একটা লজেন্স ও একটা স্বপ্ন
দোকানদারও সকরুণ চোখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। ছোট্ট বাচ্চা ! নাক দিয়ে সিকনি ঝরে এক ফোঁটা এমনি জিব্বা বাহির করে চুষে নেয়, আরেক ফোঁটা বাহির হতেই দ্রুত ডান হাত দিয়ে মুছে ফেলে। কঙ্কালসার এই বাচ্চা খেতেই পায় না সে আবার পড়বে কী! আমি দেখেও না দেখার ভান করে পত্রিকা পড়ার মুডে থাকি। লজেন্স একবার ডান হাতে একবার বাম হাতে করতে করতে বাবার দিকে অপলক তাকিয়ে স্পোর্টস কারের গতিতে তিন আর দুইয়ের যোগফল বলে। যেনো তাঁর আব্বুর চোখে যোগফলটা দেওয়া আছে। একটা লজেন্স কাগজ খুলে মুখে দিতে দিতে বলে আব্বু আমি দুই আর তিনের নামতাও মুখস্থ পারি, বলি এখন?
জীর্ণশীর্ণ লোকটা হয়তো প্রতিদিন কাজ করে ঠিকমত পয়সা পায় না। গাল ভাঙা চামড়া কুচকে যাওয়া কুঁজো লোকটা প্রতিদিন হেরে যায় জীবনের কাছে, সমাজের কছে, পিতৃত্বের ভালোবাসার কাছে। কিন্তু আজ সে হারেনি তাই সে আনন্দিত, আজ পিচ্চিটা তাঁর মুখ উজ্জল করেছে। এবার সে আড়চোখে নয় পূর্ণচোখে তাকায় সবার দিকে। চোখের কোণায় আনন্দ অশ্রু চিকচিক করছে। চোখের কোণায় গর্বের অশ্রু ঝলমল করছে।
যে লোকগুলো আমাদের চোখে শুধু পরাজিত মনে হয় আসলে কিন্ত তাঁরা পরাজিত না। আমাদের চেয়ে অনেক বড় সাহসী জীবন যুদ্ধা। আমরা নানা আয়োজন নানা ফন্দিফিকির করি যুদ্ধে যাওয়ার আগে। আমাদের নানা পরিকল্পনায় থাকে অন্যকে ছোট করার কারুকাজ এবং অন্যকে মাড়িয়ে নিজেকে উপরে তোলার কসরত। কিন্তু এই লোকগুলো অন্যকে ধোঁকা দিয়ে উপরে উঠতে চায় না কারণ তাঁরা জানে জীবনটা পরাজয়ের জন্যই তবুও প্রাণপণ লড়াই করে যূদ্ধে টিকে থাকার জন্য। যে সিঁড়ি বেয়ে আমরা তরতরিয়ে উপরে উঠে যাই সেই সিঁড়ি তাঁদের কাঁধের উপর চাপানো।
মুখে অম্লান হাসি আর চোখে উজ্জ্বলতা দেখে মনে হয় লোকটা সাহস পেয়েছে। বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর ভেঙ্গে পড়া লোকটা আর সোজা হতে পারিনি। কুজো মানুষটা আজ সটান করে সোজা হয়ে যায়। তিন দুইয়ের যোগ অংক শুধু অংক নয়। এই অংক একটা সাহস , নিঃস্ব বাবার শক্ত কাঁধ। যেনো নতুন করে বাঁচার অবলম্বন । বড় ছেলেকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখে ছিলো সেই স্বপ্ন পূরণের একটা উপাখ্যান । বড় ছেলে তাঁকে যেনো অকুল সাগরে ভাসিয়ে চলে গিয়েছে। অতল জীবন সাগরের কুল পাওয়ার আজ আবার সূর্যের সোনালি আভার কিরণ বিচ্ছুরিত হলো।
আয় আব্বু বলে লোকটা বাচ্চাকে কাঁধে তুলে নিলো। চোখে জল আর জল । এমন সময় হঠাৎ দোকানি এসে ডীপ ফ্রিজ খুলে একটা চকবার আসক্রিম লজ্জাবনত বাচ্চার হাতে দেয়। সে বাপের চোখপানে তাকায়। লোকটা সগর্বে বলে “ল বাপ ল”।
অসমাপ্ত
জীর্ণশীর্ণ লোকটা হয়তো প্রতিদিন কাজ করে ঠিকমত পয়সা পায় না। গাল ভাঙা চামড়া কুচকে যাওয়া কুঁজো লোকটা প্রতিদিন হেরে যায় জীবনের কাছে, সমাজের কছে, পিতৃত্বের ভালোবাসার কাছে। কিন্তু আজ সে হারেনি তাই সে আনন্দিত, আজ পিচ্চিটা তাঁর মুখ উজ্জল করেছে। এবার সে আড়চোখে নয় পূর্ণচোখে তাকায় সবার দিকে। চোখের কোণায় আনন্দ অশ্রু চিকচিক করছে। চোখের কোণায় গর্বের অশ্রু ঝলমল করছে।
যে লোকগুলো আমাদের চোখে শুধু পরাজিত মনে হয় আসলে কিন্ত তাঁরা পরাজিত না। আমাদের চেয়ে অনেক বড় সাহসী জীবন যুদ্ধা। আমরা নানা আয়োজন নানা ফন্দিফিকির করি যুদ্ধে যাওয়ার আগে। আমাদের নানা পরিকল্পনায় থাকে অন্যকে ছোট করার কারুকাজ এবং অন্যকে মাড়িয়ে নিজেকে উপরে তোলার কসরত। কিন্তু এই লোকগুলো অন্যকে ধোঁকা দিয়ে উপরে উঠতে চায় না কারণ তাঁরা জানে জীবনটা পরাজয়ের জন্যই তবুও প্রাণপণ লড়াই করে যূদ্ধে টিকে থাকার জন্য। যে সিঁড়ি বেয়ে আমরা তরতরিয়ে উপরে উঠে যাই সেই সিঁড়ি তাঁদের কাঁধের উপর চাপানো।
মুখে অম্লান হাসি আর চোখে উজ্জ্বলতা দেখে মনে হয় লোকটা সাহস পেয়েছে। বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর ভেঙ্গে পড়া লোকটা আর সোজা হতে পারিনি। কুজো মানুষটা আজ সটান করে সোজা হয়ে যায়। তিন দুইয়ের যোগ অংক শুধু অংক নয়। এই অংক একটা সাহস , নিঃস্ব বাবার শক্ত কাঁধ। যেনো নতুন করে বাঁচার অবলম্বন । বড় ছেলেকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখে ছিলো সেই স্বপ্ন পূরণের একটা উপাখ্যান । বড় ছেলে তাঁকে যেনো অকুল সাগরে ভাসিয়ে চলে গিয়েছে। অতল জীবন সাগরের কুল পাওয়ার আজ আবার সূর্যের সোনালি আভার কিরণ বিচ্ছুরিত হলো।
আয় আব্বু বলে লোকটা বাচ্চাকে কাঁধে তুলে নিলো। চোখে জল আর জল । এমন সময় হঠাৎ দোকানি এসে ডীপ ফ্রিজ খুলে একটা চকবার আসক্রিম লজ্জাবনত বাচ্চার হাতে দেয়। সে বাপের চোখপানে তাকায়। লোকটা সগর্বে বলে “ল বাপ ল”।
অসমাপ্ত
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ ফরিদুল ইসলাম ৩০/১০/২০২৪ভাল
-
শ.ম. শহীদ ২৯/১০/২০২৪দারুণ লাগলো গল্পটি।
-
suman ২৬/১০/২০২৪অসাধারণ লেখনী.... মুগ্ধতা অবিরাম
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২৫/১০/২০২৪সুন্দর ভাবনা