www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ফেসবুক আমি এবং একজন প্রিন্সেস আদিয়াতঃ পঞ্চম পর্ব

পূর্বসূত্রঃ

[ প্রিন্সেসঃ অবসরে ঘুমাই। হি হি হি !!!
( মহা ফাজিল টাইপ বলে মনে হচ্ছে । আমার বলের স্পিন
কাজে লাগিয়ে আমাকে প্যাডল সুইপ খেলার চেষ্টা করছে ।)

..............................................................................

..............................................................................

প্রিন্সেসঃ আচ্ছা ঠিক আছে, ডাকো ।
( সে আমার পাতা ফাঁদে পা দেয় । মেয়ে মানুষ বলে কথা
কৌতুহলের কাছে অনিচ্ছা হেরে গেলো। এইবার আমার চাল ।

আমিঃ আমি তোমার নাম দিয়েছি “বউ” । ]

পঞ্চম পর্বঃ মনের দরোজা খোল

প্রিন্সেসঃ ইস... তুমি না একদম আমাদের মকবুল মামার মতো ।
এইটা তুমি কি বললা ! কোন মানে হয়, হি হি হি !

আমিঃ কেন কেন, মকবুল মামাটা আবার কে ? এর সাথে তার
কি সম্পর্ক, বুঝলাম না তো ?

প্রিন্সেসঃ “দ্যা গ্রেট মকবুল মামা” হচ্ছে মায়ের চাচাতো ভাই ।
বয়স ৩২ বছর । ব্যাচেলর । উনার জন্মের দুই বছরের
মাথায় এক রোড অ্যাকসিডেন্টে একসাথে উনার বাবা
মা দুজনই মারা যান। তারপর থেকে নানার কাছেই
থাকতেন । বিয়ের সময় বাবা উনাকে অলিখিত যৌতুক
হিসেবে পেয়েছিলেন । এখন বছরের অর্ধেক আমাদের
বাসায় আর অর্ধেক নানা বাড়িতে থাকেন ।

আমিঃ তো এর সাথে আমার কি সম্পর্ক, বুঝলাম না তো ?

প্রিন্সেসঃ বলছি, আমার এই মামা বাংলা সিনেমার অন্ধভক্ত,
প্রায় প্রতিটি বাংলা ছবি উনি ৩/৪ বার করে দেখেন ।
ছবি দেখে কাঁদেন, হাসেন, ছবির নায়কদের মত করে
চুলে কাটিং দেন, ড্রেসআপ করেন, ডায়লগ বলেন আর
সবচেয়ে মজার ব্যপার হচ্ছে প্রতিবার উনি যখন গ্রামের
বাড়ী থেকে আমাদের বাসায় আসেন তখন উনার নতুন
একটা করে গার্লফ্রেন্ডের গল্প থাকে । কোন ব্যতিক্রম নেই ।
একবার ছবি, পরের বার ফরিদা, তারপর বিলকিস ।

আমিঃ বাহ বাহ বেশ ইন্টারেস্টিং ও মজার চরিত্র বলে মনে
হচ্ছে । বলে যাও ।

প্রিন্সেসঃ বাংলা সিনেমা দেখা ছাড়া উনার দ্বিতীয় প্রধান কাজ
হচ্ছে এই গার্লফ্রেন্ডদের সাথে রাত জেগে মোবাইলে বাতচিৎ করা ।
আমার রুমের উল্টা দিকেই উনার থাকার ঘর, তাই না
চাইলেও উনার এই গভীর রাতের হেঁড়ে গলার বাতচিৎ
প্রায় রোজই আমাকে হজম করতে হয় । আর উনার
প্রত্যেকটি গার্লফ্রেন্ডকে উনি ডাকেন “বউ” । হি হি হি ।
( শেষ বলে সে আমাকে মকবুল মামা বানিয়ে একটি
সফট টাইমড ওভার বাউন্ডারি উপহার দেয় । এতো
স্মুথ টাইমিং যে আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখের
পলকে বল মাথার উপর দিয়ে সরাসরি সীমানা পার । )

আমিঃ আচ্ছা, এই কথা, তোমার মামা তো দেখা যাচ্ছে
খুবই রোম্যান্টিক একজন মানুষ । হা হা হা ।
( অবস্থা বেগতিক দেখে আমি বোলিং অ্যাঙ্গেল বদলাই । )

প্রিন্সেসঃ সে আর বলতে । বিশ্ব প্রেমিক । মামার এই সব কাজ
কারবার দেখে আম্মু কয়েকবার চেষ্টা করেছেন মামাকে
বিয়ে দিয়ে দিতে কিন্তু তা উনি করবেন না । সব সময়
বাংলা সিনেমা দেখলে কি হবে এই বিষয়ে উনার গুরু
বলিউডের চির তরুণ সালমান খান । বলে আপা কি
আর বয়েস, জীবন তো পুরাটাই সামনে পইড়া রইছে,
আর একটু গুছাইয়া নেই তারপর বিয়া । গত দুই তিন
বছর ধরে চলছে এই অবস্থা । উনি যে আসলে কি
গোছাচ্ছেন তা উনিই জানেন । হি হি হি ।

আমিঃ তোমার মামাকে কিন্তু আমার মোটেই খারাপ লাগেনি ।
এই ধরনের মানুষেরা খুব আন্তরিক আর খোলা মনের
হয়ে থাকেন । সহজে মানুষকে আপন করে নিতে পারেন ।
আচ্ছা, তোমার কখনো ইচ্ছা হয়নি কেউ তোমাকে “বউ”
ডাকুক ।
( আপাত দৃষ্টিতে মকবুল মামার ঘটনাটা পুরোটা আমার
বিপক্ষে গেছে মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু তা নয় । এই
খেলায় আমাকে অপ্রস্তুত করে সেও মজা পাচ্ছে । এটা
সে এখন উপভোগ করছে । এটা এই খেলা দীর্ঘ স্থায়ী
হবে সে ইংগিতই দিচ্ছে । “বউ” থিয়রীর প্রথম উদ্দশ্য
ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়টা সফল হয়েছে । এখন সে খেলুক
এক সময় আমি ঠিকই খেলা নিজের হাতে নিয়ে নেবো । )

প্রিন্সেসঃ না, এভাবে নয়, এটা আমার কাছে খুব পবিত্র ও সিরিয়াস
একটি বিষয়, কোন রসিকতা বা মজার কিছু নয়।

আমিঃ হুম ..... আচ্ছা, একটি সম্পর্ককে হোক সে মা বাবা ও সন্তান,
ভাই বোন, স্বামী স্ত্রী বা প্রেমিক প্রেমিকা তুমি কিভাবে দেখো ?
( আমি আমার লাইন চেঞ্জ করে নতুন ভাবে তার ভেতরের
মানুষটাকে বের করে আনার প্রয়াস নেই । “বউ” বলে তাকে
আমি আমার মেসেজ দিয়ে দিয়েছি । আমাকে মকবুল মামা
বানিয়ে যতই রসিকতা করুক না কেন সে কিছুতেই এটা
ভুলে যাবে না । এখন আমার কাজ তার পথে হেটে নিজেকে
প্রমাণ দেয়া । আমি যে মকবুল মামা নই তা বুঝিয়ে দেয়া । )

প্রিন্সেসঃ সব সম্পর্কেরই কিছু ডাইমেনশন থাকে । আমার কাছে
যে বিষয় গুলো সম্পর্কের জন্য গুরুত্ব পূর্ণ বলে বিবেচ্য তা
হল প্রথমতঃ বিশ্বাস, দ্বিতীয়তঃ বোঝাপড়া, তৃতীয়তঃ শেয়ারিং
তারপর আসবে পারস্পরিক সন্মান বোধ । প্রেমিক প্রেমিকার
ক্ষেত্রে অবশ্য এর বাইরেও একটা রসায়ন কাজ করে যা প্রেমিক
বা প্রেমিকাকে প্রেমাস্পদের কাছে আর দশটা মানুষ থেকে সম্পূর্ণ
আলাদা একটি অবস্থানে নিয়ে যায় । গোটা পৃথিবী চেয়ে একটি
মানুষ বেশী গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে ওঠে একটি সত্যিকার ভালবাসায় ।
( আমার উদ্দেশ্য পুরো সফল, সে মনের দরজা খুলে দেয় । )

বিদ্রঃ এটি মূলত ফেসবুক নির্ভর নতুন ঘরানার একটি গদ্য কবিতা । তালমিল বা ছন্দের ভেতর নয়, কাব্যিকতা খুঁজতে বলবো ভাষার ব্যবহার, উত্তর প্রতি উত্তর ও স্বগতোক্তির ছন্দের ভেতর। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন । ধন্যবাদ ।

( চলমান )
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ১১৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সবুজ আহমেদ কক্স ১২/০২/২০১৫
    anoo darar kobita porlam darun tu darun @@@@@@@@@@@@@
  • ফিরোজ মানিক ১২/০২/২০১৫
    আপনার কবিতার মকবুল মামাকে অভিনন্দন প্রতিবার গ্রামে গিয়ে গার্ল ফ্রেন্ড আনার জন্য। অনেক ভাল লাগলো।
 
Quantcast