www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বাবা

মাস শেষ হয়ে গেছে। নতুন মাসও ৪-৫ দিন অতিবাহিত হয়ে গেল,টকাও শেষ।
জীবনের বাসায় ফোন দিয়ে টকা চাইতে ইচ্ছে করছে না। আবার না চাইলেও হয় না। চলার জন্যতো টাকা চাইতে হবে। জীবনের বাবা মানুষটা খুব ভাল। এই পর্যন্ত জীবন তার বাবার কাছে যা চেয়েছে তার বাবা তাকে সবই দিয়েছে। জীবনের কোন আশায় তার বাবা অপূর্ণ রাখেনি। তবে জীবনের বাবা জীবনের প্রতি সিনসিয়ার কম ছিল । জীবনের প্রতি তার বাবার অগাধ বিশ্বাস ছিল। থাকবেই বা না কেন? জীবন তো অবিশ্বাস করার মতো কোনকাজ করেনি আজ অবধি। সেই কারনে হয়ত জীবনের প্রতি তার বাবার বিশ্বাস বেশি। জীবনের যখন যেখানে যাইতে ইচ্ছা করছে সেখানেই জীবন গেছে, তার বাবা তাকে বাধা দেয় নি। জীবনের বাবার জীবনকে মাস শেষে টাকা দেওয়ার কথা মনে থাকলেও কিছু কারণবশত সময়মতো দিতে পারতো না। জীবন জানে তার বাবা ইচ্ছা করে এমনটা করেনি। জীবন জানে সে ফোন দিয়ে টাকা চাইলে তার বাবা যেভাবেই হউক টাকা ম্যানেজ করে জীবনের কাছে পাঠিয়ে দিবে। জীবন তার বাবাকে বেশি টেনশন দিতে চায় না। কিন্তু জীবন কি করবে সে তো এখনও বেকার, তাই কোন উপায় না পেয়ে ফোন হাতে নিয়ে বাবাকে ফোন দিল, কিন্তু তার বাবা ফোন রিসিভ করল না, রিসিভ করল তার ছোট ভাই, ছোট ভাই বলল আব্বু মসজিদে গেছে নামাজ পড়তে। জীবন জানে তার বাবা আজ আর তাকে ফোন দিবে না। কারণ জীবনের বাবা জীবনের প্রতি সিনসিয়ার কম। সিনসিয়ার কম বলে এই নয় যে,তার বাবা তাকে ভালোবাসে না, তার বাবা তাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। জীবনও তার বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। ওইদিন জীবনের বাবা তাকে আর ফোন দেয় নি। জীবন আরও কয়েকটাদিন কষ্ট করে চলল। এভবে হয়ত আরো দুই তিন দিন চলা যাবে, কিন্তু যখন জীবনের ভার্সিটির টিউশন ফি দেওয়া লাগবে তখন আর মন না চাইলেও মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বাবাকে ফোন দিয়ে বলল,বাবা আমার টিউশন ফি এর টাকা লাগবে। বাবা ওই পাশ থেকে বলবে কত টাকা লাগবে। জীবন তখন বলল ২০ হাজার টাকা। তারপর বাবা বলল কবে লাগবে, একটু চিন্তিত স্বরে, জীবনের ঠিক ওই মূহুর্তে ইচ্ছে করে যে, পৃথিবীর কাছে চিৎকার করে কেদে মনের কষ্টগুলো হালকা করতে। জীবনের বাবা বলল আর কয়েকটাদিন পরে দিলে হয় না, কিন্তু ইতিমধ্যেই জীবন অনেকগুলো দিন অতিবাহিত করে ফেলেছে। তারপরও জীবন বাবার কন্ঠ শুনে না করতে পারে নি, বলল ঠিক আছে। অবশেষে জীবনের বাবা দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেও পুরো টাকা ম্যানেজ করতে পারনি। যেটা ম্যানেজ করেছে সেটা কেবল টিউশন ফি দেওয়া যাবে। জীবনের বাবা জীবনকে ফোন দিয়ে বলল বাবারে সব টাকাতো ম্যনেজ করতে পারিনি। বাকিটা কয়েকদিন পর দিয়ে দিব। জীবন বলল ঠিক আছে। কয়েকদিন পর জীবনের বাবা সেই বাকি টাকাটাও পাঠিয়ে দেয়। জীবন ভাবে, বাবা আসলেই তুমি পার বটে। মনের মধ্যে কষ্ট নিয়ে সুখে থাকার অভিনয় করে, ছেলেকে সুখে থাকার স্বপ্ন দেখাতে।

পৃথিবীর প্রত্যেকটা বাবাই এরকম কোন না কোন অভিনয় করে তাদের সোনার ছেলেদের মানুষ করার জন্য তাদের সুখকে মাটি চাপা দেয়।
পৃথিবীর প্রতিটি বাবাই মহান। তাদের কোন তুলনা হয় না।
স্যালুট প্রত্যেক বাবাদের।।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৫৪১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/১০/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast