১৯৯৭ এর পর ২০১৩ র কথা বলছি
এখন আমি মফস্বলেরএকটা সরকারি কলেজে পড়াই ছেলে মেয়েদের নিয়ে ট্যুরে যাই । খুব উৎসাহ নিয়েই যাই ভালো লাগে ওদের মাঝে যেন নিজেকেই খুজে ফিরি এদেরই কারো কারো চরিত্র যেন একেবারে আমার সেই বন্ধুদের সাথেই মিলে যায়। এদের আনন্দ হাসি প্রেম দেখলে সেইদিনকার আমাদের কথাই যেন মনে পড়ে । ক্লাসে যেয়ে যখন দেখি ছেলে মেয়েরা আলাদা রোতে বসে আছে তখন আমার সেই অনার্স এর দিনগুলোর কথাই মনে হয়। তবে আমি ওদের বলি এখন থেকেই বন্ধুত্ব করে নিতে না হলে আমাদের মতই আফসোস করবে।। আমাদের সময়কার দিনগুলোর স্মৃতিচারন করি । আমাদের সময়কার আর এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে বেশ পরিবর্তন লক্ষ্য করি। এখনকার মেয়েরা বেশিরভাগই বোরখা পড়ে, স্কার্ফ দিয়ে মুখ ঢেকে রাখে। বাড়ি থেকে মনে হয় এমনই শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে কো-এডুকেশনে পড়বে ভালো কথা তবে মুখ ঢেকে রাখতে হবে। তবে যে চোখ দুটো বের করা থাকে তা আইলাইনার মাস্কারা দিয়ে সুন্দর করে সাজানো থাকে কপালে কারো কারো টিপও থাকে । আমাদের সময় হেজাবের প্রচলনটা এত ছিলনা। কেউ কেউ মাথায় কাপড় দিত, বোরখাও পড়তো বেশি হলে চোখে একটু কাজল ছোঁয়াতো(বোরখা বা ঘোমটা দেয়া মেয়েদের কথা বলছি)। আমাদের মেয়েরা সালোয়ার কমিজই বেশিরভাগ পড়ত মাঝে মাঝে শাড়ীও পড়তো ।এখনকার মেয়েরা শাড়ী একেবারেই পড়েনা।তবে এরা শিক্ষকদের সাথে বেশ ফ্রি এবং বন্ধু সুলভ আচরন করে সব ধরনের সমস্যার কথা এসে বলে আমরা তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনিও। আমার মনে হয় আমরা ওদের মত স্মার্ট ছিলাম না।কেউ ট্যুরে বা পিকনিকে যেতে না চাইলে আমি উৎসাহিত করি যাওয়ার জন্য বলি বন্ধুদের সাথে এই মধুর স্মৃতিগুলোই সারা জীবনের সঞ্চয় মিস্ করোনা।তবে কেন যেন মনে হয় এখনকার বাবা-মারা বেশি কনজারভেটিভ,ভয় ও পায় বেশি। বিশেষ করে মেয়েগুলোকে অবগুণ্ঠিত করে রাখতে চায়। মেয়েদের পড়াশুনা করানো হয় কেবল একটি ভালো পাত্র পেতে সুবিধা হবে এ কারনে। পড়াশুনার বাইরে মুক্ত চিন্তা করার স্বাধীনতাও যেন এদের নাই। আমার মেয়ে আমাকে বলে, মা আমি যখন ভার্সিটিতে পড়বো তখন তুমি কি আমাকে বন্ধুদের সাথে ট্যুরে যেতে দিবে”। আমি কি যেতে দিব, নাকি এখনকার গার্জিয়ানদের মত ভারী কন্ঠে বলব, না মা এখন আর আগেরদিন নাই। সময়টা কি সত্যি আর আগের মত নেই?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ১০/০৩/২০১৮ভাল বিষয় তুলে ধরেছেন।
-
suman ১১/১১/২০১৩সময়কে বেধে রাখা যায় না ...সময় বড় অবাধ্য ...যাই হোক ...আর একটি বিষয় -প্রজন্মান্তরে বেশবাস , নৈতিকতা , বিশ্বাস , মূল্যবোধ বদলে বদলে যায়...বলা হয় সময়ের দাবী...আর আমরা তো সময়ের একটা slot এ belong করি ...প্রতিনিধিত্ব করি ...অনেক কিছু আমাদের হাতে নেই ...তবে কিছু কিছু বিষয় হাতে থাকলে হয়তো ভালো হোতো ,যেমন সততা -বিশ্বস্ততা-মানবতা ...এগুলো হারিয়ে এর বদলে সময় কি তৈরী করে দেখা যাকনা ...আমি এগুলো খুউব মিস করি ...
-
সুলতান মাহমুদ ১১/১১/২০১৩আপা আপনি খুব আবেগ নিয়ে লিখেছেন। লেখার পরতে পরতে হারিয়ে যাওয়া নিজেকে খুজেছেন। তবে আপনার চিন্তার সাথে একটু যোগ করি। বেগম রোকেয়া নারীদের মানুসিক দাসত্ত্ব থেকে মুক্তির কথা বলেছেন সেখানে পোষাকের ভূমিকা আসল নয় বরং সুশিক্ষা, নৈতিকতা, মানবিক জীবনবোধ ই আসল কথা। ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ১১/১১/২০১৩আপা আপনার সাথে একমত। তবে মানুষের মাঝে ধার্মিকতা থাকা ভালো। তবে গোঁড়ামী কখনোই পছন্দ নয়। আশাকরি আপনি উলঙ্গপনা পছন্দ করেন না কিন্তু মুক্তবুদ্ধির চিন্তা কে অবশ্যই স্বাগত জানান। আমি বাহ্যিক রক্ষনশীলতা পছন্দ করি তবে আত্মিক রক্ষণশীলতা নয়। মানুষের মনকে বেধেঁ রাখা যায় না। তাকে তার মতোই চলতে দেওয়া উচিত যদি সে পথে ভয় না থাকে। ধন্যবাদ ম্যাডাম।
-
সায়েম খান ১০/১১/২০১৩তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে কখন কোথায় কি ঘটছে তা কি আপনার জানা নেই? আমি বিশ্বাস করি আপনি একজন সচেতন নাগরিক। সুতরাং ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিন কি করা উচিৎ।