পুতুল বৌ
কোন একটা প্রয়োজনে ফোন নাম্বারটা যোগাড় করি। ডায়াল করি সে নাম্বারে। ও পাশ থেকে ভেসে আসে দরাজ কন্ঠ, হ্যালো । আমি এ পাশ থেকে আমতা আমতা করে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা শুরু করি। আসলে পরিচয় দেয়ার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না আমার। কথার ফাঁকে তার একটা কথা হঠাৎ যেন আমার অশান্ত সত্ত্বাটাকে শান্ত করে দেয়। কথা শেষে ফোনটা রেখে দেই।
খানিকটা পরে ঐ নাম্বার থেকেই ফোন আসে। ধরলাম। নতুন একটা নাম্বার দিয়ে বললো, এটা তার অফিসিয়াল নাম্বার অতএব আমি যেন ঐ নতুন নাম্বারে কথা বলি। ব্যস শুরু। আমি-ই ফোন দেই তাকে। শিষ্টাচারের সীমানায় থেকে কথা চালিয়ে যেতে চাই। সেও বলে। কিন্তু তার কথায় যেন আন্তরিকতা একটু বেশী। আমাকে শক্তি যোগায় সে কথা। আমার কেন যেন শুনতে ভাল লাগে।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তা আর শুধু শক্তি দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। তার একটু দুষ্টুমী, একটু খুনসুঁটি আমাকে অন্য এক ভাল লাগায় নিয়ে যেতে চায়। নিজেকে বোঝাই- "তোমার সীমানা মনে রেখো।" মন আমার খুব বেয়াড়া না। বোঝে।
এভাবে একটু একটু কথা, টুকরো টুকরো হাসি, আর ওর দুষ্টুমী আমাকে কোথায় যেন ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সারাদিন ওর কথা শুনতে ইচ্ছে করে, কিন্তু ওকে কিছু বলতে ইচ্ছে করে না। মজার ব্যাপার হলো আমি সারাদিন ওর সাথে মনে মনে অনেক কথা বলতে শুরু করলাম। সারাদিনে কত কথা যে বলি তা যদি ও জানতো নির্ঘাত আমাকে পাগল ভাবতো।
আমার সব কষ্টগুলোকে সে কোথায় যেন পাঠিয়ে দিল। আমার সারাদিন এত ভাল লাগে যা বলে বোঝানো যাবে না। আমি ফুরফুরে প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়াই, আমার সব কাজ শেষ করি আর মনে মনে তার সাথে কথা বলতে থাকি। আমি ওর নাম দিলাম "আনন্দ"। ও আমার ব্যথা ভরা জীবনে হঠাৎ পাওয়া এক আকাশ আনন্দ।
আমার জীবনের চাকা ঘোরে এখন আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আর আমার আনন্দকে ঘিরে। ওর এক একটা কথা আমার জন্য শক্তির টনিক হয়ে দাঁড়ায়। তাই এবার নাম দিলাম "এনার্জী ফিল্ড"। আমার কানে সারাদিন শুধু ওর কথাই বাজে। অত সুন্দর করে কথা বলে কি করে ও? কি আছে ওর কথায়? জাদু না মধু?
আমি যখন ওর কথা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি, যখন ওর কথা ছাড়া আমার জীবন প্রায় অচল ঠিক সেই সময় সে যেন কেমন অচেনা হয়ে যেতে থাকে। খুব কষ্ট হয় আমার, আমি অঝোরে কাঁদি। আমি ওকে ভুলতে পারি না। আমার কানে শুধু ওর কথা, ওর গান ভেসে আসে।
বেশ কিছুদিন এভাবে কেঁদে কেঁদে নিজেকে কিছুটা শান্ত করে আনি, কিন্তু মনটা আমার ওর কাছেই। একাকী জীবনের নিঃসঙ্গতায় ও ছিল আমার সাথী। ওকে কাছে পাবার জন্য, ওর সান্নিধ্যে থাকার জন্য কত যে ফিকির করি। ও কবিতা ভালবাসে, ও কবিতা লেখে। শুধু ওর কাছে যাওয়ার জন্য কলম তুলে নিলাম হাতে। লিখতে শুরু করি। ছাইপাশ কিছু হয় কি না জানি না কিন্তু ওর কাছে যাওয়ার পথ খুলে যায়। ও আমাকে কবি হিসেবে কাছে টেনে নেয়। আহ কি সুখ! এইতো ছিল আমার চাওয়া।
আমি এখন কবি, স্বীকৃত কবি। বেশ কাটছে সময়। কবিরূপে আমি আমার কবির আশেপাশে ঘুরি। আর কি চাই?
মনে হচ্ছে আমি কবিকে ভালবেসে ফেলেছি। মন আমার কেমন কেমন যেন করে। বুঝি, এ প্রকাশযোগ্য কোন অনুভূতি নয়। অতএব থাক মনবন্দি হয়ে। পারলাম না, একদিন ধরা পড়ে গেলাম ওর কাছে। সাহস দিল ও। বললো আমি ওকে ভালবাসতে পারি নির্ভয়ে। আমি অনেকটা হাল্কা হয়ে গেলাম।
আমার ভালবাসার কথা জেনেছে জানুক, আমি আর এগুতে চাই না। কিন্তু ও যেন একটু বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠলো। টান দিল আমার ঘুমন্ত এক সত্ত্বা ধরে। আমি পাগল হয়ে উঠি ওর জন্য। তবু নিজেকে ধরে রাখতে শেষ চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠি। ওকে অনুরোধ করি আমাকে যেন শুধু কবি হিসেবেই ওর পাশে থাকতে দেয়, এতেই আমি খুশী। আসলে সম্পর্কটা অন্যদিকে গেলে যদি ওকে হারাই এই ছিল আমার ভয়।
শুনলো না। ওর ভালবাসার স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। আমাকে আরো কাছে টেনে নেয়। আমি হয়ে গেলাম ওর পুতুল বৌ। অসাড় হয়ে গেলাম নতুন পরিচয়ে। আমাকে নিয়ে খেললো ওর ইচ্ছেমতো। আমি বুঝিনি এটা ওর স্রেফ খেলা। ওর প্রেমে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই হঠাৎ একদিন বন্ধ করে দিল ওর দরজা।
আমি চিৎকার করি দরজা খুলে দেয়ার জন্য, ওকে দেখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি। কিন্তু দরজা আর খোলে না। আকস্মিক এই ধাক্কায় বেসামাল হয়ে পড়ি, সিদ্ধান্ত নেই মরে যাবো। এই জীবনে আর প্রতারণা সইবো না। ওর জন্য প্রাণটা আমার ছটফট করে। আমার যে ওকে ছাড়া চলবে না। ও যে আমার "আনন্দ" আমার "এনার্জী ফিল্ড"। আকাশে, বাতাসে সবখানে ওকে দেখি। ওর ডাক আমার কানে অহর্নিশি বাজে। ব্যাকুল হয়ে কাঁদি। শোনে না ও। খোলে না দ্বার। বুঝলাম আমি প্রতারিত হয়েছি। তবু মন যে মানে না। ওকেই চায়।
জানি না কিভাবে মনটাকে শক্ত করে নিলাম। মরার কথা এখন আর ভাবি না। কারণ আমার বিশ্বাস সে দরজা একদিন খুলবেই, খুলতে তাকে হবেই। নিখাঁদ প্রেম কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। তাই বসে আছি ওর দরজা খোলার অপেক্ষায়, ওর ডাকের অপেক্ষায়...........................
খানিকটা পরে ঐ নাম্বার থেকেই ফোন আসে। ধরলাম। নতুন একটা নাম্বার দিয়ে বললো, এটা তার অফিসিয়াল নাম্বার অতএব আমি যেন ঐ নতুন নাম্বারে কথা বলি। ব্যস শুরু। আমি-ই ফোন দেই তাকে। শিষ্টাচারের সীমানায় থেকে কথা চালিয়ে যেতে চাই। সেও বলে। কিন্তু তার কথায় যেন আন্তরিকতা একটু বেশী। আমাকে শক্তি যোগায় সে কথা। আমার কেন যেন শুনতে ভাল লাগে।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তা আর শুধু শক্তি দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। তার একটু দুষ্টুমী, একটু খুনসুঁটি আমাকে অন্য এক ভাল লাগায় নিয়ে যেতে চায়। নিজেকে বোঝাই- "তোমার সীমানা মনে রেখো।" মন আমার খুব বেয়াড়া না। বোঝে।
এভাবে একটু একটু কথা, টুকরো টুকরো হাসি, আর ওর দুষ্টুমী আমাকে কোথায় যেন ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সারাদিন ওর কথা শুনতে ইচ্ছে করে, কিন্তু ওকে কিছু বলতে ইচ্ছে করে না। মজার ব্যাপার হলো আমি সারাদিন ওর সাথে মনে মনে অনেক কথা বলতে শুরু করলাম। সারাদিনে কত কথা যে বলি তা যদি ও জানতো নির্ঘাত আমাকে পাগল ভাবতো।
আমার সব কষ্টগুলোকে সে কোথায় যেন পাঠিয়ে দিল। আমার সারাদিন এত ভাল লাগে যা বলে বোঝানো যাবে না। আমি ফুরফুরে প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়াই, আমার সব কাজ শেষ করি আর মনে মনে তার সাথে কথা বলতে থাকি। আমি ওর নাম দিলাম "আনন্দ"। ও আমার ব্যথা ভরা জীবনে হঠাৎ পাওয়া এক আকাশ আনন্দ।
আমার জীবনের চাকা ঘোরে এখন আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আর আমার আনন্দকে ঘিরে। ওর এক একটা কথা আমার জন্য শক্তির টনিক হয়ে দাঁড়ায়। তাই এবার নাম দিলাম "এনার্জী ফিল্ড"। আমার কানে সারাদিন শুধু ওর কথাই বাজে। অত সুন্দর করে কথা বলে কি করে ও? কি আছে ওর কথায়? জাদু না মধু?
আমি যখন ওর কথা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি, যখন ওর কথা ছাড়া আমার জীবন প্রায় অচল ঠিক সেই সময় সে যেন কেমন অচেনা হয়ে যেতে থাকে। খুব কষ্ট হয় আমার, আমি অঝোরে কাঁদি। আমি ওকে ভুলতে পারি না। আমার কানে শুধু ওর কথা, ওর গান ভেসে আসে।
বেশ কিছুদিন এভাবে কেঁদে কেঁদে নিজেকে কিছুটা শান্ত করে আনি, কিন্তু মনটা আমার ওর কাছেই। একাকী জীবনের নিঃসঙ্গতায় ও ছিল আমার সাথী। ওকে কাছে পাবার জন্য, ওর সান্নিধ্যে থাকার জন্য কত যে ফিকির করি। ও কবিতা ভালবাসে, ও কবিতা লেখে। শুধু ওর কাছে যাওয়ার জন্য কলম তুলে নিলাম হাতে। লিখতে শুরু করি। ছাইপাশ কিছু হয় কি না জানি না কিন্তু ওর কাছে যাওয়ার পথ খুলে যায়। ও আমাকে কবি হিসেবে কাছে টেনে নেয়। আহ কি সুখ! এইতো ছিল আমার চাওয়া।
আমি এখন কবি, স্বীকৃত কবি। বেশ কাটছে সময়। কবিরূপে আমি আমার কবির আশেপাশে ঘুরি। আর কি চাই?
মনে হচ্ছে আমি কবিকে ভালবেসে ফেলেছি। মন আমার কেমন কেমন যেন করে। বুঝি, এ প্রকাশযোগ্য কোন অনুভূতি নয়। অতএব থাক মনবন্দি হয়ে। পারলাম না, একদিন ধরা পড়ে গেলাম ওর কাছে। সাহস দিল ও। বললো আমি ওকে ভালবাসতে পারি নির্ভয়ে। আমি অনেকটা হাল্কা হয়ে গেলাম।
আমার ভালবাসার কথা জেনেছে জানুক, আমি আর এগুতে চাই না। কিন্তু ও যেন একটু বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠলো। টান দিল আমার ঘুমন্ত এক সত্ত্বা ধরে। আমি পাগল হয়ে উঠি ওর জন্য। তবু নিজেকে ধরে রাখতে শেষ চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠি। ওকে অনুরোধ করি আমাকে যেন শুধু কবি হিসেবেই ওর পাশে থাকতে দেয়, এতেই আমি খুশী। আসলে সম্পর্কটা অন্যদিকে গেলে যদি ওকে হারাই এই ছিল আমার ভয়।
শুনলো না। ওর ভালবাসার স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। আমাকে আরো কাছে টেনে নেয়। আমি হয়ে গেলাম ওর পুতুল বৌ। অসাড় হয়ে গেলাম নতুন পরিচয়ে। আমাকে নিয়ে খেললো ওর ইচ্ছেমতো। আমি বুঝিনি এটা ওর স্রেফ খেলা। ওর প্রেমে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই হঠাৎ একদিন বন্ধ করে দিল ওর দরজা।
আমি চিৎকার করি দরজা খুলে দেয়ার জন্য, ওকে দেখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি। কিন্তু দরজা আর খোলে না। আকস্মিক এই ধাক্কায় বেসামাল হয়ে পড়ি, সিদ্ধান্ত নেই মরে যাবো। এই জীবনে আর প্রতারণা সইবো না। ওর জন্য প্রাণটা আমার ছটফট করে। আমার যে ওকে ছাড়া চলবে না। ও যে আমার "আনন্দ" আমার "এনার্জী ফিল্ড"। আকাশে, বাতাসে সবখানে ওকে দেখি। ওর ডাক আমার কানে অহর্নিশি বাজে। ব্যাকুল হয়ে কাঁদি। শোনে না ও। খোলে না দ্বার। বুঝলাম আমি প্রতারিত হয়েছি। তবু মন যে মানে না। ওকেই চায়।
জানি না কিভাবে মনটাকে শক্ত করে নিলাম। মরার কথা এখন আর ভাবি না। কারণ আমার বিশ্বাস সে দরজা একদিন খুলবেই, খুলতে তাকে হবেই। নিখাঁদ প্রেম কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। তাই বসে আছি ওর দরজা খোলার অপেক্ষায়, ওর ডাকের অপেক্ষায়...........................
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইদ খোকন নাজিরী ২১/০১/২০১৯আমি আপনার লেখার চেয়ে কমেন্টসগুলো বেশি পড়েছি। এতে যা পেলাম-চালিয়ে যান । সীমানা খুঁজে পাবেন ।
-
আজাদ আলী ২২/০৯/২০১৭Beautiful writing.I wish your happy life and pray near Allah that he will open your love door. Thanks
-
ন্যান্সি দেওয়ান ১৯/০৯/২০১৭Darun..
-
এস এম আলমগীর হোসেন ১৮/০৯/২০১৭ভাল
-
মোঃ মুসা খান ১৮/০৯/২০১৭লেখা ভাল লেগেছে
-
কামরুজ্জামান সাদ ১৭/০৯/২০১৭লেখার ধরণটা ভাল লেগেছে ।তবে আরো একটু গোছালো হওয়া প্রয়োজন ছিলো।