পরগাছা
পরগাছা
-- রেনেসাঁ সাহা
আমাদের বাড়িতে ৭ জন মানুষ থাকতাম তখন। মা, বাবা, ঠাম্মা আর আমরা ৩ ভাইবোন, আর আফিয়া। আমার বড়দা আমাদের থেকে ৫ বছরের বড়। আমি আর ছোড়দা যমজ। আর আফিয়া? ভাবছ বুঝি, সে আমাদের বাড়ির মেইড? না, তা নয়। ও যে আসলে আমাদের বাড়ির পরগাছা, সে কথাআমার ৫ বছর বয়সেই বড়দা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলো।
আমাদের হিন্দু ফ্যামিলি। আফিয়া ছিল বাবার এক বন্ধু মোশারেফ প্রধানের মেয়ে। এক অ্যাক্সিডেন্ট-এ উনি এবং ওনার স্ত্রী মারা যান। তারপর ওর আত্মীয়রা ওর দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। বাবা ওকে বাড়িতে তোলেন এবং মা শুরু করেন মেয়ের মত আদর-যত্ন। খুব কম সময়ের মধ্যে ও হয়ে উঠেছিল বাবা-মার চোখের মণি এবং দাদার চোখের বিষ। যখন সে এবাড়িতে আসে, তার বয়স বয়স ৮; আমার এবং ভাইয়ের ৫; দাদার ১০। দাদা হাই-স্কুলে পড়ে তখন। অবশ্য তখন থেকেই বুঝতাম , আমরা যা করি, আফিয়া তা করে না। আমরা যা পারি না, আফিয়া তা পারে। আমরা সিরিয়াল দেখার চক্করে স্কুলে ছুটির দরখাস্ত দিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরি। আফিয়া এক্সট্রা ক্লাস করে। বাড়িতে এসে হাত-মুখ ধুয়ে আবার পড়তে বসে। আমরা রাতে যখন ঠাকুমার কাছে রাক্ষসীর গল্প শুনতাম; ও তখন বাবার কাছে অঙ্ক শিখত। ও বছর বছর বৃত্তি পায়। আমরা কোনমতে পাশ করি। ও পূজো আর ঈদ দুটোতেই নতুন জামা পায়। আমরা ঈদে পাই না। মাকে বললে মা বলেন -"খুব হিংসা তো তোদের পেটে। পূজোতে সবাই নতুন জিনিস নেবো; আর ও পাবে না- এ কেমন কথা তোদের! ছি!দিশা।" সর্বোপরি ও রোজা করতে পারে, বড়দা বলত, ওকে তো আমাদের মত এসব অখাদ্য কুখাদ্য খেতে হয় না সারাদিন; কে জানে, রাতের আঁধারে না জানি কত রাজভোগই না খায়।
বাবা শিখিয়েছিলেন আফিয়া-আপু করে ডাকতে। মা-বাবার আড়ালে দিব্যি আপুটুকু বাদ।
একদিন ছোড়দা স্কুল যায় নি। সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে দাদা আমাকে বলল-"আফিয়াটা এক নং এর পরগাছা। আমাদের খায়, পড়ে; আবার আমাদের থেকে ভাল রেসাল্ট করে আমাদেরই অপমান করে। "
পরদিন আমি নীতিনস্যরের ক্লাসে ছোড়দাকে ফিসফিস করে বললাম- "জানিস, আফিয়া একটা পরগাছা?" ছোড়দা বিজ্ঞের মত ভাব করে বলল- আমি আগেই জানি। নীতিনস্যার আমাদের ফিসফিসানি ঠিকই শুনল। বের করে দিল ক্লাস থেকে।
ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে আবার ছোড়দাকে ফিসফিসিয়ে বললাম- "বল তো, পরগাছা কাকে বলে?" ও বলল-"যে আমার মা-বাবার বাড়িতে থাকে, আমাদের দেওয়া পোশাক পড়ে অথচ আমাদের না দিয়ে একা একা রোজার খাবার খায়, একাই ভালো রেসাল্ট করে, তাকে পরগাছা বলে।" শেষে ফেরার পথে আমরা তিনজনে বুদ্ধি করলাম আফিয়াকে আচ্ছা করে জব্দ করব।
পড়দিন রোববার। দুপুরে আফিয়া চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে পড়ছিল।
বড়দা আরো জোরে ছোড়দাকে চিল্লিয়ে ডাকল। - "ভাই, বলতো পরগাছা কাকে বলে?"আমি দাঁত বেড় করে হাসছিলাম। ছোড়দা গত দিনের উত্তরের পুনরাবৃত্তি করছিল। কিন্তু কথা শেষ হল না ওর। মা এসে একটা জোরসে চর কষালেন। -"খুব বেরেছ না তোমরা? তুই দেখ আফিয়া; তোর বড়চাচা আসুক আজ।"
দাদার বোধহয় আর সহ্য হল না; -"ওরই তো বড়চাচা আছে খালি। আমরা বুঝি আর বড়চাচা নই। বাড়ির বড় ছেলে বলে পাশের বাড়ির করিমদাদুরা সবাই আমাকে বড়চাচা বলে সম্মান করে!"
বড়দার গালে মা আরো জোড়ে একটা লাগালেন। আমার দু'চোখে জল। আমার এবং আমার দুই দাদার চেয়ে একটা পরগাছার গুরুত্ব বাড়িতে বেশি!
রাতে বাবা বাড়ি এলেন। আমাদের ৫০০ বার কান ধরে উঠবোস শেষে পায়ে ব্যথা নিয়ে শুতে যেতে হল। তবু সে ব্যথা তো তুচ্ছ। বুকের অপমানের জ্বালা তো আরো অনেক বেশী।
ঠাম্মা কেবল একবার বলেছিলেন- "তুই লঘু পাপে গুরু দন্ড দিচ্ছিস। বাচ্চা মানুষ সব। না বুঝে করেছে।" ব্যস, ঐ অবধিই। আমরা সর্বহারা তিন নির্যাতিত।
লঘু বা গুরু পাপ আমাদের থামল না। যেন তেন প্রকারেণ আফিয়াকে ব্যঙ্গ করতাম। শাস্তিও পেতাম। সে তো ক্ষুদিরামেরও ফাঁসি হয়েছিল। একদিন ছোড়দা আমাদের দল ছেঁড়ে দিল। বলল- "আফিয়াদি খুব ভাল। আমরা যে এত কিছু শয়তানি করি; তাও ও আমাদের পেয়ারা কেটে দেয়। এবার ওর চেষ্টাতেই আমি অঙ্কে পাশ করেছি।"
দাদা গালি দিল -"ঘরশত্রু বিভীষণ। আফিয়া তোর দিদি হল না এখন? এই জন্য রোজ বিকেলে তুই বাবার কথা শুনে ওর কাছে অঙ্ক শিখতে বসতি! বিশ্বাসঘাতক।"
আমি আর বড়দাদা সেদিন রাতে কেঁদেছিলাম খুব। আমি বড়দাদাকে বলেছিলাম -"ছোড়দা তোকে রাবণ আর আমাকে সুপর্নখা বানিয়ে দিল রে। শেষে আফিয়া হল সীতা? এরকম করতে পারল ছোড়দা।"
যখন একটু বড় আমরা, দাদা মেলা থেকে খাঁচায় বন্দি একটা পায়রা এনেছিলেন। বাবা আর আফিয়া বাজার থেকে এরকম পাখি কিনে ওড়াতেন। বাবা পাখিদের বন্দি দেখতে পারতেন না; আফিয়ারও হয়ত কষ্ট হত খুব। তাই দাদার সাথে শর্ত করেছিল- রোজ দাদার পা টিপে দেবে, পেয়ারা কিনে দিবে। একমাস পরে দাদা ঐ পাখিটাকে ওকে দিয়ে দিবে, ও উড়িয়ে দিবে। ও সব কথা শুনেছিল দাদার। দাদা বলেছিল এক মাস পর -"আমার পাখি, আমি কাউকে দেবো না; কি করতে পারিস দেখি!" আফিয়া নিস্তব্ধ হয়ে গেছিল। নেহ, কেমন ঠকলি।
আমি আর ছোড়দা হাই-সেকন্ডারী দিয়ে উঠলাম সেবার। আফিয়া মেডিক্যাল পড়ে। ছোড়দা ওর চামচা। বড়দা বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ার।
একদিন বাবা তার আরেক বন্ধু মজিবুর আহমেদের ছেলের সাথে ঘটা করে বিয়ে দিলেন আফিয়ার। তা, ছওড়দা বুদ্ধি দিয়েছিল গেট ধরার। তাতে যে টাকা উঠবে আমি তাতে একটা অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে পারব। আমি যাই নিই, কোন দরকার নেই আমার! বিয়ের পর ও সবাইকে প্রণাম করল পায়ে হাত দিয়ে। ছোড়দা খুব কাঁদছিল আফিয়াদি বলে বলে। ওরা যাবার পর মা আমাকে একটা ভাউচার দিলেন। স্যাম-স্যাং এর। আফিয়াদি ওর পাওয়া বৃত্তির টাকা জমিয়ে একটা ভাউচার এনে দিয়েছে আমাকে। আমার হঠাৎ বুকটা মোচড় দিচ্ছিল। আমি ঘরে এসে শুলাম। আমাদের মত পাষন্ড বোধ হয় আর নেই দুনিয়াতে। জন্ম জন্ম প্রায়শ্চিত্ত করলেও এ পাপ ধোবে না, জানি।
সন্ধ্যেয় দেখি দাদা এক কান্ড করে বসেছেন। যে পাখিটা বড়দা বাবার সাথে তর্ক করে খাঁচায় রেখেছিলেন; আফিয়াদির শত চাকরামি আর অনুরোধেও যাকে বন্দি করে রেখেছিলেন; দেখি খাঁচার দরজা খুলে দাদা তাকে নিজের হাতে উড়িয়ে দিয়েছেন।
-- রেনেসাঁ সাহা
আমাদের বাড়িতে ৭ জন মানুষ থাকতাম তখন। মা, বাবা, ঠাম্মা আর আমরা ৩ ভাইবোন, আর আফিয়া। আমার বড়দা আমাদের থেকে ৫ বছরের বড়। আমি আর ছোড়দা যমজ। আর আফিয়া? ভাবছ বুঝি, সে আমাদের বাড়ির মেইড? না, তা নয়। ও যে আসলে আমাদের বাড়ির পরগাছা, সে কথাআমার ৫ বছর বয়সেই বড়দা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলো।
আমাদের হিন্দু ফ্যামিলি। আফিয়া ছিল বাবার এক বন্ধু মোশারেফ প্রধানের মেয়ে। এক অ্যাক্সিডেন্ট-এ উনি এবং ওনার স্ত্রী মারা যান। তারপর ওর আত্মীয়রা ওর দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। বাবা ওকে বাড়িতে তোলেন এবং মা শুরু করেন মেয়ের মত আদর-যত্ন। খুব কম সময়ের মধ্যে ও হয়ে উঠেছিল বাবা-মার চোখের মণি এবং দাদার চোখের বিষ। যখন সে এবাড়িতে আসে, তার বয়স বয়স ৮; আমার এবং ভাইয়ের ৫; দাদার ১০। দাদা হাই-স্কুলে পড়ে তখন। অবশ্য তখন থেকেই বুঝতাম , আমরা যা করি, আফিয়া তা করে না। আমরা যা পারি না, আফিয়া তা পারে। আমরা সিরিয়াল দেখার চক্করে স্কুলে ছুটির দরখাস্ত দিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরি। আফিয়া এক্সট্রা ক্লাস করে। বাড়িতে এসে হাত-মুখ ধুয়ে আবার পড়তে বসে। আমরা রাতে যখন ঠাকুমার কাছে রাক্ষসীর গল্প শুনতাম; ও তখন বাবার কাছে অঙ্ক শিখত। ও বছর বছর বৃত্তি পায়। আমরা কোনমতে পাশ করি। ও পূজো আর ঈদ দুটোতেই নতুন জামা পায়। আমরা ঈদে পাই না। মাকে বললে মা বলেন -"খুব হিংসা তো তোদের পেটে। পূজোতে সবাই নতুন জিনিস নেবো; আর ও পাবে না- এ কেমন কথা তোদের! ছি!দিশা।" সর্বোপরি ও রোজা করতে পারে, বড়দা বলত, ওকে তো আমাদের মত এসব অখাদ্য কুখাদ্য খেতে হয় না সারাদিন; কে জানে, রাতের আঁধারে না জানি কত রাজভোগই না খায়।
বাবা শিখিয়েছিলেন আফিয়া-আপু করে ডাকতে। মা-বাবার আড়ালে দিব্যি আপুটুকু বাদ।
একদিন ছোড়দা স্কুল যায় নি। সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে দাদা আমাকে বলল-"আফিয়াটা এক নং এর পরগাছা। আমাদের খায়, পড়ে; আবার আমাদের থেকে ভাল রেসাল্ট করে আমাদেরই অপমান করে। "
পরদিন আমি নীতিনস্যরের ক্লাসে ছোড়দাকে ফিসফিস করে বললাম- "জানিস, আফিয়া একটা পরগাছা?" ছোড়দা বিজ্ঞের মত ভাব করে বলল- আমি আগেই জানি। নীতিনস্যার আমাদের ফিসফিসানি ঠিকই শুনল। বের করে দিল ক্লাস থেকে।
ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে আবার ছোড়দাকে ফিসফিসিয়ে বললাম- "বল তো, পরগাছা কাকে বলে?" ও বলল-"যে আমার মা-বাবার বাড়িতে থাকে, আমাদের দেওয়া পোশাক পড়ে অথচ আমাদের না দিয়ে একা একা রোজার খাবার খায়, একাই ভালো রেসাল্ট করে, তাকে পরগাছা বলে।" শেষে ফেরার পথে আমরা তিনজনে বুদ্ধি করলাম আফিয়াকে আচ্ছা করে জব্দ করব।
পড়দিন রোববার। দুপুরে আফিয়া চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে পড়ছিল।
বড়দা আরো জোরে ছোড়দাকে চিল্লিয়ে ডাকল। - "ভাই, বলতো পরগাছা কাকে বলে?"আমি দাঁত বেড় করে হাসছিলাম। ছোড়দা গত দিনের উত্তরের পুনরাবৃত্তি করছিল। কিন্তু কথা শেষ হল না ওর। মা এসে একটা জোরসে চর কষালেন। -"খুব বেরেছ না তোমরা? তুই দেখ আফিয়া; তোর বড়চাচা আসুক আজ।"
দাদার বোধহয় আর সহ্য হল না; -"ওরই তো বড়চাচা আছে খালি। আমরা বুঝি আর বড়চাচা নই। বাড়ির বড় ছেলে বলে পাশের বাড়ির করিমদাদুরা সবাই আমাকে বড়চাচা বলে সম্মান করে!"
বড়দার গালে মা আরো জোড়ে একটা লাগালেন। আমার দু'চোখে জল। আমার এবং আমার দুই দাদার চেয়ে একটা পরগাছার গুরুত্ব বাড়িতে বেশি!
রাতে বাবা বাড়ি এলেন। আমাদের ৫০০ বার কান ধরে উঠবোস শেষে পায়ে ব্যথা নিয়ে শুতে যেতে হল। তবু সে ব্যথা তো তুচ্ছ। বুকের অপমানের জ্বালা তো আরো অনেক বেশী।
ঠাম্মা কেবল একবার বলেছিলেন- "তুই লঘু পাপে গুরু দন্ড দিচ্ছিস। বাচ্চা মানুষ সব। না বুঝে করেছে।" ব্যস, ঐ অবধিই। আমরা সর্বহারা তিন নির্যাতিত।
লঘু বা গুরু পাপ আমাদের থামল না। যেন তেন প্রকারেণ আফিয়াকে ব্যঙ্গ করতাম। শাস্তিও পেতাম। সে তো ক্ষুদিরামেরও ফাঁসি হয়েছিল। একদিন ছোড়দা আমাদের দল ছেঁড়ে দিল। বলল- "আফিয়াদি খুব ভাল। আমরা যে এত কিছু শয়তানি করি; তাও ও আমাদের পেয়ারা কেটে দেয়। এবার ওর চেষ্টাতেই আমি অঙ্কে পাশ করেছি।"
দাদা গালি দিল -"ঘরশত্রু বিভীষণ। আফিয়া তোর দিদি হল না এখন? এই জন্য রোজ বিকেলে তুই বাবার কথা শুনে ওর কাছে অঙ্ক শিখতে বসতি! বিশ্বাসঘাতক।"
আমি আর বড়দাদা সেদিন রাতে কেঁদেছিলাম খুব। আমি বড়দাদাকে বলেছিলাম -"ছোড়দা তোকে রাবণ আর আমাকে সুপর্নখা বানিয়ে দিল রে। শেষে আফিয়া হল সীতা? এরকম করতে পারল ছোড়দা।"
যখন একটু বড় আমরা, দাদা মেলা থেকে খাঁচায় বন্দি একটা পায়রা এনেছিলেন। বাবা আর আফিয়া বাজার থেকে এরকম পাখি কিনে ওড়াতেন। বাবা পাখিদের বন্দি দেখতে পারতেন না; আফিয়ারও হয়ত কষ্ট হত খুব। তাই দাদার সাথে শর্ত করেছিল- রোজ দাদার পা টিপে দেবে, পেয়ারা কিনে দিবে। একমাস পরে দাদা ঐ পাখিটাকে ওকে দিয়ে দিবে, ও উড়িয়ে দিবে। ও সব কথা শুনেছিল দাদার। দাদা বলেছিল এক মাস পর -"আমার পাখি, আমি কাউকে দেবো না; কি করতে পারিস দেখি!" আফিয়া নিস্তব্ধ হয়ে গেছিল। নেহ, কেমন ঠকলি।
আমি আর ছোড়দা হাই-সেকন্ডারী দিয়ে উঠলাম সেবার। আফিয়া মেডিক্যাল পড়ে। ছোড়দা ওর চামচা। বড়দা বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ার।
একদিন বাবা তার আরেক বন্ধু মজিবুর আহমেদের ছেলের সাথে ঘটা করে বিয়ে দিলেন আফিয়ার। তা, ছওড়দা বুদ্ধি দিয়েছিল গেট ধরার। তাতে যে টাকা উঠবে আমি তাতে একটা অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে পারব। আমি যাই নিই, কোন দরকার নেই আমার! বিয়ের পর ও সবাইকে প্রণাম করল পায়ে হাত দিয়ে। ছোড়দা খুব কাঁদছিল আফিয়াদি বলে বলে। ওরা যাবার পর মা আমাকে একটা ভাউচার দিলেন। স্যাম-স্যাং এর। আফিয়াদি ওর পাওয়া বৃত্তির টাকা জমিয়ে একটা ভাউচার এনে দিয়েছে আমাকে। আমার হঠাৎ বুকটা মোচড় দিচ্ছিল। আমি ঘরে এসে শুলাম। আমাদের মত পাষন্ড বোধ হয় আর নেই দুনিয়াতে। জন্ম জন্ম প্রায়শ্চিত্ত করলেও এ পাপ ধোবে না, জানি।
সন্ধ্যেয় দেখি দাদা এক কান্ড করে বসেছেন। যে পাখিটা বড়দা বাবার সাথে তর্ক করে খাঁচায় রেখেছিলেন; আফিয়াদির শত চাকরামি আর অনুরোধেও যাকে বন্দি করে রেখেছিলেন; দেখি খাঁচার দরজা খুলে দাদা তাকে নিজের হাতে উড়িয়ে দিয়েছেন।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শান্তনু ব্যানার্জ্জী ১৭/১০/২০১৫দারুণ লেখা, চোখে জল এনে দেয় ।
-
দেবব্রত সান্যাল ১৩/১০/২০১৫খুব ভালো লেখা। গল্পের চরিত্ররা খুব চেনা , যেন আমরাই। কিছু মুদ্রণ প্রমাদ আছে , সংশোধন করে নেবেন।
-
অ ২৬/০৬/২০১৫চমৎকার লেখা ...।।
-
মোবারক হোসেন ১৩/০৬/২০১৫এত ভাল লরগলো যে সবাইকে বুঝাতে পারলেও, আপনাকে বুঝাতে পারবো না।আরও লেখার আহবান রইলো।ধন্যবাদ।