www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ছয় কাঠা জমি

ছয় কাঠা জমি স্বামীসুত্রে পাওয়া।
ওই জমি টুকুই তার প্রাণ।
জমির সমস্ত মাটি তার হাতে যেন মায়ের স্পর্শ পায়,
স্নেহ পায়,ভালোবাসা পায়।
এই জমিতে লাঙল ধরা,
বীজবোনা,চাষ-আবাদ সমস্ত কিছু
শিখেছিল সে তার স্বামীর কাছে-
সাদা বিধবার শাড়ী পরনে-
আজ ওই ছয় কাঠা জমির সাথেই তার প্রেম-
যে মাটিকে আমরা মা বলে ডাকি,
সেই নারীর কাছে ওই মাটিই তার পুরুষ।
তার পাড় হীন সাদা থান কখনো হল সবুজ ধানের ক্ষেত-
কখনো হল মাটির রঙে রাঙ্গা-
কখনো বা ধান শিষের গন্ধ লেগে থাকে তার গায়ে –
সে শাড়ির রঙ বদলায় আউশে-আমনে
যেন, অতি সে যত্নে মাটির আলপনা এঁকেছে পৃথিবী-
তার সাদা শাড়ীর আঁচলে-কোচলে।
দিনের বেলা কোনদিন তাকে কেউ ঘরে থাকতে দেখেনি-
ভোর চার টার থেকে সন্ধ্যা-
পড়ে থাকে মাঠে কোদাল,কাস্তে নিয়ে-
দুটি শিশু সন্তান তার
বছর হয়তো বা ছয়-আট
মাটি, জল, কাদা, ঘাস মেখে
খেলে তারা জমির আলে বসে।
টক পান্তা, মুড়ি-লঙ্কা,দু-কুচি পেঁয়াজ
গামছায় থাকে বাঁধা-
ঘোমটা আড়ালে ঢাকা মুখ-
কোন এক গ্রামবাংলার কুলবধূ।
সোনালী ধানের আশায়
স্বপ্ন বুনে যায় একা একা শুধু -
বছর এর পর এসেছে নতুন বছর
কেটে গেছে মাঝে কত বসন্ত-
হিসাব রাখেনি সে-
সে শুধু মাঠে কাজ করে
লক্ষ্মী পুজোর দিনে মাঠে কাজ করে-
স্বরস্বতী পুজোর দিনে মাঠে কাজ করে-
দূর্গা পুজোর দিনে মাঠে কাজ করে-
তার জ্বর হলেও মাঠে কাজ করে।
যেন সোনালী ধান ফলানোই তার লক্ষ্মীপুজো,স্বরস্বতীপুজো,
দেবী দূর্গার প্রতি অঞ্জলি দান।
এক বুড়ো অশ্বথের গাছ-
সময় সাক্ষ্মী হয়ে বসে থাকে।
এক বাংলার অতি সাধারণ নারী-
মাটির প্রলেপ গায়ে মেখে-
কাজ করে মাঠে, কোদাল কাস্তে হাতে,
সে চাষ করে, চাষ করে এই পৃথিবীর বুকে।
কেউ খোঁজ রেখেছ কি তার-
ঘোমটা আড়ালে ঢাকা মুখ-
জল-কাদা মাখা সেকি বাংলার অপরূপ রূপ।
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ৮৭৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৩/০৮/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ‌‍ধ্রুবক ০৫/০৮/২০১৭
    ভালো লেখা।
  • প্রাণবন্ত।
  • সাঁঝের তারা ০৩/০৮/২০১৭
    সুন্দর
 
Quantcast