লাশ লাশ এই খেলায় জিতবে দুই পক্ষ হবে হানিমুন। হারবে ধর্ম দেশ সভ্যতা ও নীরব জনতা ।
ফিরে দেখা অতীতঃ
যারা হজ্ব কিংবা ওমরা করতে গিয়েছেন তারা দেখেছেন অত্যন্ত ছোট্ট একটা পাখি মসজিদুল হারামের ভিতর উড়াউড়ি করতে এবং মসজিদের ভিতরে ছোট ছোট মাটির ঘরে বসবাস করতে আর এই পাখিটিই আবা-বীল। যার কাজ এবং বর্ণনা কোরানে মুসলিম মাত্রই পড়েছেন। ঝাঁকে ঝাঁকে আবা-বীল পাখি কংকর নিক্ষেপ করে ছিলো ইসলামের দুশমনকে। কারণ আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি হেফাজত করার জন্য।
বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হলেও বিভিন্ন ধর্মের লোকের বাস এই জনবহুল দেশটিতে। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করে বাধাহীন ভাবে । তবে মাঝে মাঝে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ধর্মের উপর আঘাত করে কিছু মানুষ নামের অমানুষ। আমার গ্রামে মসজিদের পাশেই হিন্দু বাড়ি সন্ধ্যায় মসজিদ হতে আজানের ধ্বনি শুনা যায় আর মন্দির হতে শুনা যায় উলুধ্বনি । আজ অবদি কোন সমস্যা হয়নি মসজিদ ও মন্দির হতে একই সময় ভেসে আসা এই অসম ধ্বনি নিয়ে। তারপরও কিছু মুসলিম নিজ ধর্মের কঠোর সমালোচনায় মেতে উঠে কিন্তু হিন্দুরা নয়।
বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ গরিব, এতিম এবং ভাসমান শিশু আছে যাদের ভরণপোষনের দায়িত্ব রাষ্ট্র কোনো কালেই নেয়নি।এমন কী রাষ্ট্র পরিচালিত কোনো স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাও শিক্ষার সুযোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেনা। অথচ এদের জন্য শিক্ষাই হলো সম্পদ। আর আমরা যাদের ধর্ম ব্যবসায়ী বলি তাঁরা অর্থাৎ কওমী মাদ্রাসায় সারা বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এইসব নিরহ শিশুরা খেয়ে পরে বেঁচে আছে। ব্যতিক্রম কিছু বাদ দিলে বেঁচে থাকার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষালাভ করে জীবন যুদ্ধে ঘুরে দাড়ানোর অনেকে সুযোগও পেয়েছে। তাই তারা ওস্তাদ এবং কওমী মাদ্রাসার প্রতি অনুগত, এইটাই বছরকে বছর চলে আসছে। দেশে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ধর্ম চর্চা যেমন বেড়েছে তেমনি বিরূদ্ধ আচরণও বেড়েছে। এই বিরূদ্ধ আচরণের কারণে গঠন হয় অরাজনৈতিক দল হেফাজতে ইসলাম। ধর্মহীন মানুষ ব্যতীত ধর্মভীরু সাধারণ জনগণ এতে ব্যাপক সমর্থন দেয় । তবে এই হেফাজকে আওয়ামী লীগ প্রথম পাত্তা না দিলেও জনগণের সমর্থন দেখে ভীত হয়ে শুরু করে পলিট্রিক্স। আর এতে ভিতরে ভিতরে সরকারের হাতের পুতুল হয় হেফাজত আমীর শফী সাহেবের ছেলে এবং উনার কাছের লোকজন।
আস্তে আস্তে হেফাজতে দেখা দেয় মতবিরোধ এই সুযোগে চরম ধর্মহীনেরা শাপলা চত্তরে সরকারী সব বাহিনী দিয়ে নর হত্যায় মেতে উঠে। সহায় সম্বলহীন মায়ের সন্তান হত্যা করে রক্তের দাগ পর্যন্ত মুছে ফেলে রাস্তা হতে সরকার আর হৃদয় হতে মুছে ফেলে ইসলাম হেফাজতকারী নেতারা। এরপর চলতে থাকে লীগ হেফাজত হানিমুন এই সুযোগে শফী সাহেবের কাছের লোক হয় সম্পদশালী। দুঃখজনক হলো যেইসব হেফাজত কর্মী মারা গেল তাদের নাম ঠিকানাও হেফাজত প্রকাশ করেনি। দেয়নি তাদের পরিবারকে কোনো রকম অর্থনৈতিক সাহায্য। অথচ অনেক বিধামা মা একমাত্র সন্তান হারিয়ে জীবন সাগরে ভাসছে আর হেফাজত নেতা ভাসছে সম্পদে। আস্তে আস্তে হেফাজতের একপক্ষ সরকারী মধু খাওয়ায় মত্ত হয়ে পড়ে আরেক পক্ষ মধুর খোজে সরকার বিরোধী।
বর্তমান হেফাজত ও লীগঃ
ভাগ্য পরিক্রমায় শফী সাহেব পক্ষ ধরা পড়ে কর্মীর জালে আর উনি জীবন দিয়ে ঋণ শোধ করে মৃত কর্মীর মায়ের। নেতৃত্ব চলে আসে চরম লীগ বিরোধীদের কাছে (মাঠে ময়দানে বক্তব্যে মনে হয়, ভিতরে কী তারা জানে)। সবাই জানে আওয়ামী লীগের কাছে জনপ্রিয় ছিলো মামুনুল হকের বাবা শায়খ আজিজুল হক। যার কারণে শায়খ আজিজুল হক চার দলীয় জোট হতে বের হয়ে আওয়ামী জোটে যোগ দেয় এবং চুক্তি করে হালুয়া রুটির। মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের নেতা ইসলামী বক্তা সে কোনমতেই রাজনৈতিক নেতা হওয়ার যোগ্য নয়। মামুনুল হক ওয়াজিন হিসাবে নেতা হয়েছেন বলে ওনার মধ্যে পরিপক্বতার অভাব আছে বলে আমার মনে হয়।
ইসলামের নামে রাজনীতি করতে হলে উন্নত নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলী থাকতে হয়। অনেক সাবধানে জীবন যাপন করতে হয় যেন কেউ অপবাদ দিতে না পারে। তা না হলে সমাজে কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। সাধারণত রাজনীতি যারা করেন এদের সিংহ ভাগেরই চরিত্র ও নৈতিকতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে এবং মানুষ তাদের ক্ষমতার প্রভাবে বাধ্য হয়ে চুপ থাকে। তবে নোংরামিতে এই ধর্মীয় রাজনীতিবিদরা কখনই আওয়ামী রাজনীতিবিদদের হারাতে পারবে না। আমাদের দেশে প্রচলিত রাজনীতি সম্পর্কে ওলামাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের অভাব আছে। ফলে তারা সামনে আরও বিপদে পড়তে পারে যদি লীগ ক্ষমতায় থাকে । ইতিমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আসন হতে উনার স্বভাব সুলভ ভঙ্গিমায় হুমকি দিয়েছে কওমীদের বাড়িঘর এবং মাদ্রাসায়ও আগুন জ্বলবে। শত উসকানিতেও জ্বালাও পোড়াও করা যাবে না। অথচ হেফাজত দেশের সম্পদ নষ্ট করার মত পচা রাজনীতির পথ অনুসরণ করেছে যা দুঃখজনক।
আওয়ামী লীগ তাদের প্রধান প্রতিপক্ষকে বহু আগেই কোমর ভেঙ্গে কোমায় পাঠিয়ে দিয়েছে যার কারণে বিএনপিকে হিসাবেই ধরে না। ভারতের সমর্থন এবং দেশীয় সব বাহিনীর সমর্থনে এরা দেশে যা ইচ্ছা তাই করতে পারছে। এমন অবস্থায় হেফাজত বিষ পোড়া। হালুয়া রুটির ভাগ না পাওয়ার বেদনা ভিতরে ভিতরে বর্তমান হেফাজত নেতারা ফিল করে বলে মাথা তুলে মাঝে মাঝে। আর এতে পাশে থাকে লাখ লাখ কওমী ছাত্র যারা ধর্মে এবং ওস্তাদে মাতাল। এতে বিএনপির খুশি হওয়ার কিছুই নেই। আওয়ামী লীগ বর্তমান হেফাজত নেতাদের হয়তো সম্পদ দিবে, না হয় ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করবে, না হয় গুম করবে খুন করবে, মামলার জটে ফেলবে যেমন করেছে বিএনপিকে। সবচেয়ে বড় অস্ত্র চেতনার মোড়কে পুরাতন ক্যাপসুল জাতি এবং বিশ্বকে দিবে হেফাজত জঙ্গী।
মুসলিম নামদারি শাহবাগের উগ্র ইসলাম বিরোধীদের দমনে হেফাজত সফল হলেও মুর্তি নিয়ে আন্দোলন, ফান্স নিয়ে আন্দোলন সর্বশেষ ভারত ও মোদি নিয়ে আন্দোলন কোন কিছুতেই সফল হয়নি হেফাজত। মাঝখানে ১৭জন মানুষ মরে গেল যার বেশীর ভাগ গরিব ঘরের। এক হাফেজ মাকে বলে ছিলো রমজানে ইমামতি করে ঈদে বাড়ি ফিরবে কী জবাব দিবে হেফাজত এই মরে যাওয়া হাফেজের মাকে। এই মৃত লোকদের বাড়ি বাড়ি হেফাজত নেতা সমবেদনা জানাতে যায়নি, এই মৃত লোকদের এখনো কোনো অর্থনৈতিক সাহায্য হেফাজত করেনি। একটা আওয়াজ তাদের মনকে কম্পিত করেছে এমন লড়াই করে মরে গেলে জান্নাত পাবে। অথচ দুনিয়ার জান্নাত (পরিবার) প্রিয়জন হারিয়ে আগুনে জ্বলবে জীবনভর জান্নাত পাওয়া এত সহজ হলে হেফাজত নেতা কেনো মরে না। কেনো কর্মীর লাশের উপর ভর করে হেফাজত নেতারা সরকারের সাথে হানিমুন করে।
ধর্ম ব্যবসায়ী ও বাহারি নামঃ
তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ ফেরত না দিয়ে মরে গেলেন একজন সরকার দলীয় এমপি। নদী দখল, ভূমি দখল, বাড়ি দখল, নারী দখল সব আছে লীগের দখলে। এমপি, ডিসি সবার নারীর সাথে ভিডিও লীগের দখলে। ক্যাসিনো, জুয়া, মদ, ইয়াবা সব ব্যবসা লীগের দখলে। ব্যাংক, বীমা ও দুদক লীগের দখলে এমনকি স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি এই সবও লীগের দখলে। লীগকে সমর্থন করা বেশ কিছু মাওলানার দখলে ধর্মের ব্যবসাটাও। আর এইসব ব্যবসা লীগের লোক করলে জায়েজ আর অন্যরা করলে হারাম। সাধারণ কিছু মাওলানার নামের সাথে আজব উপাধি দেখে (আজহারি, মাদানী, কুয়াকাটা ) লীগ এই উপাধিও অচিরে দখল করতে চাইবে। ওলামা লীগ যারা করে তারা ইসলামী লেবাসে ধর্মের জমজমাট ব্যবসায়ী। এই ওলামা লীগে কাঠ মোল্লার অভাব নাই যারা জামাতি ও কওমী মোল্লাদের বিরোধিতা করে ধর্ম ব্যবসা নিজেদের অনুকূলে রেখেছে।
মাওলানাদের মতভেদঃ
মাওলানাদের মতভেদের কারণে সবসময় সুযোগ নিয়েছে সেক্যুলার শ্রেণীর নগণ্য অংশ। ভারত উপমহাদেশের দুই ধারার মাদ্রাসা শিক্ষা চালু করেছে মাওলানারা। ধর্মীয় পণ্ডিত মওদুদীর অনুসারী আর কওমী মাদ্রাসার অনুসারী যেন মধ্যপাচ্যের শিয়া সুন্নীর সম্পর্ক বিদ্যমান। মওদুদীর লেখা ইসলামী বই এবং কওমী ঘরণার ইসলামী বই পড়লে আকাশ পাতাল ব্যবধান বুঝা যাবে। এই ছাড়া আছে সুন্নী, ওয়াবী, আহলে হাদিস ও মাজার পুজারী। সবাই নিজেকে সহী শুদ্ধ ইসলামের প্রধান খেদমতকারী মনে করে একে অপরের পিছনে বাঘে মহিষে লেগে আছে। মাঝে ফায়দা নিচ্ছে কতিপয় নষ্ট সেক্যুলার ও তাদের সাথে থাকা মোল্লারা।
শেষ কথাঃ
সব ভেদাভেদ ভুলে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির বাহিরে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক সুরে গঠনমূলক কথা বলতে হবে ইসলাম অবমাননাকারীর বিরূদ্ধে। সূক্ষ্ম ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দিয়ে কথা বলতে হবে কোনো মতে উসকানি দিয়ে গরিব এতিম কওমী ছাত্রদের লাশ বানানো যাবে না। নীতি নৈতিকতা ঠিক রেখে প্রচণ্ডভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে সব জালিম ধর্মহীনদের বিরূদ্ধে। প্রতিটি কওমী মাদ্রাসায় ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিচ্ছিদ্র করতে হবে। হেফাজত হোক দেশের, মানবের ও ধর্মের।
পুনশ্চঃ আমি ধর্ম এবং রাজনীতি বিশ্বাসী ।
যারা হজ্ব কিংবা ওমরা করতে গিয়েছেন তারা দেখেছেন অত্যন্ত ছোট্ট একটা পাখি মসজিদুল হারামের ভিতর উড়াউড়ি করতে এবং মসজিদের ভিতরে ছোট ছোট মাটির ঘরে বসবাস করতে আর এই পাখিটিই আবা-বীল। যার কাজ এবং বর্ণনা কোরানে মুসলিম মাত্রই পড়েছেন। ঝাঁকে ঝাঁকে আবা-বীল পাখি কংকর নিক্ষেপ করে ছিলো ইসলামের দুশমনকে। কারণ আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি হেফাজত করার জন্য।
বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হলেও বিভিন্ন ধর্মের লোকের বাস এই জনবহুল দেশটিতে। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করে বাধাহীন ভাবে । তবে মাঝে মাঝে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ধর্মের উপর আঘাত করে কিছু মানুষ নামের অমানুষ। আমার গ্রামে মসজিদের পাশেই হিন্দু বাড়ি সন্ধ্যায় মসজিদ হতে আজানের ধ্বনি শুনা যায় আর মন্দির হতে শুনা যায় উলুধ্বনি । আজ অবদি কোন সমস্যা হয়নি মসজিদ ও মন্দির হতে একই সময় ভেসে আসা এই অসম ধ্বনি নিয়ে। তারপরও কিছু মুসলিম নিজ ধর্মের কঠোর সমালোচনায় মেতে উঠে কিন্তু হিন্দুরা নয়।
বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ গরিব, এতিম এবং ভাসমান শিশু আছে যাদের ভরণপোষনের দায়িত্ব রাষ্ট্র কোনো কালেই নেয়নি।এমন কী রাষ্ট্র পরিচালিত কোনো স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাও শিক্ষার সুযোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেনা। অথচ এদের জন্য শিক্ষাই হলো সম্পদ। আর আমরা যাদের ধর্ম ব্যবসায়ী বলি তাঁরা অর্থাৎ কওমী মাদ্রাসায় সারা বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এইসব নিরহ শিশুরা খেয়ে পরে বেঁচে আছে। ব্যতিক্রম কিছু বাদ দিলে বেঁচে থাকার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষালাভ করে জীবন যুদ্ধে ঘুরে দাড়ানোর অনেকে সুযোগও পেয়েছে। তাই তারা ওস্তাদ এবং কওমী মাদ্রাসার প্রতি অনুগত, এইটাই বছরকে বছর চলে আসছে। দেশে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ধর্ম চর্চা যেমন বেড়েছে তেমনি বিরূদ্ধ আচরণও বেড়েছে। এই বিরূদ্ধ আচরণের কারণে গঠন হয় অরাজনৈতিক দল হেফাজতে ইসলাম। ধর্মহীন মানুষ ব্যতীত ধর্মভীরু সাধারণ জনগণ এতে ব্যাপক সমর্থন দেয় । তবে এই হেফাজকে আওয়ামী লীগ প্রথম পাত্তা না দিলেও জনগণের সমর্থন দেখে ভীত হয়ে শুরু করে পলিট্রিক্স। আর এতে ভিতরে ভিতরে সরকারের হাতের পুতুল হয় হেফাজত আমীর শফী সাহেবের ছেলে এবং উনার কাছের লোকজন।
আস্তে আস্তে হেফাজতে দেখা দেয় মতবিরোধ এই সুযোগে চরম ধর্মহীনেরা শাপলা চত্তরে সরকারী সব বাহিনী দিয়ে নর হত্যায় মেতে উঠে। সহায় সম্বলহীন মায়ের সন্তান হত্যা করে রক্তের দাগ পর্যন্ত মুছে ফেলে রাস্তা হতে সরকার আর হৃদয় হতে মুছে ফেলে ইসলাম হেফাজতকারী নেতারা। এরপর চলতে থাকে লীগ হেফাজত হানিমুন এই সুযোগে শফী সাহেবের কাছের লোক হয় সম্পদশালী। দুঃখজনক হলো যেইসব হেফাজত কর্মী মারা গেল তাদের নাম ঠিকানাও হেফাজত প্রকাশ করেনি। দেয়নি তাদের পরিবারকে কোনো রকম অর্থনৈতিক সাহায্য। অথচ অনেক বিধামা মা একমাত্র সন্তান হারিয়ে জীবন সাগরে ভাসছে আর হেফাজত নেতা ভাসছে সম্পদে। আস্তে আস্তে হেফাজতের একপক্ষ সরকারী মধু খাওয়ায় মত্ত হয়ে পড়ে আরেক পক্ষ মধুর খোজে সরকার বিরোধী।
বর্তমান হেফাজত ও লীগঃ
ভাগ্য পরিক্রমায় শফী সাহেব পক্ষ ধরা পড়ে কর্মীর জালে আর উনি জীবন দিয়ে ঋণ শোধ করে মৃত কর্মীর মায়ের। নেতৃত্ব চলে আসে চরম লীগ বিরোধীদের কাছে (মাঠে ময়দানে বক্তব্যে মনে হয়, ভিতরে কী তারা জানে)। সবাই জানে আওয়ামী লীগের কাছে জনপ্রিয় ছিলো মামুনুল হকের বাবা শায়খ আজিজুল হক। যার কারণে শায়খ আজিজুল হক চার দলীয় জোট হতে বের হয়ে আওয়ামী জোটে যোগ দেয় এবং চুক্তি করে হালুয়া রুটির। মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের নেতা ইসলামী বক্তা সে কোনমতেই রাজনৈতিক নেতা হওয়ার যোগ্য নয়। মামুনুল হক ওয়াজিন হিসাবে নেতা হয়েছেন বলে ওনার মধ্যে পরিপক্বতার অভাব আছে বলে আমার মনে হয়।
ইসলামের নামে রাজনীতি করতে হলে উন্নত নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলী থাকতে হয়। অনেক সাবধানে জীবন যাপন করতে হয় যেন কেউ অপবাদ দিতে না পারে। তা না হলে সমাজে কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। সাধারণত রাজনীতি যারা করেন এদের সিংহ ভাগেরই চরিত্র ও নৈতিকতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে এবং মানুষ তাদের ক্ষমতার প্রভাবে বাধ্য হয়ে চুপ থাকে। তবে নোংরামিতে এই ধর্মীয় রাজনীতিবিদরা কখনই আওয়ামী রাজনীতিবিদদের হারাতে পারবে না। আমাদের দেশে প্রচলিত রাজনীতি সম্পর্কে ওলামাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের অভাব আছে। ফলে তারা সামনে আরও বিপদে পড়তে পারে যদি লীগ ক্ষমতায় থাকে । ইতিমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আসন হতে উনার স্বভাব সুলভ ভঙ্গিমায় হুমকি দিয়েছে কওমীদের বাড়িঘর এবং মাদ্রাসায়ও আগুন জ্বলবে। শত উসকানিতেও জ্বালাও পোড়াও করা যাবে না। অথচ হেফাজত দেশের সম্পদ নষ্ট করার মত পচা রাজনীতির পথ অনুসরণ করেছে যা দুঃখজনক।
আওয়ামী লীগ তাদের প্রধান প্রতিপক্ষকে বহু আগেই কোমর ভেঙ্গে কোমায় পাঠিয়ে দিয়েছে যার কারণে বিএনপিকে হিসাবেই ধরে না। ভারতের সমর্থন এবং দেশীয় সব বাহিনীর সমর্থনে এরা দেশে যা ইচ্ছা তাই করতে পারছে। এমন অবস্থায় হেফাজত বিষ পোড়া। হালুয়া রুটির ভাগ না পাওয়ার বেদনা ভিতরে ভিতরে বর্তমান হেফাজত নেতারা ফিল করে বলে মাথা তুলে মাঝে মাঝে। আর এতে পাশে থাকে লাখ লাখ কওমী ছাত্র যারা ধর্মে এবং ওস্তাদে মাতাল। এতে বিএনপির খুশি হওয়ার কিছুই নেই। আওয়ামী লীগ বর্তমান হেফাজত নেতাদের হয়তো সম্পদ দিবে, না হয় ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করবে, না হয় গুম করবে খুন করবে, মামলার জটে ফেলবে যেমন করেছে বিএনপিকে। সবচেয়ে বড় অস্ত্র চেতনার মোড়কে পুরাতন ক্যাপসুল জাতি এবং বিশ্বকে দিবে হেফাজত জঙ্গী।
মুসলিম নামদারি শাহবাগের উগ্র ইসলাম বিরোধীদের দমনে হেফাজত সফল হলেও মুর্তি নিয়ে আন্দোলন, ফান্স নিয়ে আন্দোলন সর্বশেষ ভারত ও মোদি নিয়ে আন্দোলন কোন কিছুতেই সফল হয়নি হেফাজত। মাঝখানে ১৭জন মানুষ মরে গেল যার বেশীর ভাগ গরিব ঘরের। এক হাফেজ মাকে বলে ছিলো রমজানে ইমামতি করে ঈদে বাড়ি ফিরবে কী জবাব দিবে হেফাজত এই মরে যাওয়া হাফেজের মাকে। এই মৃত লোকদের বাড়ি বাড়ি হেফাজত নেতা সমবেদনা জানাতে যায়নি, এই মৃত লোকদের এখনো কোনো অর্থনৈতিক সাহায্য হেফাজত করেনি। একটা আওয়াজ তাদের মনকে কম্পিত করেছে এমন লড়াই করে মরে গেলে জান্নাত পাবে। অথচ দুনিয়ার জান্নাত (পরিবার) প্রিয়জন হারিয়ে আগুনে জ্বলবে জীবনভর জান্নাত পাওয়া এত সহজ হলে হেফাজত নেতা কেনো মরে না। কেনো কর্মীর লাশের উপর ভর করে হেফাজত নেতারা সরকারের সাথে হানিমুন করে।
ধর্ম ব্যবসায়ী ও বাহারি নামঃ
তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ ফেরত না দিয়ে মরে গেলেন একজন সরকার দলীয় এমপি। নদী দখল, ভূমি দখল, বাড়ি দখল, নারী দখল সব আছে লীগের দখলে। এমপি, ডিসি সবার নারীর সাথে ভিডিও লীগের দখলে। ক্যাসিনো, জুয়া, মদ, ইয়াবা সব ব্যবসা লীগের দখলে। ব্যাংক, বীমা ও দুদক লীগের দখলে এমনকি স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি এই সবও লীগের দখলে। লীগকে সমর্থন করা বেশ কিছু মাওলানার দখলে ধর্মের ব্যবসাটাও। আর এইসব ব্যবসা লীগের লোক করলে জায়েজ আর অন্যরা করলে হারাম। সাধারণ কিছু মাওলানার নামের সাথে আজব উপাধি দেখে (আজহারি, মাদানী, কুয়াকাটা ) লীগ এই উপাধিও অচিরে দখল করতে চাইবে। ওলামা লীগ যারা করে তারা ইসলামী লেবাসে ধর্মের জমজমাট ব্যবসায়ী। এই ওলামা লীগে কাঠ মোল্লার অভাব নাই যারা জামাতি ও কওমী মোল্লাদের বিরোধিতা করে ধর্ম ব্যবসা নিজেদের অনুকূলে রেখেছে।
মাওলানাদের মতভেদঃ
মাওলানাদের মতভেদের কারণে সবসময় সুযোগ নিয়েছে সেক্যুলার শ্রেণীর নগণ্য অংশ। ভারত উপমহাদেশের দুই ধারার মাদ্রাসা শিক্ষা চালু করেছে মাওলানারা। ধর্মীয় পণ্ডিত মওদুদীর অনুসারী আর কওমী মাদ্রাসার অনুসারী যেন মধ্যপাচ্যের শিয়া সুন্নীর সম্পর্ক বিদ্যমান। মওদুদীর লেখা ইসলামী বই এবং কওমী ঘরণার ইসলামী বই পড়লে আকাশ পাতাল ব্যবধান বুঝা যাবে। এই ছাড়া আছে সুন্নী, ওয়াবী, আহলে হাদিস ও মাজার পুজারী। সবাই নিজেকে সহী শুদ্ধ ইসলামের প্রধান খেদমতকারী মনে করে একে অপরের পিছনে বাঘে মহিষে লেগে আছে। মাঝে ফায়দা নিচ্ছে কতিপয় নষ্ট সেক্যুলার ও তাদের সাথে থাকা মোল্লারা।
শেষ কথাঃ
সব ভেদাভেদ ভুলে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির বাহিরে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক সুরে গঠনমূলক কথা বলতে হবে ইসলাম অবমাননাকারীর বিরূদ্ধে। সূক্ষ্ম ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দিয়ে কথা বলতে হবে কোনো মতে উসকানি দিয়ে গরিব এতিম কওমী ছাত্রদের লাশ বানানো যাবে না। নীতি নৈতিকতা ঠিক রেখে প্রচণ্ডভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে সব জালিম ধর্মহীনদের বিরূদ্ধে। প্রতিটি কওমী মাদ্রাসায় ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিচ্ছিদ্র করতে হবে। হেফাজত হোক দেশের, মানবের ও ধর্মের।
পুনশ্চঃ আমি ধর্ম এবং রাজনীতি বিশ্বাসী ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহাম্মদ মাইনুল ১৫/০৫/২০২১অসাধারণ, ধন্যবাদ।
-
ন্যান্সি দেওয়ান ১৫/০৪/২০২১Darun.
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০৮/০৪/২০২১সুন্দর বিশ্লেষণী লেখা
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৮/০৪/২০২১বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ,
মিশে আছে তার সাথে ভালোবাসার রেশ।