আজকের প্রজন্ম ও মুক্তিযুদ্ধ
স্বাধীনতার বছর খানেক পরেই আমার জন্ম তাই মুক্তিসুদ্ধের রমরমা কাহিনী শুনতে শুনতে বড় হয়ে উঠা। ছোটবেলায় যখন মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতাম তখন ভাবতাম আহারে ওই সময় আমি কেন ছিলাম না তাহলেতো আমিও যুদ্ধ করতে পারতাম। বড়দেরকে বলতাম আপনিতো বড় ছিলেন আপনি কেন যুদ্ধ করতে যাননি?কুব ভালো লাগতো গল্প গুলো শুনতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরত্বে কাহিনী শুনতে।তারপর অনেক বছর কেটে গেছে শুরু হলো নব্বই এর আন্দোলন সবে এসএসসি পাশ করেছি এরশাদ সরকারের পতন বের হলো বিজয় মিছিল সারা দেশের মানুষ আনন্দে আত্মহারা।সারা দেশে বিজয় মিছিল আর রঙ খেলা সেএক মহা উৎসব । আমার মা আমাকে বলল দেশ যখন স্বাধীন হলো তখনও সবাই এভাবে আনন্দ করেছিল। তারপর গণতান্ত্রিক সরকারের ছত্রছায়ায় অনেক গুলো বছর কাটালাম। সময় অনেক গড়িয়ে গেছে আমরা বেভাবে মুক্তি যুদ্ধকে মনের ভেতর লালন করেছি আমার মনে হতো এখনকার ছেলেমেয়েরা সেভাবে স্মরণ করে না এর সঠিক ইতিহাসটা তারা জানেনা। ভাবতাম আমরা যুদ্ধপরবর্তি সময়ের শিশুরা মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনাগুলো শুনতে শুনতে বড় হয়েছি বলে এসকল ইতিহাস আমাদের বেশি আন্দোলিত করে। সব ভুল প্রমাণ হয়ে গেল -
আমার মেয়ের বয়স তখন পাচ বছর হবে বানিজ্য মেলায় গেছি হাটতে হাটতে আমার সেন্ডেল ছিড়ে গেল তাই সেন্ডেল কেনার জন্য একটা পাকিস্তানী স্টলে ঢুকলাম দরদাম করছি আমার মেয়ে আমাকে কানে কানে বলে ,”তুমি এই স্টলে ঢুকেছো কেন ? তুমি কি জানোনা পাকিস্তানীরা আমাদের উপর অত্যাচার করেছিল? তুমি পাকিস্তানী জুতা পরবে না। আই হেইট পাকিস্তানী আই হেইট পাকিস্তান।“ সে বইতে পাকিস্তান শব্দটা লেখা থাকলে তা উচ্চারন করেনা। পাকিস্তানের খেলা থাকলে সেই খেলা সে দেখেনা। কিন্তু যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের দাবী যখন উঠলো তখন সে আমাকে বলে, এই রাজাকাররা কোন দেশী মা? বাংলাদেশী শুনে খুব অবাক । বলে, ওরাতো আমাদের দেশের তাহলে ওরা কেন নিজের দেশের লোককে মারলো? ভাগ্যিস বলে বসেনি, আই হেইট বাঙলাদেশী আই হেইট বাংলাদেশ।
আন্দোলন হবে বিক্ষোভ হবে তবে তা মানুষ হত্যা করে নয় মানুষকে পুড়িয়ে মেরে নয় আমরা একই দেশের অধিবাসী আমরা একে অন্যকে হত্যা করবো কেন। তা নইলে সেই দিন আর বেশি দূরে নেই যখন আমাদের সন্তানরা দেশকে আর ভালোবাসতে পারবে না দেশের মানুষের জন্য নিজের প্রাণ উসর্গ করবে না নতুন মুক্তি যোদ্ধা সৃষ্টি হবে না।
হৃদয়ে একাত্তর
আমার মেয়ের বয়স তখন পাচ বছর হবে বানিজ্য মেলায় গেছি হাটতে হাটতে আমার সেন্ডেল ছিড়ে গেল তাই সেন্ডেল কেনার জন্য একটা পাকিস্তানী স্টলে ঢুকলাম দরদাম করছি আমার মেয়ে আমাকে কানে কানে বলে ,”তুমি এই স্টলে ঢুকেছো কেন ? তুমি কি জানোনা পাকিস্তানীরা আমাদের উপর অত্যাচার করেছিল? তুমি পাকিস্তানী জুতা পরবে না। আই হেইট পাকিস্তানী আই হেইট পাকিস্তান।“ সে বইতে পাকিস্তান শব্দটা লেখা থাকলে তা উচ্চারন করেনা। পাকিস্তানের খেলা থাকলে সেই খেলা সে দেখেনা। কিন্তু যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের দাবী যখন উঠলো তখন সে আমাকে বলে, এই রাজাকাররা কোন দেশী মা? বাংলাদেশী শুনে খুব অবাক । বলে, ওরাতো আমাদের দেশের তাহলে ওরা কেন নিজের দেশের লোককে মারলো? ভাগ্যিস বলে বসেনি, আই হেইট বাঙলাদেশী আই হেইট বাংলাদেশ।
আন্দোলন হবে বিক্ষোভ হবে তবে তা মানুষ হত্যা করে নয় মানুষকে পুড়িয়ে মেরে নয় আমরা একই দেশের অধিবাসী আমরা একে অন্যকে হত্যা করবো কেন। তা নইলে সেই দিন আর বেশি দূরে নেই যখন আমাদের সন্তানরা দেশকে আর ভালোবাসতে পারবে না দেশের মানুষের জন্য নিজের প্রাণ উসর্গ করবে না নতুন মুক্তি যোদ্ধা সৃষ্টি হবে না।
হৃদয়ে একাত্তর
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শেখ চপল ইসলাম সাকিব ২৬/০৩/২০১৯খুব ভালো লাগলো।
-
ইসমাত ইয়াসমিন ১২/১২/২০১৩মলি আমার ছেলে যদি দেখে আমি কোন পাকিস্তানী ছেলে বা মেয়ের সাথে কথা বলি তাহলে বলে আম্মু ও ত পাকিস্তানি তুমি ওর সাথে কথা বলছ কেন? মুক্তিযুদ্ধের ছবি দেখে আমাকে বলে, আম্মু আমি পাকিস্তানীদের মেরে ফেলব।
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ১২/১২/২০১৩খুব ভাল লাগল
-
প্রবাসী পাঠক ০৭/১২/২০১৩আমাদের বর্তমান প্রজন্ম নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা প্রচলিত আছে- এসএমএস জেনারেশন, অস্থির, আমাদের কৃষ্টি কালচার বিসর্জন দিয়ে বিদেশী সংস্কৃতি নিয়ে মেতে আছি। কিন্তু একটা জায়গায় আমাদের অগ্রজদের স্বীকার করতেই হবে , আমাদের প্রজন্ম স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে আমরা আপোষহীন। স্বাধীনতাবিরোধীদের জন্য আমাদের মনে কোন স্থান নেই।