শুধু গল্প নয়
হঠাৎ সজীবের মোবাইলটা বেজে উঠলো। বিরক্ত
দৃষ্টিতে সজীব
স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো তার মায়ের
ফোন।
" হ্যালো, মা।
বাবা, তোর বড় চাচা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ধানমন্ডি এ্যপোলেতে ভর্তি করা হয়েছে। তুই
তাড়াতাড়ি সেখানে যা। তোর বাবা আর
আল্পনা হাসপাতালে যাচ্ছে।
ঠিক আছে মা " আমি যাচ্ছি একটু পর, জবাব দেয় সবুজ।
আল্পনা সবুজের একমাত্র বোন। এইতো মাত্র দেড়
বছরের
বড়। সামনের মাসেই আল্পনার বিয়ে। খুবই মিল দুই ভাই
বোনের।
বিয়ের পর আল্পনা শশুড় বাড়ি চলে গেলে নিশ্চয়ই
সবুজের অনেক
খারাপ লাগবে। ভাবতেই একটু বিষন্ন হয়ে গেলো সবুজ।
এমনি সময় আবারো ফোন বেজে উঠলো সবুজের।
স্কিনে তাকিয়ে দেখলো এক পলিটিক্যাল বড় ভাইয়ের
নম্বার।
হ্যালো, ভাই। বললো সবুজ।
অপর পাশ থেকে সে বড় ভাই বললো, ঠিক সন্ধ্যা ছয়টায়
কাজটা করবি। টাকা তোর বিকাশ নম্বরে পৌঁছে যাবে।
OK ভাই, চিন্তা কইরেন না। আগের তিনটা কাজের মত
এইটাও
সাকসেস হবে। তবে ভাই টাকাটা একটু
বাড়াইয়া দিলে....... , সবুজ
থেমে যায় এটুকু বলেই।
কাজটা ঠিকমত কর, টাকা বাড়াইয়া দিমু' এটা বলেই
ফোন
কেটে দেয়।
কলাবাগানের কাছে মেইন রোডের ধারে এক অন্ধকার
কোনায়
দাঁড়িয়ে আছে সবুজ। তার জ্যাকেটের একটা পাশ একটু
বেশিই যেন
ফুলে আছে। তাকে দেখে হঠাৎ বোঝা কঠিন হবে কোন
একটা শিকারকে বাগে আনার অপেক্ষা করছে।
একটা বাস
চলে গেলো সাঁ করে সবুজের সামনে দিয়ে।
সবুজকে কিছুটা হতাশ মনে হলো।
এরপর একটা বাসকে একটু ধির
গতিতে এগিয়ে আসতে দেখলো সে।
হালকা জানজটের কারনে গতি কম। কাছাকাছি
আসতেই বুঝলো এটাতে কাজ হবে।
জ্যাকেটর চেনটা একটু ফাঁক হলো। একটা বোতলের মত
কি যেন
বেড়িয়ে এল সবুজের হাতে। লাইটারটা একটু বোতলের
মাথায়
জ্বালিয়েই স্ববেগে ছুড়ে মারলো বাসটা লক্ষ্য করে।
এরপর ঘুরেই দৌড় দিলো সবুজ পেছনের অন্ধকার গলির
দিকে..।
এরই মধ্যে এক নজর পিছনে তাকিয়ে দেখলো সম্পূর্ণ
বাসটাতে আগুন ধরে গেছে। করুন আত্মচিৎকারের
আওয়াজ
ভেসে আসছে সবুজের কানে।
অন্ধকার গলিতে মোটরসাইকেল স্টার্ট
নিয়ে অপেক্ষা করছিলো সবুজের রাজনৈতিক
সহকর্মী জুয়েল।
লাফ দিয়ে বাইকে উঠার সাথে সাথে এক
টানে অন্ধকার রাস্তায়
হারিয়ে গেলো মোটরসাইকেলটা.......। তখনো পুড়ন্ত
মানুষের
চিৎকারের ভেসে আসছিলো।
এক ঘন্টা পর !
আবারো সবুজের মোবাইলে আরেকটা কল আসলো।
সবুজ তাকিয়ে দেখলো তার ছোট মামার নম্বর।
হ্যালো, মামা।
সবুজ, তুই কই ? তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিট
চলে আয়।
এক মিনিটও দেড়ি করিস না। তাড়াতাড়ি...
ফোনটা কেটে যায়... কিন্তু এরই মধ্যে ফোনের অপর
পাশে কেমন যেন এক পরিচিত মহিলা কন্ঠের হৃদয়
বিদারক কান্নার
আওয়াজ শুনতে পেয়েছে সবুজ। বুকের ভেতর কেমন যেন
মোচড়
দিয়ে উঠলো.....।
সবুজ একটা সিএনজি নিয়েই সোজা ঢাকা মেডিকেল
চলে এসেছে।
বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখে তার মামা রয়েছে।
একটা বেডে সম্পূর্ণ
সাদা কাপড়ে ঢেকে
রাখা একটা দেহের দিকে বিলাপ
করে ছুটে যেতে চাইছেন এক মহিলা।
কিন্তু নার্সরা ফিরিয়ে রাখছে....।
সবুজের মামা কান্না জড়িত কন্ঠে বললো, সবুজ সব শেষ
হয়ে গেছে। তোর বড় চাচাকে দেখতে তোর বাবা আর
বোন
আল্পনা একটা লোকাল বাসে করে আসছিলো।
কলাবাগান
মোড়ে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা মেরে বাসে আগুন
দিয়েছে।
লোকাল বাস ভর্তি মানুষ ছিলো। ৫০ জন সম্পূর্ণ
ঝলসে গেছে।
তোর বোন আল্পনা আর বেঁচে নেই রে.... তোর বাবাও
একদম
পুড়ে গেছে। মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে এখন।
বিলাপ করা মহিলাকে এখন সবুজ চিনতে পারলো পেছন
থেকেই।
তার মা কাঁদছে...... একমাত্র মেয়ের মূখটা শেষবারের
মত দেখার
জন্য পাগল হয়ে গেছেন....। কিন্তু ভয়ানক
ভাবে ঝলসে যাওয়া মুখটা নার্সরা দেখতে দিচ্ছে না।
সবুজের মনে পড়ে গেলো, সামনের মাসে তার বোন
আল্পনার
বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়েছিলো....।
সবুজের মাথাটা সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যায়...
চোখে পানি ছিলো না কেমন যেন ফ্যালফ্যাল
করে তাকিয়ে ছিলো তার মায়ের দিকে ...... বিলাপ
করেই চলেছেন
তার মা....।
সবুজ হাস্পাতালের বারান্দায় এসে দাড়ায়। অশ্রু ভরা ঝাপসা চোখে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে....
[ ঘটনাটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক । কিন্তু বাস্তবতা সম্মত।
যেসকল
অমানুষরা আজ এমন আগুনে পোড়ানোর মত নিকৃষ্ট কাজ
করছো তারা একবার সজীবের জায়গায়
নিজেকে চিন্তা কর ]
দৃষ্টিতে সজীব
স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো তার মায়ের
ফোন।
" হ্যালো, মা।
বাবা, তোর বড় চাচা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ধানমন্ডি এ্যপোলেতে ভর্তি করা হয়েছে। তুই
তাড়াতাড়ি সেখানে যা। তোর বাবা আর
আল্পনা হাসপাতালে যাচ্ছে।
ঠিক আছে মা " আমি যাচ্ছি একটু পর, জবাব দেয় সবুজ।
আল্পনা সবুজের একমাত্র বোন। এইতো মাত্র দেড়
বছরের
বড়। সামনের মাসেই আল্পনার বিয়ে। খুবই মিল দুই ভাই
বোনের।
বিয়ের পর আল্পনা শশুড় বাড়ি চলে গেলে নিশ্চয়ই
সবুজের অনেক
খারাপ লাগবে। ভাবতেই একটু বিষন্ন হয়ে গেলো সবুজ।
এমনি সময় আবারো ফোন বেজে উঠলো সবুজের।
স্কিনে তাকিয়ে দেখলো এক পলিটিক্যাল বড় ভাইয়ের
নম্বার।
হ্যালো, ভাই। বললো সবুজ।
অপর পাশ থেকে সে বড় ভাই বললো, ঠিক সন্ধ্যা ছয়টায়
কাজটা করবি। টাকা তোর বিকাশ নম্বরে পৌঁছে যাবে।
OK ভাই, চিন্তা কইরেন না। আগের তিনটা কাজের মত
এইটাও
সাকসেস হবে। তবে ভাই টাকাটা একটু
বাড়াইয়া দিলে....... , সবুজ
থেমে যায় এটুকু বলেই।
কাজটা ঠিকমত কর, টাকা বাড়াইয়া দিমু' এটা বলেই
ফোন
কেটে দেয়।
কলাবাগানের কাছে মেইন রোডের ধারে এক অন্ধকার
কোনায়
দাঁড়িয়ে আছে সবুজ। তার জ্যাকেটের একটা পাশ একটু
বেশিই যেন
ফুলে আছে। তাকে দেখে হঠাৎ বোঝা কঠিন হবে কোন
একটা শিকারকে বাগে আনার অপেক্ষা করছে।
একটা বাস
চলে গেলো সাঁ করে সবুজের সামনে দিয়ে।
সবুজকে কিছুটা হতাশ মনে হলো।
এরপর একটা বাসকে একটু ধির
গতিতে এগিয়ে আসতে দেখলো সে।
হালকা জানজটের কারনে গতি কম। কাছাকাছি
আসতেই বুঝলো এটাতে কাজ হবে।
জ্যাকেটর চেনটা একটু ফাঁক হলো। একটা বোতলের মত
কি যেন
বেড়িয়ে এল সবুজের হাতে। লাইটারটা একটু বোতলের
মাথায়
জ্বালিয়েই স্ববেগে ছুড়ে মারলো বাসটা লক্ষ্য করে।
এরপর ঘুরেই দৌড় দিলো সবুজ পেছনের অন্ধকার গলির
দিকে..।
এরই মধ্যে এক নজর পিছনে তাকিয়ে দেখলো সম্পূর্ণ
বাসটাতে আগুন ধরে গেছে। করুন আত্মচিৎকারের
আওয়াজ
ভেসে আসছে সবুজের কানে।
অন্ধকার গলিতে মোটরসাইকেল স্টার্ট
নিয়ে অপেক্ষা করছিলো সবুজের রাজনৈতিক
সহকর্মী জুয়েল।
লাফ দিয়ে বাইকে উঠার সাথে সাথে এক
টানে অন্ধকার রাস্তায়
হারিয়ে গেলো মোটরসাইকেলটা.......। তখনো পুড়ন্ত
মানুষের
চিৎকারের ভেসে আসছিলো।
এক ঘন্টা পর !
আবারো সবুজের মোবাইলে আরেকটা কল আসলো।
সবুজ তাকিয়ে দেখলো তার ছোট মামার নম্বর।
হ্যালো, মামা।
সবুজ, তুই কই ? তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিট
চলে আয়।
এক মিনিটও দেড়ি করিস না। তাড়াতাড়ি...
ফোনটা কেটে যায়... কিন্তু এরই মধ্যে ফোনের অপর
পাশে কেমন যেন এক পরিচিত মহিলা কন্ঠের হৃদয়
বিদারক কান্নার
আওয়াজ শুনতে পেয়েছে সবুজ। বুকের ভেতর কেমন যেন
মোচড়
দিয়ে উঠলো.....।
সবুজ একটা সিএনজি নিয়েই সোজা ঢাকা মেডিকেল
চলে এসেছে।
বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখে তার মামা রয়েছে।
একটা বেডে সম্পূর্ণ
সাদা কাপড়ে ঢেকে
রাখা একটা দেহের দিকে বিলাপ
করে ছুটে যেতে চাইছেন এক মহিলা।
কিন্তু নার্সরা ফিরিয়ে রাখছে....।
সবুজের মামা কান্না জড়িত কন্ঠে বললো, সবুজ সব শেষ
হয়ে গেছে। তোর বড় চাচাকে দেখতে তোর বাবা আর
বোন
আল্পনা একটা লোকাল বাসে করে আসছিলো।
কলাবাগান
মোড়ে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা মেরে বাসে আগুন
দিয়েছে।
লোকাল বাস ভর্তি মানুষ ছিলো। ৫০ জন সম্পূর্ণ
ঝলসে গেছে।
তোর বোন আল্পনা আর বেঁচে নেই রে.... তোর বাবাও
একদম
পুড়ে গেছে। মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে এখন।
বিলাপ করা মহিলাকে এখন সবুজ চিনতে পারলো পেছন
থেকেই।
তার মা কাঁদছে...... একমাত্র মেয়ের মূখটা শেষবারের
মত দেখার
জন্য পাগল হয়ে গেছেন....। কিন্তু ভয়ানক
ভাবে ঝলসে যাওয়া মুখটা নার্সরা দেখতে দিচ্ছে না।
সবুজের মনে পড়ে গেলো, সামনের মাসে তার বোন
আল্পনার
বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়েছিলো....।
সবুজের মাথাটা সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যায়...
চোখে পানি ছিলো না কেমন যেন ফ্যালফ্যাল
করে তাকিয়ে ছিলো তার মায়ের দিকে ...... বিলাপ
করেই চলেছেন
তার মা....।
সবুজ হাস্পাতালের বারান্দায় এসে দাড়ায়। অশ্রু ভরা ঝাপসা চোখে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে....
[ ঘটনাটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক । কিন্তু বাস্তবতা সম্মত।
যেসকল
অমানুষরা আজ এমন আগুনে পোড়ানোর মত নিকৃষ্ট কাজ
করছো তারা একবার সজীবের জায়গায়
নিজেকে চিন্তা কর ]
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবিদ আল আহসান ১৯/০২/২০১৫ধন্যবাদ সবাই কে
-
সবুজ আহমেদ কক্স ০৯/০২/২০১৫anek bar pora holo darun lekha
-
ফাগুনের পলাশ ০২/০২/২০১৫অসাধারণ
-
হাসান কামরুল ২৯/০১/২০১৫লেখাটা হৃদয় ছুয়ে গেল।
-
অ ২৬/০১/২০১৫লেখাটা কিন্তু চমৎকার হয়েছে ।
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ২৬/০১/২০১৫সেলুট আপনাকে। সত্যিকারের একজন মানুষ আপনি সত্যিকারের একজন লেখক আপনি। এই লেখাটা পড়ে আমার তাই মনে হল।
-
রাফি বিন শাহাদৎ ২৫/০১/২০১৫ভাল হইছে
-
আহমাদ মাগফুর ২৫/০১/২০১৫সমজমান কি লিয়্যে স্রেফ ইশারা কাফি হ্যায়। উসকে লিয়ে ইস কাহিনী কা জরুরত নেহী।
,,,,,তবে প্রতিবাদের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। -
সবুজ আহমেদ কক্স ২৫/০১/২০১৫গল্পের সবুজ ..... আসলে কে .........
-
সবুজ আহমেদ কক্স ২৫/০১/২০১৫fine @ abid bhi ata kon sabuj ami na tu . !
-
সবুজ আহমেদ কক্স ২৫/০১/২০১৫darun