www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হৃদয়ের ভালবাসা Vs মস্তিস্কের ভালবাসা

ড্যানি, ড্যানিয়েল ওয়েভার। ছোট্র একটা কুকুরের বাচ্চার নাম। আমাদের অফিসেই, কোথা থেকে কখন উদয় হয়েছে, কি তার জন্ম পরিচয়, বংশ পরিচয় কেউই জানে না। অফিসের সবাই লাদুস লুদুস ড্যানিকে কম বেশি আদর করে। ড্যানিও লেজ নাড়িয়ে বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গি দ্বারা ভালবাসার প্রতুত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা ওর পাশে সামান্য সময় কাঁটাই, মজা করি। পর মুর্হুতেই ভুলে যাই ড্যানির কথা। এক মুহুর্তের জন্যও আর আমরা ভাবি না ওকে নিয়ে, সবার মত ব্যস্ত হয়ে পড়ি যার যার কাজে।

কিন্তু ঐ ড্যানির প্রতিটি মুর্হুত কাটে অপেক্ষায়, কখন কেউ একজন তার দিকে ফিরে তাকাবে, কাছে ডাকবে, মাথায় হাত বুলিয়ে একটু আদর করবে, এই আশায়। পাশদিেয় কাউকে যেতে দেখলেই করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে, একটু ডাক দিলেই কাছে এসে দাঁড়াবে একটু আদরের, একটু ভালবাসার আসায়। সাথে বেঁচে থাকার জন্য একটুকরো রুটিরও আশায়।

আমাদের মধ্যে ওর জন্য যে ভালবাসা তৈরী হয়েছে, তা কেউই চিন্তা করে জন্মায়নি, নিজের অজান্তেই হৃদয়ে জন্মে গেছে এবং প্রকাশও পেয়েছে, যা খুবই সাময়িক। কিন্তু ড্যানি এটা কোন দিনও বুজতে পারবে না। ওর চিন্তা ভাবনা শুধু মাত্র ওরই মত। ওর ভালবাসার প্রকাশ যতটা হৃদয় থেকে, ঠিক ততটা যে আমাদের হৃদয়ে নেই, তা উপলব্ধি করার মত ক্ষমতা ড্যানির কোন দিনও হবে না।

সময়ের সাথে সাথে পারিপার্শ্বিক কারনে ড্যানি তার শরীরের সৌন্দর্য হারাতে থাকবে, নোংড়া আকৃতি ধারন করতে থাকবে দিনে দিনে। আর আস্তে আস্তে আমাদের ভালবাসাও কমতে থাকবে ওর প্রতি। কেননা আমরা ড্যানির যে গুনের কারনে ওর প্রতি ভালবাসা দেখিয়েছি, তা একদিন পুরোপুরি হারিয়ে যাবে। আর একই সাথে হারিয়েও যাবে আমাদের মাঝে জন্মানো সাময়িক ভালবাসা। কিন্তু ওর শরীর বদলালেও মনটা সামান্যতমও বদলাবে না। নোংরা একটা শরীর নিয়ে আতংকিত চোখে ভয়ার্ত ভাবে দুরে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে থাকবে, ভয়ে সামনে আসতে পারবে না। তাকিয়ে থাকবে অনন্ত কাল তাদের দিকে, যারা একদিন মিথ্যে ভালবাসার লোভ দেখিয়েছিল।

এই ড্যানি কে কাছে ডেকে একটু আদর করে, একটু মাথায় হাত ভুলিয়ে, একটুকরো রুটি খাইয়ে যে বিশ্বাস জন্মানো হয়েছে, কোনদিনও ওর ঐ জন্মানো বিশ্বাস কেউই ভাঙ্গতে পারবে না। কেউ একজন লাথি মেরে দুরে সরিয়ে দিয়ে, আবার পরমুর্হুতে যদি একটুকরো রুটি দেখিয়ে কাছে ডাকে, একটু হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়, সাথে সাথেই ড্যানি ঐ লাথির কথা ভুলে যাবে। ভাববে লাথিটা মেরেছিল মানষিক যন্ত্রনা থেকে, যা খুবই সাময়িক। আর এই ভালবাসাটুকু দিচ্ছে হৃদয় থেকে, যার শেষ হবে না কোন দিনও।

'ড্যানি' প্রজাতির প্রানীদের অদ্ভুত এই আচরনটা মানব প্রজাতির প্রানীদের মধ্যে খুবই কম থাকে। আর যদি কোন মানব নামের অযোগ্য ব্যাক্তির মধ্যে এমন স্বাভাব জন্মায়, তবে তার জীবন যাপন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে, সারক্ষন আক্ষেপ করতে থাকে মনে মনে কেন ড্যানি প্রজাতি হয়েই জন্মায়নি বলে।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১০৩০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সহিদুল ইসলাম ১৭/০২/২০১৫
    ড্যানি মারা গেছে। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে না পেয়ে কার যেন পায়ের নীচে পরে আঘাত পেয়েছে। কয়েক দিন খুব যন্ত্রনা সহ্য করে টিকে ছিল। শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে সাময়িক ভালবাসার যন্ত্রনা ভোগ করা থেকে।।
  • অনেক ভালো লাগলো...........................চমৎকার।
    • সহিদুল ইসলাম ১৭/০২/২০১৫
      অনেক ধন্যবাদ। আপনার লেখা গুলোও অনেক চমৎকার। বেশ কয়েকটি পড়েছি।
  • সবুজ আহমেদ কক্স ১৪/০২/২০১৫
    দারুণ লাগলো
  • জহির রহমান ১৪/০২/২০১৫
    ভালো লাগলো। প্রকৃত কিছু ব্যাপার উঠে আসছে গল্পটিতে।
    • সহিদুল ইসলাম ১৪/০২/২০১৫
      ধন্যবাদ, ভাল লাগলো আপনার মন্তব্যটি পড়ে।
  • জয়শ্রী রায় ১৩/০২/২০১৫
    ড্যানিয়েল ওয়েভার-কে নিয়ে ভ্যালেনটাইন্স ডে-এর এক চরিত্র চিত্রন করা যায় । ভালো ।
    • সহিদুল ইসলাম ১৪/০২/২০১৫
      হা হা হা। এক চরিত্র নয়, দুটি চরিত্র চিত্রন করা যায়। সাময়িক ভালবাসা সৃষ্টিকারীর এবং উহা দ্বারা প্রতারিত ভুক্তভুগীররও।
      ধন্যবাদ আপনাকে।
  • আনন্দ রাজবংশী ১৩/০২/২০১৫
    ভালো
 
Quantcast