মেয়ে ও মায়া মাদক ও রাষ্ট্র
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২১ তম পর্ব।
“পাখি উড়াল দিলো‘রে । উড়ালি হইয়া আগের মত খায় না দানা । হাতে বসিয়া পাখি উড়াল দিলো‘রে। কানের কাছে ঠোঁট লাগাইয়া শিখাইলাম কথা I আগে যদি যানতাম পাখি সব হবে অযথা । ”
শুধু গান শুনলে হবে , গান শুনার সাথে সাথে কাজও করতে হবে । না হয় রান্নাও হবে না, খাওয়াও হবে না। আরে নাহিদ মিয়া রান্না নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। যথাসময় আপনার সামনে খাবার এসে যাবে। তাই যেন হয় । আজকাল তুমি একটু গানে মনোযোগী তাই বলি দাও না একটা মোবাইল আমাকে । তুমি কয়েকদিন আগে তিনটা নতুন মোবাইল নিয়ে এসে ছিলে আজ আবার দেখছি না । কোথায় ফেলে আবার কি করেছো কিছুই জানলাম না । ওইখান হতে আমাকে একটা মোবাইল দিতেই পারো নাহিদ। তুমি যখন বাসায় থাকো না আমি একা একা সময় কাটাতে কষ্ট হয়, মন খারাপ হয়। তাই একটা মোবাইল হলে আমি গান শুনতে পারতাম । মন ভালো থাকতো । আর ইউটিউবে বিভিন্ন রান্না শিখে তোমাকে রান্না করে খাওয়াতে পারবো । একটা কথা বলার ছিল , তোমার শুনার সময় হবে । আরে যে কোন কথা মনে সাহস নিয়ে বলে ফেলো। আগে মোবাইল নিয়ে আসলে , এখন আবার অনেক বাজার করে আনলে টাকা কোথায় পেয়েছো নাহিদ। আরে তোমার এত কিছু জেনে কোন কাজ আছে । আমার জামাগুলি সব খারাপ হয়ে গিয়েছে তুমি দেখছো না। যদি টাকা থাকে আমার জন্য অন্তত একটা জামা হলেও এনে দাও। এক মাসের হলেও বাসা ভাড়া দাও যাতে সোবহান মিয়া ভাড়া চাইতে কিছু দিন না আসে তাহলে আমি স্বস্তি পেতাম । চেষ্টা করতেছি ,কয়েকটা দিন ধৈর্য্য ধরতে হবে যে ।জেনে শুনে আমি বিষ পান করেছি। জেনে শুনেই তোমার জন্য বৈরাগনী হয়েছি তাই ধৈর্য্যই আমার এখন সুখ। এই সুখের রাজ্যে তুমিই রাজ।
তুমি পাশে থাকলে আটকানো থাকবে অশ্রু জল,বয়ে যেতে দিবো না এক ফোটাও টলমলে। শাইন করবো , রোজ রোজ নতুন করে সাজিয়ে রাখবো আমার আঙিনা , প্রতিটি অসুন্দরকে উপড়ে ফেলবো সুন্দরের সাদা পর্দায় । একদম সহজ উপসর্গে রচবো জীবনের সংবিধান , সাগর মহাসাগর চমকে যাবে কমনীয় আয়োজনে। সোনা কিংবা হিরার মতো উচ্ছ্বাসে ভালোবাসবো তোমাকে । অবজ্ঞা আর উদ্বিগ্নকে হাওয়ায় মিশিয়ে দিবো হাসি তামাশায় । জীবনের কলামে রাখবো শিরোনাম করে উদ্দীপ্ত নয়নে ,জীবনের পাতায় পাতায় সুগন্ধী ছড়াবে সযত্নে। বছর বছর দ্বিগুণ উৎসাহে রাঙাবো মনের সূর্যশিশির। ক্ষোভের আগুনে পানি ঢেলে নিজেকে রাখবো শীতল । তুমি থাকলে পাশে পরিহার করবো সমস্ত অনিয়মের কালাকানুন। দৈন্যতা ঘুচাবো চঞ্চল কর্ম তৎপরতায় । তুমি পাশে থাকলে পৃথিবীর রানী আমিই। সুখের শৃঙ্খলা বিরাজ করবে, বাজবে বাঁশি সুরের লহর তুলে। দূরত্বের দরোজায় তালা ঝুলিয়ে থাকবো পাশাপাশি আর দেখবো সহমর্মিতার আয়নায় তুমি আর আমি। বেঁধে নিবো আগের মতো সুখ সুখ অনুভবে গাঁথবো সংসার মালা বকুল ফুলের সুভাষে। নুপুরের তালে তালে এই চঞ্চল চপলা সোনার সংসার সুখে সুখে রবে।
আরে বাহ তুমি দার্শনিকের মত কথা বলো শিউলী। কি যে বলো । আমি কি এত জ্ঞানী যে দার্শনিক হবো।আসলে তোমার কথাগুলো শুনতে অনেক ভালো ।
আমার এখানে সব কিছু অচেনা শুধু তুমি ছাড়া । সম্পূর্ণ নতুন শহরে আমি , মনে হয় এখানে আমি যাযাবর । তুমি পাশে থাকলে নিজেকে চেনা মনে হয়। থাকে না ঘুমিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা , থাকে না আতংক।মনে এই সভ্য নগরের অলি গলি সব আমার আত্মীয় সব আমার অনেক চেনা। চাই শুধু তোমার একটা চাকরী । তখন আমরা অভিসারী হবো । সিনেমা দেখতে হলে যাবো , বসে বসে আইসক্রীম খাবো। এইটা আমার পছন্দ । তোমার পছন্দ কালো রংয়ের চা। তুমি ঘন ঘন আদা লেবুর রং চা খাবে আমি খাবো একটার পর একটা আইসক্রীম । হিঃ হিঃ হিঃ ।
পাগলী , বাচ্চা মেয়ের মত হাসে । অবশ্যই হাসলে তোমাকে সাদা দপদপে রাজহংসী মনে হয় ।
বিছানায় অনায়াসে শুয়ে থাকবে এক ফালি আয়েশি সোনালী সুখ । মুঠো মুঠো সুখ দু'হাতে তুলে নিয়ে চোখে মুখে মাখিয়ে দিবো অজানা শিহরন ।
আমার দৃষ্টিতে নামবে উষ্ণ শীতলতা পবিত্র ইশারায় মহাসত্যের কাব্য রচনায় তুমি হবে ব্যস্ত। দেখার ভিতরে থাকতে থাকতে পাবে তুমি সেই পরম শান্তিময় বুকের উষ্ণতা । ওহ চমৎকার ।
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২২তম পর্ব।
আমরা একটি সুদীর্ঘ ভ্রমণের পথে আছি । এই ভ্রমণের মাঝে ক্লান্তি আসবে , অবসাদ আসবে , হতাশা আসবে , গতি মন্থর হবে এবং মাঝে মাঝে নাকে বিদখুটে দুর্গন্ধ আসবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্বাস রাখতে হবে সেটা সাময়িক , অল্প কিছু দিনের মধ্যে তা অতিক্রম করবো নিশ্চয়ই । এভাবেই জীবন নামের ভ্রমণ অতিক্রম করে আমাদেরকে শেষ গন্তব্যে পৌঁছতে হবে । আর সেই শেষ গন্তব্যই হলো চির বসন্তের চির স্থায়ী মহাসুখের আবাস্থল পরজনম । যেই জনমে জীবনের শুরু আছে শেষ নাই । ভালো কাজ দিয়ে সেখাানে আবাস নিশ্চিত করতে হয় । কিন্তু বেশ কিছু মানুষ আছে যারা দুনিয়াকে স্বর্গ ভেবে সম্পদের পাহাড়ে সুখের আবাস গড়ে তুলতে ব্যস্ত। আর এই ব্যস্ততাই মানুষ হয়ে পড়েছে লোভী ও দুর্নীতিবাজ । এই লোকগুলি সাধারণ মানুষের রক্ত পানি করা টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে করছে বিদেশে পাচার। বিদেশে গড়ে তুলছে বাড়ি , সেখানেই শুরু করছে কারবার। যাতে বিপদ আসলে দেশ হতে পালিয়ে বাঁচতে পারে। তারা কখনোই দেশ প্রেমিক নয়। এরা কখনো রাজনীতিবিদ, কখনো শিল্পপতি , আবার কখনো উভয় নামে পরিচিত।
এভাবে তাকিয়ে আছো কেন শিউলী ?
তোমার এই তাকিয়ে থাকা আমাকে তোমার মায়ায় আকৃষ্ট করে যে । তোমার দৃষ্টি আমাকে হৃদয়গ্রাহী করে। দিবে একটা চুমু আমায় , এক বার দিলে আর তোমাকে বিরক্ত করবো না । ইচ্ছে করে তোমাকে দুই বাহুতে জড়িয়ে আকাশে উড়াল দিতে। কারণ তোমার এই অকৃত্রিম ভালোবাসা আমাকে করে ব্যাকুল।
তোমার এই রহস্যময় চোখের ইশারায় আমি হই দিশাহারা । তোমার এই মায়াবী হরিণী চোখ মনে হয় মহাসাগর আর এই মহাসাগরে ভাসমান জাহাজের উদভ্রান্ত নাবিক আমি। যে কিনা সকল স্মৃতিশক্তি হারিয়ে মস্তিষ্কের খাতা খুলে বসে স্মৃতি থেকে সুর তুলতে চায়। কানে কানে বলি কথাটা নিগাদ সত্য ।
প্রয়োজনে বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে হবো সলিল সমাধি । তবুও দেহের ভালোবাসায় নয় মনের ভাালোবাসায় তোমাকে করে তুলবো মাতাল । আর এমনি প্রফেশনাল মাতালের মতই আদরে আদরে মিটিয়ে দিব তোমার চাওয়া । কি , তুমি ভাবছো নাটকের ডায়লগ । আরে আমি যে তোমার ভালোবাসার রাক্ষস । তুমি আর আমি দিনে এনে দিনে খাই তাই আমরা সুখী পরিবার। আমাদের স্বপ্ন আছে কিন্তু পরিমিত । আকাশের চাঁদ আমার ঘরে তাই আমি চাই না কৃত্রিম চাঁদ। তুমি আমার জোছনাময় চাঁদ । যে চাঁদে নেই কোন কালো দাগ।
জল নিয়ে খেলতে আমার খুব ভালো লাগে। তাই আমি মেঘের বন্ধু হয়ে মেঘ হতে বৃষ্টি ঝরাই । তবুও কেন জানি আমার বুকে অসীম মরুতারা ঝিলিক দেয়। একবুক ঊষ্ণতা নিয়ে আমি মর্ত্যে দাঁড়িয়ে জলের জন্য মেঘ খুজি । তুমি আমার সবুজ পৃথিবী বলে কতো মেঘের আল্পনা উড়াই পৃথিবীতে । শুধু একবার তুমি আমার স্বপ্ন সাগরে ক্লান্ত মাঝি হও।
ভালোবাসায় কোন নিরাপদ দূরত্ব হয় না সোনামণি । তারাময় আকাশ আর পৃথিবীর একটা সুন্দর সন্ধি থাকে। আমাদেরও সন্ধি থাকতে হবে কারণ বুকের এই ভূমিতে লিখা হয়েছে তোমার আমার মিলনের অযুত অক্ষর। হয়তোবা এরই নাম প্রেম।
এইভাবে অনন্ত কাল এই মরা প্রান্তরে ছেড়া ছেড়া জীবন নিয়ে আমরা সুখের আখড়া বানাবো।
বাংলার সবুজ শ্যামল মাঠে রাখাল বাউল গান ধরে। আর বুকের সবটুকু আবেগ উজাড় করে প্রাণের সুর সৃষ্টি করে । এখানে তুলসী তলায় রাধার প্রেমগীত হয় সন্ধ্যা বাতির সাথে সাথে নারী উলু ধ্বনি করে ঠাকুর ঘরে বাতি জ্বালায়। ছোট ছোট বাচ্চারা পড়ার টেবিলে বসে পড়ার জন্য। পড়া শেষে মা তাদের আদর করে ভাত খাওয়ায়। কোন কোন বাচ্চা বায়না ধরে কত কিছুর। মা তার ভালোবায় সব ভুলিয়ে দেয় আদরে আদরে । যেমন তুমিও করবে একদিন। বুকের ভিতর নিয়ে মা শুনায় “আয় আয় চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা”। (চলবে)।
মেয়ে ও মায়া ,মাদক ও রাষ্ট্র ।
২৩তম পর্ব। ।
জীবন কারো জন্য তো থেমে থাকেনা। পৃথিবী চলে পৃথিবীর নিয়মে। আর এটাই চলমান বাস্তবতা। যেমন খাল- বিল , সাগর -মহাসাগরে পানির স্রোত চলমান । নানা গাছে নানা ফুল ফোটে। ঝরে পড়া ফুলের খবর কতজনই রাখে? আবার ঝরে যাওয়া ফুলে মালা তৈরিতেও আমরা অভ্যস্ত নয় । আমরা বাগানের তাজা ফুলই ভালোবাসি। ঠিক তেমনি জীবন যুদ্ধে হোঁচট খাওয়া মানুষকে এড়িয়ে চলে সবাই। কারণ মানুষ ভাবে এই লোকটা অযোগ্য কিংবা অকর্মা । তবে কোন কাজে প্রথমবার কৃতকার্য না হলে শিক্ষা এবং সাহস নিয়ে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করা জরুরী । এমন অনেক প্রমাণ আছে যে দ্বিতীয় বার চমক লাগানো কৃতকার্যতা তার জীবনের মোড় ঘুরে দিয়েছে। তাই জীবনে চলার পথে প্রতিট কাজ হতে ভালো দিকটা শিখতে হবে। একজনের সাথে চলার সময় তার মন্দ দিকটা পরিহার করে চলে ভালো দিকটা গ্রহন করে নিজের জীবনে প্রয়োগ করা বুদ্ধিমানের কাজ। আর বুদ্ধিমান কখনো হতাশ হয় না নিরাশ হয় না । তারা একবার না পারলে দেখো শতবারে বিশ্বাসী । সৎ চিন্তা সৎ সাহস নিয়ে সফলতা অর্জন করা প্রত্যেক জীবনের ব্রত হওয়া বাঞ্ছনীয় । আর আমাদের মত মানুষের জন্য সততা , সাহস এবং মনোবল হল জীবনের সুস্বাদু টনিক । মাথায় রাখতে হবে আমি কে , কি করতে চাই এবং পারতে আমাকে হবেই।
রাইট আম্মু । জীবনকে সুন্দর করতে হলে সুন্দর চিন্তা মাথায় থাকা চাই। সম্পদহীনদের জন্য শিক্ষাই সম্পদ। শিক্ষা মানেই নিজেকে বিকশিত করা । শিক্ষায় সনদ অর্জন করে যেমন চাকরী পাওয়া লক্ষ্য থাকে তেমনি সেই চাকরীতে শতভাগ সততাপরায়ণ থাকা অপরিহার্য । তাহলে দেশ ও জাতি সামনের দিকে অগ্রসর হবে। আজকাল মানুষ সরকারী চাকরী ফেলে অল্প দিনেই কোটিপতি বনে যায় । নামে বেনামে সম্পদ গড়ে তোলে , ব্যাংকে জমা করে অঢেল টাকা। পুলিশে একটু উপরে পদধারী হলেই টাকার কুমির । ভূমি অফিসে চাপোষা কেরাণী হলেই টাকার কুমির । বিমান বন্দর কিংবা নদী বন্দরে চাকরী ফেলেই অল্প দিনেই টাকার কুমির । বিদ্যুৎ ,টেলিফোন কিংবা গ্যাস শাখায় চাকরী পেলেই টাকার কুমির। তাদের চোখ পড়ে না মাটিতে । ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করে । বাতাসের তালে তালে বেড়ে উঠে আঙ্গুল ফুলে গাছে পরিণত হয় । সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এরা রাজনৈতিক ছাতার নিচে নিজের দেহ নিরাপদ রাখে। শুরু করে ব্যবসা বাণিজ্য পাচার করে কাঠি কাঠি টাকা। বিদেশের ব্যাংকে এবং ব্যবসায় নিজেদের নিরাপত্তায় স্বস্তি মনে করে।আম্মু আমি একজন স্বচ্ছ মানুষ থাকতে চাই। মন এবং মননে দেশ প্রেম গচ্ছিত রাখতে চাই আমৃত্যু।
তাই বিদেশ হতে পড়াশোনা শেষ করে নিজ দেশে ফিরে আসাই দেশ প্রেম। অবশ্যই প্রতিকূল পরিবেশও থাকে কারো কারো তাই ইচ্ছে করলেও ফেরত আসতে পারে না । তবে তারাও দেশের মঙ্গল কামনা করে। দেশের একটা ভালো খবরে মন আন্দোলিত হয় তাদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের মানুষের জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করে। কারণ সে লোক বুকে লালন করে প্রিয় স্বদেশকে । তারপরও , পৃথিবীময় ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা জ্ঞানী গুণী , সৎ এবং দক্ষ মানুষকে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা দরকার আম্মু । তাঁদের ভিতর হতে সত্যকার দেশ প্রেমিকদের দেশের রাজনীতিতে জড়িত হওয়া দরকার । যারা ভালোবাসবে কথা নয় কাজ । যারা মিথ্যায় নয় সত্যিকারে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশকে উন্নতির দিকে। অবশ্যই বর্তমান রাজনীতি ঘুণে ধরা আমার একদম অপছন্দ কুটিল এই রাজনীতি । তোমার এই রাজনীতি নিয়ে ভাবতে হবে না । আর সবসময় সাবধানে চলাফেরা করবে মৌরি। আমার মন পড়ে থাকবে তোমার কাছে। কালকে তোমার মামা সব কাগজপত্র দিয়ে যাবে। লন্ডন পৌছে গিয়ে আম্মুকে ফোন দিবে (চোখের কোণায় জল )। আমি অনেক একা হয়ে যাবো মৌরি। রোজ রোজ ফোন দিয়ে কথা বলবে আমার সাথে। ওহ! আম্মু মন খারাপ করো না । আমি সহ্য করতে পারবো না। আমরা মা মেয়ে একে অপরের পরিপূরক । আমারও মন পড়ে থাকবে আম্মু তোমার কাছে। (চলবে)।
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২৪৩ম পর্ব।
আকাশের ওপারে জোছনাময় চাঁদ। চাঁদের আলো আর কাঁশফুলে মাঝে সংসার নামক স্বর্গ । অথচ এই স্বর্গীয় সুখ পদদলিত করে কখনো কখনো পুরুষ কিংবা নারী পা বাড়ায় নরক নামক আগুনে।
কাশবনে হাঁটার অন্যরকম একটা আনন্দ আছে। চড়ুই ও অচেনা পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত থাকে চারপাশের সবুজ প্রকৃতি। মাথার উপর তুলোর মত সাদা সাদা কাশফুল মাঝখানে স্বর্গীয় অনুভূতি। একটা কাশফুল আমার গাল ছুঁয়ে যেতেই চোখে ভাসে সংসারের টক ঝাল মিষ্টি মধুর খন্ড খন্ড স্মৃতি সুখ। অনেক সময় অনেক যুগল একসাথে কাশফুল দেখে রোমাঞ্চিত হয় । কাশফুলের নরম আলতো স্পর্শে পুলকিত হয় যুগলের মন। আকাশের ওপারে হে চাঁদ তুমি বড্ড একা ও বড্ড দূর । সংসারেও একত্রে বাস করে কখনো কখনো চেনা হয় না একে অপরকে। আমি আজও চিনতে পারিনি নাহিদক।
প্রতিদিন ফজরের আযান দিলেই নাহিদ বাসায় এসে যায় কিন্তু আজ এখনো আসে নাই অথচ সকাল হয়ে গেল। কোথায় গেলো কার কাছে জিজ্ঞাসা করবো ? আমি এখানে কাউকে চিনি না জানি না অথচ আমাকে একা ফেলে কোথাও গেলে তার আর খবর থাকে না। প্রতিদিন সকাল সকাল একসাথে বসে চা নাস্তা করি আর আজ নয়টা বাজে নাহিদ এখনো এলো না ।
হ্যালোঃ সুজন ভাই আমি আমি শিউলী ।
কেমন আছো। নাহিদ কেমন আছে।
জ্বী ভালো আছি । নাহিদ রাতে বাসায় ফিরে নাই । আপনি কি জানেন কোথায় গেল ।
তাই , আমি রাতে কাজে ব্যস্ত ছিলাম আমার সাথে দেখা কিংবা কোন কথা হয়নি । শুনো আমি তার অন্য বন্ধুদের হতে খোজ খবর নিয়ে তোমাকে ফোন দিবো একটু পর তুমি চিন্তা করো না শিউলী।
ভাইয়া ঠিক আছে কিন্তু খবু ভয় লাগছে একা একা।
আরে পাগলী ভয় পাওয়ার কি আছে ।
শিউলী শিউলী , দরজা খোল আমি তোর সুজন ভাই।
আসেন ভাইয়া ভিতরে আসেন , বসেন আমি চা করি।
না থাক এখন কিছু খাবো না আমি নাস্তা করেই তোমার বাসায় এসেছি নাহিদের খবর বলতে । শুনো , কাল রাতে নাহিদকে ইয়াবাসহ পুলিশ ধরে ফেলছে এখন থানায় আছে আমি তোমাকে বলে থানায় যাবো।
ভাইয়া এখন আমার কি হবে কোথায় যাব আমি। আহারে কান্না বন্ধ কর। তুই মন শক্ত করে এখানে থাকতে হবে । কোন কিছু দরকার হলে আমাকে বলবে আর নাহিদকে বাহির করতে আমি চেষ্টা করবো । সে আমার বন্ধু হলেও তুমি আমার ছোট বোন , তোমার জন্য হলেও নাহিদকে বাহির করতে সব চেষ্টাই আমি করবো তুমি টাকা পয়সা নিয়ে ভাবতে হবে না । শুধু নিজেকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখে চেষ্টা করবে ।
সেইটাই ভয় হচ্ছে ভাইয়া । সোবহান মিয়া লোক ভালো না যখনি শুনবে নাহিদ জেলে তখনি এসে যাবে বাসা ছাড়তে বলবে আর কয়েক মাসের ভাড়াও বাকি। আমি মরা ছাড়া আর কনো পথ নাই
আসলে সমস্যাটা কঠিন এখন নাহিদকে বাহির করাই বেশী দরকার কিন্তু বাসা ভাড়া তাহাছাড়া তুমিও একা ! তোমার মা বাপকে ------ ।
ভাইয়া তাঁরা আমাকে পেলে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিবে।
নাহিদের পরিবারও কোন সাহাস্য করে কিনা ঠিক নাই। সে আগে ভালো ছিল মোটামুটি সচ্ছল পরিবারের ছেলে কিন্তু সঙ্গ দোষে বখাটে হয়ে পড়ে । পড়ালেখা ছেড়ে মাদকের নেশায় ডুবে তার পরে আবার তোমাকে বাগিয়ে নিয়ে আসে বিয়ে করে। আর তুমিও কম বয়সে খোজ খবর ছাড়া মা বাপ ছেড়ে দিয়ে চলে এসে বিপদে পড়লে। নাহিদ তোমার কথা কোন দিন কিছুই বলে নাই আমাকে । সে আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং সম্মানও করে আমি বাধা দিবো ভেবে গোপন করেছে , এই জন্য তাকে আমার ভালো লাগে। টাকা দিয়ে তার অন্য বন্ধুরা তোমার প্রাপ্তবয়স্ক সনদ তৈরি করে দেয় যেদিন তোমাকে নিয়ে আসে সেইদিন সবাই গিয়ে আমাকে ধরে মাপ চায় । এবং বাসায় এসে তোমাকে দেখে আমার খুব মায়া হয় ভুলে যাই তার দেওয়া কষ্ট । কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও কিছু বখাটেদের কবল হতে মুক্ত করতে পারিনি । এই ব্যর্থতার ঢেউ এসে তোমার কপালে আজ আঘাত করলো বোন । (চলবে)।
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২৫তম পর্ব।
আমার একটা কথা ছিল বলার। শিউলীর মা তার বাবাকে বলে ।
কি কথা বলো ,আমার কাজের দেরী হচ্ছে।
আজ দুইদিন ধরে শিউলীর কথা খুব মনে পড়তেছে।তোমার মনে পড়লে আমি কি করবো ।
পাঁচ মাস হয়ে গেল মেয়েটা ঘর ছাড়লো। মেয়েটার জন্য আপনার একটু দয়ামায়া হয় না।
চুপ করো তুমি বাপের বুঝি মেয়ের জন্য দয়া হবে না। তাহলে খোজ কেন নিতে চান না ।
খোজ নিয়েছি তুমি জানো না।খোজ নিয়েছি পাড়া প্রতিবেশী জানে না । কারণ সবাই জানলে সমাজে থাকা দায় হবে, সমাজচ্যুত করবে আমাকে । আর মেয়েটা এইটা ভাবলো না গরিব মা বাবা অভাবের ভিতর কষ্ট করে সন্তান লালনপালন করে । সন্তানের মুখে আহার দিতে শত কষ্ট সহ্য করে এমন অকৃত্রিম ভালোবাসা ভুলে অন্যের হাত ধরে চলে যায়। শিউলীর এমন ঘৃণিত কাজে তার গরিব মা বাপকে সমাজের সর্দারগণ টুটি চেপে ধরবে তার বুঝা উচিত ছিল। তাকে সমাজে ফিরে আনতে হলে দশ হাজার টাকা সমাজকে জরিমানা দিতে হবে প্রভাবশালীদের চা নাস্তা খাওয়াতে হবে । আমি নিজে তোমাদের খাওয়াতে পারি না এইসব কি করে করবো। তাই চুপি চুপি খোজ করি যাতে তার খোজ পাই খবর পাই দেখা করতে পারি। যেখানে থাকুক ভালো থাকুক।
আমি যে তার মা আমার মন কি আর এতো সব বুঝে আমি মেয়েকে পেটে ধারণ করেছি আর আপনি নিয়েছেন পিঠে। সেও একদিন মা হবে তখন বুঝবে সন্তান হারিয়ে গেলে কিংবা সন্তান অবহেলা করলে কতটুকু কষ্ট পায় মা ।
ঠিক আছে ,আমি এখন যাই দেরী হচ্ছে আমার ।
ঠিক আছে যান , আমার কিছুই ভালো লাগে না উঠতে বসতে মেয়েটার কথা মনে পড়ে কিন্তু আজ দুইদিন বেশী মনে পড়ছে তাই কিছু খেতেও ভালো লাগে না গায়ে যেন জ্বালা পোড়া করছে জানি না মেয়েটার কোন বিপদ হলো কিনা । পড়ার টেবিল বিছানাপত্র দেখলে মেয়ের স্মৃতি মনে ভেসে উঠে আসলে বুঝতেই পারিনি মেয়ে বিয়ে করার মত বড় হয়ে গিয়েছে , মাঝে মাঝে মন খুব লাগে।
হ্যালো ভাবি আমি শিউলীর মা । আসসামুলাইকুম।
ওয়ালাইকুম সালাম। কেমন আছেন ।
আমি ভালো আছি । আপনি কেমন আছেন । মৌরি মা কেমন আছে । চাচীম্মা কেমন আছে , ওরা কি আজ ফোন করেছে আপনাকে।
হ্যা সবাই ভালো আছে , সকালে ফোন দিয়েছে । শিউলীর বাবা কেমন আছে । শিউলীর কোন খোজ পেলেন ।
উনি ভালো আছে । না ভাবি এখনো কোন খোজ খবর পাইনি । আল্লাহ জানে কোথায় আছে।
এইটা কেমন কথা হলো আপনারা এখনো খোজ নিলেন না আর আমাকে জানালেন না। মেয়েটার কি হলো জানা দরকার ছিলো। এইটা আপনারা ঠিক করেননি।
আমি কি করতে পারি যদি মেয়ের বাবা খোজ না নেয় উনি বলে খোজ নিচ্ছে। এদিকে বাড়ির মানুষ সমাজের মানুষ নানা কানাঘুষো করছে এসবের ভয়ে প্রকাশ্যে উনি কিছু করে না।
আহারে, আচার্য ব্যাপার আপনারা আমাকেও জানাচ্ছেন না কেন।
আজ কয়েকদিন আমার মন মেয়েটার জন্য বেশী অস্থির লাগতেছে কিছুই সহ্য হচ্ছে না তাই আপনার সাথে কথা বলে মন হালকা করতেছি।
আচ্ছা শুনেন শিউলীর বাবা আসলে আমাকে ফোন দিতে বলবেন আমি উনার সাথে কথা বলে দেখবো। ঠিক আছে ভাবি আপনি একটু সাহায্য করেন ভাবি আমি আর মেয়েটা ছাড়া থাকতে পারছি না ।
দেশে চারিদিকে যেভাবে নারী নির্যাতিত হচ্ছে প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে এই অবস্থায় চুপ থাকা ঠিক হয়নি। আপনারা ভুল করছেন। (চলবে)।
২১ তম পর্ব।
“পাখি উড়াল দিলো‘রে । উড়ালি হইয়া আগের মত খায় না দানা । হাতে বসিয়া পাখি উড়াল দিলো‘রে। কানের কাছে ঠোঁট লাগাইয়া শিখাইলাম কথা I আগে যদি যানতাম পাখি সব হবে অযথা । ”
শুধু গান শুনলে হবে , গান শুনার সাথে সাথে কাজও করতে হবে । না হয় রান্নাও হবে না, খাওয়াও হবে না। আরে নাহিদ মিয়া রান্না নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। যথাসময় আপনার সামনে খাবার এসে যাবে। তাই যেন হয় । আজকাল তুমি একটু গানে মনোযোগী তাই বলি দাও না একটা মোবাইল আমাকে । তুমি কয়েকদিন আগে তিনটা নতুন মোবাইল নিয়ে এসে ছিলে আজ আবার দেখছি না । কোথায় ফেলে আবার কি করেছো কিছুই জানলাম না । ওইখান হতে আমাকে একটা মোবাইল দিতেই পারো নাহিদ। তুমি যখন বাসায় থাকো না আমি একা একা সময় কাটাতে কষ্ট হয়, মন খারাপ হয়। তাই একটা মোবাইল হলে আমি গান শুনতে পারতাম । মন ভালো থাকতো । আর ইউটিউবে বিভিন্ন রান্না শিখে তোমাকে রান্না করে খাওয়াতে পারবো । একটা কথা বলার ছিল , তোমার শুনার সময় হবে । আরে যে কোন কথা মনে সাহস নিয়ে বলে ফেলো। আগে মোবাইল নিয়ে আসলে , এখন আবার অনেক বাজার করে আনলে টাকা কোথায় পেয়েছো নাহিদ। আরে তোমার এত কিছু জেনে কোন কাজ আছে । আমার জামাগুলি সব খারাপ হয়ে গিয়েছে তুমি দেখছো না। যদি টাকা থাকে আমার জন্য অন্তত একটা জামা হলেও এনে দাও। এক মাসের হলেও বাসা ভাড়া দাও যাতে সোবহান মিয়া ভাড়া চাইতে কিছু দিন না আসে তাহলে আমি স্বস্তি পেতাম । চেষ্টা করতেছি ,কয়েকটা দিন ধৈর্য্য ধরতে হবে যে ।জেনে শুনে আমি বিষ পান করেছি। জেনে শুনেই তোমার জন্য বৈরাগনী হয়েছি তাই ধৈর্য্যই আমার এখন সুখ। এই সুখের রাজ্যে তুমিই রাজ।
তুমি পাশে থাকলে আটকানো থাকবে অশ্রু জল,বয়ে যেতে দিবো না এক ফোটাও টলমলে। শাইন করবো , রোজ রোজ নতুন করে সাজিয়ে রাখবো আমার আঙিনা , প্রতিটি অসুন্দরকে উপড়ে ফেলবো সুন্দরের সাদা পর্দায় । একদম সহজ উপসর্গে রচবো জীবনের সংবিধান , সাগর মহাসাগর চমকে যাবে কমনীয় আয়োজনে। সোনা কিংবা হিরার মতো উচ্ছ্বাসে ভালোবাসবো তোমাকে । অবজ্ঞা আর উদ্বিগ্নকে হাওয়ায় মিশিয়ে দিবো হাসি তামাশায় । জীবনের কলামে রাখবো শিরোনাম করে উদ্দীপ্ত নয়নে ,জীবনের পাতায় পাতায় সুগন্ধী ছড়াবে সযত্নে। বছর বছর দ্বিগুণ উৎসাহে রাঙাবো মনের সূর্যশিশির। ক্ষোভের আগুনে পানি ঢেলে নিজেকে রাখবো শীতল । তুমি থাকলে পাশে পরিহার করবো সমস্ত অনিয়মের কালাকানুন। দৈন্যতা ঘুচাবো চঞ্চল কর্ম তৎপরতায় । তুমি পাশে থাকলে পৃথিবীর রানী আমিই। সুখের শৃঙ্খলা বিরাজ করবে, বাজবে বাঁশি সুরের লহর তুলে। দূরত্বের দরোজায় তালা ঝুলিয়ে থাকবো পাশাপাশি আর দেখবো সহমর্মিতার আয়নায় তুমি আর আমি। বেঁধে নিবো আগের মতো সুখ সুখ অনুভবে গাঁথবো সংসার মালা বকুল ফুলের সুভাষে। নুপুরের তালে তালে এই চঞ্চল চপলা সোনার সংসার সুখে সুখে রবে।
আরে বাহ তুমি দার্শনিকের মত কথা বলো শিউলী। কি যে বলো । আমি কি এত জ্ঞানী যে দার্শনিক হবো।আসলে তোমার কথাগুলো শুনতে অনেক ভালো ।
আমার এখানে সব কিছু অচেনা শুধু তুমি ছাড়া । সম্পূর্ণ নতুন শহরে আমি , মনে হয় এখানে আমি যাযাবর । তুমি পাশে থাকলে নিজেকে চেনা মনে হয়। থাকে না ঘুমিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা , থাকে না আতংক।মনে এই সভ্য নগরের অলি গলি সব আমার আত্মীয় সব আমার অনেক চেনা। চাই শুধু তোমার একটা চাকরী । তখন আমরা অভিসারী হবো । সিনেমা দেখতে হলে যাবো , বসে বসে আইসক্রীম খাবো। এইটা আমার পছন্দ । তোমার পছন্দ কালো রংয়ের চা। তুমি ঘন ঘন আদা লেবুর রং চা খাবে আমি খাবো একটার পর একটা আইসক্রীম । হিঃ হিঃ হিঃ ।
পাগলী , বাচ্চা মেয়ের মত হাসে । অবশ্যই হাসলে তোমাকে সাদা দপদপে রাজহংসী মনে হয় ।
বিছানায় অনায়াসে শুয়ে থাকবে এক ফালি আয়েশি সোনালী সুখ । মুঠো মুঠো সুখ দু'হাতে তুলে নিয়ে চোখে মুখে মাখিয়ে দিবো অজানা শিহরন ।
আমার দৃষ্টিতে নামবে উষ্ণ শীতলতা পবিত্র ইশারায় মহাসত্যের কাব্য রচনায় তুমি হবে ব্যস্ত। দেখার ভিতরে থাকতে থাকতে পাবে তুমি সেই পরম শান্তিময় বুকের উষ্ণতা । ওহ চমৎকার ।
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২২তম পর্ব।
আমরা একটি সুদীর্ঘ ভ্রমণের পথে আছি । এই ভ্রমণের মাঝে ক্লান্তি আসবে , অবসাদ আসবে , হতাশা আসবে , গতি মন্থর হবে এবং মাঝে মাঝে নাকে বিদখুটে দুর্গন্ধ আসবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্বাস রাখতে হবে সেটা সাময়িক , অল্প কিছু দিনের মধ্যে তা অতিক্রম করবো নিশ্চয়ই । এভাবেই জীবন নামের ভ্রমণ অতিক্রম করে আমাদেরকে শেষ গন্তব্যে পৌঁছতে হবে । আর সেই শেষ গন্তব্যই হলো চির বসন্তের চির স্থায়ী মহাসুখের আবাস্থল পরজনম । যেই জনমে জীবনের শুরু আছে শেষ নাই । ভালো কাজ দিয়ে সেখাানে আবাস নিশ্চিত করতে হয় । কিন্তু বেশ কিছু মানুষ আছে যারা দুনিয়াকে স্বর্গ ভেবে সম্পদের পাহাড়ে সুখের আবাস গড়ে তুলতে ব্যস্ত। আর এই ব্যস্ততাই মানুষ হয়ে পড়েছে লোভী ও দুর্নীতিবাজ । এই লোকগুলি সাধারণ মানুষের রক্ত পানি করা টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে করছে বিদেশে পাচার। বিদেশে গড়ে তুলছে বাড়ি , সেখানেই শুরু করছে কারবার। যাতে বিপদ আসলে দেশ হতে পালিয়ে বাঁচতে পারে। তারা কখনোই দেশ প্রেমিক নয়। এরা কখনো রাজনীতিবিদ, কখনো শিল্পপতি , আবার কখনো উভয় নামে পরিচিত।
এভাবে তাকিয়ে আছো কেন শিউলী ?
তোমার এই তাকিয়ে থাকা আমাকে তোমার মায়ায় আকৃষ্ট করে যে । তোমার দৃষ্টি আমাকে হৃদয়গ্রাহী করে। দিবে একটা চুমু আমায় , এক বার দিলে আর তোমাকে বিরক্ত করবো না । ইচ্ছে করে তোমাকে দুই বাহুতে জড়িয়ে আকাশে উড়াল দিতে। কারণ তোমার এই অকৃত্রিম ভালোবাসা আমাকে করে ব্যাকুল।
তোমার এই রহস্যময় চোখের ইশারায় আমি হই দিশাহারা । তোমার এই মায়াবী হরিণী চোখ মনে হয় মহাসাগর আর এই মহাসাগরে ভাসমান জাহাজের উদভ্রান্ত নাবিক আমি। যে কিনা সকল স্মৃতিশক্তি হারিয়ে মস্তিষ্কের খাতা খুলে বসে স্মৃতি থেকে সুর তুলতে চায়। কানে কানে বলি কথাটা নিগাদ সত্য ।
প্রয়োজনে বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে হবো সলিল সমাধি । তবুও দেহের ভালোবাসায় নয় মনের ভাালোবাসায় তোমাকে করে তুলবো মাতাল । আর এমনি প্রফেশনাল মাতালের মতই আদরে আদরে মিটিয়ে দিব তোমার চাওয়া । কি , তুমি ভাবছো নাটকের ডায়লগ । আরে আমি যে তোমার ভালোবাসার রাক্ষস । তুমি আর আমি দিনে এনে দিনে খাই তাই আমরা সুখী পরিবার। আমাদের স্বপ্ন আছে কিন্তু পরিমিত । আকাশের চাঁদ আমার ঘরে তাই আমি চাই না কৃত্রিম চাঁদ। তুমি আমার জোছনাময় চাঁদ । যে চাঁদে নেই কোন কালো দাগ।
জল নিয়ে খেলতে আমার খুব ভালো লাগে। তাই আমি মেঘের বন্ধু হয়ে মেঘ হতে বৃষ্টি ঝরাই । তবুও কেন জানি আমার বুকে অসীম মরুতারা ঝিলিক দেয়। একবুক ঊষ্ণতা নিয়ে আমি মর্ত্যে দাঁড়িয়ে জলের জন্য মেঘ খুজি । তুমি আমার সবুজ পৃথিবী বলে কতো মেঘের আল্পনা উড়াই পৃথিবীতে । শুধু একবার তুমি আমার স্বপ্ন সাগরে ক্লান্ত মাঝি হও।
ভালোবাসায় কোন নিরাপদ দূরত্ব হয় না সোনামণি । তারাময় আকাশ আর পৃথিবীর একটা সুন্দর সন্ধি থাকে। আমাদেরও সন্ধি থাকতে হবে কারণ বুকের এই ভূমিতে লিখা হয়েছে তোমার আমার মিলনের অযুত অক্ষর। হয়তোবা এরই নাম প্রেম।
এইভাবে অনন্ত কাল এই মরা প্রান্তরে ছেড়া ছেড়া জীবন নিয়ে আমরা সুখের আখড়া বানাবো।
বাংলার সবুজ শ্যামল মাঠে রাখাল বাউল গান ধরে। আর বুকের সবটুকু আবেগ উজাড় করে প্রাণের সুর সৃষ্টি করে । এখানে তুলসী তলায় রাধার প্রেমগীত হয় সন্ধ্যা বাতির সাথে সাথে নারী উলু ধ্বনি করে ঠাকুর ঘরে বাতি জ্বালায়। ছোট ছোট বাচ্চারা পড়ার টেবিলে বসে পড়ার জন্য। পড়া শেষে মা তাদের আদর করে ভাত খাওয়ায়। কোন কোন বাচ্চা বায়না ধরে কত কিছুর। মা তার ভালোবায় সব ভুলিয়ে দেয় আদরে আদরে । যেমন তুমিও করবে একদিন। বুকের ভিতর নিয়ে মা শুনায় “আয় আয় চাঁদমামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা”। (চলবে)।
মেয়ে ও মায়া ,মাদক ও রাষ্ট্র ।
২৩তম পর্ব। ।
জীবন কারো জন্য তো থেমে থাকেনা। পৃথিবী চলে পৃথিবীর নিয়মে। আর এটাই চলমান বাস্তবতা। যেমন খাল- বিল , সাগর -মহাসাগরে পানির স্রোত চলমান । নানা গাছে নানা ফুল ফোটে। ঝরে পড়া ফুলের খবর কতজনই রাখে? আবার ঝরে যাওয়া ফুলে মালা তৈরিতেও আমরা অভ্যস্ত নয় । আমরা বাগানের তাজা ফুলই ভালোবাসি। ঠিক তেমনি জীবন যুদ্ধে হোঁচট খাওয়া মানুষকে এড়িয়ে চলে সবাই। কারণ মানুষ ভাবে এই লোকটা অযোগ্য কিংবা অকর্মা । তবে কোন কাজে প্রথমবার কৃতকার্য না হলে শিক্ষা এবং সাহস নিয়ে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করা জরুরী । এমন অনেক প্রমাণ আছে যে দ্বিতীয় বার চমক লাগানো কৃতকার্যতা তার জীবনের মোড় ঘুরে দিয়েছে। তাই জীবনে চলার পথে প্রতিট কাজ হতে ভালো দিকটা শিখতে হবে। একজনের সাথে চলার সময় তার মন্দ দিকটা পরিহার করে চলে ভালো দিকটা গ্রহন করে নিজের জীবনে প্রয়োগ করা বুদ্ধিমানের কাজ। আর বুদ্ধিমান কখনো হতাশ হয় না নিরাশ হয় না । তারা একবার না পারলে দেখো শতবারে বিশ্বাসী । সৎ চিন্তা সৎ সাহস নিয়ে সফলতা অর্জন করা প্রত্যেক জীবনের ব্রত হওয়া বাঞ্ছনীয় । আর আমাদের মত মানুষের জন্য সততা , সাহস এবং মনোবল হল জীবনের সুস্বাদু টনিক । মাথায় রাখতে হবে আমি কে , কি করতে চাই এবং পারতে আমাকে হবেই।
রাইট আম্মু । জীবনকে সুন্দর করতে হলে সুন্দর চিন্তা মাথায় থাকা চাই। সম্পদহীনদের জন্য শিক্ষাই সম্পদ। শিক্ষা মানেই নিজেকে বিকশিত করা । শিক্ষায় সনদ অর্জন করে যেমন চাকরী পাওয়া লক্ষ্য থাকে তেমনি সেই চাকরীতে শতভাগ সততাপরায়ণ থাকা অপরিহার্য । তাহলে দেশ ও জাতি সামনের দিকে অগ্রসর হবে। আজকাল মানুষ সরকারী চাকরী ফেলে অল্প দিনেই কোটিপতি বনে যায় । নামে বেনামে সম্পদ গড়ে তোলে , ব্যাংকে জমা করে অঢেল টাকা। পুলিশে একটু উপরে পদধারী হলেই টাকার কুমির । ভূমি অফিসে চাপোষা কেরাণী হলেই টাকার কুমির । বিমান বন্দর কিংবা নদী বন্দরে চাকরী ফেলেই অল্প দিনেই টাকার কুমির । বিদ্যুৎ ,টেলিফোন কিংবা গ্যাস শাখায় চাকরী পেলেই টাকার কুমির। তাদের চোখ পড়ে না মাটিতে । ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করে । বাতাসের তালে তালে বেড়ে উঠে আঙ্গুল ফুলে গাছে পরিণত হয় । সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এরা রাজনৈতিক ছাতার নিচে নিজের দেহ নিরাপদ রাখে। শুরু করে ব্যবসা বাণিজ্য পাচার করে কাঠি কাঠি টাকা। বিদেশের ব্যাংকে এবং ব্যবসায় নিজেদের নিরাপত্তায় স্বস্তি মনে করে।আম্মু আমি একজন স্বচ্ছ মানুষ থাকতে চাই। মন এবং মননে দেশ প্রেম গচ্ছিত রাখতে চাই আমৃত্যু।
তাই বিদেশ হতে পড়াশোনা শেষ করে নিজ দেশে ফিরে আসাই দেশ প্রেম। অবশ্যই প্রতিকূল পরিবেশও থাকে কারো কারো তাই ইচ্ছে করলেও ফেরত আসতে পারে না । তবে তারাও দেশের মঙ্গল কামনা করে। দেশের একটা ভালো খবরে মন আন্দোলিত হয় তাদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের মানুষের জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করে। কারণ সে লোক বুকে লালন করে প্রিয় স্বদেশকে । তারপরও , পৃথিবীময় ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা জ্ঞানী গুণী , সৎ এবং দক্ষ মানুষকে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা দরকার আম্মু । তাঁদের ভিতর হতে সত্যকার দেশ প্রেমিকদের দেশের রাজনীতিতে জড়িত হওয়া দরকার । যারা ভালোবাসবে কথা নয় কাজ । যারা মিথ্যায় নয় সত্যিকারে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশকে উন্নতির দিকে। অবশ্যই বর্তমান রাজনীতি ঘুণে ধরা আমার একদম অপছন্দ কুটিল এই রাজনীতি । তোমার এই রাজনীতি নিয়ে ভাবতে হবে না । আর সবসময় সাবধানে চলাফেরা করবে মৌরি। আমার মন পড়ে থাকবে তোমার কাছে। কালকে তোমার মামা সব কাগজপত্র দিয়ে যাবে। লন্ডন পৌছে গিয়ে আম্মুকে ফোন দিবে (চোখের কোণায় জল )। আমি অনেক একা হয়ে যাবো মৌরি। রোজ রোজ ফোন দিয়ে কথা বলবে আমার সাথে। ওহ! আম্মু মন খারাপ করো না । আমি সহ্য করতে পারবো না। আমরা মা মেয়ে একে অপরের পরিপূরক । আমারও মন পড়ে থাকবে আম্মু তোমার কাছে। (চলবে)।
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২৪৩ম পর্ব।
আকাশের ওপারে জোছনাময় চাঁদ। চাঁদের আলো আর কাঁশফুলে মাঝে সংসার নামক স্বর্গ । অথচ এই স্বর্গীয় সুখ পদদলিত করে কখনো কখনো পুরুষ কিংবা নারী পা বাড়ায় নরক নামক আগুনে।
কাশবনে হাঁটার অন্যরকম একটা আনন্দ আছে। চড়ুই ও অচেনা পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত থাকে চারপাশের সবুজ প্রকৃতি। মাথার উপর তুলোর মত সাদা সাদা কাশফুল মাঝখানে স্বর্গীয় অনুভূতি। একটা কাশফুল আমার গাল ছুঁয়ে যেতেই চোখে ভাসে সংসারের টক ঝাল মিষ্টি মধুর খন্ড খন্ড স্মৃতি সুখ। অনেক সময় অনেক যুগল একসাথে কাশফুল দেখে রোমাঞ্চিত হয় । কাশফুলের নরম আলতো স্পর্শে পুলকিত হয় যুগলের মন। আকাশের ওপারে হে চাঁদ তুমি বড্ড একা ও বড্ড দূর । সংসারেও একত্রে বাস করে কখনো কখনো চেনা হয় না একে অপরকে। আমি আজও চিনতে পারিনি নাহিদক।
প্রতিদিন ফজরের আযান দিলেই নাহিদ বাসায় এসে যায় কিন্তু আজ এখনো আসে নাই অথচ সকাল হয়ে গেল। কোথায় গেলো কার কাছে জিজ্ঞাসা করবো ? আমি এখানে কাউকে চিনি না জানি না অথচ আমাকে একা ফেলে কোথাও গেলে তার আর খবর থাকে না। প্রতিদিন সকাল সকাল একসাথে বসে চা নাস্তা করি আর আজ নয়টা বাজে নাহিদ এখনো এলো না ।
হ্যালোঃ সুজন ভাই আমি আমি শিউলী ।
কেমন আছো। নাহিদ কেমন আছে।
জ্বী ভালো আছি । নাহিদ রাতে বাসায় ফিরে নাই । আপনি কি জানেন কোথায় গেল ।
তাই , আমি রাতে কাজে ব্যস্ত ছিলাম আমার সাথে দেখা কিংবা কোন কথা হয়নি । শুনো আমি তার অন্য বন্ধুদের হতে খোজ খবর নিয়ে তোমাকে ফোন দিবো একটু পর তুমি চিন্তা করো না শিউলী।
ভাইয়া ঠিক আছে কিন্তু খবু ভয় লাগছে একা একা।
আরে পাগলী ভয় পাওয়ার কি আছে ।
শিউলী শিউলী , দরজা খোল আমি তোর সুজন ভাই।
আসেন ভাইয়া ভিতরে আসেন , বসেন আমি চা করি।
না থাক এখন কিছু খাবো না আমি নাস্তা করেই তোমার বাসায় এসেছি নাহিদের খবর বলতে । শুনো , কাল রাতে নাহিদকে ইয়াবাসহ পুলিশ ধরে ফেলছে এখন থানায় আছে আমি তোমাকে বলে থানায় যাবো।
ভাইয়া এখন আমার কি হবে কোথায় যাব আমি। আহারে কান্না বন্ধ কর। তুই মন শক্ত করে এখানে থাকতে হবে । কোন কিছু দরকার হলে আমাকে বলবে আর নাহিদকে বাহির করতে আমি চেষ্টা করবো । সে আমার বন্ধু হলেও তুমি আমার ছোট বোন , তোমার জন্য হলেও নাহিদকে বাহির করতে সব চেষ্টাই আমি করবো তুমি টাকা পয়সা নিয়ে ভাবতে হবে না । শুধু নিজেকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখে চেষ্টা করবে ।
সেইটাই ভয় হচ্ছে ভাইয়া । সোবহান মিয়া লোক ভালো না যখনি শুনবে নাহিদ জেলে তখনি এসে যাবে বাসা ছাড়তে বলবে আর কয়েক মাসের ভাড়াও বাকি। আমি মরা ছাড়া আর কনো পথ নাই
আসলে সমস্যাটা কঠিন এখন নাহিদকে বাহির করাই বেশী দরকার কিন্তু বাসা ভাড়া তাহাছাড়া তুমিও একা ! তোমার মা বাপকে ------ ।
ভাইয়া তাঁরা আমাকে পেলে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিবে।
নাহিদের পরিবারও কোন সাহাস্য করে কিনা ঠিক নাই। সে আগে ভালো ছিল মোটামুটি সচ্ছল পরিবারের ছেলে কিন্তু সঙ্গ দোষে বখাটে হয়ে পড়ে । পড়ালেখা ছেড়ে মাদকের নেশায় ডুবে তার পরে আবার তোমাকে বাগিয়ে নিয়ে আসে বিয়ে করে। আর তুমিও কম বয়সে খোজ খবর ছাড়া মা বাপ ছেড়ে দিয়ে চলে এসে বিপদে পড়লে। নাহিদ তোমার কথা কোন দিন কিছুই বলে নাই আমাকে । সে আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং সম্মানও করে আমি বাধা দিবো ভেবে গোপন করেছে , এই জন্য তাকে আমার ভালো লাগে। টাকা দিয়ে তার অন্য বন্ধুরা তোমার প্রাপ্তবয়স্ক সনদ তৈরি করে দেয় যেদিন তোমাকে নিয়ে আসে সেইদিন সবাই গিয়ে আমাকে ধরে মাপ চায় । এবং বাসায় এসে তোমাকে দেখে আমার খুব মায়া হয় ভুলে যাই তার দেওয়া কষ্ট । কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও কিছু বখাটেদের কবল হতে মুক্ত করতে পারিনি । এই ব্যর্থতার ঢেউ এসে তোমার কপালে আজ আঘাত করলো বোন । (চলবে)।
মেয়ে ও মায়া , মাদক ও রাষ্ট্র ।
২৫তম পর্ব।
আমার একটা কথা ছিল বলার। শিউলীর মা তার বাবাকে বলে ।
কি কথা বলো ,আমার কাজের দেরী হচ্ছে।
আজ দুইদিন ধরে শিউলীর কথা খুব মনে পড়তেছে।তোমার মনে পড়লে আমি কি করবো ।
পাঁচ মাস হয়ে গেল মেয়েটা ঘর ছাড়লো। মেয়েটার জন্য আপনার একটু দয়ামায়া হয় না।
চুপ করো তুমি বাপের বুঝি মেয়ের জন্য দয়া হবে না। তাহলে খোজ কেন নিতে চান না ।
খোজ নিয়েছি তুমি জানো না।খোজ নিয়েছি পাড়া প্রতিবেশী জানে না । কারণ সবাই জানলে সমাজে থাকা দায় হবে, সমাজচ্যুত করবে আমাকে । আর মেয়েটা এইটা ভাবলো না গরিব মা বাবা অভাবের ভিতর কষ্ট করে সন্তান লালনপালন করে । সন্তানের মুখে আহার দিতে শত কষ্ট সহ্য করে এমন অকৃত্রিম ভালোবাসা ভুলে অন্যের হাত ধরে চলে যায়। শিউলীর এমন ঘৃণিত কাজে তার গরিব মা বাপকে সমাজের সর্দারগণ টুটি চেপে ধরবে তার বুঝা উচিত ছিল। তাকে সমাজে ফিরে আনতে হলে দশ হাজার টাকা সমাজকে জরিমানা দিতে হবে প্রভাবশালীদের চা নাস্তা খাওয়াতে হবে । আমি নিজে তোমাদের খাওয়াতে পারি না এইসব কি করে করবো। তাই চুপি চুপি খোজ করি যাতে তার খোজ পাই খবর পাই দেখা করতে পারি। যেখানে থাকুক ভালো থাকুক।
আমি যে তার মা আমার মন কি আর এতো সব বুঝে আমি মেয়েকে পেটে ধারণ করেছি আর আপনি নিয়েছেন পিঠে। সেও একদিন মা হবে তখন বুঝবে সন্তান হারিয়ে গেলে কিংবা সন্তান অবহেলা করলে কতটুকু কষ্ট পায় মা ।
ঠিক আছে ,আমি এখন যাই দেরী হচ্ছে আমার ।
ঠিক আছে যান , আমার কিছুই ভালো লাগে না উঠতে বসতে মেয়েটার কথা মনে পড়ে কিন্তু আজ দুইদিন বেশী মনে পড়ছে তাই কিছু খেতেও ভালো লাগে না গায়ে যেন জ্বালা পোড়া করছে জানি না মেয়েটার কোন বিপদ হলো কিনা । পড়ার টেবিল বিছানাপত্র দেখলে মেয়ের স্মৃতি মনে ভেসে উঠে আসলে বুঝতেই পারিনি মেয়ে বিয়ে করার মত বড় হয়ে গিয়েছে , মাঝে মাঝে মন খুব লাগে।
হ্যালো ভাবি আমি শিউলীর মা । আসসামুলাইকুম।
ওয়ালাইকুম সালাম। কেমন আছেন ।
আমি ভালো আছি । আপনি কেমন আছেন । মৌরি মা কেমন আছে । চাচীম্মা কেমন আছে , ওরা কি আজ ফোন করেছে আপনাকে।
হ্যা সবাই ভালো আছে , সকালে ফোন দিয়েছে । শিউলীর বাবা কেমন আছে । শিউলীর কোন খোজ পেলেন ।
উনি ভালো আছে । না ভাবি এখনো কোন খোজ খবর পাইনি । আল্লাহ জানে কোথায় আছে।
এইটা কেমন কথা হলো আপনারা এখনো খোজ নিলেন না আর আমাকে জানালেন না। মেয়েটার কি হলো জানা দরকার ছিলো। এইটা আপনারা ঠিক করেননি।
আমি কি করতে পারি যদি মেয়ের বাবা খোজ না নেয় উনি বলে খোজ নিচ্ছে। এদিকে বাড়ির মানুষ সমাজের মানুষ নানা কানাঘুষো করছে এসবের ভয়ে প্রকাশ্যে উনি কিছু করে না।
আহারে, আচার্য ব্যাপার আপনারা আমাকেও জানাচ্ছেন না কেন।
আজ কয়েকদিন আমার মন মেয়েটার জন্য বেশী অস্থির লাগতেছে কিছুই সহ্য হচ্ছে না তাই আপনার সাথে কথা বলে মন হালকা করতেছি।
আচ্ছা শুনেন শিউলীর বাবা আসলে আমাকে ফোন দিতে বলবেন আমি উনার সাথে কথা বলে দেখবো। ঠিক আছে ভাবি আপনি একটু সাহায্য করেন ভাবি আমি আর মেয়েটা ছাড়া থাকতে পারছি না ।
দেশে চারিদিকে যেভাবে নারী নির্যাতিত হচ্ছে প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে এই অবস্থায় চুপ থাকা ঠিক হয়নি। আপনারা ভুল করছেন। (চলবে)।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রূপক কুমার রক্ষিত ৩০/০৬/২০২০ভাল লিখেছেন। ধন্যবাদ।
-
শাহীন রহমান (রুদ্র) ২৯/০৬/২০২০অসাধারণ! আপনার লেখায় বিমোহিত।
-
রায়হান আহমেদ রাজীব ২৯/০৬/২০২০অসাধারণ একটি লেখা
-
মশিউর ইসলাম (বিব্রত কবি) ২৬/০৬/২০২০এতটা অসাধারণ লিখেছেন, মনোমুগ্ধকর আবেশ।
চলুক অনেক পর্ব, আমরা সিক্ত হই লেখার ঝর্ণায় -
কে এম শাহ্ রিয়ার ২৪/০৬/২০২০অসাধারণ প্রকাশ! ভালো লাগলো!
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ২৩/০৬/২০২০সুন্দর।
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২২/০৬/২০২০বেশ! বেশ!
-
বোরহানুল ইসলাম লিটন ২২/০৬/২০২০সাবলিল উপস্থাপন।
-
Md. Rayhan Kazi ২২/০৬/২০২০বাহ্
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২১/০৬/২০২০সবটা পড়ি আগে।
লিখতে থাকুন। -
কুমারেশ সরদার ২১/০৬/২০২০চমৎকার