www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মর্যাদার লড়াই

এক ছিল গভীর জঙ্গল আর পাশে ছিল একটি নদী।সেখানে রাজা ছিল,জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘ।দুই রাজ্যের প্রজারা খুব সুখে শান্তিতে বাস করতো।ডাঙ্গার প্রজাদের অনেকেই জল রাজ্যে
যেত তার মধ্যে বেশি যেত সাপ।আর জলের প্রজাদের মধ্যে বেশি ডাঙ্গায় আসতো ব্যাঙ আর
কচ্ছপ।তাদের মধ্যে যত না সুখ দুংখের কথা হতো তার চেয়ে বেশি হতো নিজ রাজ্যের রাজাকে
নিয়ে গর্ব বোধের লড়াই।সাপ বলতো আমাদের রাজা খুব শক্তিশালী,অনেক বড় যোদ্দা।ব্যাঙ
কচ্ছপ এরাও কম যায় কিসে। তারাও তাদের রাজাকে নিয়ে গর্ব বোধ করতো,তাদের রাজা
মহাশক্তিশালী,অকুতোভয় বীর।এক কথায় দু কথায় দুই রাজ্যের প্রজাদের মধ্যে দুই রাজাকে
নিয়ে শক্তির মর্যাদায় মেতে উঠলো।জলরাজ্যে রাজা কুমিরের কানে গেল সে কথা।সে রেগে
বলল,কে আসিস আজই দূত পাঠা আমি ডাঙ্গার রাজা বাঘের সাথে যুদ্ধ করতে চাই।কচ্ছপ গেল
প্রস্তাব নিয়ে।সেদিনই বনের প্রজাদের মধ্যে আক্রোশ ছড়িয়ে পড়লো।কি সামান্য জলরাজ্যের
প্রজারা আমাদের লড়ায়ের প্রস্তাব দেয়্।এত বড় সাহস ইত্যাদি ইত্যাদি।সবাই বসে মিটিং করলো।
তারপর শিয়াল পন্ডিত ,হাতি,বানর,হরিণ,ভাল্লুক সহ সবাই বাঘের কাছে এল।শিয়াল বলল,
মহারাজ কচ্ছপ যে প্রস্তাব দিয়ে গেল তার উচিত জবাব দিতে হবে।কুমিরের সাথে লড়াই করে
আপনি দেখিয়ে দিন যে আপনার সমকক্ষ কেউ নেই।বাঘ বলল বাদ দাওতো ওসব।কে কি বলল
আর কি মনে করলো ওসব নিয়ে ভাবলে নিজেদেরই ক্ষতি হয়।কুমির নিজেকে বড় মনে করে
করুক না।তাতে আমাদের কি আসে যায়।আমরা সুখে শান্তিতে আছি অযথা কলহ করে লাভ কি?
শিয়াল বলল, মহারাজ আপনি যদি এই ভাবেন আর চুপ করে থাকেন সেই সাথে কুমিরের সঙ্গে
লড়াই না করেন তাহলে আপনার রাজ্যের প্রজারা মনে করবে আপনি দুর্বল।তারা আপনার
সাশন মানবে না।একদিন আপনাকে রাজা মানতে অস্বীকার করবে।এমনকি তারা নিজেরাও
রাজা হওয়ার লড়ায়ে নামবে।হাতি বলল পন্ডিত মহাশয় কাটি কথা বলেছেন।ভাল্লুক বলল
ঠিক কথা।বানর বলল রাজি হয়ে যান মহারাজ ! বাঘ বলল ঠিক আছে।তোমরা যখন বলছ
আমি লড়াই করবো।মহারাজের জয় হোক বলে সবাই চলে গেল।বাঘ পড়লো মহাচিন্তায়্।সে
জানে কুমিরের সাথে লড়াই করলে জেতা সম্ভব নয়।কারন কুমিরের চামড়া খুব শক্ত।এবং
শরীরে সূচের মত কাটা।এমনকি দাড়ালো দাঁতও খুব মারাত্বক।
বন আর নদীর মাঝে ফাকা যে মাঠটা ছিল,সেখানে লড়াই এর আয়োজন করা হল্।নিদিষ্ট
দিনে জল ও স্থলের প্রজারা হৈ হৈ রৈ রৈ করে মাঠে হাজির হল।টান টান উত্তেজনার মধ্য
দিয়ে শুরু হল বাঘ-কুমিরের লড়াই।বাঘ ভিশন গর্জন করতে করতে কুমিরের উপর ঝাপিয়ে
পড়লো্।কুমির একটু ভয় পেল বটে কিন্ত দমে গেলনা।বাঘ কুনিরকে থাবা মারে আর কুমির
লেজ দিয়ে ঝাপটা মারে।এভাবে অনেকক্ষন লড়াই হল কিন্ত তাতে কুমিরের কিছুই হলনা।বরং
কুমিরের শরীরের ধূলা বালি পরিস্কার হল মাত্র।এদিকে কুমিরের কামড় আর ঝাপটায় বাঘের
কাহিল অবস্থা।শরীরও ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।
বাঘ দেখলো কোন অবস্থাতেই কুমিরের সাথে জেতা যাব না।তখন সে মনে মনে সূর্যে্র সরনাপন্ন
হল।মন উজাড় করে সূর্যে্র প্রাথর্না করলো।প্রাথর্নায় র্সূয সন্তোষ্ট হলেন।আর তখন এমন প্রখর
রোদ দিলেন যে, কুমির সেই রোদের তাপ আর গরমে দিশে হারা হয়ে গেল্।সে মনের অজান্তেই
শরীর ঠান্ডা করার জন্য নদীর পানির দিকে দৌড় দিলেন।এ অবস্থা দেখে বনের প্রজা আর পানির
প্রজারা ভাবরো,কুমির ভয় পেয়েছে।বনের প্রজারা জয় ধ্বনি দিতে দিতে বাঘকে কাঁদে করে নিয়ে
বনের দিকে চলে গেল।আর জলের প্রজারা হার মেনে নিয়ে  ‍কুমিরের পিছে পিছে জলের দিকে
চলে গেল।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৬২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০১/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast