ষিকতা কিসের?
ছাড়ো তো।এখন মধুর কথা বল শুনি।
-আমি মধুর কথা বলতে পারি না।
-এমনভাবে বলছ কেন?
-তোমার প্রেমিক একটা Invention
করতে যাচ্ছে আর তুমি তাকে উত্সাহ
দেয়ার বদলে দূর দূর করছ!আশ্চর্য!
-আশ্চর্যের তুমি কি দেখছ?তোমার
সাথে প্রেম করে তো আমার লাইফ
বরবাদ হয়ে গেল।সারাদিন
খালি বিজ্ঞান আর বিজ্ঞান।
তুমি থাক তোমার বিজ্ঞান নিয়ে।
আমি চললাম।
*******
পড়ার
টেবিলে ছড়ানো ছিটানো কাগজপত্র।
সজল ঝুকে কি যেন অঙ্ক কষছে।আর অস্ফুট
স্বরে বলছে ইয়েস!ইয়েস!
-মা মা।শোনে যাও একটু।
-কি হয়ছে?চিল্লায়তাছস কেন?
-আমি চতুর্মাত্রিক জগতে প্রবেশ করার
উপায় পেয়ে গেছি।চতুর্মাত্রিক জগত্
হল. . . . . . .
-থাক থাক।তোর এই চতুর্মাত্রিকের
লেকচার শুনতে শুনতে আমারই এখন মুখস্থ
হয়ে গেছে।আমি যাই আমার কাজ
আছে।
-মা।আমি আজই এই জগতে প্রবেশ করব।
বিদায়।
-যা বাবা যা।ঐখানে ভালমত
খাসটাস।
হাসতে হাসতে মা বেড়িয়ে পড়েন।
*******
"কিরে নীলা?তুই কিছু জানিস
সজলের ব্যাপারে?"-পলাশ
ডেকে বলে নীলাকে।
-না তো।কি হয়ছে?
-ও তো কাল রাত থেকে ওধাও
হয়ে গিয়েছে।ঘর থেকে ডাইরেক্ট
হাওয়া।
"মরুক গে।বেচারা বোধ হয় আমার
বিরহে নদীতে ঝাপ দিছে।"-
হাসতে হাসতে বলে নীলা।
-সজল কী সত্যি সত্যি চতুর্মাত্রিক
জগতে চলে গেল নাকি?
-আরে যা।সব ওর গুল।পৃথীবিতে এত বড়
বড় বিজ্ঞানীরা যারা চতুর্মাত্রিক
জগতের কোন ধারনাই পেল
না সেখানে ও চলেও গেল?
-যাকগে ওসব কথা।আমিও কিন্তু তোর
বিরহ সইতে পারি না।
-তাই নাকি?
-হুম।
-আমারও মনে হয় আমি তোর প্রতি একটু
দুর্বল।
-চল কফি খাই।
-চল।
*********
"এত সুন্থর পরিবেশ!বাহ্ চমত্কার।
ছিমছাম এই মনমুগ্ধকর পরিবেশ
আমি আগে দেখেছি বলে মনে হয়
না।তবে এটাই
কি তাহলে চতুর্মাত্রিক জগত্?
দেখতে তো অবিকল পৃথিবী।"-
মনে মনে বলতে থাকে সজল।
"অভিনন্দন আপনাকে।আপনি এই
জগতে প্রবেশ করা প্রথম
পৃথিবীবাসী।"-কালোমত একটা লোক
ফুলের তোড়া হাতে সজলের
উদ্দেশ্যে বলে।
সজল দেখতে পায় ফুলের
তোড়া হাতে অনেকে দাড়িয়ে আছে।
সবার মুখ হাসি হাসি।এরা সবাই
দেখতে মানুষের মতই।
-এইটা কী তাহলে পৃথিবী নয়?
-হ্যা।এর নামও পৃথিবী।কিন্তু
এইটা তোমাদের ত্রিমাত্রিক
জগতের পৃথিবী নয়।এইটা চতুর্মাত্রিক
জগতের পৃথিবী।
-ওহ।আপনারা জানেন
কিভাবে আমি যে আমি আসব?
-চতুর্মাত্রিক জগতে প্রবেশ করার
পূর্বেই আমরা জেনে যায় যে কেউ
আমাদের জগতে প্রবেশ করছে।
এমনকি আমরা আসতে না দিলে তুমি আসতে পারতে না।
-তাই নাকি?
তাহলে আপনাদেরকে ধন্যবাদ
আমাকে এখানে প্রবেশের
অনুমতি প্রধানের জন্য।
একে একে সবাই সজলকে ফুলের
তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়।একজন
পরিচারিকা নিয়োগ করা হয় তার
জন্য।নাম লীনা।এক মূহুর্তের জন্য তার
নীলার কথা মনে হয়।স্বরকার
গুলো বদলে দিয়ে শব্দগুলো উল্টে দিলেই
লীনা হবে নীলা।আর
নীলা হবে লীনা।
*******
"এইযে এইটা আপনার রুম।"-
লীনা দেখিয়ে দেয় সজলকে।লীনার
চাহনি মুগ্ধ করে সজলকে।হঠাত্ করেই
যেন কেমন অনূভুত হয় তার।লীনার
চোখের দিকে চোখ পড়তেই সে চোখ
নিচে নামিয়ে নেই।
লীনা কি বুঝে গেল তার মনের
অভিব্যাক্তি?
-তোমাদের এখানে কী পৃথীবীর সকল
নিয়মকানুন চলে?
-হুম।
-কিছু মনে করোনা একটা কথা বলি।
তাহলে তো বোধ করি তোমরা প্রেম
ট্রেমও কর।
-হ্যা।
-তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?
-ছিল।
-নাম কী?আর ছিল বলছ কেন?
-এখন নেই।
আমাকে সে ধোঁকা দিয়েছে।নাম
লজস(LOGOS)
হঠাত্ চমকে উঠে সজল।
লীনা থেকে নীলা. . .লজস
থেকে সজল।এর কোন মানে নেই তো?
নীলা ধোকা দিয়েছে আমাকে আর
লজস দিয়েছে লীনাকে।
তাহলে কী পরবর্তীতে আমরা হব
একে অপরের?
-ভাবছেনটা কী?
-কিছু না।
-আমি জানি কী ভাবছেন।
আমরা চতুর্মাত্রিক জগতের
মানুষেরা পৃথিবীবাসীদের মনের
কথা পড়তে পারি।
সজল একটু যেন লজ্জায় পরে।
-সরি।আপনারা কি এ জগতের মানুষের
মনের কথাও বুঝতে পারেন?
-না।শুধু ত্রিমাত্রিক জগতের মানুষদের
কথা বুঝতে পারি।
-oh!
-oh কী?করেন।
-কী করব?
-প্রপোজ।
-করলে তুমি রাজি হবে?
-করেই দেখেন না।
-I love you my sweetheart lina.
-I love you too my sweet boy.
বলেই লীনা এলিয়ে পরে সজলের
উপর।তারপর
কয়েকটা মূহুতা কাটে একান্তই
তাদের ব্যাক্তিগত।
******
"লীনা লীনা।"-
চেঁচিয়ে ডাকে চতুর্মাত্রিক জগতের
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর
ব্যাক্তি,আমেরিকার প্রেসিডেন্ট
মাবাও করাবা।
-জ্বী।বলুন।
-কত দূর এগিয়েছো?
-কোন বিষয়ে?
-তোমাকে নিয়োগ
করা হয়েছে কেন?সজলকে মারার
বিষয়ে।
-তাকে মারা কী জরুরী?
-খুব জরুরী।
-কিন্তু কেন?
-তর্ক করোনা আমার সাথে।
তুমি জানোনা ও আমাদের শত্রু?
-জানি।কিন্তু আমার মনে হয়না ও
আমাদের কোন ক্ষতি করবে।
ওকে বুঝিয়ে বললে ও ঠিক বুঝবে।
-অযথা মায়া দেখিও না।ভাগ্যিস শুধু
ও জেনেছে চতুর্মাত্রিক
জগতে প্রবেশ করার উপায়।
যদি সে নিজে পরীক্ষা না করে বিজ্ঞানীদের
বলে দিত?
-কী হত?
-কী হতো?ত্রিমাত্রিক জগতের
লোকেরা যত জানবে আমাদের
সম্পর্কে তত আমরা ধ্বংসের
দিকে যাব।তুমি এত প্রশ্ন করছ কেন?
যা বলছি তাই কর।
-OK.
-তা না হলে তোমাদের
দুজনকে আমি নিজের হাতে মারব।
মুখে একটা বিশ্রি ভঙ্গি করে বেরিয়ে পড়েন
মাবাও।
***********
তিন দিন হয়ে গেল সজলের কোন
খোঁজ নেই।তার
মা কেদে কেটে অস্থির।প্রায়ই ফিট
হয়ে যান।একটু পর জ্ঞান
ফিরলে ওঠে বসেন।আবার চিত্কার
করে ওঠেন,"আমার সজল কই?"বলেই
আবার ফিট হয়ে যান তিনি।
পত্রপত্রিকায় তার নিখোঁজ সংবাদ
ছাপানো হয়েছে।তার বাড়ির
আশে পাশে পুকুরে জাল
ফেলা হচ্ছে যদি তার লাশটুকুও
মেলে।আর নীলা?
নীলা ঘুরছে পলাশের হাত ধরে।
******
-সজল তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
-কী কথা?তোমাকে এমন উদ্ভ্রান্তের
মত দেখাচ্ছে কেন?
লীনা সে প্রশ্নের উত্তর
না দিয়ে একে একে বলে যেতে লাগল
সবকিছু।এ জগতের মানুষদের উদ্দেশ্যের
কথা।সবকিছু।
-তাহলে এখন আর কি করা?মেরে ফেল
আমায়।
-তুমি কেমন
করে ভাবলে যে আমি তোমাকে মেরে ফেলব?
তোমার মৃত্যুর পূর্বে যেন আমার মৃত্যু হয়।
-তাহলে?এখন উপায়?
তুমি কি ত্রিমাত্রিক জগতে প্রবেশ
করার উপায় জানো?
-না।আমি কেন?এ জগতের কেউ
জানে না।
-তবে?
-তবে আমি কি জানি?
-কিছু তো একটা উপায় আছেই।
-হুম।চল আমরা আত্তহত্যা করে ফেলি।
একজন আরেকজনের বুকে তো অন্তত
মরতে পারব।
-শুনেছি মেয়েদের নাকি ধৈর্য
থাকে বেশি।তুমি এই
অলুক্ষুনে কথা বলছ কেন?তুমি আর
আমি অবশ্যই সুখের সংসার সাজাব।এখন
আমি শুইতেছি।মাথাটা টিপে দাও।
কোন কথা বলবে না।আমি ভাবছি।
-OK.
*******
-দেরি হচ্ছে কেন এত?-মাবাও
চেঁচান।
-এইতো শেষ।
-কী শেষ?আজ রাতের মধ্যেই
মারতে হবে তোমাকে।
-আজই?
-কেন?আজ নয় কেন?দেখ তোমার আচার
আচরন আমার ভাল ঠেকছে না।
-না না।আজই কাজ শেষ হয়ে যাবে।
আপনি চিন্তা করবেন না।
-OK.Good girl.আজকের মধ্যে কাজ
না শেষ হলে ওর সাথে তোমাকেও
শেষ করব আমি।
-আচ্ছা।আমি এখন যাই?
-যাও।
*******
সজলের ঘরের দরজায় ঠক ঠক নক
করে লীনা।
-কে?
-আমি।
-OH.ভিতরে আস।
-উপায় কিছু বের করেছ?হুকুম
এসেছে আজ রাতেই
তোমাকে মারতে হবে।
তা না হলে তারা নিজেই হাত
রাঙাবে।
-OH.কিছুই তো পাচ্ছি না।
না বুঝতে পারছি জল কতটুকু?আর
না পাচ্ছি কূল।
এমন সময় বাইরে মাবাও এর
অট্টহাসি শোনা যায়।"গাদ্দার
লীনা।তুই আমাকে ধোঁকা দিস?
আমাকে?"
লীনা ভয়ে সজলকে জড়িয়ে ধরে।
ঘরে বন্দুক হাতে ঢুকে পরে কয়েকজন।সব
আল্ট্রা রেডিয়েশন গান।এক
গুলিতো এফোঁড় ওফোঁড়
হয়ে যাবে যে কারও।
"তোদেরকে আমি এমনভাবে মারব
যে এই জগতের সবচেয়ে ভয়ংকর
মৃত্যুকাহিনীতে থাকবে তোদের
নাম।"-একনাগারে বলে চলে মাবাও।
ভয় পেলে মস্তিষ্ক দুই ধরনের কাজ
করে।বুদ্বিলোপ পায় অথবা অতিরিক্ত
পরিমানে বৃদ্ধি হয়।এই মূহুর্তে সজলের
ব্রেইন দ্রুত কাজ করছে।হঠাত্ এই ভয়ংকর
মুহুর্তেও
সে চেচিয়ে ওঠে ইউরেকা বলে।
-লীনা আমার হাত ধর।
-কেন?
-বলছি ধরই না।
"এই ছোকড়ার বুদ্ধি লোপ পায়ছে।"-
বলেই হাসতে থাকে মাবাও।
সজল নিজ মনে বিড়বিড়
করতে থাকে,"1020পাই25
4387বিটা86721গামা76374ল্যামডা6
9925467এপসাইলন. . . ."
"মনে হয় মাথাটাই গেছে ছোকরার।"-
বলেই
অট্টহাসিতে মেতে ওঠে পুরো ঘর।
হঠাত্ উজ্জল
আলোতে ভরে ওঠে পুরো ঘর।সবার
চোখ ধাঁধিয়ে যায় সে আলোতে।
*******
পানির ছিটায় ঘুম ভাঙে সজলের।
-আমি কোথায়?
-বাবা তুই আমার কোলে।তোর মার
কোলে।
-লীনা?লীনা কোথায়?
-লীনাটা কে?তুই কবে থেকে প্রলাপ
বকছিস।আর তুই কোথায় ছিলি এতদিন?
-আমি?কোথাও না।তুমি এখন যাও।
আমি হিসাব করব।
-সে কি রে?তুই ভালবাবে রেস্ট নে।
এখন হিসাব করতে হবে না কোনো।তুই
ঘুমা।
-আরে যাওতো।জরুরী হিসাব।
বলেই সে তার টেবিলে গিয়ে বসে।
একটা প্রয়োজনীয় হিসেব
মেলাতে হবে।
*******
সে তার নিজ জগত,নিজ
বাড়ি ফিরেছে ২ দিন হয়ে গেছে।
চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।
এখনও
সে হিসেবটা মেলাতে পারছেনা।
তার সমস্ত অস্থিত্ব জুড়ে এখন লীনার
ভাবনা।সে কেমন আছে?পিশাচ
গুলো তার সাথে কি যেন করছে?
নীলার সাথে ব্রেকআপ
হয়ে গেছে পলাশের।সে আবার
সজলের পিছে ঘুরঘুর করছে।কয়েক
ঘন্টা পর পর ফোন দিচ্ছে সজলকে।আর
সজল তার ফোন কাটছে আর কাটছে।
তারপর একবার বিরক্তিতে ফোন
রিসিভ করে যাচ্ছেতাই
গালিগালাজ করে ফোন বন্ধ
করে দেয় সে।এভাবে আরও কয়েকদিন
কেটে যায়।সে এখন তার সমস্থ
কিছুতে লীনাকে অনুভব করছে।হঠাত্
সে তার হিসেব মিলাতে সক্ষম হয়।
তার সামনে ভেসে আসে একের পর
এক সত্য।
-মা মা।
-কী বাবা বল।
-তোমাকে একটা কাজ দিব।
করতে পারবে?
-হুম।বলেই দেখনা।
মাকে একটা ফাইল
ধরিয়ে দিয়ে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ন
কথা বলে সে চলে আবার চতুর্মাত্রিক
জগতে।মার অনেক বারণ সত্বেও
সে যায় ওখানে।মাকে সে বলে যায়
মা আমি তোমার পুত্রবধু
সাথে নিয়ে ফিরবই ফিরব।
তুমি চিন্তা করনা।
*****
প্রথমবার চতুর্মাত্রিক জগতে প্রবেশ
করার পর সজল
যে মিথ্যা অভ্যর্থনা পেয়েছিল
এবার তাও পেলনা সে।সবাই
তাকে ঘিরে ফেলল বন্দুক হাতে।
"খবরদার!আমি কিন্তু এই জগত ধ্বংস
করে ফেলব।"-চেচিঁয়ে বলে সজল।
"সবাই বন্দুক নিচে নামান।কি মাবাও
আঙ্কেল?কিছু বলেন।"-
মাবাওকে উদ্দেশ্য করে বলে সজল।
-সবাই বন্দুক নিচু কর।নইলে সর্বনাশ হবে।
সবাই মাবাওর আদেশ পালন করে।
-প্রথমদিন কি বলেছিলেন আমায়?
আপনারা অনুমতি না দিলে আমি এই
জগতে প্রবেশ করতে পারব না।না??
আপনারা মিথ্যা বলেছিলেন।এই
জগতের এমন কেউ নেই
যে আমাকে আটকাবে।
আমাকে মারতে চেয়েছিলেন না?
যাতে আমি আপনাদের
সম্পর্কে পৃথিবীতে কাউকে না বলতে পারি?
এখন?এখন আমার এক সূত্রের প্রয়োগই
আপনাদেরকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।
খবরদার কেউ হুশিয়ারি দেখাবেন
না।কারণ আমি আমার
মাকে বলে এসেছি আমি যদি দুইদিনের
মধ্যে না ফিরে আসি তবে যেন
তিনি আমার কাজের
ফাইলটা বিজ্ঞান
ইনস্টিটিউটে জমা দেন।
তবে আমি কথা দিচ্ছি যে আমার
কাছে যদি লীনাকে ফিরিয়ে দেন
তবে আমি আমার সমস্ত কাজের রেকর্ড
নষ্ট করে ফেলব।আমার শুধু লীনা চাই।
লীনা।
"ক্ষমা করে দিন আমাদের।"-মাবাও
অনুনয় করেন।
-ক্ষমা?
ক্ষমা করতে পারি যদি তোমরা আমার
লীনা কে ফিরিয়ে দাও।
"হায় হায়।
লীনাকে তো মেরে ফেলা হয়েছে!"-
পিছন থেকে একজন বলে।
-কী?আমার লীনা বেঁচে নেই?
তবে আপনাদের কাউকেই আমি ছাড়ব
না।আপনাদের কারো বাঁচার
অধিকার নেই।
"দাড়াও দাড়াও
লীনা মরেনি লীনা বেঁচে আছে।"-
মাবাও বলে চলে।
"কী?
গাদ্দারি তো তাহলে আপনি করলেন
আমাদের সাথে।সবাইকে বললেন
লীনাকে মেরে ফেলেছেন।এখন
আবার বলছেন লীনা বেঁচে আছে!"-
পিছন থেকে রাগত
স্বরে বলে আরেকজন।
-লীনাকে আমি কিভাবে মারি?ও
যে আমার মেয়ে।
-কী?লীনা আপনার মেয়ে?
-হ্যা।লীনা আমারই মেয়ে।আমার এক
পরিচারিকার সাথে অবৈধ সম্পর্ক
ঘরে ওঠে।এরই ফল লীনা।
সবাই গাদ্দার গাদ্দার শোর তোলে।
"চুপ কর সবাই।"-চেচিঁয়ে বলে সজল।
-মনে রেখো।
তিনি লীনাকে বাচিঁয়ে রেখেছেন
বলেই আপনারা রক্ষা পাচ্ছেন।
সজলের কথায় সবার হুশ হয়।
সজলকে আবার তার পূর্বের
রুমে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তাল
লীনার স্মৃতি ছড়িযে রয়েছে।
"আপনি বিশ্রাম করুন।
আমি লীনাকে আনানোর
ব্যাবস্থা করছি।"-বলেই মাবাও ব্যস্ত
ভঙ্গিতে বের হয়ে যান।
তারপর সজল কিছুটা সময় কাটায় চোখ
বুজে তার
লীনাকে মনে মনে সাজিয়ে।
******
লীনার কথা ভাবতে ভাবতে সজল
ঘুমিয়ে পড়ে।তার ঘুভ ভাঙ্গে লীনার
হাতের আলতো ছোয়ায়।
-oh.lina?
সজল লীনার হাত
ধরে আলতো চুমোতে ভরিয়ে দেয়।
লীনা সজলের
বুকে আছড়ে পড়ে ঢুকরে কেদে ওঠে।
-কাঁদছো কেন সোনা?সব বিপদ
তো কেটে গেছে।এখন আমাদের
দুজনের স্বপ্নই পূরন হবে।
-এ কান্না তো কষ্টের নয়।এ
কান্না আনন্দের কান্না।
"ওমা!এই আনন্দের
কান্না দেখি সংক্রামক!"-বলেই সজলও
কেঁদে দেয়।
-আমি যখন শুনলাম
যে তুমাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
তখন তো আমার জান উড়ে যাবার
জোগাড় হয়েছিল।আর একটু হলেই
তো আমি মারা পড়তাম।
-তুমি আমাকে এতটাই ভালবাস?
-হুম।
*******
"আমি লীনাকে নিয়ে যেতে চায়।
আপনি অনুমতি দিন"-
মাবাওকে সম্মানসূচক
অভিব্যক্তিতে বলে সজল।
-না।আগে তোমাদের বিয়ে দিব আজ।
তারপর যেখানে ইচ্ছা যাও।
-বিয়েত ঐখানে করবই।
-কিন্তু ঐখানে তো আর আমি থাকব
না।আমায় মেয়ের
বিয়ে আমি নিজে উপস্থিত
থেকে দিতে চায়।
ঐখানে গিয়ে ইচ্ছে হলে আবার
বিয়ে করিও।
-ঠিক আছে।আপনি যখন বলছেন তখন তা-
ই হবে।
এরপর সজল ও
লীনাকে একটি রুমে বিয়ে দেয়া হয়।
বিয়ের পর সজল ও লীনা সবার
কাছে বিদায় নেয়।মাবাও অশ্রুসিক্ত
নয়নে মেয়েকে বিদায় দেন।
-লীনা মা আমার তুই ভালমত থাকিস।
-তুমি চিন্তা করনা বাবা।নিজের
প্রতি খেয়াল রেখো।
-তোর বিয়েতে কোন আয়োজন
করতে পারলাম না।আমার মত
ব্যাক্তির মেয়ের বিয়েতে কোন
আয়োজন হল না।
-তুমি ঐসব নিয়ে ভেবোনা বাবা।শুধু
আমাদের জন্য দোআ করিও।
-আমার দোআ সব সময় তোদের
সাথে থাকবে।
"তুমি আমার
মেয়েকে সুখী রেখো বাবা।আর ওর
যখন মনে চায় তুমি লীনাকে নিয়ে এ
জগতে এসো।"-সজলের হাতে লীনার
হাত রেখে বলেন মাবাও।
-এ নিয়ে আপনাকে বলতে হবে না।
আমারও কি মন চাবে না আমি আমার
শ্বশুর বাড়ি থেকে ঘুরে আসি?
-হুম।বাবা তোমার যখন
মনে চাবে তুমি চলে আসবে।
তারপর সজল আবার সবার কাছ
থেকে বিদায়
নিয়ে লীনাকে নিয়ে চলে আসে তার
ত্রিমাত্রিক জগতের পৃথীবিতে।
এখানে সজল এবং লীনার আবার
বিয়ে হয়।
তারা সুখে শান্তিতে কাটাতে থাকে তাদের
জীবন।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৪৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/১০/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • পার্থ সাহা ১৭/১০/২০১৪
    amaro tai mone hoece ing. sojib vi.osadaron,porasona kise,kothi molla vi?
    • আফরান মোল্লা ১৮/১০/২০১৪
      ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মুল্যবান মন্তব্য দানের জন্য।আপনাদের এই মন্তব্য গুলো আমার আগামী লেখার প্রেরণা যোগাবে।আমি আমার উপজেলা ভৈরবের "হাজী আসমত কলেজ"-এ দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ি।বিজ্ঞান বিভাগে।সামনের মাসের ২৪তারিখ টেস্ট পরীক্ষা,তাই আপনাদের গল্প কবিতাতে বেশী সময় দিতে পারছি না।আমি দুঃখিত॥
  • দীপ ১৪/১০/২০১৪
    খুব খুব সুন্দর...
  • অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। এগিয়ে যান। হুমায়ুন আহমেদের একটা বই পড়ছিলাম.......................
    • আফরান মোল্লা ১৪/১০/২০১৪
      ধন্যবাদ আপনাকে।হুমায়ূন আহমেদের "তোমাদের জন্য ভালবাসা" বই থেকেই চতুর্মাত্রিক জগতের ধারণা পাই।এই ধারণা থেকেই আমার মনে জন্ম নেয় এই গল্প।আবারো ধন্যবাদ।ভালো থাকুন নিরবধি॥
  • অনিরুদ্ধ বুলবুল ১৪/১০/২০১৪
    ভারি চমৎকার 'ফিকশন' -
    ছাড়ি ছাড়ি করেও ছাড়তে পারছিলাম না। আসলে, কবিতার পাতায় তো এত সময় দিয়ে অভ্যস্থ নই। ভাল লাগল, বেশ মেধা খরচ হয়েছে। এবার একটু রেস্ট নাও খোকা।

    ভাল, লেখা বেশ সুন্দর হয়েছে। মনে হল; লেখাটা গদ্যাকারে লিখলে পড়তে আরো ভাল লাগতো। দু'একটা বানান আর শব্দপ্রমাদ ঠিক করে নিলেই বেশ তকতকে হয়ে উঠবে।

    শুভ কামনা রইল। :)
 
Quantcast