মানব সেবায় যন্ত্রমানব
“রোবট” শব্দটি নিশ্চই আপনার কাছে সুপরিচিত ? কিন্তু কখনো কী ভেবে দেখেছেন, একটি রোবট কিভাবে পরিচালিত হয়? বিভিন্ন সায়েন্স ফিকশনে নিশ্চই পড়েছেন, রোবটেরও থাকে মানুষের মস্তিষ্কের অনুরূপ একধরণের যাস্ত্রিক মস্তিষ্ক? বাংলাদেশের অনেক সায়েন্স ফিকশন লেখক রোবটের মস্তিষ্ককে “কপোট্রন” নামে বর্ণনা করে থাকেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে রোবটের মস্তিষ্ক একটি কল্পনা প্রসূত ধারনা ছাড়া আর কিছুই নয়। রোবটের পরিচালিত হওয়ার পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। রোবট আপনার ঘরের টেবিল ফ্যান বা সিডি প্লেয়ারের মতই একটি যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। টেবিল ফ্যানকে যেমন আপনি সুইচ চেপে ঘোরার নির্দেশ দিলে তা পালিত হয়, তেমনি একটি রোবটকেও কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নির্দেশ দিলে তা পালিত হবে। হয়তো ভাবছেন তাহলে টেবিল ফ্যান আর রোবটের মধ্যে পার্থক্যটা কী ? পার্থক্যটা হচ্ছে আপনার নির্দেশ পালিত হওয়ার ভঙ্গিতে। টেবিল ফ্যানের সুইচ আপনি যে পরিস্থিতিতেই অন করেন না কেন, তা একই রকম প্রতিক্রিয়া প্রদর্শণ করবে। কিন্তু রোবটের রয়েছে পছন্দ করার ক্ষমতা। রোবট বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আপনার একই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রদর্শণ করতে পারে। তবে রোবটের এই পছন্দকে মানবিক পছন্দের সাথে মিলিয়ে ফেললে ভুল হবে। কোন্ পরিস্থিতিতে, কোন্ রোবট, কোন্ নির্দেশের প্রেক্ষিতে কী ধরণের আচরণ করবে, তা সবই যাস্ত্রিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত। আপনি যদি এমন একটি টেবিল ফ্যান তৈরি করতে পারেন, যা থেকে গরমকালে ঠান্ডা বাতাস নির্গত হয় কিন্তু শীতকালে একই সুইচ দ্বারা অন করলেও তা পরিবেশের তাপমাত্রা বিবেচনা করে গরম বাতাস প্রস্তুত করবে। অর্থাৎ পরিস্থিতির ভিন্নতার কারণে টেবিল ফ্যানটি একই নির্দেশের দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম, তাহলে এই টেবিল ফ্যানটিই হবে একটি রোবট। পরিবেশ অনুযায়ী বাতাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য টেবিল ফ্যানটিতে অবশ্যই এমন কোনো যন্ত্রাংশ থাকতে হবে যা পরিবেশের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে এবং এই পরিমাপক অংশে নির্দেশিত তাপমাত্রার পরিমাণ অনুযায়ী বিপরীত তাপমাত্রার বাতাস প্রস্তুত করতে পারে। এতে সত্যিকার মানবিক পছন্দের কোনো ব্যাপার নেই। পুরো ব্যাপারটিই সম্পূর্ণ যান্ত্রিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। এভাবে যে রোবটের কাজে যতো বেশি বৈচিত্র থাকে, সেই রোবট হয় ততো বেশি উন্নত। এরই ধারাবাহিকতায় হয়তো একদিন আমাদের কল-কারখানাগুলোতে সত্যিই কোন শ্রমিক বা শ্রমিক ধর্মঘট বলে কিছু থাকবে না।
----- এই লেখাটি দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত হয়েছে ২০১০ সালে । তারিখ মনে না থাকায় উল্লেখ করা গেলনা । সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ জটিলতা পরিহারের লক্ষ্যে তথ্যটি উল্লেখ করে রাখলাম ।
----- এই লেখাটি দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত হয়েছে ২০১০ সালে । তারিখ মনে না থাকায় উল্লেখ করা গেলনা । সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ জটিলতা পরিহারের লক্ষ্যে তথ্যটি উল্লেখ করে রাখলাম ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Înšigniã Āvî ২১/০৯/২০১৩রোবট সমন্ধে নুতুন কিছু জানলাম
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ২০/০৯/২০১৩তথ্য ভান্ডারে ভরপুর একটি লেখা। অনেক কিছু জানার আছে।
-
সালমান মাহফুজ ২০/০৯/২০১৩রোবট সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম । ধন্যবাদ এমন চমৎকার পোস্টের জন্য ।