www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

করোনায় একজন প্রবাসী।

করোনায় একজন প্রবাসী ।
৩৬তম পর্ব।

ইসরায়েলের সাথে সৌদি আরবের কোন আনুষ্ঠানিক কূটনীতিক সম্পর্ক নেই এর অর্থ এই নয় যে তাদের ভিতর কোন যোগাযোগ নেই। দুই দেশের মধ্যে গোয়েন্দা যোগাযোগ রয়েছে এবং কর্মকর্তারা নিয়মিত বৈঠকও করেন। সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র আরব আমিরাত ও বাহারাইনের কূটনীতি চুক্তির পর এই সৌদির আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক সময়ের ব্যাপার মাত্র।কিন্তু করোনা মহামারীর লক ডাউনে সৌদি আরবের পিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যে বৈঠকে মধ্যপাচ্যে ভবিষ্যৎ রাজনীতির সুদূর প্রসারি যোগসূত্র রয়েছে বলে অনেকে মনে করে। ইসরায়েলের আর্মি রেড়িওতে বলা হয় সৌদি আরবের বহুল আলোচিত লোহিত সাগরের উপকূলে অবস্থিত নতুন মেগা সিটি নিওমে দুই নেতার বৈঠক হয়। প্রমাণ আছে যে একটি ব্যক্তিগত জেট বিমান নিয়ে তেল আবিব হতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নিওম শহরে পৌছেন। ২২শে নভেম্বর সৌদি যুবরাজ, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে সাথে নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের কথা। সেই বৈঠকে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধানও উপস্থিত ছিলেন,এই সফরে ইসরায়েলের বিকল্প প্রধানমন্ত্রী,পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সবাই অন্ধকারে ছিলেন কেউ কিছুই বলতে পারে না বলে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম বলেছে।

প্লাইট ট্যাকাকিং ওয়েব সাইটের তথ্য অনুসারে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী প্রায় দুই ঘন্টা নিওমে অবস্থান করে। এর আগেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টে পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য একাধিক বার এই জেট বিমানটি ব্যবহার করেন নেতানিয়াহু। যেই নিওম শহরে এই সাক্ষাৎ হয় তাকে যুবরাজের এক স্বপ্নের শহর বলা হয় কারণ সৌদি আরবের রক্ষণশীলতা ঝেড়ে ফেলে এক আধুনিক সৌদি স্বপ্নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছেন যুবরাজ। এর আগেও সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফারহান বিন আল সৌদ ইসরায়েলের সাথে প্রকাশ্যে সম্পর্ক গড়ার ইঙ্গিত দেন। তবে এর জন্য একটা ছোট্ট শর্ত পূরণ করতে হবে তাদের আর তা হলো একটা স্থায়ী চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীন ও মর্যাদাবান ফিলিস্তিন গঠনের রাজি হতে হবে তাহলে ইসরায়েলের সাথে পূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করবে সৌদি আরব। গত আগষ্ট মাসে প্রকাশ্য সম্পর্কের রূপ দেয় আরব আমিরাত, বাহারাইন ও সুদান তাহাছাড়া আরো কিছু মুসলিম রাষ্ট্র এই পথে হাটবে বলে মনে হয়।

ইতিমধ্যে মরক্কোও এগিয়ে এসেছে, এই চুক্তির প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে সৌদি, তাই ইসরায়েলের জন্য আকাশ মুক্ত করে দিয়েছে যাতে বাহারাইন ও আমিরাতে অবাধে বিমান যাতায়াত করতে পারে। এই চুক্তিকে বিভিন্ন মুসলিম দেশ স্বাগত জানালেও ফিলিস্তিনীরা কঠোর ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরব মনে প্রাণে চাইলেও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন সহজ কাজ নয় ২০০২ সালে সৌদি শান্তি স্থাপনের জন্য একটা রূপরেখা দিয়ে ছিলো। তাতে বলা হয়ে ছিলো ১৯৬৭ সালের সীমান্তে ইসরায়েল ফিরে গেলে আরব দেশগুলি সবাই তাকে পূর্ণ স্বীকৃতি দিবে। এখনো পর্যন্ত সৌদি সরকার এই অবস্থা হতে প্রকাশ্যে সরে আসেনি আর ইসরায়েল এই পরিকল্পনা কখনোই মানবে না তা অস্পষ্ট, ট্রাম্প দ্বিতীয় বার জয় না হওয়ায় এখন প্রশ্নের তৈরি হয়েছে। আমেরিকায় যখন নতুন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা বসতে যাচ্ছে ঠিক তখনি কেন এমন গোপন বৈঠক প্রয়োজন হলো।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন এমন সময় নেতানিয়াহু রিয়াদ সফর করেন যখন জো বাইডেনের জয়ে সৌদি প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে। নির্বাচনে জিতে যখন বাইডেন বিশ্ব নেতাদের দেওয়া ফুলেল শুভেচ্ছা ভাসছিলেন তখন দীর্ঘ সময় মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন রিয়াদ। কারণ জো বাইডেনের জয়ে গভীর হতাশার সৃষ্টি করে সৌদিতে আবার নেতানিয়াহু সরকার নিয়েও জো বাইডেনদের ভিতর হতাশা আছে। অনেকে মনে করে জো বাইডেন দায়িত্বভার নেওয়ার পর অনেক চাপে পড়বে সৌদি আরব। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজের কর্মকাণ্ড নিয়ে এর আগেও সমালোচনা করেছেন বাইডেন।
(চলবে)

করোনায় একজন প্রবাসী।
৩৭তম পর্ব।

সমালোচনা করার কারণে সৌদি যুবরাজ এখন আমেরিকার জন্য অন্য কোন ইহুদী লবিকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবেন আর এইক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা যোগ্য ও বিশ্বস্ত নেতানিয়াহু, তাই হয়তো এমন একটি বৈঠকের জন্য মোহাম্মদ বিন সালমান উদগ্রীব ছিলেন। আর ট্রাম্প এবং তাঁর ইহুদী জামাতা কুশনারের সাথে সৌদি যুবরাজের ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে। কুশনারের প্রচেষ্টায় সৌদি যুবরাজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মুসলিম দেশগুলির অনেকে ইসরায়েলের সাথে কুটনীতিক সম্পর্ক গঠতে এগিয়ে আসে। এবং সৌদি আরবও ইসরায়েলকে মেনে নিবে বলে ট্রাম্প প্রচণ্ড আশাবাদী ছিলেন তাই যুবরাজকে জামাল খাসোগি হত্যার অভিযোগ হতেও অব্যাহতি দানের চেষ্টা করেন এবং মোহাম্মদ বিন সালমানের সুরক্ষা নিশ্চিত করেন। এখন আমেরিকা নির্বাচনে বাইডেনের জয়ে সব ওলটপালট হয়ে যায় এবং সৌদি হারাবে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমেরিকার হোয়াট হাউজ। জো বাইডেন জামাল খাসোগি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে সুবিচারেরও অঙ্গীকার করেছেন। এবং ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিনী সহায়তা বন্ধ করারও প্রতিশ্রুতি দেন তার নির্বাচনী প্রচারোণায়।

সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের আরেকটা কারণ হচ্ছে বাইডেন ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিতে আগ্রহী । আর তা হলে ইরানের উপর চলা দীর্ঘ দিনের মার্কিন অবরোধের অবসানও হতে পারে। ইরানের ব্যাপারে ইসরায়েল ও সৌদি আরব একই নীতি মেনে চলে। সৌদি আরব ঘোষণা করেছে ইরানকে মোকাবিলায় দরকার হলে পরমাণু অস্ত্র বানাতেও দ্বিধা করবে না। তাই নেতানিয়াহু ও সৌদি যুবরাজ বৈঠকে ইরান ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে হয়। সৌদির চির প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান বর্তমানে ইরাক, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় যেভাবে নিজের প্রভাব বলয় গঠে তুলছে তাতে সৌদি নিরাপত্তা বোধ করছে না তাই তাদের ইসরায়েলের সহযোগিতা দরকার। বহু আগে হতে মধ্যপাচ্যের মুসলিম দেশগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে গোপনে ইসরায়েলের সহযোগিতা নিচ্ছে তবে এখন আর গোপনীয়তায় যেতে চাইতেছে না।

মধ্যপাচ্যে ইসলামি দল বিশেষ করে মুসলিম বাদ্রারহুড়কে দমনে পূর্ণ সমর্থন সৌদিকে দিচ্ছে ইসরায়েল। আরব আমিরাত ও বাহারাইনের সাথে কূটনীতি সম্পর্ক স্থাপনের পর হামাস নিয়ন্ত্রিত খাজায় হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল কিন্তু এই নিয়ে একদম চুপ সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশ। সৌদি যুবরাজ বলেছেন ইসরায়েলের সাথে তার দেশের বাণিজ্য ও নিরাপত্তা স্বার্থ রয়েছে। তিনি অকূটনীতি সুলভ আচরণ করে বলেছেন ইসরায়েলিদের নিজ ভূমির অধিকার রয়েছে যদিও আন্তর্জাতিক আইনে ইসরায়েল অবৈধ রাষ্ট্র। যুবরাজ বলছেন ইসরায়েল বড় অর্থনীতির এবং উদয়মান অর্থনীতির দেশ তাই ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক করলে উপসাগরিয় দেশগুলি লাভবান হবে। তিনি আরো বলেছেন ইহুদীদের সাথে সৌদির বিরোধ নেই । এখন পর্যন্ত ইসরায়েলকে যেসব দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে তাতে ইসরায়েল তৃপ্ত নয় সে চায় সৌদি আরবের স্বীকৃতি। তারা মনে করে অন্য মুসলিম দেশের তুলনায় সৌদির স্বীকৃতি পেলে তাদের বৈধতার প্রশ্ন অনেকটা কেটে যায়। এই দিকে হোয়াটহাউজের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হারিয়েছে সৌদি আরব তাই সৌদি যুবরাজ ও নেতানিয়াহুর বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ তবে সৌদি আরব যে বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের উপর নানাভাবে চাপ দিবে তা স্পষ্ট । কিন্তু এত কিছুর আড়ালে ইসরায়েলের জন্য দুসংবাদ বিদ্যমান। তা হলো সৌদি বাদশাহ সালমান স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে।

তাই বাহারাইন সম্মিলনে একদম কঠোর ভাষায় ইসরায়েল বিরোধী বক্তব্য রাখেন সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফারহান। কিছুদিন আগেও দুনিয়ার মানুষ দেখেছে সৌদি আরব ও ইসরায়েল জোরালো কূটনীতি সম্পর্ক বিদ্যমান কিন্তু হঠাৎ করে কেন সৌদি ইসরায়েলের সমালোচনা করছে। আসলে সব কিছুর মুলে হলো মার্কিন নির্বাচন যা সব হিসাব নিকাশ ওলোটপালট করে দিয়েছে। তাই সৌদি আরব তড়িঘড়ি করে নিজেদের পররাষ্ট্র নীতি কিছু পরিবর্তন করেছে তার অংশ হিসাবে ইসরায়েলকে তুলা -ধুনা। আর এই জন্য বিশ্বকে অন্ধকারে রেখে গোপনে দেখা করেন সৌদি যুবরাজের সাথে নেতানিয়াহু তখন যুবরাজ ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা নাচক করে দেন এবং অন্য দিকে কাতারের অবরোধ তুলে নেওয়া চুড়ান্ত করেন। এখন সব ভুলে তুর্কীকে কাছে টানতে চান সৌদি আরব শুধু ট্রাম্প হেরে যাওয়ার কারণেই।
(চলবে)।

করোনায় একজন প্রবাসী।
৩৮তম পর্ব।

সাবেক গোয়েন্দা প্রধান যুবরাজ ফয়সাল যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদুত ছিলেন বর্তমানে তিনি বাদশাহ ফয়সাল ফাউন্ডেশানের প্রধান, এবং প্রভাবশালী হাউজ অফ সৌদির সদস্য। মানামা ডায়লগে সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলে ছিলেন তিনি। যুবরাজ ফয়সাল যখন কঠোর ভাষায় ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে আক্রমণ করেন তখন ইসরাষেলি পররাষ্ট্র মন্ত্রী চুপ করে শুনেন। ধুমধাম করে আমিরাত ও বাহারাইন সম্পর্ক করে উৎসব মুখর ইসরায়েলি, সেখানে এমন কঠোর ভাষায় আক্রমণে পড়ে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রী হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন। সৌদি বাদশাহ সালমানের খুবই ঘনিষ্ঠ যুবরাজ ফয়সাল অতএব বুঝা যায় এই বক্তব্য হলো সৌদি বাদশাহ সালমানের। স্বাধীন ফিলিস্তিন নিয়ে সৌদির অবস্থা অত্যন্ত পরিষ্কার এবং কঠোর। এখন সৌদি আরব বলছে ইসরায়েল আমাদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইলে স্বাধীন ফিলিস্তিন মেনে নিতে হবে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল বিরোধ না মিটলে এই অঞ্চলে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা অধরা রয়ে যাবে। এই শান্তির জন্য দরকার একটা টেকসই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র । সৌদি আরব এখন সোজা বলে দিচ্ছেে আগে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান ।

২০০২ সালে সৌদি উদ্যোগে ইসরায়েলের সাথে শান্তি আলোচনায় বলা হয়ে ছিল ১৯৬৭ সালে যুদ্ধে অধিকৃত ভূমি ইসরায়েলকে ছেড়ে দিতে হবে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠন করতে হবে। সৌদি আরবের এমন উল্টো সুর শুনে খুবই হতাশ হয়ে পড়েছে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েল।সৌদির এমন কঠোর আচরণে অন্য মুসলিম রাষ্ট্রের আচরণ কেমন হবে তা নিয়ে উদগ্রীব হয়ে পড়েছে ইহুদী রাষ্ট্র । মধ্যপাচ্যে ইসরায়েল প্রচণ্ড ক্ষমতাবান দেশ হলেও সব সময় নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তায় থাকে। সৌদি আরবের সাথে টেকসই সম্পর্ক হলে অনেকটা নিশ্চিত হতে পারে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে ইসরায়েল। হঠাৎ করে নিওমে সৌদি ও ইসরায়েলের বৈঠকের পর অনেকে মনে করে ছিলো এই দুই দেশের প্রকাশ্য সম্পর্ক এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু এমন আচরণে অদূর ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সাথে সৌদির সম্পর্কের সম্ভাবনা এখন আর নেই। সৌদি আরব অন্য মিত্রদের ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক করার জন্য সামনে ঠেলে দিয়ে নিজে এখন দিন দিন দুরে সরে যাচ্ছে তা স্পষ্ট ।

লন্ডনের গবেষক শাদী হামদি বিবিসিকে বলেন সৌদির এমন আচরণে বাদশাহ সালমান আর পুত্রের ভিতর মতভেদ রয়েছে তাও স্পষ্ট। ফিলিস্তিনি অধিকার নসাৎ করে এবং তাদের কিছু না পাইয়ে দিয়ে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কে জোর আপত্তি রয়েছে বাদশাহ সালমানের। সৌদি জনগণ আরব বিশ্বের জনগণের মতামত নিয়েও উদ্গীর্ণ এবং রাজ পরিবার উদ্গীর্ণ ক্ষমতা নিয়ে। ইতিমধ্যে সৌদি আরবের মধ্যপাচ্যে প্রভাব অনেকটা হাত ছাড়া হয়ে গিয়েছে তুরস্কের কাছে। গোপনে ইসরায়েলের সাথে গভীর কূটনীতিক সম্পর্ক থাকলেও সৌদি রাজতন্ত্রের একটা অংশ দেখাতে চায় যে মক্কা ও মদিনার রক্ষক হিসাবে আরব দেশের অন্যান্য সমস্যার মত ফিলিস্তিন সমস্যাকেও অনেক গুরুত্ব দেয়। আরো দেখাতে চায় যে বিশ্বের অন্য মুসলিমদের সমস্যাও তারা ফিলিস্তিনের মত গুরুত্ব দেয় তাই সৌদি আরব অনেক দিন চুপ থেকে হঠাৎ করে কাশ্মীর নিয়ে সোচ্চার হয়েছে। সৌদির এই দ্বৈত নীতির কারণে ইসরায়েল অনেক দোদুল্যমান থাকে সৌদি নিয়ে। ইসারায়েল প্রকাশ্য স্বীকার করে সৌদির এই নীতি তারা বুঝতে পারে না এবং উদ্বেগে থাকে।

ইসরায়েলের নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন সৌদির এই আচরণ অনেক উদ্বেগের। কারণ মুসলিম দেশের মধ্য সৌদি আরব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। অন্য মুসলিম দেশ ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে মুসলিমদের তীর্থস্থানের মালিক সৌদি আরবের দিকে তাকিয়ে আছে যেমন মরক্কো। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে গোপনে নিরাপত্তা বিষয় যে সহযোগীতা আদান-প্রদান হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে।গবেষক শাদী হামদিও মনে করেন ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ নিয়ে আসায় সৌদি কোন মৌলিক অবস্থান পরিবর্তন হবে না। তিনি আরো বলেন মিশর ইসরায়েলের সাথে কূটনীতি সম্পর্ক স্থাপনের পর এক সময় বাদশাহ ফয়সাল যে অগ্নি মূর্তি ধারণ করে ছিলেন এখন সেই কিছু দেখা যাচ্ছে না। আর সৌদি আরব আমিরাতের নিন্দা করেননি এবং সৌদির সবুজ সংকেত পেয়ে বাহারাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনীতি সম্পর্ক স্থাপন করেছে। আমরা দেখছি সৌদি এখন ইসরায়েলের জন্য বিমান চলতে আকাশ পথ খুলে দিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে সৌদি আরব এখন ইসরায়েল নিয়ে যা বলছে তা বাপ-বেটার আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা।
(চলবে)।
করোনায় একজন প্রবাসী ।
৩৯তম পর্ব।

ইরানি বিজ্ঞানী পাকিজাদে হত্যার পিছনে ইসরায়েল ও ট্রাম্প প্রশাসন সন্দেহবাজন হলেও এর পিছনে সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আর এইটা সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ হলো সৌদি যুবরাজ, ইষরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিনী পররাষ্ট্র মন্ত্রী গোপন বৈঠকের পরপরই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। যেহেতু বৈঠক রুদ্ধধার ছিলো তাই বৈঠকে কী কথা হয়েছে আদৌ তা জানা সম্ভব নয় তাই বৈঠকে ইরানি বিজ্ঞানী হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে তাও বলা ঠিক হবে না। এই হত্যায় উপসাগরে দেশগুলিকে কঠিন রেষারেষিতে নিয়ে গেল, ইরানি শাসক কঠোর হুমকি দিয়ে এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। ইরান অবশ্যই সন্দহের আঙ্গুল ইসরায়েলের দিকে ইশারা করছে। এমন অবস্থায় ইরান যদি ইসরায়েল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে আঘাত আনে তাহলে প্রথম আঘাতটা হবে সৌদি আরবের মাটিতে। আর এই সময় কোন ঝামেলায় জড়াতে চাইতেছে না সৌদি শাসক। কিছু গবেষক আন্দাজ করে বলছেন ইসরায়েল যদি ইরানের সাথে যূদ্ধে যেতে চায় তবে সৌদি যুবরাজ এতে রাজি হবে না। নাম প্রকাশ না করে মিড়েল ইষ্ট আই জানান দুইটি কারণে সৌদি যুবরাজ যুদ্ধে জড়াতে ইচ্ছুক নয় ।
(১) যুদ্ধে জড়ালে বাইডেন প্রশাসন কোন সাহায্য সহযোগিতা করবেনা।
(২) ইরান তাদের ব্যাপক ক্ষতি করবে এবং কি কি ক্ষতি করবে তা সৌদি আরব ভালো করে জানে।

সৌদি আরব কেন ইরানকে ভয় পায় এইটা অনেকে জানে। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব কিছুটা ইরানের শক্তি সম্পর্কে অনুমান করছে। সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে তেল ক্ষেত্রগুলি যে ক্রুসেড ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে তা ছিলো রীতিমত ভয়াবহ ।সেই সময় সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। যদিও ইয়েমেনর হুতি এই হামলার দায় স্বীকার করেছে তবে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট দিয়েছে এই হামলার সমস্ত রসদ যুগিয়েছে ইরান তখন তারা তা অস্বীকার করে। ইয়েমেন হুতি হলো ইরানের সমর্থনপুষ্ট এইটা সবাই জানে এবং সৌদি তেল কোম্পানি আরাম কোং লক্ষ্য করে নির্ভুল আঘাত করে হুতি। মিডেল ইষ্ট আইয়ের মতে মোহাম্মদ বিন সালমান মনে করে সৌদি আরব যদি এই সময় যুদ্ধ জড়ায় তাহলে সৌদি আরবের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপান্তে নিয়ে যেতে পারে ইরান। তাহাছাড়া করোনা মহামারীতে তেলের বাজার খুবই মন্দা তাই এখন যুদ্ধে জড়ালে সৌদি আরবের রির্জাভে বড় ধরনের টান পড়বে উপসাগর অঞ্চলে প্রভাব বলয় থাকবে না

সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ জো বাইডেন, উনি ইরানের সাথে যুদ্ধে জড়ানো একদম পছন্দ করবেন না। ট্রাম্পের কারণে ইরানের সাথে খারাপ হওয়া সম্পর্ক জো বাইডেন মেরামত করতে চাইছেন। ইরানের সাথে আগে হওয়া পরমাণু চুক্তি হতে সটকে পড়েন ট্রাম্প, জো বাইডেন নির্বাচনী প্রচারে অঙ্গীকার করেছেন সেই চুক্তি তিনি পুনরায় চালু করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের গুডবুকে রিয়াদকে বাইডেন আমলে নাম লিখাতে হলে অনেক কিছু করতে হবে। ইয়েমেনে যুদ্ধ, সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যা এবং বিরোধীদের কঠোর হস্তে দমন বাইডেন কখনো সুদৃষ্টিতে নিবে না এবং মনে করে যে সৌদি আরব একটা অসামাজিক দেশ। বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের প্রাককালে সৌদি আরব এমন একটা যুদ্ধে জড়ানোর সমর্থন দিতে চাইতেছে না কারণ বাইডেনের ভিতর সৌদি নিয়ে খারাপ ধারণার জন্ম দিবে। আরো কারণ আছে সৌদি যুদ্ধে না জড়ানোর জন্য এর একটি হলো ইরানের ঠসামরিক শক্তি।

গবেষকদের মতে ইরান সামরিক শক্তিতে বিশ্বে চৌদ্দ নাম্বারে আর সৌদি আরব আছে সতর নাম্বারে অর্থাৎ সৌদি আরব তিন ধাপ পিছিয়ে আছে ইরান হতে। তবে ইরান আর সৌদির সাথে শত্রুতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ইরানে ইউরিনিয়াম মজুত করা নিয়ে সৌদি উদ্বেগে আছে সৌদি মনে করে ইরান ইউরিনিয়াম মজুত করে পারমাণবিক বোমা বানানোর কাছাকাছি পৌছে গিয়েছে। সমৃদ্ধ এই ইউরিনিয়াম দিয়ে যে কোন সময় ইরান বানিয়ে ফেলবে মারাত্মক বোমা। তবে ইরান সবসময় দাবি করে আসছে যে শান্তিময় কাজের জন্য পারমাণবিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। সৌদি আরব সবচেয়ে পরাজিত হয়েছে সিরীয়ায় সেখানে সৌদি আসাদ বিরোধীদের সহযোগিতা করে আসছে আর ইরান রাশিয়ার সাথে মিলে আসাদকে সহযোগিতা করে তাই আসাদ এখনো সবাইকে হটিয়ে ভয়াল তবিয়তেই আছে। সৌদি আরব ইয়েমেনে হুতিদের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে আর হুতিদের পৃষ্টপোষক হলো ইরান। লেবাননে আছে হিজবুল্লা যার অকৃত্রিম বন্ধু হলো ইরান। তাই চতুর যুবরাজ সব হিসাব-নিকাশ করে দেখে ইরানের সাথে যুদ্ধে যাবে মনে হয় না।
(চলবে)।

করোনায় একজন প্রবাসী।
৪০তম পর্ব।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী একটা টিভি চ্যানালকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় স্পষ্ট করে বলেননি কোন দেশটি ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে চাপ দিচ্ছে। একজন সাংবাদিক জানতে চান কোন দেশটি আপনার উপর চাপ দিচ্ছে সেই দেশ মুসলিম নাকি অন্য কোনো রাষ্ট্র,আপনি সোজাসুজি এই প্রশ্নের উত্তর দিন। মুচকি হেসে ইমরান খান ঝানু রাজনৈতিক নেতার মত কূটনীতির আশ্রয় নিয়ে উত্তর দেন। এবং বলেন আমরা চাইলেও সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না, তবে যে দেশ চাপ দিচ্ছে তা পাকিস্তানের পুরাতন বন্ধু। সম্প্রতি আরব আমিরাত ও বাহারাইন ইসরায়েলের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক চালু করেছে এবং মধ্যপাচ্যের আরো বেশ কিছু দেশ সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী এই তথ্য তূলে ধরে ইমরান খান বলেন আগে আমাদেরকে অর্থনৈতিক একটি শক্তিশালী দেশে পরিণত হতে হবে, নিজের পায়ের উপর শক্ত করে দাঁড়াতে হবে তারপর আমরা সব প্রশ্নের উত্তর খোলাখুলি দিতে পারবো। পাকিস্তানের অর্থনীতি এখনো সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের উপর অনেক নির্ভরশীল তাই কঠোর ভাষায় কথা বলা পাকিস্তানের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়।

তারপরও পাক প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে পাকিস্তানের জনগণকে বলেন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার কোন পরিকল্পনা তাঁর নেই। ফিলিস্তিনের একটা সুন্দর সমাধান না হলে এবং ফিলিস্তিনের মৌলিক অধিকার আদায় সন্তোষজনক সমাধান না হলে পাকিস্তান কখনোই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না এবং কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। ইমরান খান পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কথা স্বরণ করে বলেন বার বার অনুরোধ করার পরও তিনি কখনো স্বীকৃতি দেননি। এইটা সত্য যে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এবং প্রশাসনের উপর ইহুদীদের প্রভাব অনেক তাই যুক্তরাষ্ট্র হতেও বার বার স্বীকৃতি দানের জন্য পাকিস্তানকে চাপ দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকারে ইসরায়েলের প্রভাবের শক্ত বলয় সেটা পুরাতন কথা কিন্তু ট্রাম্প শাসন আমলে সেই প্রভাব প্রচণ্ড আকার ধারণ করে আর এই প্রভাব অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় তাই জো বাইডেন এই প্রভাব কিভাবে মোকাবিলা করে তা দেখার বিষয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইমরান খান বলেন অনেকে মনে করে জো বাইডেন আফগানিস্তান নিয়ে বেশী নজর দিবে আমার তা মনে হয় না, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান নিয়ে জো বাইডেন আগের সরকারের পথই অনুসরণ করবে আমার মনে হয়।

বর্তমান মার্কিন প্রশাসন নানা দিক নিয়ে কাজ করছেন যাতে আফগানিস্তানে চলা গত উনিশ বছরে হানাহানির একটা রাজনৈতিক সমঝোতা করে শান্তিকর সমাধান করা যায়। আমার মনে হয় ইসরায়েলের প্রভাবকে মোকাবিলা করে মুসলিম দুনিয়া কিংবা অন্য দেশকে সাথে নিয়ে চলাই হবে জো বাইডেনের জন্য দুরূহ কাজ। ট্রাম্প ইসরায়েলের আমেরিকার সম্পর্ক যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন তা হতে বের হয়ে আসা খুব সহজ নয় এখন দেখার বিষয় বাইডেনও একই পথে হাটেন নাকি ভিন্নতা নিয়ে আসেন। ইসরায়েল, ইরান এবং কাশ্মীর নিয়ে বাইডেনের নীতি কী হবে এখনো বুঝা যাচ্ছে না তবে আফগানিস্তান নিয়ে নীতিতে তেমন পরিবর্তন আসবে না। এখন রিপাবলিক এবং ডেমোক্রেট উভয় দলই আফগানিস্তান হতে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার চায়।
সৌদি আরব ও আমিরাত বলয়ের বাহিরে গিয়ে তুরস্ক বলয়ে যোগ দিয়ে পাকিস্তান পররাষ্ট্র নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে, আজারবাইজানের পক্ষে ইমরান খানের জোরালো অবস্থানের প্রতিদানও পেতে পারে পাকিস্তান।

সৌদি আরব ও আমিরাত নির্ভর পাকিস্তানের জ্বালানি খাত হয়তো এখন আজারবাইজানের দিকে ঝুকতে পারে। অনেকে মনে করে সৌদি আরবকে বাদ দিয়ে আজারবাইজানের তেল রপ্তানি করতে পারে পাকিস্তান তাই আন্তর্জাতিক টেন্ডারের আজারবাইজান অংশ গ্রহন করে তা নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান বেকাদায় আছে তাদের ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে তবে আমার মনে হয় করোনা মহামারীতে তাদের অর্থনীতি ছিলো স্থিতিশীল এবং ডলারের বিপরীতে রুপির মান বেড়েছে এতে তাদের সুবিধাও বাড়বে। পাকিস্তান সৌদি হতে তিন মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে তার মধ্যে এক মিলিয়ন ডলার শোধ করেছে এবং বাকি দুই মিলিয়ন ডলারও তাড়াতাড়ি পরিশোধ করতে সৌদি আরব চাপ দিচ্ছে। তাই পাকিস্তান চীন হতে ঋণ নিয়ে সৌদি ঋন শোধ করার চেষ্টা করছে।
(চলবে)।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩৬৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/১২/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • হাফেজ আহমেদ ২৭/১২/২০২০
    সালমান দেশটার বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে ভাই।
    • ফয়জুল মহী ৩১/১২/২০২০
      নতুন বছর হোক মানবের জন্য সুস্থ ও সুন্দর । হোক মৌলিক অধিকার নিশ্চিত । শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ,
  • তূয়া নূর ২৭/১২/২০২০
    ভাল লিখেছেন
    • ফয়জুল মহী ৩১/১২/২০২০
      নতুন বছর হোক মানবের জন্য সুস্থ ও সুন্দর । হোক মৌলিক অধিকার নিশ্চিত । শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা .
  • ভালো হয়েছে।
    • ফয়জুল মহী ৩১/১২/২০২০
      নতুন বছর হোক মানবের জন্য সুস্থ ও সুন্দর । হোক মৌলিক অধিকার নিশ্চিত । শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ।l
 
Quantcast