কলমিলতা
যাবি -তো যা,ঠেকাইঞ্ছে কে তুকে?
তোর গুষ্ঠীরপিণ্ডি শালা হারামি...
এই তল্লার বেবাক মাল গলায় ঢাইলেও তিয়াস মেটে না হামার,
এ শালা লাশ টানতি টানতি তিতা হয়া গেল জান!
ই'ধার ও'ধার জোয়ান বেটিছাওয়ালের খুবলে খাওয়া শরীল-
কান্ধে তোল,অর ফেক'দো লাশকাটা ঘর'মে-
যেন দ্যাশে আচনক যুদ্ধ লাইগছে!
খুরোর মুখে শোনা কথা;
নদীতে পানি নাই,মরা কৈ আর জিয়োল মাছ-
খরায় শুখা ডোবার ক্যাঁদায় যেমন পইড়া থাকে,
সেই মতো মানুষের লাশ আর লাশ!
চেনার উপায় নাই!
গতরে পিরান নাই!
মাদি মরদ তফাৎ করবার চেন্নটুকুন নাই-
সব খুবলে খাইছে মিলিটারি!
তোর মনে আছে কেনে?
হরিজন পাড়ার কেলু পাগলার ধাবার চাটাইয়ে বইসেছিল খুরো;
ঢোকে ঢোকে সাবার কইরেছিল বোতল!
মনে আছে তোর-
চৈত্ত্য মাইসা ভরপূর্ণিমার চাঁন
ঝিলিক মাইরা কেমুন ফিকা হয়া গেল খুরোর মুখে,
আমি দেইখে ছিলাম রে সেই রাত্তিরে-
খুরোর চক্ষে একাত্তর সন!
স্বাধীনতা আইল লাল টকটকা সূর্যের লাহান...
ধুর শালা,বউডার কথা মনে পইড়ে গেল এই বেলা;
কমলির কপালে লাল টুকটুকে বড় একখানা টিপ-
দিনভর জ্বইলত!
এই ঘুরঘুট্টি আন্ধার গলির গান্ধা বাতাসে-
কমলি আমার বক্ষ জুইড়া ছিল;
কামে থে ফিরা আইলে গলা জড়ায়ে ধইরে
সে কি ছেলেমানুসি-
হামার গতরের ঘামের গন্ধে নাকি ওয়ার নেশা জাগে!
সে নেশায় বুদ হইয়া
সারারাইত পইড়া থাইকত শিশুর মতো!
কত রাইত ঘুমাই না রে নগেন
এরে শালা,হামি চামার আছি,ডোম আছি...
হামার কইলজা টা-
ওয়াও কি চামার আর ডোম?
কিছুই কইল না মোক,
চইলা গেল!
ক্যান গেল, কই গেল,কেমুন আছে সে মাগি-
কারে কই,কারে জিগাই?
সব চইলা যাইব,এ বাংলা মাল মোক ছাইড়বেক লাই রে
তু ও যা,চইলা যা নগেন-
এই যাওনের পালা শেষ হবার লাই রে।
আরে ও দারোগা বাবু,শহরে কি হইল রে-
আবার যুদ্ধটুদ্ধ বাধিঞ্ছে নাকি?
স্বাধীনতার কি হইল-
সেই যে তোগের গর্বের কত কথাই শুনি ডিসেম্বর, মার্চ মাস আসলি;
সেগুনার কি হইল বাবু?
শহরে বেটিছাওয়ালের এতো লাশ তো আগে দেখি লাই রে!
সারারাইত কাম করাবি নাকি?
হামার ও তো মানুষের শরীল,
এ দিকে মালের বোতলও যে খালি হয়ে এলো।
(ওয়ারলেসে বার্তা আসে,প্রিজন ভ্যান সাইরেন বাজিয়ে ইউটার্ন নেয়।)
এ দারোগা বাবু,গাড়ি মোড় নিলো কেনে-
আবার কি নতুন লাশের সন্ধান দিলো?
কার কোল খালি হইল!
হামাক ছুটি দে,হামি আর পাইরবক লাই।
(দারোগার চোখরাঙানিতে চুপ হয়ে যায় কালু।কৃষ্ণপক্ষের মরা জ্যোৎস্না ভ্যানে চাটাইয়ে মোড়ানো লাশের গায়ে খেলা করে,কালু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ - তারপর কথা বলে আপন মনে।)
ভালবাসা,ইশক্- মোহাব্বত,ও শালা মাইরি আজব জিনিস;
রঙ ঝকমকা প্রজাপতি-
শক্ত হাতে ধরবি?
ওয়া মরি যাবে টপাক করি!
আবার হালকা করি ধরবি তো-
ফুড়ুৎ করি উড়ান দিবেক!
হাতের তালুতে পইড়ে থাকে রঙ,ওয়া মুঁছবার লাই'রে-
কখন সারা গতরে ছড়াই পড়ে!
হামাক দংশিল কালসাপে
মাথায় উঠিল বিষ-
(প্রিজন ব্রেক কষে।ইঞ্জিনের আওয়াজ, ঝিঁঝিঁর কোরাস,আর মাতাল কালুর প্রলাপ বাড়তে থাকে।গাড়ি থেকে টলতে টলতে নামে কালু।সামনেই ল্যাম্পপোস্টের নিচে পুরাতন দেয়াল ভেঙে গজিয়ে ওঠা ঝোপের কাছে পড়ে আছে ক্ষতবিক্ষত একটি মৃত দেহ- প্রায় অর্ধনগ্ন।)
পাও দুইখান কথা শোনে না।
এই যে,উইঠে বয়-
লিতে আইছি তুকে সাত বেহারার পালকী লিয়ে
মাইঝি,ওঠ না।
(লাশের কাছে নিচু হয়ে চমকে ওঠে কালু,সহস্র বজ্রাঘাতে ছিটকে পড়ে যেন মদ্যপ কালু।)
কমলি!
এ দারোগা বাবু,এ সিপাহি বাবু, দেখ কেনে-
ও হামার কমলি আছে!
(ক্যামেরার ফ্লাশ জ্বলে ওঠে,ক্লিক ক্লিক শব্দে ক্যামেরার চোখে বন্দি হয় কমলির বীভৎস ছবি।পৃথিবীর মৌন হয়ে যায় মুহূর্তেই- কালুর হৃদয়বিদারি আহাজারিতে।)
তোর গুষ্ঠীরপিণ্ডি শালা হারামি...
এই তল্লার বেবাক মাল গলায় ঢাইলেও তিয়াস মেটে না হামার,
এ শালা লাশ টানতি টানতি তিতা হয়া গেল জান!
ই'ধার ও'ধার জোয়ান বেটিছাওয়ালের খুবলে খাওয়া শরীল-
কান্ধে তোল,অর ফেক'দো লাশকাটা ঘর'মে-
যেন দ্যাশে আচনক যুদ্ধ লাইগছে!
খুরোর মুখে শোনা কথা;
নদীতে পানি নাই,মরা কৈ আর জিয়োল মাছ-
খরায় শুখা ডোবার ক্যাঁদায় যেমন পইড়া থাকে,
সেই মতো মানুষের লাশ আর লাশ!
চেনার উপায় নাই!
গতরে পিরান নাই!
মাদি মরদ তফাৎ করবার চেন্নটুকুন নাই-
সব খুবলে খাইছে মিলিটারি!
তোর মনে আছে কেনে?
হরিজন পাড়ার কেলু পাগলার ধাবার চাটাইয়ে বইসেছিল খুরো;
ঢোকে ঢোকে সাবার কইরেছিল বোতল!
মনে আছে তোর-
চৈত্ত্য মাইসা ভরপূর্ণিমার চাঁন
ঝিলিক মাইরা কেমুন ফিকা হয়া গেল খুরোর মুখে,
আমি দেইখে ছিলাম রে সেই রাত্তিরে-
খুরোর চক্ষে একাত্তর সন!
স্বাধীনতা আইল লাল টকটকা সূর্যের লাহান...
ধুর শালা,বউডার কথা মনে পইড়ে গেল এই বেলা;
কমলির কপালে লাল টুকটুকে বড় একখানা টিপ-
দিনভর জ্বইলত!
এই ঘুরঘুট্টি আন্ধার গলির গান্ধা বাতাসে-
কমলি আমার বক্ষ জুইড়া ছিল;
কামে থে ফিরা আইলে গলা জড়ায়ে ধইরে
সে কি ছেলেমানুসি-
হামার গতরের ঘামের গন্ধে নাকি ওয়ার নেশা জাগে!
সে নেশায় বুদ হইয়া
সারারাইত পইড়া থাইকত শিশুর মতো!
কত রাইত ঘুমাই না রে নগেন
এরে শালা,হামি চামার আছি,ডোম আছি...
হামার কইলজা টা-
ওয়াও কি চামার আর ডোম?
কিছুই কইল না মোক,
চইলা গেল!
ক্যান গেল, কই গেল,কেমুন আছে সে মাগি-
কারে কই,কারে জিগাই?
সব চইলা যাইব,এ বাংলা মাল মোক ছাইড়বেক লাই রে
তু ও যা,চইলা যা নগেন-
এই যাওনের পালা শেষ হবার লাই রে।
আরে ও দারোগা বাবু,শহরে কি হইল রে-
আবার যুদ্ধটুদ্ধ বাধিঞ্ছে নাকি?
স্বাধীনতার কি হইল-
সেই যে তোগের গর্বের কত কথাই শুনি ডিসেম্বর, মার্চ মাস আসলি;
সেগুনার কি হইল বাবু?
শহরে বেটিছাওয়ালের এতো লাশ তো আগে দেখি লাই রে!
সারারাইত কাম করাবি নাকি?
হামার ও তো মানুষের শরীল,
এ দিকে মালের বোতলও যে খালি হয়ে এলো।
(ওয়ারলেসে বার্তা আসে,প্রিজন ভ্যান সাইরেন বাজিয়ে ইউটার্ন নেয়।)
এ দারোগা বাবু,গাড়ি মোড় নিলো কেনে-
আবার কি নতুন লাশের সন্ধান দিলো?
কার কোল খালি হইল!
হামাক ছুটি দে,হামি আর পাইরবক লাই।
(দারোগার চোখরাঙানিতে চুপ হয়ে যায় কালু।কৃষ্ণপক্ষের মরা জ্যোৎস্না ভ্যানে চাটাইয়ে মোড়ানো লাশের গায়ে খেলা করে,কালু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ - তারপর কথা বলে আপন মনে।)
ভালবাসা,ইশক্- মোহাব্বত,ও শালা মাইরি আজব জিনিস;
রঙ ঝকমকা প্রজাপতি-
শক্ত হাতে ধরবি?
ওয়া মরি যাবে টপাক করি!
আবার হালকা করি ধরবি তো-
ফুড়ুৎ করি উড়ান দিবেক!
হাতের তালুতে পইড়ে থাকে রঙ,ওয়া মুঁছবার লাই'রে-
কখন সারা গতরে ছড়াই পড়ে!
হামাক দংশিল কালসাপে
মাথায় উঠিল বিষ-
(প্রিজন ব্রেক কষে।ইঞ্জিনের আওয়াজ, ঝিঁঝিঁর কোরাস,আর মাতাল কালুর প্রলাপ বাড়তে থাকে।গাড়ি থেকে টলতে টলতে নামে কালু।সামনেই ল্যাম্পপোস্টের নিচে পুরাতন দেয়াল ভেঙে গজিয়ে ওঠা ঝোপের কাছে পড়ে আছে ক্ষতবিক্ষত একটি মৃত দেহ- প্রায় অর্ধনগ্ন।)
পাও দুইখান কথা শোনে না।
এই যে,উইঠে বয়-
লিতে আইছি তুকে সাত বেহারার পালকী লিয়ে
মাইঝি,ওঠ না।
(লাশের কাছে নিচু হয়ে চমকে ওঠে কালু,সহস্র বজ্রাঘাতে ছিটকে পড়ে যেন মদ্যপ কালু।)
কমলি!
এ দারোগা বাবু,এ সিপাহি বাবু, দেখ কেনে-
ও হামার কমলি আছে!
(ক্যামেরার ফ্লাশ জ্বলে ওঠে,ক্লিক ক্লিক শব্দে ক্যামেরার চোখে বন্দি হয় কমলির বীভৎস ছবি।পৃথিবীর মৌন হয়ে যায় মুহূর্তেই- কালুর হৃদয়বিদারি আহাজারিতে।)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ১৪/০৪/২০১৮অসাধারণ উপস্থাপনা।