www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

একটি সুনাগরিকের জন্য

প্রথমিকে শিক্ষক নিয়োগ চলছে।স্কুলের পরিকাঠামো ভালো তবে আরো ভালটা করার চেষ্টা চলছে।বর্তমানে আমাদের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাকা বাড়ি আছে,পড়ুয়ারা বিনা খরচে বই পাচ্ছে ,পেট ভরে খাবার পাচ্ছে,পোশাক ,জুতো আরও অনেক কিছু যা বলে শেষ করা যাবে না ।কিন্তু যার জন্য এত কিছু লেখাপড়া সেটি কতদূর হচ্ছে তা কি আমরা জানি ?উপকরণ বেশ কিন্তু এই উপকরণে জ্ঞানের ভাণ্ডার ভরছে কি ?

আজ আমরা চাল ,গম ,তেল ,রাস্তা প্রভৃতির জন্য কোমর বেঁধে নেমে পড়ি ।আন্দোলন ,বিক্ষোভ,ভাংচুর কত কি করি ।কিন্তু ভালো শিক্ষার আন্দোলন আমাদের ইতিহাসে আছে কি ?আমাদের শিক্ষানীতি বদলানোর জন্য আমরা আন্দোলন করেছি ?সব প্রশ্নের উত্তর একটায়-না।এত সব ঝামেলায় আমরা যায় না। আমার স্নেহের বাচ্চা টিকে সরকারি স্কুলে পাঠায় না।পাঠিয়ে দিই কোন বেসরকারি স্কুলে।আমাদের বাচ্চারা যদি বেসরকারি স্কুলেই পড়বে তাহলে এত আয়োজন কেন ?বলবেন যারা গরীব তাদের জন্য ।বলি গরীব রা কি মানুষ নয় ?তাদের কি পোকা শিক্ষা দেয়া হবে ?তারাও তো আমাদের ভবিষৎ ।তাদের না মানুষ করলে আমরা কি উন্নত সভ্যতায় পৌঁছতে পারবো?
আসলে স্কুলে পড়াশোনা হচ্ছে না ,তাই অভিভাবক চান পড়াশোনা হোক।তাই বেসরকারি স্কুলে তে ভর্তি করে অভিভাবক নিশ্চিন্ত হতে চান।কিন্তু যে অভিভাবক বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করতে পারলেননা তার বাচ্চা টি সরকারি স্কুলেই পড়লো।তার উন্নতি কামনা করি।কিন্তু তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই সে মানুষ হল না।সে বড় হলে সমাজের সাথে মিশবে,এমনকি আপনার বাচ্চাটিও এই বাচ্চাটির সাথে মিশবে। তখন কি হবে ?আরে দুধে একফোঁটা সাজা পড়লেই সে আর দুধ থাকে না।যথেষ্ট,ব্যস হয়ে গেল সব শেষ সরকারি-বেসরকারি একদম পুকুরের জলের মত সমান।সবাই নেশা,নেশার রাজত্বে খুন ধর্ষণ লুট হত্যা ইত্যাদি ।

এসবের হাত থেকে বাঁচতে এক হতে হবে সকলকে প্রকৃত শিক্ষা দিতে হবে,সকলের মূল্যবোধ জাগাতে হবে।এর জন্য যেমন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে তেমনি আমাদের সমাজ সংস্কার করতে হবে;আমাদের মূল্যবোধের অধিকারী হতে হবে ,দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।বিদ্যালয় যে সমাজের ক্ষুদ্র সংস্করণ সেটি ভাবতে হবে ,ভাবাতে হবে।প্রতিটি মানুষকে নজর দিতে হবে কখন কি হচ্ছে,সঠিক সময়ে সঠিক টি হচ্ছে কিনা তা নজর রাখতে হবে।

আমাদের অভিভাবক-অভিভাবিকা দের সচেতন হতে হবে।একটি মা একশোটি স্কুল শিক্ষকের সমান-তাই সুমাতা প্রয়োজন।সুমাতার কারিগর পরিবার।আমাদের পরিবারটিকে আদর্শময় করে তুলতে হবে।এর জন্য পিতা-মাতা কেই সচেতন হতে হবে।স্নেহের সাগরহতে হবে,ধৈর্যের ইমারত থাকবে হৃদয়ে,হতে হবে বাচ্চাটির পথ প্রদর্শক।

শিক্ষক হলেন সমাজের কারিগর, বিকল্প পিতা।তাই খনির আকরিক টিকে সমাজের গহনা করার দায়িত্ব তাঁর উপরেই বর্তায়।চাকরি পেয়ে যাওয়া মানে দায়িত্ব পাওয়া এবং দায়িত্ব পালনই মুখ্য লক্ষ্য-এই বোধটি আগে প্রয়োজন।আমরা শিক্ষক মানে স্কুলটি আমার সংসার,শিশু গুলি আমার পুত্র এই বোধটি মনে হয় আশু প্রয়োজন।

আমাদের সরকার বাহাদুরকেও সচেতন হতে হবে।ভোটের রাজনীতি না করে উন্নয়নের রাজনীতি করতে হবে।শিক্ষা কে রাজনীতি মুক্ত করতে হবে।সরকারের পরিবর্তনে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন না করে,প্রগতির প্রয়োজনে পাঠক্রম বা অনান্য আনুষঙ্গিক বিষয়সমূহ পরিবর্তন করতে হবে।
প্রতিবেশী হিসেবেও আমাদের ভূমিকা কম নয়।কারন ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে বংশগতি ও পরিবেশের উপর।আমরা অর্থাৎ প্রতিবেশীরা পরিবেশের অপরিহার্য অঙ্গ।তাই আমাদের সততা,নিয়মানুবর্তিতা,আচার আচরণ সবই শিশুর মনে রেখাপাত করে।ভালো প্রতিবেশীই পারে সমাজকে একটা সুনাগরিক উপহার দিতে।

আমার মনে হয় আমরাই পারি একটা আদর্শ সমাজ গড়তে,কারন আমরা সমাজ সৃষ্টি করেছি।যদি প্রত্যেকেই নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে যথার্থ দায়ীত্ব আন্তরিকতার সহিত পালন করি,সম্পর্ক গুলির মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করি,হৃদয়ের সাথে হৃদয় যোগ করি তাহলেই সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠিত হবে।শুরু হবে সৌভ্রাতৃত্বের স্বর্ণযুগ।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১০৮৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/০২/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast