পাবার মতো চাইলে পাওয়া যায়‘১২ পর্ব
পাবার মতো চাইলে পাওয়া যায়‘
----কিশোর কারুণিক
উপন্যাস-১২ পর্ব
“ভাঙিয়ে আপনার টাকা নিন।”
“দেখুন আশে পাশে দোকান থাকলে টাকাটা ভাঙিয়ে নিয়ে নিতাম।”
শ্রাবস্তী বিড়বিড় করে কী সব বলল। শোনা যাচ্ছে না কিছু। আমি মুখ ঘুড়িয়ে নিলাম। কচমচ করে তিলেখাজা ভেঙে শ্রাবস্তী মুখের ভেতর দিতে লাগল। আমার উপরের রাগ বেচারা তিলেখাজার উপর শোধ তুলছে। বাঃ বেশ রাগ আছে তো শ্রাবস্তীর। আমি বাপু কেটে পড়ি। কী জানি, ওর সাথের লোকজন চলে আসলে আমাকে আলুভর্তা করে ছাড়বে। আমি শ্রাবস্তীর দিকে তাকাতেই চোখে-চোখ পড়ল। বুকের ভিতর যেন ভূমিকম্প শুরু হল। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে শ্রাবস্তীর ভাবকে উপেক্ষা করে ব্যাগটা হাতে নিতেই শ্রাবস্তী বলে উঠলো, “এই মিষ্টার , এই-এই যে-।”
আমি কোন কথা না বলে ট্রেন থেকে নিচে নেমে পড়লাম। শ্রাবস্তী ওর হাতের টাকা আমার দিকে ছুড়ে মাড়লো। আমার গতি যেন বেড়ে গেল। আম শ্রাবস্তীর দিকে আর তাকালাম না। টাকাটা জানালা দিয়ে আমার দিকে ছুরে মারতেই নিচে পড়ে গিয়েছিল। আমি একটু গিয়ে শ্রাবস্তীর দিকে তাকাতেই দেখি এক টোকাই টাকাটা তুলে নিয়ে দৌঁড় দিয়েছে। শ্রাবস্তী তাতে আরো বেশি রেগে গিয়েছে। ও ট্রেনের কামরা থেকে দ্রত নেমে টোকাইয়ের দিকে পড়ে থাকা কী যেন খুঁজছে। খুঁজতে খুঁজতে কলার খোসা পেয়ে তাই ছেলেটির দিকে ছুরে মারতে লাগল। আনন্দ করতে করতে টোকাই চলে গেল বেশ দূরে। বেচারীর একশো টাকা খোয়া গেল। ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য কত কিছু না করতে হবে মানুষকে! শ্রাবস্তীর জন্য একটু খারাপ লাগল।
সূর্যের আলো শ্রাবস্তীকে যেন আদর করতে লাগলো। দূর থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, শ্রাবস্তীর মুখটা লাল টক-টক করছে। এত শান্তশিষ্ট মেয়ে শুধু আমারই জন্যে পাগলীর মত আচরণ করছে। আসলে ওর জন্য খুবই খারাপ লাগছে। আমার পানে তাকাল শ্রাবস্তী। বিড়বিড় করে কী যেন বলছে। শ্রাবস্তী কি যাদুমন্ত্র জানে নাকি? নাÑ আমাকে বশ করার মন্ত্র পড়ছে? আচ্ছা এত কিছু ঘটে গেল অথচ লোকজন আসছে না কেন? তবে কি এখনো বাকি আছে আরো ঘটনা? না বাবা, আমি আর যাচ্ছি না শ্রাবস্তীর কাছে। ট্রেন যখন ছাড়বে শেষ মূহুর্তে কামরায় উঠব্ এই গাছ তলায় নিরাপদ। পঞ্চাশ টাকার উপর দিয়েই যাক। আজীবন মনে থাকবে আজকের ঘটনা। আমার টাকায় কেনা কলায় শ্রাবস্তীর ক্ষুধা নিবারণ হয়েছিল। নিশ্চয় শ্রাবস্তী অকৃতজ্ঞ নয়। সুন্দর চেহারা ও সুন্দর মন যার আছে, সে তার রাজ্যে সুন্দর এক মানুষ । আমার মনে হয় আমি যা ভাবছি তা ঠিক না। আবার ঠিক হতেও পারে।
শ্রাবস্তী ট্রেনের কামরায় উঠল। নির্দিষ্ট আসনে বসল। নিজের সম্মন্ধে আমার একটা ধারণা আছে যে আমি ততটা খারাপ ছেলে না। নিজের প্রতি যার বিশ্বাস আছে , তাকে সহজে বুঝতে পারা যায় না। আমি হয়তো শ্রাবস্তীকে ঠিক ভাবে বুঝতে পারছি না। দু’জনেই হয়তো ভুল করছি। এখনকার ঘটনায় দু’জনেরই দোষ আছে কম বেশি। প্রথমে কি আমিই দোষ করেছি। শ্রাবস্তী আমাকে তিলেখাজা খাওয়ার অনুরোধ করেছি। আমি ভয়েূ খাইনি। একা ছিলাম বলে হয়তো তিলেখাজা খাওয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু আমি অন্য রকম ভেবেছিলাম। তবে কি , আমার---
নিয়মিত চলবে
----কিশোর কারুণিক
উপন্যাস-১২ পর্ব
“ভাঙিয়ে আপনার টাকা নিন।”
“দেখুন আশে পাশে দোকান থাকলে টাকাটা ভাঙিয়ে নিয়ে নিতাম।”
শ্রাবস্তী বিড়বিড় করে কী সব বলল। শোনা যাচ্ছে না কিছু। আমি মুখ ঘুড়িয়ে নিলাম। কচমচ করে তিলেখাজা ভেঙে শ্রাবস্তী মুখের ভেতর দিতে লাগল। আমার উপরের রাগ বেচারা তিলেখাজার উপর শোধ তুলছে। বাঃ বেশ রাগ আছে তো শ্রাবস্তীর। আমি বাপু কেটে পড়ি। কী জানি, ওর সাথের লোকজন চলে আসলে আমাকে আলুভর্তা করে ছাড়বে। আমি শ্রাবস্তীর দিকে তাকাতেই চোখে-চোখ পড়ল। বুকের ভিতর যেন ভূমিকম্প শুরু হল। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে শ্রাবস্তীর ভাবকে উপেক্ষা করে ব্যাগটা হাতে নিতেই শ্রাবস্তী বলে উঠলো, “এই মিষ্টার , এই-এই যে-।”
আমি কোন কথা না বলে ট্রেন থেকে নিচে নেমে পড়লাম। শ্রাবস্তী ওর হাতের টাকা আমার দিকে ছুড়ে মাড়লো। আমার গতি যেন বেড়ে গেল। আম শ্রাবস্তীর দিকে আর তাকালাম না। টাকাটা জানালা দিয়ে আমার দিকে ছুরে মারতেই নিচে পড়ে গিয়েছিল। আমি একটু গিয়ে শ্রাবস্তীর দিকে তাকাতেই দেখি এক টোকাই টাকাটা তুলে নিয়ে দৌঁড় দিয়েছে। শ্রাবস্তী তাতে আরো বেশি রেগে গিয়েছে। ও ট্রেনের কামরা থেকে দ্রত নেমে টোকাইয়ের দিকে পড়ে থাকা কী যেন খুঁজছে। খুঁজতে খুঁজতে কলার খোসা পেয়ে তাই ছেলেটির দিকে ছুরে মারতে লাগল। আনন্দ করতে করতে টোকাই চলে গেল বেশ দূরে। বেচারীর একশো টাকা খোয়া গেল। ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য কত কিছু না করতে হবে মানুষকে! শ্রাবস্তীর জন্য একটু খারাপ লাগল।
সূর্যের আলো শ্রাবস্তীকে যেন আদর করতে লাগলো। দূর থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, শ্রাবস্তীর মুখটা লাল টক-টক করছে। এত শান্তশিষ্ট মেয়ে শুধু আমারই জন্যে পাগলীর মত আচরণ করছে। আসলে ওর জন্য খুবই খারাপ লাগছে। আমার পানে তাকাল শ্রাবস্তী। বিড়বিড় করে কী যেন বলছে। শ্রাবস্তী কি যাদুমন্ত্র জানে নাকি? নাÑ আমাকে বশ করার মন্ত্র পড়ছে? আচ্ছা এত কিছু ঘটে গেল অথচ লোকজন আসছে না কেন? তবে কি এখনো বাকি আছে আরো ঘটনা? না বাবা, আমি আর যাচ্ছি না শ্রাবস্তীর কাছে। ট্রেন যখন ছাড়বে শেষ মূহুর্তে কামরায় উঠব্ এই গাছ তলায় নিরাপদ। পঞ্চাশ টাকার উপর দিয়েই যাক। আজীবন মনে থাকবে আজকের ঘটনা। আমার টাকায় কেনা কলায় শ্রাবস্তীর ক্ষুধা নিবারণ হয়েছিল। নিশ্চয় শ্রাবস্তী অকৃতজ্ঞ নয়। সুন্দর চেহারা ও সুন্দর মন যার আছে, সে তার রাজ্যে সুন্দর এক মানুষ । আমার মনে হয় আমি যা ভাবছি তা ঠিক না। আবার ঠিক হতেও পারে।
শ্রাবস্তী ট্রেনের কামরায় উঠল। নির্দিষ্ট আসনে বসল। নিজের সম্মন্ধে আমার একটা ধারণা আছে যে আমি ততটা খারাপ ছেলে না। নিজের প্রতি যার বিশ্বাস আছে , তাকে সহজে বুঝতে পারা যায় না। আমি হয়তো শ্রাবস্তীকে ঠিক ভাবে বুঝতে পারছি না। দু’জনেই হয়তো ভুল করছি। এখনকার ঘটনায় দু’জনেরই দোষ আছে কম বেশি। প্রথমে কি আমিই দোষ করেছি। শ্রাবস্তী আমাকে তিলেখাজা খাওয়ার অনুরোধ করেছি। আমি ভয়েূ খাইনি। একা ছিলাম বলে হয়তো তিলেখাজা খাওয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু আমি অন্য রকম ভেবেছিলাম। তবে কি , আমার---
নিয়মিত চলবে
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শান্তনু ব্যানার্জ্জী ২৪/০৭/২০১৫বাহ , সুন্দর
-
জহরলাল মজুমদার ২৩/০৭/২০১৫পরলাম
-
অভিষেক মিত্র ২২/০৭/২০১৫ভালো লাগছে।
-
সাইদুর রহমান ২১/০৭/২০১৫বেশ সুন্দর গল্পটি।
-
স্বপ্নীল মিহান ২১/০৭/২০১৫ভালো লিখেছেন, আগের পাট গুলাও পড়া লাগবে।