পরিচয়েষু
ব্যাগ থেকে মোবাইল ফোন্টা বের করে সময় দেখলো মেয়েটা অথবা কোনো মিসড কল বা টেক্সট আছে কিনা তাও দেখতে পারে বলে মনে হোলো, আধ ঘন্টা বা তারো উপরে হবে মুহিত মেয়েটাকে চোখে চোখে রাখছে, আসলে রাখতে হচ্ছে, এই দীর্ঘ সময়ে রেস্টুরান্টে বসে কিছুই অর্ডার করেনি মেয়েটা, কিছুক্ষন পর পর ফোন করছে খুব সম্ভবত অপর প্রান্তে সাড়া না পেয়ে বিরক্ত হয়ে, ক্যাফেতে ঢোকার দরজাটায় উৎকন্ঠার দৃষ্টিতে খেয়াল রাখছে। স্পস্টতই বোঝা যায় কারো জন্যে অধীর অপেক্ষায় থেকে বিরক্ত মেয়েটা।
মুহিত, নিজেও সারার জন্যে অপেক্ষায় আছে, সাড়ে তিন্টায় আসবে বলেছিলো, এখন প্রায় সাড়ে চারটা, আজই প্রথম দেখা হবার কথা, এর আগে দুজন কেউ কাউকে দেখেনি, ব্যাপারটা ছিলো দুজনের পরিকল্পিত বোঝাপড়া। আজ থেকে মাস পাচেক আগে এক ফেসবুক ফ্রেন্ডের স্টাটাসে কমেন্টকে কেন্দ্র করে দুজনের পরিচয়, দুজনেরেই কমন ফ্রেন্ড ছিলো মুহিতের এক কাজিন, সারা মেয়েটা খুবই ইন্টেরেস্টিং কেরেক্টার, মুহিত যখন সারাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়, তখন সারা এক্সেপ্ট না করে,একটা ম্যাসেজ পাঠায়, টেক্সটা ছিলো- বন্ধুত্ব আমার কাছে অনেক প্রেশাস ব্যাপার, আমার বন্ধু হতে হলে আপনার আমার চিন্তা ও দৃষ্টিভংগীর মিল থাকতে হবে, তার আগ পর্যন্ত আমরা পরিচিত থাকতে পারি বন্ধু নয়। ম্যাসেজটা পেয়ে কৌতুহল হয়েছিলো, সারার একাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করে না পেরে বুঝলো ওকে ব্লক করা হয়েছে, মেজাজটা গরম হয়ে উঠে সারাকেও মুহিত ব্লক করে দিলো। দুজনের একাউন্টেই প্রোফাইল পিকে নিজেদের ছবি ছিলো না, তাই আর পরস্পরকে দেখা হয়ে উঠেনি। এর দশ বারোদিন পর মুহিতের ফেসবুক ইনবক্সে একটি ম্যাসেজ আসে, তাতে লেখা আপনি চাইলে ইনবক্সের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে পারি, ফ্রেন্ড না হয়ে ফলোয়ার হতে পারি, রাজী থাকলে, ইনবক্সে জানাবেন। নিজের ব্যাপারে বরাবরই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মুহিত, ম্যাসেজটা পরেই ডিলিট করে দেয়, তার বয়েই গেছে এতো ভুরং ভারং করে কারো সাথে বন্ধুত্ব করতে।
নিজেদের পরিচয়ের নাটকিয়তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে ছিলো মুহিত, মেয়েটা যে কিছুক্ষন আগে উঠে রেস্টুরেন্টের ওপেন স্পেসে গিয়ে বসেছে তা খেয়াল করেনি সে, বাইরের গরম সহ্য করতে না পেরেই হয়তো আবার ভিতরে ঢুকে কিছুক্ষন আগে বসা টেবিল্টার দিকে তাকালো, ততক্ষনে তা কিছু ছেলেমেয়ে দখল করে নিয়েছে, আশে পাশের টেবিল গুলোর সব চেয়ার অকুপাইড, একমাত্র মুহিতের দুজন বসার টেবিলেই একটা চেয়ার খালি আছে, মুহিতের দিকে একবার তাকালো মেয়েটা, কিছুটা অসস্তি নিয়েই হেটে এলো,বলল, ভাইয়া, কিছু মনে না করলে আমি এখানে একটু বসতে পারি? বাইরে ভিষন গরম,আমি একজনের জন্য অপেক্ষা করছি, সে চলে আসবে কিছুক্ষনের মধ্যে, যদি কিছু মনে না করেন, আর আপনার অসুবিধা না হলে, অন্য কোনো বসার যায়গা খালি পেলেই উঠে যাবো। প্লিজ, বসুন, আমিও একজনের অপেক্ষায় আছি, দুজনে এক সাথেই অপেক্ষা করি, আপনি কি কিছু খাবেন? দুটো লেমনেড দিতে বলি?হেসে আন্তরিক ভাবেই বলল মুহিত। না না লাগবেনা, ও চলে আসবে এখুনি, হাতের সেল ফোন্টার কিপ্যাড চাপতে চাপতে আবার কাউকে কল দিলো, কানেক্ট না হয়াতে বোধহয় বিরক্ত হোলো, ফোন বন্ধ পাচ্ছি অনেক ক্ষন ধরে, নিজেই যেনো নিজের সাথে কথা বলল মেয়েটা, ফোন বন্ধ কথাটা শুনে, মুহিত নিজের সেল ফোন বের করলো পকেট থেকে মনে পরে গেলো, অফিসে বসের কাছ থেকে আগে বেড়োবার অনুমতি চাইতে, ওনার রুমে ঢোকার আগেই ফোন অফ করেছিলো আর অন করা হয়নি, ইশ! সারা যদি ট্রাই করে থাকে, তাহলেতো বন্ধ পাবে, ফোন্টা অন করে টেবিলের ওপর রাখলো মুহিত। আড় চোখে একবার তাকালো, মেয়েটার দিকে, বিষন্ন মনে টেবিলের ওপর নখ দিয়ে টোকা দিচ্ছে, অদ্ভুত মায়াময় চেহারা মেয়েটার, কিন্তু কোথায় যেনো এক রকম কাঠিন্য আছে, একটু বেশি রুপবতি মেয়েদের যা থাকে আর কি, সারা কেমন হবে দেখতে কে যানে, আবার সারার ভাবনায় ডুবে যায় মুহিত, সেদিনের ম্যসেজ ডিলিট করাটা মেনে নিতে না পেরে, আবার ম্যসেজ পাঠায় সারা, এবার সরাসরি আক্রমনে যায়, আপনি অভদ্রের মত ম্যেসেজ ডিলিট করলেন কেনো, আমার প্রস্তাব আপনার পছন্দ না হলে, সেটা ফিরতি টেক্সটে জানাতে পারতেন, বা অন্যকোনো ভাবে রিএক্ট করতেন, এরকম অভদ্র একটা ছেলের সাথে আমার ভদ্র আচরন করাটা বিরাট বোকামি হয়েছে, এই শিক্ষাটা আমার দরকার ছিলো। ম্যেসেজটা পড়ে আর ডিলিট করেনি মুহিত, আমি দু:খিত ছোট দুটি শব্দ লিখে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। মনের কোথায় যেনো সারার জন্যে এক ধরনের আকর্ষণ অনুভব করছিলো, অবচেতন ভাবে মন খুব চাচ্ছিলো সারার সাথে পরিচিত, বন্ধুত্ব গড়ার।
নিয়তীও বোধহয় তেমনি চেয়েছে, অভিমান ভুলে ইনবক্সে ফোন নম্বর বিনিময়, এরপর দুজন খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠে অল্প সময়ের মধ্যে, দুজনের চিন্তা, পছন্দ, দৃষ্টিভংগি সব কাছাকাছি হবার কারনে দ্রুত পরষ্পরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে । কিন্তু সারার কিছু কিছু খেয়ালি বা শিশু সুলভ সিদ্ধান্ত থেকে তাকে নড়াতে পারেনি মুহিত, গত কয়েক মাসে ফোন নাম্বার বিনিময় ছাড়া আর কোনো ভাবেই আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি সারা, বলেছে যেদিন আমরা প্রথম দেখা করবো সেদিন ফেসবুক ফ্রেন্ডশিপ হবে। আজ সেই দিন যেদিন দুজনের পাচমাসের ফোনালাপ পরিচয় বাস্তবে রুপ নেবে, দুজন যেহেতু কেউ কাউকে দেখেনি তাই, বোঝাপড়া হয় সারা পরবে নীল জামা আর মুহিত পরবে নীল পাঞ্জাবী। দুজনেরই প্রিয় রঙ, রিং বেজে ওঠার শব্দে ভাবনার জগত থেকে ফিরে আসে মুহিত, সারার নাম্বার থেকে কল, কিছুটা নার্ভাস কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে ফোন ধরে, হেসে পাশে বসা মেয়েটার দিকে তাকায় মুহিত, কি ব্যাপার এরকম রাগান্মিত চোখে মেয়েটা তাকিয়ে আছে কেনো নিজের ফোন কানে ধরে, অনেকটা কাপা হাতে কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই, সামনে বসা মেয়েটা উঠে দাঁড়ায়, ব্যাগে ফোন রাখতে রাখতে বলে, তুমি মুহিত? তোমার না নীল পাঞ্জাবি পরে আসার কথা ছিলো, বলেই রেস্টুরেন্টের দরজার দিকে হাটা ধরে,কয়েক মূহুর্ত স্থবির বসে থাকে মুহিত, এই মেয়েটাই সারা, কিন্তু ওরতো নীল জামা পরে আসার কথা ছিলো, মুহিত ইচ্ছে করেই ণীল পাঞ্জাবী পরেনি, একটু মজা করতে চেয়েছিলো সারার সাথে, কিন্তু সারাও যে একই কান্ড করবে ভাবতেই পারেনি, একটু দুষ্টুমি করতে গিয়ে ব্যাপারটা এখন ভুল বোঝাবোঝির পর্যায়ে চলে গেছে, সারা, শোনো, প্লিজ-দ্রুত উঠে দাড়াতে গিয়ে হোচট খায় টেবিলের পায়ের সাথে মুহিত, ভারসাম্য না রাখতে পেরে একটা চেয়ার নিয়ে পরে যায় ফ্লোরে, টেবিলের গ্লাস মাটিতে আছড়ে পরে ঝনঝন শব্দে ভেঙে পরে, মাথার ঠিক পেছন দিকে একটা ভোতা চিন চিনে ব্যাথা অনুভব করে মুহিত, সেটা সারা চলে যাচ্ছে সেই জন্য না অন্য কোনো আঘাত তা বুঝতে পারেনা সে,সম্বিত হারানোর আগে চোখের আবছা দৃষ্টিতে শুধু দেখতে পায়, ছুটে আসছে সারা সামনে হাত দুটো বাড়ানো, ধরতে পেরেছিলো কিনা, বুঝে ওঠার আগেই জ্ঞান হারায় মুহিত।
মুহিত, নিজেও সারার জন্যে অপেক্ষায় আছে, সাড়ে তিন্টায় আসবে বলেছিলো, এখন প্রায় সাড়ে চারটা, আজই প্রথম দেখা হবার কথা, এর আগে দুজন কেউ কাউকে দেখেনি, ব্যাপারটা ছিলো দুজনের পরিকল্পিত বোঝাপড়া। আজ থেকে মাস পাচেক আগে এক ফেসবুক ফ্রেন্ডের স্টাটাসে কমেন্টকে কেন্দ্র করে দুজনের পরিচয়, দুজনেরেই কমন ফ্রেন্ড ছিলো মুহিতের এক কাজিন, সারা মেয়েটা খুবই ইন্টেরেস্টিং কেরেক্টার, মুহিত যখন সারাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়, তখন সারা এক্সেপ্ট না করে,একটা ম্যাসেজ পাঠায়, টেক্সটা ছিলো- বন্ধুত্ব আমার কাছে অনেক প্রেশাস ব্যাপার, আমার বন্ধু হতে হলে আপনার আমার চিন্তা ও দৃষ্টিভংগীর মিল থাকতে হবে, তার আগ পর্যন্ত আমরা পরিচিত থাকতে পারি বন্ধু নয়। ম্যাসেজটা পেয়ে কৌতুহল হয়েছিলো, সারার একাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করে না পেরে বুঝলো ওকে ব্লক করা হয়েছে, মেজাজটা গরম হয়ে উঠে সারাকেও মুহিত ব্লক করে দিলো। দুজনের একাউন্টেই প্রোফাইল পিকে নিজেদের ছবি ছিলো না, তাই আর পরস্পরকে দেখা হয়ে উঠেনি। এর দশ বারোদিন পর মুহিতের ফেসবুক ইনবক্সে একটি ম্যাসেজ আসে, তাতে লেখা আপনি চাইলে ইনবক্সের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে পারি, ফ্রেন্ড না হয়ে ফলোয়ার হতে পারি, রাজী থাকলে, ইনবক্সে জানাবেন। নিজের ব্যাপারে বরাবরই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মুহিত, ম্যাসেজটা পরেই ডিলিট করে দেয়, তার বয়েই গেছে এতো ভুরং ভারং করে কারো সাথে বন্ধুত্ব করতে।
নিজেদের পরিচয়ের নাটকিয়তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে ছিলো মুহিত, মেয়েটা যে কিছুক্ষন আগে উঠে রেস্টুরেন্টের ওপেন স্পেসে গিয়ে বসেছে তা খেয়াল করেনি সে, বাইরের গরম সহ্য করতে না পেরেই হয়তো আবার ভিতরে ঢুকে কিছুক্ষন আগে বসা টেবিল্টার দিকে তাকালো, ততক্ষনে তা কিছু ছেলেমেয়ে দখল করে নিয়েছে, আশে পাশের টেবিল গুলোর সব চেয়ার অকুপাইড, একমাত্র মুহিতের দুজন বসার টেবিলেই একটা চেয়ার খালি আছে, মুহিতের দিকে একবার তাকালো মেয়েটা, কিছুটা অসস্তি নিয়েই হেটে এলো,বলল, ভাইয়া, কিছু মনে না করলে আমি এখানে একটু বসতে পারি? বাইরে ভিষন গরম,আমি একজনের জন্য অপেক্ষা করছি, সে চলে আসবে কিছুক্ষনের মধ্যে, যদি কিছু মনে না করেন, আর আপনার অসুবিধা না হলে, অন্য কোনো বসার যায়গা খালি পেলেই উঠে যাবো। প্লিজ, বসুন, আমিও একজনের অপেক্ষায় আছি, দুজনে এক সাথেই অপেক্ষা করি, আপনি কি কিছু খাবেন? দুটো লেমনেড দিতে বলি?হেসে আন্তরিক ভাবেই বলল মুহিত। না না লাগবেনা, ও চলে আসবে এখুনি, হাতের সেল ফোন্টার কিপ্যাড চাপতে চাপতে আবার কাউকে কল দিলো, কানেক্ট না হয়াতে বোধহয় বিরক্ত হোলো, ফোন বন্ধ পাচ্ছি অনেক ক্ষন ধরে, নিজেই যেনো নিজের সাথে কথা বলল মেয়েটা, ফোন বন্ধ কথাটা শুনে, মুহিত নিজের সেল ফোন বের করলো পকেট থেকে মনে পরে গেলো, অফিসে বসের কাছ থেকে আগে বেড়োবার অনুমতি চাইতে, ওনার রুমে ঢোকার আগেই ফোন অফ করেছিলো আর অন করা হয়নি, ইশ! সারা যদি ট্রাই করে থাকে, তাহলেতো বন্ধ পাবে, ফোন্টা অন করে টেবিলের ওপর রাখলো মুহিত। আড় চোখে একবার তাকালো, মেয়েটার দিকে, বিষন্ন মনে টেবিলের ওপর নখ দিয়ে টোকা দিচ্ছে, অদ্ভুত মায়াময় চেহারা মেয়েটার, কিন্তু কোথায় যেনো এক রকম কাঠিন্য আছে, একটু বেশি রুপবতি মেয়েদের যা থাকে আর কি, সারা কেমন হবে দেখতে কে যানে, আবার সারার ভাবনায় ডুবে যায় মুহিত, সেদিনের ম্যসেজ ডিলিট করাটা মেনে নিতে না পেরে, আবার ম্যসেজ পাঠায় সারা, এবার সরাসরি আক্রমনে যায়, আপনি অভদ্রের মত ম্যেসেজ ডিলিট করলেন কেনো, আমার প্রস্তাব আপনার পছন্দ না হলে, সেটা ফিরতি টেক্সটে জানাতে পারতেন, বা অন্যকোনো ভাবে রিএক্ট করতেন, এরকম অভদ্র একটা ছেলের সাথে আমার ভদ্র আচরন করাটা বিরাট বোকামি হয়েছে, এই শিক্ষাটা আমার দরকার ছিলো। ম্যেসেজটা পড়ে আর ডিলিট করেনি মুহিত, আমি দু:খিত ছোট দুটি শব্দ লিখে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। মনের কোথায় যেনো সারার জন্যে এক ধরনের আকর্ষণ অনুভব করছিলো, অবচেতন ভাবে মন খুব চাচ্ছিলো সারার সাথে পরিচিত, বন্ধুত্ব গড়ার।
নিয়তীও বোধহয় তেমনি চেয়েছে, অভিমান ভুলে ইনবক্সে ফোন নম্বর বিনিময়, এরপর দুজন খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠে অল্প সময়ের মধ্যে, দুজনের চিন্তা, পছন্দ, দৃষ্টিভংগি সব কাছাকাছি হবার কারনে দ্রুত পরষ্পরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে । কিন্তু সারার কিছু কিছু খেয়ালি বা শিশু সুলভ সিদ্ধান্ত থেকে তাকে নড়াতে পারেনি মুহিত, গত কয়েক মাসে ফোন নাম্বার বিনিময় ছাড়া আর কোনো ভাবেই আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি সারা, বলেছে যেদিন আমরা প্রথম দেখা করবো সেদিন ফেসবুক ফ্রেন্ডশিপ হবে। আজ সেই দিন যেদিন দুজনের পাচমাসের ফোনালাপ পরিচয় বাস্তবে রুপ নেবে, দুজন যেহেতু কেউ কাউকে দেখেনি তাই, বোঝাপড়া হয় সারা পরবে নীল জামা আর মুহিত পরবে নীল পাঞ্জাবী। দুজনেরই প্রিয় রঙ, রিং বেজে ওঠার শব্দে ভাবনার জগত থেকে ফিরে আসে মুহিত, সারার নাম্বার থেকে কল, কিছুটা নার্ভাস কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে ফোন ধরে, হেসে পাশে বসা মেয়েটার দিকে তাকায় মুহিত, কি ব্যাপার এরকম রাগান্মিত চোখে মেয়েটা তাকিয়ে আছে কেনো নিজের ফোন কানে ধরে, অনেকটা কাপা হাতে কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই, সামনে বসা মেয়েটা উঠে দাঁড়ায়, ব্যাগে ফোন রাখতে রাখতে বলে, তুমি মুহিত? তোমার না নীল পাঞ্জাবি পরে আসার কথা ছিলো, বলেই রেস্টুরেন্টের দরজার দিকে হাটা ধরে,কয়েক মূহুর্ত স্থবির বসে থাকে মুহিত, এই মেয়েটাই সারা, কিন্তু ওরতো নীল জামা পরে আসার কথা ছিলো, মুহিত ইচ্ছে করেই ণীল পাঞ্জাবী পরেনি, একটু মজা করতে চেয়েছিলো সারার সাথে, কিন্তু সারাও যে একই কান্ড করবে ভাবতেই পারেনি, একটু দুষ্টুমি করতে গিয়ে ব্যাপারটা এখন ভুল বোঝাবোঝির পর্যায়ে চলে গেছে, সারা, শোনো, প্লিজ-দ্রুত উঠে দাড়াতে গিয়ে হোচট খায় টেবিলের পায়ের সাথে মুহিত, ভারসাম্য না রাখতে পেরে একটা চেয়ার নিয়ে পরে যায় ফ্লোরে, টেবিলের গ্লাস মাটিতে আছড়ে পরে ঝনঝন শব্দে ভেঙে পরে, মাথার ঠিক পেছন দিকে একটা ভোতা চিন চিনে ব্যাথা অনুভব করে মুহিত, সেটা সারা চলে যাচ্ছে সেই জন্য না অন্য কোনো আঘাত তা বুঝতে পারেনা সে,সম্বিত হারানোর আগে চোখের আবছা দৃষ্টিতে শুধু দেখতে পায়, ছুটে আসছে সারা সামনে হাত দুটো বাড়ানো, ধরতে পেরেছিলো কিনা, বুঝে ওঠার আগেই জ্ঞান হারায় মুহিত।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।