বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্য এবং একটি ব্যাক্তিগত পর্যালোচনা – যবনিকার শেষে
বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্য এবং একটি ব্যাক্তিগত পর্যালোচনার প্রতিটি পর্বে আপনারা যথাক্রমে দেখেছেন ভূমিকা , প্রথম কথা ও ইতিহাস । আর এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে, আপনারদের সামনে একটি পরিশীলিত কাঠামোর মাঝে সেই সকল বিষয় তুলে ধরা যা আগে থেকেই আপনার জানেন ।
ভূমিকাতে তেমন কিছুই উল্লেখ করা হয়নি, বরং প্রথম কথায় তুলে ধরা হয়েছে ইসলামি সাহিত্য বলতে মূলত কী বোঝায় বা তার গোঁড়ার দিকটা আসলে কোথায় ।
আবার ইতিহাসে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের প্রিয় এই মাতৃভাষায় ইসলামি সাহিত্য কী অবস্থানে আছে ।
এবং প্রথম কথা ও ইতিহাসের প্রতিটি উৎস সম্পর্কে, তাদের সাথে তথ্যসূত্র যুক্ত করে দেয়া হয়েছে । যাতে করে আপনাদেরও বুঝতে সুবিধা হয় এ কথাগুলো বলার পেছনের ব্যাখাটা কোথাকার ।
বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্য এবং একটি ব্যাক্তিগত পর্যালোচনার যে যবনিকা গত পর্বগুলোতে দেখলেন তার সম্পর্কে সবার শেষে আমার কোন মতামত সত্যিকার অর্থেই আছে কিনা এটা আমার নিজের কাছেই একটি প্রশ্ন বিদ্ধ বিষয় ।
এর প্রধান কারণ হচ্ছে , আমাদের অত্র অঞ্চলে যারা ইসলামি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব রয়েছেন তাদের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় নিজ মাতৃভাষা অর্থাৎ বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে তারা নিমওয়াকিফ । অপরদিকে যারা সাহিত্য জ্ঞানের মোটা ছন্দ বহন করেন তাদের মাঝে রয়েছে ইসলামি জ্ঞানের ঘাটতি ।
যার কারণে দেখা গিয়েছে বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধ ধারার ইতিহাসে ইসলামি সাহিত্যের অবদান প্রায় হাতে গোনা ।
তাই একেবারেই মূলধারার ইসলামি রচনাতে ( যেমনঃ তাফসির , ফিকহ ) বাংলাভাষার কোনই অস্তিত্ব নেই । এর ফলাফল স্বরূপ আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজও বাচ্চাদের প্রথম দিককার পাঠগুলো অন্যভাষার সাহায্যে শেখানো হয় । যেমনঃ ”শায়তান বাঁয়ে হাতো সে খাতা-পিতা হেঁ” (উর্দু)।
আবার অন্যান্যদিকে ইসলামি সাহিত্যের প্রথম ব্যবহৃত ভাষা হচ্ছে আরবি এবং কোরআনের ভাষাও তাই । সেদিক বিচার করলে দেখা যায় , বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্যের যাত্রা ফারসি ও উর্দু ভাষার দ্বারা অনুপ্রাণিত । এই একটি কারণে , বাংলাভাষার ইসলামি সাহিত্য আরও বেশি পিছিয়ে পড়েছে ।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে একটি উদাহরন দিচ্ছি , প্রশ্ন করেছিলাম ফারসি নাকি আরবি শেখা উচিৎ? (আমার উদ্দেশ্য ছিল আগে থেকেই জেনে নেয়া কোনটা সোজা ) উত্তর পেয়েছিলাম আরবি , ফারসিতে নাকি ভেজাল বেশি ! কারন জানতে চেয়ে জানলাম ফারসিতে আরবি ভাষার অনেক শব্দের বিপরীত অর্থ আসে ।
যেমনঃ কোরআনে গোলাম শব্দের মানে কিশোর কিন্তু ফারসিতে চাকর , দাস প্রভৃতি (বাংলাতেও তাই) ।
কেন বাংলাভাষা আরবি থেকে অনুপ্রেরণা পেলোনা, এর কারন খুঁজলে দেখা যায় এই অঞ্চলে আগত দাঈগণের প্রায় প্রত্যেকেই ফারসি বা উর্দু ভাষী ।
আবার বাংলাভাষার বর্তমান প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে দেখা যায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অধিকাংশ সাহিত্যিক একবিংশ শতাব্দীর চিন্তা-চেতনার দিকে মুখিয়ে আছেন । এমতাবস্থায় ইসলামি সাহিত্যের স্থান বজায় রাখাই বাংলাভাষার জন্য একটি ঐতিহ্যের অবস্থানে এসে ঠেকেছে । অর্থাৎ , মুসলিম বলেই তিনি ইসলাম নিয়ে কিছু লিখেছেন অথবা লেখার চিন্তা করেন ।
(সমাপ্ত)
ভূমিকাতে তেমন কিছুই উল্লেখ করা হয়নি, বরং প্রথম কথায় তুলে ধরা হয়েছে ইসলামি সাহিত্য বলতে মূলত কী বোঝায় বা তার গোঁড়ার দিকটা আসলে কোথায় ।
আবার ইতিহাসে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের প্রিয় এই মাতৃভাষায় ইসলামি সাহিত্য কী অবস্থানে আছে ।
এবং প্রথম কথা ও ইতিহাসের প্রতিটি উৎস সম্পর্কে, তাদের সাথে তথ্যসূত্র যুক্ত করে দেয়া হয়েছে । যাতে করে আপনাদেরও বুঝতে সুবিধা হয় এ কথাগুলো বলার পেছনের ব্যাখাটা কোথাকার ।
বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্য এবং একটি ব্যাক্তিগত পর্যালোচনার যে যবনিকা গত পর্বগুলোতে দেখলেন তার সম্পর্কে সবার শেষে আমার কোন মতামত সত্যিকার অর্থেই আছে কিনা এটা আমার নিজের কাছেই একটি প্রশ্ন বিদ্ধ বিষয় ।
এর প্রধান কারণ হচ্ছে , আমাদের অত্র অঞ্চলে যারা ইসলামি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব রয়েছেন তাদের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় নিজ মাতৃভাষা অর্থাৎ বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে তারা নিমওয়াকিফ । অপরদিকে যারা সাহিত্য জ্ঞানের মোটা ছন্দ বহন করেন তাদের মাঝে রয়েছে ইসলামি জ্ঞানের ঘাটতি ।
যার কারণে দেখা গিয়েছে বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধ ধারার ইতিহাসে ইসলামি সাহিত্যের অবদান প্রায় হাতে গোনা ।
তাই একেবারেই মূলধারার ইসলামি রচনাতে ( যেমনঃ তাফসির , ফিকহ ) বাংলাভাষার কোনই অস্তিত্ব নেই । এর ফলাফল স্বরূপ আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজও বাচ্চাদের প্রথম দিককার পাঠগুলো অন্যভাষার সাহায্যে শেখানো হয় । যেমনঃ ”শায়তান বাঁয়ে হাতো সে খাতা-পিতা হেঁ” (উর্দু)।
আবার অন্যান্যদিকে ইসলামি সাহিত্যের প্রথম ব্যবহৃত ভাষা হচ্ছে আরবি এবং কোরআনের ভাষাও তাই । সেদিক বিচার করলে দেখা যায় , বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্যের যাত্রা ফারসি ও উর্দু ভাষার দ্বারা অনুপ্রাণিত । এই একটি কারণে , বাংলাভাষার ইসলামি সাহিত্য আরও বেশি পিছিয়ে পড়েছে ।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে একটি উদাহরন দিচ্ছি , প্রশ্ন করেছিলাম ফারসি নাকি আরবি শেখা উচিৎ? (আমার উদ্দেশ্য ছিল আগে থেকেই জেনে নেয়া কোনটা সোজা ) উত্তর পেয়েছিলাম আরবি , ফারসিতে নাকি ভেজাল বেশি ! কারন জানতে চেয়ে জানলাম ফারসিতে আরবি ভাষার অনেক শব্দের বিপরীত অর্থ আসে ।
যেমনঃ কোরআনে গোলাম শব্দের মানে কিশোর কিন্তু ফারসিতে চাকর , দাস প্রভৃতি (বাংলাতেও তাই) ।
কেন বাংলাভাষা আরবি থেকে অনুপ্রেরণা পেলোনা, এর কারন খুঁজলে দেখা যায় এই অঞ্চলে আগত দাঈগণের প্রায় প্রত্যেকেই ফারসি বা উর্দু ভাষী ।
আবার বাংলাভাষার বর্তমান প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে দেখা যায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অধিকাংশ সাহিত্যিক একবিংশ শতাব্দীর চিন্তা-চেতনার দিকে মুখিয়ে আছেন । এমতাবস্থায় ইসলামি সাহিত্যের স্থান বজায় রাখাই বাংলাভাষার জন্য একটি ঐতিহ্যের অবস্থানে এসে ঠেকেছে । অর্থাৎ , মুসলিম বলেই তিনি ইসলাম নিয়ে কিছু লিখেছেন অথবা লেখার চিন্তা করেন ।
(সমাপ্ত)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবু সঈদ আহমেদ ০৯/১২/২০১৪
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ২৩/০৯/২০১৪ধর্মজ্ঞান আর ভাষা জ্ঞানের বিষয়টা পুরোপুরি ক্লিয়ার না।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ১৮/০৯/২০১৪সাহিত্যের জন্য বাংলা অবশ্যই ভালো একটি ব্যাপার। তবে ইসলাম কে জানতে হলে আরবি শেখা বাঞ্ছনীয়। তবে কুরআন, হাদিস সহজে বুঝতে পারার জন্য সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে বাংলায় তেমন প্রসিদ্ধ কোন গ্রন্থ নেই। ইসলামী চিন্তাবিদগণের এ দিকে এদিকেও নজর দেয়া উচিত।
কিছু অনুবাদ নির্ভর বাংলা ইসলামী সাহিত্য গড়ে উঠেছে, কিন্তু কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে তা বড়ই স্বতন্ত্রহীন। গিরিশচন্দ্র ঘোষ প্রথম কুর'ান অনুবাদ করেছিলেন। কিন্তু সেই অনুবাদ ছিল ফার্সিভারে অবনত। আর বাংলাদেশ থেকে কিম্বা আমাদের পশ্চিমবংগ থেকেও প্রকাশিত ইসলামী সাহিত্যগুলি 'সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিল' জাতীয় সংসকৃত ঘেঁষা ভাষাভারে দীর্ণ। প্রাণের ভাষায় লালন সাঁই গান গেয়েছিলেন, রাস্তায় নেমেছিলেন নজরুল আর মজলিস মাতিয়েছিলেন মুজতবা। কিন্তু নজরুলের ছোট্ট কাব্যায়ু আর মুজতবার কুঁড়েমি এই ব্যপারটাকে বেশি এগোতে দেয়নি।
হুমায়ুন আহমেদেরও এই বিষয়ে বিশেষ লেখা পাওয়া যায়না, কিছু মৌলবাদ বিরোধী লেখা ছাড়া।